হঠাৎ করেই চোখের জ্বালাপোড়া
আজ--১৯ শ্রাবণ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বর্ষাকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- হঠাৎ করেই চোখের জ্বালা পোড়া
- আজ--১৯শশ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
- শনিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে......!!
পৃথিবীতে আমরা সকলেই শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে সব সময় সুস্থ থাকতে চাই। সব সময় সুস্থ থাকতে চাইলেও তো আর সব সময় সুস্থ থাকা যায় না কিছু কিছু সময় আমরা হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। আর যখনই অসুস্থ হই তখন মনে হয় যে সুস্থতা কত বড় একটা নিয়ামত। যখন আমরা সুস্থ থাকি তখন আমাদের সবকিছুই অনেক বেশি ভালো লাগে কিন্তু যখনই আমরা ক্ষণিকের জন্য অসুস্থ হই তখন পৃথিবীটাকে অন্ধকার মনে হয় এবং সেই সাথে নিজের কাছে অসহায় মনে হয়। সব থেকে বেশি আপনার অসহায় সেই সময়েই মনে হবে যখন আপনি অসুস্থ হবেন অথচ আপনার পরিবারের মানুষ কেউ আপনার কাছে নেই সকলের থেকে যখন আপনি দূরে গিয়ে কিছুটা অসুস্থ হবেন হতে পারে সেটা ঠান্ডা অথবা জ্বর ঠিক তখনই আপনি বুঝবেন যে নিজেকে কতটা অসহায় মনে হয়। নিজেকে এতটাই অসহায় মনে হয় যে এই অসহায়ত্ব কখনোই কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। সে যাই হোক কয়েকদিন আগে ডিউটি শেষ করে রুমে এসে গোসল করে বিছানায় শুয়ে ছিলাম। অনেকটা সময় ফোন টিপাটিপি করছিলাম হঠাৎ করেই বাম পাশের চোখটা জ্বালাপোড়া শুরু করল। প্রথমে ভাবলাম হয়তোবা চোখের মধ্যে কিছু একটা গিয়েছে যার কারণে জ্বালাপোড়া করছে। বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে পানি নিলাম কিছুক্ষণ।
যখনই চোখে পানি নিয়েছি ঠিক তখনই জ্বালাপোড়াটা কিছুটা কমে গিয়েছে তখন মনে মনে ভাবছিলাম হয়তোবা কিছু একটা চোখের মধ্যে গিয়েছিল যার কারণেই এরকম ভাবে জ্বালাপোড়া করছিল। যখনই ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আবার বিছানায় শুয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে কয়েক মিনিট ফোন টিপাটিপি করেছি ঠিক তখনই আবার চোখের জ্বালাপোড়ার যন্ত্রণাটা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে গেল। ঠিক তখনই আমার মনে হল চোখের মধ্যে কিছুই প্রবেশ করেনি এই জ্বালাপোড়াটা কিভাবে হচ্ছে ততক্ষণে আমি বুঝে গিয়েছিলাম। এটা মূলত ওয়েল্ডিং শর্ক। এই ওয়েল্ডিং শর্ক প্রথম চোখে লেগেছিল যখন পলিটেকনিকে লেখাপড়া করতাম সেই সময়। এবার আমি আপনাদেরকে বলি ওয়েল্ডিংটা মূলত কি, ওয়েল্ডিং মূলত ধাতুকে জোড়া দেওয়ার মাধ্যম অর্থাৎ, দুটো ধাতুকে জোড়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বৈদ্যুতিক তাপ এবং চাপের মাধ্যমে স্থায়ী এবং অস্থায়ীভাবে যে জোড়া টা দেওয়া হয় সেটাই মূলত ওয়েল্ডিং। যখন ওয়েল্ডিং করা হয় তখন সেখানে এক ধরনের তাপ উৎপন্ন হয় আর সেই তাপ যদি চোখে লাগে আপনি কয়েক সেকেন্ডের জন্য কিছুই দেখতে পারবেন না।
অনেকটা এমন যে দুপুরবেলা সূর্যের দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকানোর পরে আপনার চোখের অবস্থাটা যেমন হবে ওয়েল্ডিং যখন কেউ করে তখন যদি আপনি সেই উত্তপ্ত লোহা গলানোর দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকেন তাহলে আপনার চোখের অবস্থাটা ঠিক তেমনি হবে। আর এই শর্ক লাগার ব্যাপারটা অনেক বেশি কষ্টকর আর এই কষ্টটা আপনি তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারবেন না সব থেকে বেশি বুঝতে পারবেন যখন রাত্রি হবে চারদিকে অন্ধকার হয়ে যাবে ঠিক তখন। এরকমই একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে আমার সঙ্গে গত কয়েকদিন আগে যেটা আমাকে সারারাত অনেক বেশি কষ্ট দিয়েছে। এর আগেও একবার এরকম শর্ক লেগেছিল তবে খুব একটা বেশি কষ্ট পাইনি তবে এবারের শর্ক আমাকে অনেক বেশি যন্ত্রণা দিয়েছে। তো তাহলে পুরো ঘটনাটা আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
যখনই চোখ জ্বালাপোড়া করছিল তখন আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে ওয়েল্ডিং শর্ক লেগেছে এখন আমাকে কিছু একটা করতে হবে অর্থাৎ যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করলে চোখের যন্ত্রণা কিছুটা কমবে সেটাই আমাকে করতে হবে। এমত অবস্থায় যদি চোখে ওয়েল্ডিং শর্ক লাগে তাহলে কাপড় ভিজিয়ে সেটা চোখের উপর রেখে দিতে হয় আর এক ধরনের ট্যাবলেট আছে সেই ট্যাবলেট খেয়ে কয়েক ঘন্টা ঘুমালেই চোখের যন্ত্রনা নিমিষেই দূর হয়ে যায় তবে দুঃখের বিষয় আমার কাছে সেই ট্যাবলেটটা ছিল না যার কারণে আমার যন্ত্রণাটা সারারাত উপভোগ করতে হয়েছে। ওয়াশরুমে গিয়ে কাপড় ভিজিয়ে রুমের লাইট অফ করে চোখের উপর দিয়ে রেখেছিলাম কিন্তু চোখ দিয়ে অঝোরে গরম পানি বের হচ্ছিল এতটা গরম পানি বের হচ্ছিল যে আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না, আপনারা আবার ভাববেন না যে কাপড় সাথে পানি থাকায় হয়তো বা সেখান থেকে পানি বের হচ্ছিল, না। এটা চোখের মধ্যে থেকেই গরম পানি বের হচ্ছিল যখন আমি সেই ভেজা কাপড়টা আমার চোখের উপর দিয়েছিলাম।
কিছু সময় চোখের উপরে ভেজা কাপড়টা রেখে দেওয়ার ফলে চোখ থেকে গরম পানি বের হয়ে বালিশ ভিজে যাচ্ছিল কিন্তু উঠে বালিশ চেঞ্জ করার মত অবস্থায় আমি ছিলাম না কারণ চোখ আমি তখন কোনভাবেই খুলতে পারছিলাম না। এদিকে আবার মনে হচ্ছিল চোখের মধ্যে কেউ একজন সুচ অথবা কাটা দিয়ে আঘাত করছে আবার মনে হচ্ছে চোখের মধ্যে আগুন ধরে গিয়েছে এরকম গরম হয়ে গিয়েছিল চোখ সেই সাথে গরম পানি বের হচ্ছিল এভাবে যে কতটা সময় কাটিয়েছি সেটা আমার মনে নেই হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙে ছিল প্রায় রাত্রি দুটোর দিকে। রাত্রি দুটোই যখন ঘুম ভেঙে যায় তখন আমি চোখ খুলতে পারছিলাম না কোন ভাবেই অনেক চেষ্টা করছিলাম চোখ খোলার জন্য কিন্তু চোখ কোনভাবেই খুলতে পারছিলাম না এরপরে দুই হাত উপর এবং নিচের দিকে রেখে টান দিয়ে চোখের পাপড়ি খুলে ছিলাম। যখনই চোখের পাতা খুলেছি তখন আবার চোখের যন্ত্রনা শুরু হয়ে গেল। এ যেন এক অন্যরকম অত্যাচার আমার উপর চলছে যে অত্যাচার বা নির্যাতন আমি আগে কখনোই উপভোগ করিনি।
খুবই খারাপ একটা অবস্থার মধ্যে দিয়ে রাত অতিবাহিত করছিলাম। এরপরে আবার ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে পানি নিয়ে ফ্যানের নিচে বসে ছিলাম। ফ্যানের বাতাস চোখে এসে লাগায় কিছুটা ভালো লাগছিল নিমিষেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম সকালবেলা উঠে মোটামুটি ভাবে তাকাতে পারছিলাম তবে চোখ ছিল রক্তাক্ত লাল। এরকম রক্তাক্ত লাল চোখ আমি আগে কখনোই দেখিনি সেই সাথে চোখ দুটো খুবই ছোট হয়ে গিয়েছিল। মূলত এটা হয়েছিল মেশিনে কিছু সমস্যা হয়েছিল সেখানে একজন ওয়েল্ডার এসে ওয়েল্ডিং করেছিল। আমি সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম তবে আমি সেদিকে খুব একটা বেশি তাকাইনি কারণ ব্যাপারটা সম্পর্কে আমি আগেই অবগত ছিলাম। যখন ওয়েল্ডিং চলছিল তখন মাঝেমাঝে আমার চোখ সেদিকে গিয়েছিল কিন্তু ভাবিনি যে সেদিকে কয়েক সেকেন্ড তাকানোর পরেই আমার চোখে ওয়েল্ডিং শর্ক লেগে যাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যেটা নিয়ে আমার ভয় ছিল সেটাই আমার সঙ্গে ঘটে গেল।
যাইহোক সেদিন অনেকটাই কষ্টের রাত অতিবাহিত করেছিলাম তাদের সারাটা দিনও খুব একটা বেশি ভালো যায়নি মাঝে মাঝে চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল অবশেষে ডাকলে কাছে গিয়ে ওষুধ নিয়েছিলাম। পরবর্তীতে অবশ্য ঠিক হয়ে গিয়েছিল এখন মোটামুটি সুস্থই আছি। এটাই ছিল আমার আজকের পোস্ট, আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নাই এখানেই শেষ করছি সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | হঠাৎ করেই চোখের জ্বালাপোড়া |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
এই ওয়েল্ডিং শক এর বিষয় এ আমার আগে জানা ছিলো না। তবে এটা ঠিক যে উজ্জ্বল সূর্যের দিকে কিছুক্ষণ তাকালে, পরে চোখে কিছুক্ষণ অন্ধকার দেখা লাগে। আপনার সাথে নিসন্দেহে বাজে একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। যেহেতু চোখ একটি সেন্সিটিভ জিনিস, সাবধানে থাকবেন।