হঠাৎ আব্বুর অসুস্থতা
আজ - ১৮ আষাঢ় | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- হঠাৎ আব্বুর অসুস্থতা
- আজ ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
অসুস্থতা যে কতটা খারাপ একটা বিষয়ে এই বিষয়টা আমরা ঠিক তখনই বুঝতে পারি যখন আমরা অসুস্থ হই। আমরা কখনোই সুস্থ থাকাকালীন বুঝতে পারি না যে সুস্থ থাকাটা সৃষ্টিকর্তার কত বড় একটা নিয়ামত। এই নিয়ামতটা সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক একটা দান। হঠাৎ করেই আমরা অসুস্থ হই আর যখন আমরা ছোট্ট একটু সমস্যার কারণে অসুস্থ হয় তখন সেই বিষয়টাই আমাদের কাছে অনেক বড় কিছু মনে হয়। মনে হয় এই অসুস্থতা হয়তোবা আমাদের জীবন থেকে কখনোই যাবে না। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যদি দয়া করে তাহলে খুব দ্রুতই সেই অসুস্থতা থেকে আমরা পরিত্রাণ লাভ করতে পারি। যখন আমরা অসুস্থ হই তখন আমাদের কোন কিছুই ভালো লাগেনা চারিদিকে অন্ধকার মনে হয় বিশেষ করে পরিবারের লোকজন যখন একটু অসুস্থ হয় তখন নিজের কাছে অনেক বেশি খারাপ লাগে। আমরা সব সময়ই চাই যে আমাদের প্রিয় মানুষগুলো যেন সবসময় সুস্থ থাকে প্রিয় মানুষগুলো যদি সুস্থ থাকে তাহলে নিজের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। প্রিয় মানুষগুলো যখন অসুস্থ থাকে তখন নিজেকে অনেক বেশি টেনশন ফ্রি মনে হয় কিন্তু যখন সেই মানুষগুলোই অসুস্থ হয়ে পড়ে কোন কারণ ছাড়াই তখন সেই ব্যাপারটা মেনে নিতে আসলেই অনেক বেশি কষ্ট হয়।
ঘটনাটা ঘটেছিল ঈদের একদিন আগে অর্থাৎ চাঁদ রাতে। প্রতিদিনের মতোই সকালটা অনেক ভালো কেটেছিল দুপুরবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বাসায় এসেছি বাসায় এসে দেখি আব্বুর মনটা অনেক বেশি খারাপ। আমি তাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না রুমের মধ্যে গিয়ে বসেছিলাম। এরপরে আম্মু আমার রুমে আসলো রুমে আসার পরে দেখলাম আম্মুর মনটা খুবই খারাপ জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে..?? মন খারাপ কেন..?? আমি তখন বলল যে তোর আব্বু খুবই অসুস্থ। আমি আম্মুকে বললাম কি হয়েছে সমস্যা কি..? সকালেও তো দেখলাম সবকিছু ঠিকঠাক হঠাৎ কি এমন হলো। এই প্রশ্ন করায় আম্মু বলল তোর আব্বুর পেট অনেকটাই ফুলে গিয়েছে। এটা শুনে আমি রীতিমতো অবাক হলাম এটা শুনেই আমার মধ্যে এক ভয় কাজ করছিল।
এরপর আমি তড়িঘড়ি করে আব্বুর কাছে যাই গিয়ে দেখি আব্বু রুমে শুয়ে আছে। আব্বু আমাকে দেখে আমার দিকে অবাক বৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল হয়তোবা সে কিছু একটা ভাব ছিল কিন্তু সেই ভাবনাটা যেন সম্পূর্ণ আমাকে জুড়ে। এরপর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে কোন কিছু না বলেই আমার দিকে তাকিয়ে আছে এরপরে আমি আমার হাত তার পেটের উপর দিয়ে কিছুটা সময় টিপাটিপি করি। আসলে আমি বুঝতে পারছিলাম যে সমস্যাটা কি যদিও আমি ডক্টর নই। এরপর আমি কিছুটা সময় টিপাটিপি করার পরে বললাম হয়তোবা পেটে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস হয়েছে। এরপরও আব্বু কোন কথা বলল না। মনটা অনেক বেশি খারাপ এটা দেখে আমার অনেক বেশি খারাপ লাগছিল।
আমি তড়িঘড়ি করে বের হয়ে গেলাম বাজারে, বাজারে গিয়ে আমি গ্যাসের ওষুধ কিনে নিয়ে আসলাম সেই সাথে কোমল পানি। ভেবেছিলাম এগুলো খেলেই হয়তো বা আব্বু সুস্থ হয়ে যাবে তাই আমি সেগুলো আব্বুকে দ্রুত খাইয়ে দেই। আব্বুরে অসুস্থতা দেখে আমি কিছুতেই বাড়ির বাহির হতে পারছিলাম না যদিও ভাই ব্রাদার ফোন দিচ্ছিল বাহিরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু পরিবারের এরকম দুরবস্থায় আমি কোনোভাবেই বাহিরে যেতে পারিনি।
যেহেতু চাঁদ রাত ছিল এবং সেদিন বিকেল বেলা আমাদের অনেক জায়গায় ঘুরাঘুরির কথা ছিল চাঁদ রাতের আগেই আমরা কোথায় কোথায় ঘুরবো এই ব্যাপারটা নিয়ে সকলেই নিজেদের মতামত জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তাদের সঙ্গে ঘুরতে যেতে পারিনি। রুমের মধ্যে বসেছিলাম আর বারবার আব্বুর কাছে গিয়ে আব্বুর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছিলাম কিন্তু আব্বুর অবস্থা কোনোভাবেই ভালো হচ্ছিল না। এরকম অবস্থা দেখে খুবই খারাপ লাগছিল। আস্তে আস্তে দেখি আব্বুর পেট অনেকটাই ফুলে গিয়েছে এরপরে আমি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি দ্রুত বড় কাকুর কাছে গিয়ে পুরো ব্যাপারটা বলি। কাকু কথা শুনে আমাদের বাসায় এসে আব্বুর কাছে গিয়ে কথা বলে এবং আব্বুর কথা শুনে কাকু বলে তাহলে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আস্তে আস্তে আব্বুর পেটটা অনেক বেশি বড় হয়ে গিয়েছে। যখনই কাকু বলল যে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে তখন এই কথা শোনার জন্য আমি একটুও প্রস্তুত ছিলাম না। মনের মধ্যে এক অজানা ভয় কাজ করছিল। সত্যি কি বেশি খারাপ লাগছিল যে আগামীকাল ঈদ আর আজকে আমাদের পরিবারের এই অবস্থা। আব্বুর এরকম অবস্থা দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি। চোখ দিয়ে ঝরে পানি পড়ছিল হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছিল অনেক বেশি কান্না পাচ্ছিল।
এরপরে যখন কাকু আব্বুকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা করেছে বাইকে করে আমার খুব ইচ্ছে ছিল আব্বুর সঙ্গে যাওয়ার। কিন্তু যেহেতু আমার দুই কাকু এবং আব্বু মোট তিনজন হাসপাতালে যাচ্ছে তাই বাড়ি থেকে আমার বড় আম্মা বলল তোর যাওয়া লাগবে না। কারন আমি সেই সময়টাতে অনেক বেশি কান্না করছিলাম আম্মু ভেবেছিল আমি হয়তোবা হাসপাতালে গিয়ে কান্নাকাটি করব এজন্যই তিনি আমাকে হাসপাতালে যেতে দেননি। রুমের মধ্যেই মন মরা হয়ে বসে ছিলাম অনেক বেশি খারাপ লাগছিল কিন্তু কাউকে সেই খারাপ লাগার কথাটা বলে বোঝাতে পারছিলাম না। এভাবেই কেটে গেল পুরো সন্ধ্যা, আমি কাকুর কাছে ফোন দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ফোন দিয়ে কি জিজ্ঞেস করবো এটা ভাবতেই আমার অনেক বেশি খারাপ লাগছিল আমি মনে মনে চাচ্ছিলাম যে আব্বু পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসুক আমি তাকে সুস্থ অবস্থায় বাসায় দেখতে চাই।
এরপরে রাত সাড়ে নটার দিকে তারা তিনজন হাসপাতাল থেকে ফিরে আসলো। আমি দেখলাম আব্বু মোটরসাইকেল থেকে একা একাই নামলো দেখে মনে হচ্ছে সে কিছুটা সুস্থ হয়েছে। এরপরে কাকুর কাছে গিয়ে বললাম আব্বু সমস্যা কি। কাকু বলল তেমন কোন সমস্যা হয়নি শুধুমাত্র পেটে একটু গ্যাসের সমস্যা হয়েছিল যার কারণে এরকম পেট ফুলে গিয়েছিল। ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম ঈদের কারণে প্রায় সকল ডাক্তার ছুটিতে গিয়েছে কিন্তু একজন ডাক্তারি ছিল সে ওষুধ লিখে দিয়েছে প্লাস কিছুটা ট্রিটমেন্ট করেছে মোটামুটি ভাবে এখন সুস্থ আছে। এরপরে আব্বু দেখি একা একাই রুমের মধ্যে চলে গেল রুমের মধ্যে আমি গিয়ে আব্বুকে দেখলাম। আব্বুকে দেখে মনটা অনেক বেশি ভালো হয়ে গেল কারণ তার মুখে এখন সেই ভয়টা আর নেই সে হয়তো বা বুঝতে পেরেছে এখন কিছুটা সুস্থ। তার এ অবস্থা দেখে আমারও খুবই ভালো লাগছিল।
এরপরে আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করেছিলাম, আব্বু যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। সৃষ্টিকর্তার সেদিন আমার দোয়া শুনেছিল। এখন আব্বু মোটামুটি ভাবে সুস্থ আগের মতোই। যদিও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি তবে সেই সমস্যাটা এখন অনেকটাই লাঘব হয়েছে। এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আপনাদের খুবই ভালো লেগেছে। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন, ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | হঠাৎ আব্বুর অসুস্থতা |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
টুইটার লিংক--
https://twitter.com/jibon472?t=vZWBbjuzS7lj7ghfbYasLA&s=09
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
আপনার আব্বু অসুস্থ জেনে খুব খারাপ লাগলো। আসলে বাবার মতোন আপন কেউ নেই। বাবা যার আছে পৃথিবীতে সব কিছু রয়েছে তার । আপনার আব্বু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিটি মুহূর্ত মেনে চলবেন । নিশ্চয় তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন। পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আসলেই বাবার মত পৃথিবীতে আপন কেউ নেই সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার আব্বুর শরীর খারাপ শুনে খুব খারাপ লাগলো। আসলে মা-বাবার কিছু হলে মনে একদম শান্তি পাওয়া যায় না।দোয়া করি আল্লাহ আপনার আব্বুর সুস্থতা দান করুন,আমিন।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
সত্যি বাবা মা অসুস্থ থাকলে কোন কিছুই তেমন একটা ভালো লাগে না। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।