উপর থেকে মানুষকে আমরা যেমন দেখি,ভেতর থেকে মানুষ-টা কি সত্যিই এমন..?||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

আজ - ১৩ পৌষ| ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার | শীতকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে এমন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো যা এখন আমরা নিজেদের লাইফে প্রায় সময়ই সম্মুখীন হচ্ছি বা হই। চারিপাশের মানুষ নিজের লাইফ নিয়ে খুবই চিন্তিত। তারা নিজের লাইফ টা আসলে নিজের মতো করে উপভোগ করতে পারছে না। আমরা এক এক জন এক এক রকমের, কারো জীবনের সাথে অন্য কারো জীবনেে কোন মিল খুজে পাওয়া যাবে না। কেউবা ভিতর থেকে অনেক কঠিন কিন্তু বাহির থেকে অনেক নরম মনের মানুষ। আবার কেউবা ভেতর থেকে অনেক নরম কিন্তু বাহির থেকে অনেক কঠিন। যে যেমনই হোক না কেন,আমাদের জাজমেন্টাল করা উচিত না। যে যেমন ভাবে ভালো থাকতে চায় তাতে ঠিক তেমন ভাবে ভালো থাকতে দেওয়া উচিত।



চলুন শুরু করা যাক


শুভ সন্ধ্যা সবাইকে....!!


beanie-2562646_640.jpg

Source

আমরা মানুষ আর মানুষ রূপ নিয়েছি বলেই হয়তো আমরা মানবজাতি বলে বিবেচিত হয়েছি। আমাদের মধ্যে অনেক শ্রেণির, অনেক বর্ণের, অনেক পেশার মানুষ বসবাস করে। তাদের চলাফেরাও অনেকটা ভিন্ন ধরনের। আমাদের সমাজে কিছু সংখ্যা মানুষ আছে যারা কিনা উপর উপর অনেক ভালো ব্যবহার দেখায়, কিন্তু ভেতরে ভেতরে ততটাই কুৎসিত। আবার সমাজে এমন মানুষও আছে যারা উপরে উপরে অনেক রাগি,বদমেজাজি, রগচটা, তাদের দেখবেন তারা ভিতরে ভিতরে অনেক নরম এবং কমল মনের মানুষ হয়ে থাকে। যারা উপরে উপরে ভালো সাজার চেষ্টা করে তাদের দিয়ে সমাজ অনেক খারাপ দিকে চলে যেতে পারে। আর আমরা মানুষ তাদের কে এতোটা প্রসংশা করি যে তাকে একদম সর্বোচ্চ উপরে উঠিয়ে নিয়ে যাই বা সর্বোচ্চ স্থান দিই। কিন্তু আসলেই কি সে ওই স্থান পাওয়ার যোগ্য...?তাতে কি ওই আসনে সবানো উচিত...?সে তো উপরে উপরে ভালো সাজার চেষ্টা করেছে মাত্র,কিন্তু সে ভেতর থেকে একটুও পরিবর্তন হয় নি। আবার এই যেমন ধরুন যে ছেলেটা উপর থেকে অনেক কঠিন রাগের মাথায় যা নয় তা বলে দেয়। কিন্তু সে যা বলছে তা সমাজের ভালোর জন্যই,এই কথার উপর ভিত্তি করে সমাজের কয়েক শ্রেণির মানুষ তাদের বলবে ছেলেটা বেয়াদব, বড়দের সম্মান করতে জানে না। এই উচ্চ কণ্ঠস্বর ছেলেটা-কে সমাজ এমন জায়গা নিয়ে যাবে এমন একটা স্থান দেবে যেন পরবর্তীতে সে আর মাথা উচু করে কারো সামনে দাঁড়াতে না পারে। সে যেন তাদের কুকীর্তি কখনো কারো সামনে তুলে ধরতে না পারে সেই চেষ্টাই মানুষ বেশি করবো। এতে কি হবে..!!এতে করে সমাজ নষ্ট হবে, নষ্ট হবে সমাজের প্রতিটা মানুষ।

business-4089080_640.webp

Source

অনেক মানুষ আছে যারা কিনা সব সময় নীতির কথা বলে,নীতির কথা বলাটা যতটা সহজ, পালন করা ঠিক ততটাই কঠিন কাজ। ঠিক তেমনই ভাবে মানুষ-কে উপদেশ দেওয়াটা যতটা সহজ, সেই উপদেশ টা নিজে পালন করা ততটাই কঠিন। আমরা সব সময় উপদেশ দিতে পছন্দ করি, কিন্তু সেই উপদেশ টা নিজে মানতে বা পালন করতে এতদম নারাজ।উপর থেকে মানুষ টা দেখতে আসলে যেমন ভিতর থেকে সেই মানুষটা একদম তার বিপরীত। এবার আমি যুবক-যুবতী ছেলে-মেয়েদের কথায় আসি,আমি মনে করি এখন কার সমাজে সব থেকে বেশি ডিপ্রেশন ফ্রাস্ট্রেশন যেটাই বলি না কেন সব বেশি এই যুবক-যুবতিদের মধ্যে। এই যেমন ধরুন,যে ছেলেটা একটু আগে তার অনেক দিন এর পুরনো হাঁসি মাখা মুখের ছবিটা ফেসবুকে পোষ্ট করলো,লোকের সামনে দেখায় সে অনেক হাসিখুশি। হাসি মাখা মুখ নিয়ে লোকের সামনে চলাফেরা করে, কে জানে কোন একটা কারণে তার চাকরি টা চলে গেছে, সে আর কোথায়ও চাকরি খুজে পাচ্ছে না..!এই মাত্র কয়েক মিনিট আগে যে মেয়েটা নীল রঙের শাড়ি পরে হাতে নীল রঙের চুড়ি কপালে লাল রঙের টিপ পরে ফেসবুকে ছবি আপ্লোড করলো, কেই-বা জানে গতরাত সে কান্না করে বালিশ ভিজিয়েছে কারো কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত মেজের পড়ে। এমন অনেক মানুষ এখন ও সমাজে অনেক বিরাজমান যারা কিনা শুধু মাত্র তাদের বাহ্যিক রুপ টা দেখিয়েই লোকের কাছে খুশি থাকার কারন। কিন্তু ভেতরে ভেতরে ডুকরে ডুকরে কান্না করার মতো অবস্থা।তাই তো বলি কারো হাসি মাখা মুখে দেখে ভাববেন না লোকটা মনে হয় অনেক সুখি, তার এই হাসিমাখা মুখের পেছনে হয়তো লুকিয়ে আছে এক অপ্রত্যাশিত কালো অধ্যায়। যা সে কাউকে বলতে চায় না।

people-821624_640.webp

Source

তাই আমাদের সবার উচিত জাজমেন্টাল না হওয়া। ও ওটা এখন কেন করলো..!এটা কেন করলো..!ওটা কেন করলো..!ওতো বাজে কেন করলো..!এই কথা গুলো বলে কাউকে বিশেষায়িত না করা। আমরা সবাই প্রতিনিয়ত ভালো থাকার লড়াই করেই যাচ্ছি। প্রকৃতির সাথে, সমাজের সাথে সর্বপরি আমাদের নিজের সাথে। যে যেমন ভাবে ভালো থাকতে চায় তাকে ঠিক তেমন ভাবেই ভালো থাকতে দেওয়া উচিত,কোন মানুষের ক্ষতি না করে নিজে ভালো থাকার চেষ্টা করার মাঝে আমি কোন ভুল খুজে পাই না।যখন আপনি একটা ভাঙ্গা মন নিয়ে প্রতিনিয়ত হাসিখুশি থাকবেন, সুখি থাকবেন,তখন কেউ আপনাকে সহজে নতুন ভাবে ভাঙ্গতে পারবে না।আর যখন আপনি ভাঙ্গা একটা মন নিয়ে কষ্টে থাকবে, তখন দেখবেন নতুন কেউ এসে আপনার আহত হৃদয় টা কে আরো আহত করে দিয়েছে। কারণ,আমারা মানুষেরা সব সময় মজা নিতে পছন্দ করে। এই জন্যই বলি,সুখে থাকতে হলে ভালো থাকার কোন বিকল্প নেই। ভালো থাকি বা না থাকি, ভালো থাকার অভিনয় করতে দোষের কিসের বলেন..?

আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন

আমার পরিচয়


1630010060468-01.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সপ্তম পর্বের অধ্যায়ন রত আছি। আমি ছবি আঁকতে এবং ফটোগ্রাফি করতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমাইট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



logo.gif


Sort:  
 3 years ago 

খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট লিখেছেন। আমরা মানুষরা আসলে সামনাসামনি যেমনটা দেখাই ভিতরে ঠিক এর বিপরীত। মানুষ চেনা খুব কঠিন। কেননা মানুষ মানুষকে সাহায্য করে আবার মানুষ মানুষকে ধোঁকা দেয়।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে

 3 years ago 

ভাই আপনি অসাধারণ একটা পোস্ট করেছেন। এবং কি এখানে আমি মনে করি কিছু শিক্ষণীয় বিষয় ছিল। হ্যাঁ আমরা মানুষ, মানুষ বলেই আমরা বিবেচিত। কারণ আল্লাহ আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে ফেরন করেছেন। কিন্তু আমাদের মাঝে কিছু অমানুষ আছে যে তাদেরকে চেনা খুব কঠিন। তবে ভালো মন্দ দুটো মিলিয়ে মানুষ, কিছু মানুষ আমাদের সাথে এমন ভাবে চলাফেরা করে তাদেরকে ছিনা খুব কঠিন। হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন বাস্তবতার সাথে চলতে গেলে অনেক হিসেব নিকেশ করে চলতে হয়। মানুষ চেনা বড় দায়। কারণ মানুষকে খেয়ে দেখা যায় না এটা কোন খাবার বস্তু নয়। তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমাদেরকে বিবেচনা করে একটা মানুষের ওজন মেপে তারপরে তার সাথে চলাফেরা করা। মানুষকে কষ্ট দিলে এবং কি অনেক বেশি ভালবাসলে বিনিময় আঘাত ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। যাই হোক আমি আপনার এতো কিছু বিশ্লেষণ করতে যাব না। আপনি অসাধারণ পোস্টটি লিখেছেন এবং অনেক গুছিয়ে লিখেছেন। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 3 years ago 

এত সুন্দর ভাবে বোঝার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

 3 years ago 
ভাইয়া ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে, "ডোন্ট জাজ এ বুক বাই ইটস কভার"। কথাটা যতটা না সত্যি ততটাই বাস্তব। আপনি খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আজকে বিস্তারিত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে এত সুন্দর করে লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। মন আপনার জন্য ভাইয়া।
 3 years ago 

আপনাকে ধন্যবাদ ভাই

 3 years ago 

জী ভাই আপনি একদম বাস্তব একটি বিষয় তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে।আসলে একজন মানুষের বাহিরের দিক দেখে তার ভিতরের অবস্থা আন্দাজ করা মোটেও ঠিক নয়।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে

বহুরূপী মানুষের রূপ দেখে তো চেনা যাবে না ভাই। চেনা যাবে তার কর্ম ও ব্যবহারে যথার্থই লিখেছেন ভাই।

 3 years ago 

একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই

 3 years ago 

ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আমি মনে করি একটি শিক্ষনীয় পোস্ট করেছেন আপনি। পৃথিবীর বুকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে এবং সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে প্রত্যেক মানুষের উচিত সর্বক্ষেত্রে নিজেদের মনুষ্যত্বের পরিচয় দেওয়া। মানুষ হয়ে কখনোই পশুর মত রূপ ধারণ উচিত নয়। আর বর্তমানে যেহেতু আমাদের পৃথিবী অনেক দূষিত হয়ে গেছে বিভিন্ন মন্দ মানুষের কারণে। তাই চলার পথে সঠিক মানুষকে সচেতনতার সাথে নির্ধারণ করতে হবে। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 61812.63
ETH 2432.97
USDT 1.00
SBD 2.63