আজ - ১৫ চৈত্র| ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | বুধবার | বসন্তকাল |

আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

তো চলুন শুরু করা যাক...!

শুভ দুপুর সবাইকে......!!

কচু শাক ঘন্ট পছন্দ করে না এরকম মানুষ খুব কমই আছে। ব্যক্তিগতভাবে কচু শাক আমার কাছে অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে বিশেষ করে যদি চিংড়ি মাছ দিয়ে কচু শাক ঘন্ট করা হয়। যেহেতু অনেকদিন ঢাকাতে ছিলাম তাই নিজেদের জমি দেখা হয় না তাই এইতো কদিন আগে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা করেই সাইকেলটা নিয়ে মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম নিজেদের জমির ফসল দেখার জন্য। যেহেতু জমিটা আমাদের বাসা থেকে অনেকটাই দূরে অনেকটা দূরে বলতে প্রায় পদ্মা নদীর কাছেই তাই সাইকেল নিয়ে যেতে হয় যদিও আমার আব্বু সাইকেল তেমন একটা ব্যবহার করেনা পায়ে হেটেই সবকিছু দেখাশোনা করে। আমি আবার হাঁটাহাঁটি তেমন একটা পছন্দ করি না তাই সাইকেল নিয়েই নিজেদের জমি দেখাশোনা করি। জমি দেখা শেষ করে নিজেদের কলাবাগানে গিয়েছিলাম, কলা কেমন ফলন হয়েছে সেটা দেখতে। সেখানে গিয়ে দেখি কলাবাগানের মধ্যে প্রচুর কচু শাক। দেখে আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনি তাই অনেকগুলো কচু শাক কেটে নিয়ে এসেছিলাম ঘন্ট করে খাব বলে।

অনেকদিন হলো কচু শাক ঘন্ট খাওয়া হয়না যার কারণে কচু শাক দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি। বাসায় নিয়ে আসলাম আম্মুকে বললাম চিংড়ি মাছ দিয়ে কচু শাক ঘন্ট করতে। আমি বলল চিংড়ি মাছ নেই, এগুলো রেখে দিই কাল সকাল বেলা চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করে দেব কিন্তু আমার আর তর সইছে না। তখন আমি বললাম ইলিশ মাছ আছে না...? আম্মু বলল হ্যাঁ ইলিশ মাছ আছে, আমি বললাম তাহলে চিংড়ি মাছ লাগবে না, ইলিশ মাছ দিয়ে ঘন্ট করো। আম্মুর ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমার জোরাজোরিতে চিংড়ি মাছ বাদেই ইলিশ মাছ দিয়ে কচু শাক ঘন্ট করেছিল। কতটা যে সুস্বাদু হয়েছিল সেটা হয়তো বলে বোঝাতে পারবো না।

তো তাহলে চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে রান্না শুরু করি। রান্নার প্রক্রিয়া দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন যে কচুশাক ঘন্ট টা কতটা সুস্বাদু হয়েছিল।

• মরিচ
• পেঁয়াজ
• রসুন
• তেল
• লবণ
• জিরা

সর্ব প্রথমে কচু শাক গুলো ভালোভাবে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। এরপরে পরিষ্কার পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে নিতে হবে যাতে করে কচু শাকের সঙ্গে কোন প্রকার ময়লা লেগে না থাকে। যেহেতু আমি কচু শাক মাঠ থেকে নিয়ে এসেছিলাম তাই আমি আম্মুকে বলেই দিয়েছিলাম ভালোভাবে তিন থেকে চার বার ধরে নিতে।

কচু শাক ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়ার পরে এটা করায় এর উপর রেখে দিতে হবে। তারপরে কিছুটা লবণ কচু শাকের উপর ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপরে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এর ফলে কচু শাকের ভেতরে থাকা পানি বের হয়ে যাবে।

এবার প্রয়োজনীয় উপকরণাদি গুলো যেমন পেঁয়াজ রসুন এবং মরিচ এই তিনটি উপকরণ কচু শাকের উপর ছিটিয়ে দিতে হবে। তবে অবশ্যই রসুনের পরিমাণটা একটু বেশি রাখতে হবে কারণ রসুন বেশি দিলে খেতেও সুস্বাদু লাগবে।

এবার একটি চামচ দিয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণাদি এবং কচু শাক নারানাড়ি করতে হবে। এমনভাবে নাড়ানাড়ি করতে হবে যেন কচু শাক এর সাথে প্রয়োজনীয় উপকরণাদি ভালোভাবে মিশে যায়।

এরপরে কিছুটা সময় তাপ দিতে হবে তাহলেই দেখা যাবে যে কচু শাকগুলো অনেকটাই নেতিয়ে গিয়েছে সেই সাথে নরম হয়ে গিয়েছে। এভাবে অনেকক্ষণ তাপ দিতে হবে আর মাঝে মাঝে নাড়ানাড়ি করতে হবে।

অনেকক্ষণ তাপ দেওয়ার ফলে দেখা যাবে যে কত একদম পানির সঙ্গে মিশে গেছে। এবং পানি টুকু রং পরিবর্তন করেছে। ঠিক তখনই করাই থেকে কচু শাক এবং পানি আলাদা করে নিতে হবে। মূলত পানিটুকু ফেলে দিতে হবে এবং কচু শাক আলাদা একটি পাত্রে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে।

এরপরে কড়াই এর উপর পরিমাণ মতো তেল দিয়ে তার ওপর প্রয়োজনীয় উপকরণাদি এবং ইলিশ মাছ ছেড়ে দিতে হবে।

এরপরে পরিমাণ মতো জিরা দিতে হবে। তবে ঘন্টতে স্বাদ বেশি নেওয়ার জন্য অবশ্যই জিরার পরিমাণ টা একটু বেশি রাখতে হবে।

এরপরে সকল উপকরণ গুলো একত্রে চমৎকার ভাবে ঘন্ট করে নিতে হবে। অবশ্যই খুবই চমৎকারভাবে মিক্সড করতে হবে যাতে করে প্রতিটি উপকরণ একে অপরের সঙ্গে মিশে যায়। উপরের চিত্রতে যেমনটা দেখতে পাচ্ছেন ঠিক তেমনভাবেই ঘন্ট করে নিতে হবে।

যখন প্রতিটি উপকরণ একে অপরের সঙ্গে মিক্সড হয়ে যাবে ঠিক তখনই তার ওপর অপর পাত্রে রাখা কত শাক ছেড়ে দিতে হবে। এরপরে অনেকটা সময় নিয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ এর সাথে কচু শাক মিশিয়ে দিতে হবে।

মিশিয়ে দেওয়ার পরে, আবারো উপরের ন্যায় খুবই চমৎকার ভাবে ঘন্ট করতে হবে। এই ঘন্টো করতে হবে প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং কচুর শাক। উপরের চিত্র অন্যায় মিহি করে ঘন্টা করে নিলে খেতেও অনেক বেশি সুস্বাদু লাগবে। যখন মসৃণ ভাবে ঘন্ট হয়ে যাবে ঠিক তখনই স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। যদি লবণ এবং ঝালের পরিমাণ ঠিক থাকে তাহলে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে তবে আমি মনে করি ঝালের পরিমাণটা একটু বেশি রাখা উচিত।

এইতো তৈরি হয়ে গিয়েছে ইলিশ মাছ দিয়ে কচু শাক ঘন্টর রেসিপি। সত্যি বলতে অনেক দিন পরে এরকম রেসিপি খেয়ে এতটা ভালো লেগেছে যে বলে বোঝাতে পারবো না। আসলে ইলিশ মাছ দিয়ে কচু শাক ঘন্ট করলে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে এটা হয়তোবা আপনারা সকলেই জানেন। আপনারা ও চেষ্টা করবেন বাসায় এরকম রেসিপি তৈরি করে খাবার। খুবই সুস্বাদু এবং লোভনীয় মনে হবে সব সময়ই।

যাইহোক এখানেই আমি আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট শেষ করছি সকলের সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!

আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy