হঠাৎ একদিন বিকেলে নৌকা ভ্রমণ [benificiary ১০% @shy-fox]

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আজ - ১৭ ভাদ্র | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | বুধবার| শরৎকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে বিকেল বেলা নৌকা ভ্রমণ এর অনুভূতি সম্পর্কে উপস্থাপন করবো। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।


তো চলুন শুরু করা যাক


শুভ সন্ধ্যা সবাইকে...!

নৌকা ভ্রমণ মানেই যেন এ এক অন্য রকম অনুভুতি।এই বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা কজন নৌকা ভ্রমণ করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু সবার এতো এতো কাজ আর ব্যাস্ততার কারনে নৌকা ভ্রমণটা হয়ে উঠছিল না।বাড়ির পাশ দিয়েই বয়ে গেছে পদ্মানদীর শাখা আর এই সময় যদি নৌকা ভ্রমণ না করি তাহলে পদ্মাপারের মানুষ হয়ে লাভ কি বলেন..!নদীর পারে বাড়ি থাকা সত্তেও যারা নৌকা ভ্রমণ করেনা আমি মনে করি তাদের জীবন বৃথা। হঠাৎ একদিন দুপুরে সবাই এক সাথে হই এবং নৌকা ভ্রমণ বিষয় টা কথা বলি সে দিন ছিল শুক্রবার। আর শুক্রবারে সবাই কাজ-কর্মে থেকে একটু বিশ্রাম নেয়। সবাই রাজি হয়ে যায় তারা নৌকা ভ্রমণ করবে।যে কথা সেই কাজ আমরা আসরের নামাজ আদাই করে বাসা থেকে বের হই নৌকা ভ্রমণের উদ্দেশ্য।

ফটোগ্রাফি

IMG20210709181638-01.jpeg

ছবিঃ-আমরা সবাই একসাথে

নৌকাটা বেশ একটা বড় না তবে সাত-আট জন মানুষ ভালোভাবেই উঠা যাবে আমরা ছিলাম পাঁচ জন। সবাই যে যার মতো বাসা থেকে কিছু শুকনো খাবার সাথে নেয়ে রওনা হই। সেই দিনটা ছিল খুবই হাস্যোজ্জ্বল। আকাশে কোন মেঘ নেই, নদীতে কোন ঢেউ নেই,নেই বা কোন স্রোত। শুধু ঝিরিঝিরি মৃদু বাতাস বইছে। আর আমরা বাতাসের দিকেই নৌকা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। খুবই সুন্দর সেই মুহুর্ত টা কেটেছে যা বলে বোঝানো যাবে না। নদীর এক পাশ দিয়ে আমদের নৌকা আস্তে আস্তে চলতে থাকে। আর আমরা নদীর দুই পাশের দৃশ্য দুই চোখ ভরে দেখছিলাম। ইঞ্জিনের নৌকা থাকার ফলে নৌকা যখন যাচ্ছিল তখন নৌকা যাওয়ার ফলে পানি দুই দিকে ভাগ হয়ে যাচ্ছিল দেখে মনে হচ্ছিল কে যেন তার দুই হাত দিয়ে পানি কেটে ভাগ করে দিচ্ছে।

ফটোগ্রাফি

received_2916373748678439-01.jpeg

ছবিঃ-দুপুরের সূর্য

সূর্য টা পশ্চিম আকাশে হেলে পরেছে। আমদের মন আর তর স্বইছিল না আমরা রোদের মধ্যেই বেরিয়ে পড়ি। যদিও নৌকার উপর বেশ রোদ লাগছিল তবে মৃদু বাতাস থাকার কারনে তেমন বেশি একটা গরম বোধ করছিলাম না। তারপরে আমরা নৌকা নিয়ে অন্য একটা এলাকায় চলে যাই সেখানে প্রচুর স্রোত হয় স্রোতের বিপরীত দিকে আমরা নৌকা চালাচ্ছিলাম মাঝেমধ্যে অনেক বড় বড় ঢেউ নৌকার উপর আসরে পরছিল তখন ওই পানি গুলো আমাদের গায়ে এসে পড়ছিল যার ফলে আমরা ভিজে যাচ্ছিলাম অতিদ্রুত আমরা সেখান থেকে প্রস্থান করি।

ফটোগ্রাফি

received_1255280651597316-01.jpeg

received_1196311014166861-01.jpeg

ছবিঃ-আকাশ রক্তাক্ত

কিছুক্ষনের মধ্যেই বাতাস পরে গেলো। আমরা নৌকাটা আগের থেকে আরো আস্তে চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ আকাশের দিকে তাঁকিয়ে দেখি আকাশ রক্তাক্ত বর্ণ ধারন করেছে। পশ্টিম আকাশের সূর্য টা লাল রক্তের মতো হয়ে আছে। মনে হচ্ছে সূর্যটাকে গরম আগুনের মধ্যে থেকে মাত্রই বের করা হলো। সূর্যের রক্তাক্ত লাভার কারনে সূর্যের চারিদিকে রক্তাক্ত হয়ে আছে। আর লাল বর্ণ টা আকাশে ছড়িয়ে সেই রং প্রতিফলিত হচ্ছে নদীর পানিতে। নদীর পানির মধ্যে সূর্যের লাল রং দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। নদীতে ছোট ছোট কুচুরি পানা ও শ্যাওলা ঘাস ছিল রক্তাক্ত সূর্যের কারনে সেই গুলোও লাল দেখাচ্ছিল। আর সূর্যের শেষ ভাগে মনে হচ্ছিল কে যেন একটা গরু জবেহ করে দিয়েছে কারন সূর্যের শেষ ভাগে রক্তের মতো লাল লাভা প্রতিফলিত হচ্ছিল।

ফটোগ্রাফি

received_1201100200364950-01.jpeg

received_178927544211549-01.jpeg

ছবিঃ-সন্ধ্যার আগে

আমরা একটা সময় মাঝ নদীতে বাঁশ বেঁধে নৌকা থামিয়ে দিই। এবং ভাবি কিছু খাওয়া দাওয়া করা যাক।বাসা থেকে যে শুকনো খাবার আমরা সাথে নিয়ে এসেছিলাম সেগুলো বের করে খাওয়া দাওয়া করলাম।সবাই সবার সাথে অনেক মজা করছে। আমি মাঝে মাঝে গান বলে সবাইকে আনন্দ দিয়েছিলাম। গান আমার খুবই প্রিয়। সন্ধ্যা হবে হবে ভাব ঠিক এমন সময় আমরা কিছু একটার শব্দ শুনতে পাই আর সেটা হলো বড় নৌকা বা মেলায় যে নৌকা গুলো বাইচ প্রতিযোগিতা করে সেই নৌকা চালিয়ে আসছে অনেক মানুষ।

ফটোগ্রাফি এবং ভিড়িও

received_565796681530020-01.jpeg

ছবিঃ- নৌকা বাইচ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে

এটা আমাদের এলাকার এক নৌকা। এই নৌকা অন্যান্য নৌকার তুলনায় অনেক বড়। গ্রাম বাংলার ভাষায় একে বাইচ নৌকা বলে। নৌকার মালিকের নাম মাসুম বিল্লা। তিনি এই নৌকার নাম দিয়েছে লালল শাহ্। এই নৌকা অনেক মেলায় বাইচ প্রতিযোগিতা দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্যে নিজ এলাকায় তাদের এখন বাইচ প্রতিযোগিতা পরিপূর্ণ করে গড়ে তুলছে। তারা আমাদের এলাকার গর্ব তারা অনেক জেলায় বাইচ প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করে আমাদের গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে।



আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন।
Sort:  
 3 years ago 

নৌকা ভ্রমণ করতে আসলে খুবই মজাদার একটা মুহূর্ত এবং আপনার ফটোগ্রাফি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি অনেক সুন্দর ছিল এবং নৌকা বাইচ করছিল অনেক মানুষ জন এবং পরিবেশটা অত্যন্ত সুন্দর ছিল খুবই ভালো লাগলো দেখে

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই

 3 years ago 

আপনি খুব সুন্দর আলোচনা ও ফটোগ্রাফি করেছেন।

 3 years ago 

আপনাকে ধন্যবাদ

 3 years ago 

😍😍

 3 years ago 

কিছুদিন আগে কক্সবাজার এখন নৌকাভ্রমন। ভালোই কাটছে দিনগুলি। খুবই ভালো দাদা। করোনা নিয়ে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এর মাঝে টুকটাক ঘুরলে মন ভালো থাকবে। নৌকার নামটি বেশ ভালো। লালন শাহ! ❤️

 3 years ago 

জ্বী দাদা বাড়িতে চলে আসছি,এসেই নৌকা ভ্রমণ করলাম,বেশ ভালো লাগে নৌকা ভ্রমণ করতে

 3 years ago 

ছবি গুলোও বেশ ভালো

 3 years ago 

ধন্যবাদ দাদা🥰

 3 years ago 

এই বছর নদীতে নৌকা ভ্রমণ করা হয়নি। আশাকরছি খুব দ্রুতই করতে পারব। এ এক অসাধারণ অনূভুতি। সময়টা খুব সুন্দর অতিবাহিত করেছেন।

 3 years ago 

জ্বী ভাই দিনটা বেশ ভালো কেটেছে

 3 years ago 

🙂🙂

 3 years ago 

🥰🥰

অসাধারণ ফটোগ্রাফি❤️

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 3 years ago 

ফটোগ্রাফি গুলো যে কি অপূর্ব হয়েছে দাদা। প্রকৃতির মায়া আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকুন। খুব সুন্দর হয়েছে পোস্ট টি।

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি,দোয়া করি আপনি ও ভালো থাকুন

Coin Marketplace

STEEM 0.29
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 63724.53
ETH 3071.11
USDT 1.00
SBD 3.98