অবিস্মরনীয় ভালোবাসা/পর্বঃ--০২ [benificiary ১০% @shy-fox]|
আজ - ১১ আষাঢ় | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- ছোট গল্প
- আজ ১১শ আষাঢ়, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
- শনিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে.....!!
আমরা সচরাচর সকলেই গল্প পড়তে অনেক বেশি ভালোবাসি। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও ঘরেও পড়তে অনেক বেশি ভালোবাসি আমার নিজের কয়েকটি গল্পের বই রয়েছে যখন অবসর সময় পাই তখনই আমি গল্পের বই গুলো নিয়ে বসে যাই। আর এই গল্প গুলোর মধ্যে ভালোবাসার গল্প পড়তে আমাদের সব থেকে বেশি ভালো লাগে। ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যে গল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের পুরনো স্মৃতি থাকলে সেগুলো জাগ্রত হয় খুব নিমিষেই। যাইহোক আমি আপনাদের মাঝে কয়েকদিন আগে অবিস্মরনীয় ভালোবাসার প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। প্রথম পর্বটি আপনারা সকলেই খুব চমৎকারভাবে পড়েছেন এবং অনেক সুন্দর একটি মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন যেটা দেখে আমি অনেক অনুপ্রাণিত হয়ে ছিলাম। আমি আপনাদের বলেছিলাম খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে অবিস্মরনীয় ভালবাসার দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করবো ।সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আমি আপনাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশাকরি প্রথমবারের মতো আপনারা দ্বিতীয় ছবি খুবই চমৎকার ভাবে পড়বেন এবং সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। তাহলে চলুন আর বেশি অপেক্ষা না করে গল্প শুরু করি।
প্রথম অবস্থা যখন দুটি মানুষ তাদের দুজনের হাত একত্র করে তখন সেই মুহূর্তে সত্যিই অনেক বেশী আনন্দদায়ক হয় মনে হয় এটাই পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর মুহূর্ত। এই সুন্দর মুহূর্তটা তারা সারা জীবন স্মৃতির পাতায় রেখে দিতে চায়। কিন্তু চাইলেই কি আর সব কিছু পাওয়া হয়...?? জীবনে অনেক কিছু আছে যেগুলো আমরা ইচ্ছে করলেও নিজের কাছে রাখতে পারি না কোন একটা সময় সেটা হারিয়ে যায়। হয়তোবা নিচ থেকে হারিয়ে যায় নয়তোবা কেউ জোর করে হারিয়ে যেতে তাকে বাধ্য করে। সমস্ত রকমের বাধ্যবাধকতা অতিক্রম করে যারা পাশে থাকে তারাই আসলে সত্যি কারের ভালবাসে। তুমি সত্যি কারের ভালোবাসা পাওয়াটা সত্যিই অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার এই রকম ভাগ্য সবার কপালে থাকে না। ভালোবাসা মানুষকে একটা সময় অনেক একাকিত্বের মাঝে নিয়ে যায় যে একাকীত্বে শুধুমাত্র সে এবং তার এক আকাশ পৃথিবী সমান দূরত্ব এটাই থেকে যায়।
প্রথম পর্বটি আমি শেষ করেছিলাম কনার বাবার মৃত্যু দিয়ে। বন্যার কারণে চারিদিকে নানা রোগব্যাধি দেখা দিয়েছিল সেই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল কনার বাবা ,যার কারণে তার বাবা মারা যায়। সে এবং তার মা তাদের নানী বাড়িতে অবস্থান করে যেহেতু তাদের ঘরবাড়ি বন্যার জলে ভেসে গিয়েছে। নিজস্ব বলতে তাদের শুধুমাত্র সেই সম্পত্তি টুকুই আছে কিন্তু যার কোনো চিহ্নমাত্র নেই। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শুধু অথৈ পানি এই পানির যেন শেষ নেই। কি করবে কোথায় সাথী কিছুই ভেবে পাচ্ছি না কনা এবং তার মা। এদিকে বন্যার পানি দিনে দিনে বেড়েই চলেছে চারিদিকে পানি থইথই করছে কোথাও একটু জায়গা নেই। কনকের ঠিক একই অবস্থা, তাঁদের যতটুকু জায়গা শুকনা ছিল বন্যার পানিতে সেটুকু জায়গা ডুবে গিয়েছে। খাবার নেই শুকনো পোশাক নেই বাড়িঘর নেই সবকিছু কেমন যেন একটা অন্যরকম অবস্থা হয়ে গিয়েছে সকলের। নিজ জায়গা থেকে কেউই তেমন একটা ভালো নেই সকলের মধ্যেই শুধু হাহাকার কান্না এই কান্না যেন শেষ হবার নয় প্রতিনিয়ত দিনকে দিন এই কান্না বেড়েই চলছে। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রামের মানুষজন কখনোই ভাবেনি যে হঠাৎ করে এরকম বন্যা এসে তাদের জীবনকে নিঃস্ব করে দেবে। তাদের এই দুঃখের কষ্টের দিনে তেমন কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি। দুঃখে কষ্টে তারা জীবন অতিবাহিত করছে আর শুধু সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছে তাদের সব রকম দুঃখ দূর করার জন্য।
অনেকটা দিন অতিবাহিত হয়ে যায় কনা এবং কনক এই দুজনের সাথে কারোরই তেমন একটা দেখা হয়ে ওঠেনা। তবে তাদের দুজনে দুজনকে মনে রেখেছে খুব গভীরভাবে কারণ তারা দুজন দুজনের প্রতি এতটাই আসক্ত ছিল যে কেউ কাউকে ছাড়া একটা দিন অতিবাহিত করবে এমনটা কখনও ভাবেনি। তোদের এই দুঃখ কষ্টের দিনে কেউ তাদের পাশে নেই কেউ কাউকে দেখতে পাচ্ছে না। দুজনেই দুজনের কথা ভেবে অনেক দুঃখে কষ্টের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করছে। বিকেল হলেই তাদের দুজনের সেই সুন্দর মুহূর্ত গুলোর কথা মনে পড়ে আবার সকাল হলে তাদের স্কুলে যাওয়ার মুহূর্তের সেই কথাগুলো মনে পড়ে। কিন্তু কিবা করার আছে তাদের তো কিছুই করার নেই কারণ প্রকৃতিক দুর্যোগ তাদেরকে অনেকটা দূরে ঠেলে দিয়েছে। চাইলেও তারা আর হয়তোবা একত্রে বসে গল্প করতে পারবে না। প্রায় ছয় মাস পরে বন্যার পানি একদম শুকিয়ে গিয়েছে। মাটি থেকে সবুজ ঘাস মাথা গজিয়ে উঠেছে চারিদিকের প্রকৃতি পরিবেশ সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। এ যেন এক অন্যরকম অনুভুতি চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। সব মিলিয়ে এই গ্রামটি আবার এক নতুন বর্ণ ধারণ করেছে তবে এবারের নতুন গ্রামটি আগেরবারের গ্রামের থেকে অনেক বেশি সুন্দর। কিরকম সুন্দর মুহূর্তে কনা এবং কনক এই দুজন একসাথে নেই। এদিকে বর্ণ যখন শেষ হয়ে যায় তখন কোন কণার অনেক রকম খোঁজ করেছে কিন্তু সে কনার কোনো খোঁজ পায়নি। সে অনেকের কাছ থেকেই অনেক কিছু জেনে শুনে কনার নানিদের বাসায় খোঁজ করে কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পায় সেখানে কোনো ঘরবাড়ি কিচ্ছু নেই। অনেকটা দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আবার তাদের নিজের গ্রামে চলে আসে। নিজ গ্রামে এসে কোন আবার একটা স্কুলে ভর্তি হয়। সময়ের ব্যবধানে কনক কণাকে ভুলে যায়। এদিকে দেখতে দেখতে কনক এবার দশম শ্রেণীর ছাত্র। সে লেখাপড়ায় তেমন একটা ভালো নয় বলতে পারেন সে এখন অনেকটা উড়নচন্ডী হয়ে গিয়েছে সব সময় এলাকায় ঘোরাঘুরি মারামারি এগুলোই করে বেড়া। অপরদিকে কনা তার মাকে নিয়ে অন্যত্র একটা গ্রামে চলে গিয়েছে। এই গ্রামে চলে যাওয়ার কারণ হলো বন্যার স্রোত তাদের নানাবাড়ি ভেসে গিয়েছে তাদের দাঁড়ানোর মত আর কোন জায়গা নেই। তাই তারা অন্য একটি জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে কিন্তু কোন সেই জায়গাটি সম্পর্কে অবগত নয়।
তবে এখনো কনকের মাঝেমাঝে কণার কথা মনে পড়ে। যখন সে বিকেল বেলা নদীর পাড়ে একা মনে বসে থাকে তখন তার কনার কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে যায় সেই পুরনো দিনগুলো মনে পড়ে যায় সেখানেই তারা দুজন অনেকটা সময় অতিবাহিত করেছে। কিন্তু আজ সময়ের ব্যবধানে তারা দুজন দুজনকে হারিয়ে ফেলেছে। তারা কেউই কাউকে কখনো ছেড়ে যেতে চায় না কিন্তু প্রকৃতি তাদের কে দূরে সরিয়ে দিয়েছে এটা ভেবে কনক নিজেকে সান্ত্বনা দেয় আর মনে মনে ভাবে হয়তো বা একদিন তার সঙ্গে তার দেখা হবে। তার সঙ্গে তার হঠাৎ করেই দেখা হয়ে তারা আবার নতুনভাবে পরিচিত হয়ে জীবনটাকে নতুনভাবে শুরু করবে। এদিকে কনা তেমন একটা ভালো নেই কারণ তার মায়ের অবস্থা তেমন একটা ভাল না। তার মা প্রায় সবসময় অসুস্থ থাকে তার বাবা মারা যাওয়ার পরে তার মা তার বাবার জন্য সব সময় শুধু কান্না করত। কান্না করত এটা ভেবে যে আমার একটি মেয়ে একে নিয়ে আমি কি করব কোথায় যাব কিভাবে বিয়ে দেব এসব কিছু চিন্তা করে করেই তার মা আজ অসুস্থ হয়ে গিয়েছে। অসুস্থ হবারই কথা মাথার ওপরে একটা যুবক মেয়েকে দেখে বাবা মারা গিয়েছে। মা ইচ্ছা করলেই সেই মেয়েকে অন্য কোনো অপরিচিত ছেলের হাতে তুলে দিতে পারবে না কারণ সকল বাবা মা তাদের সন্তানদের নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকে। তার মা কন্যাকে নিয়ে এতটাই চিন্তিত থাকতো যে সেটা ক না মাঝে মাঝে বুঝতে পারত। কণা মাঝে মাঝে তার মাকে এটা বলে সান্তনা দিব যে, সৃষ্টিকর্তা কাউকে ফেলে দেয় না তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না সব কিছু একদিন ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু মা সেটা মানতে নারাজ। অনেকটা দিন কণার মা বিছানায় অসুস্থ থাকার পরে অবশেষে একটা দিন কসণার মা ও মারা যায়। এদিকে কনা এখন একদম একলা হয়ে গিয়েছে। আপন বলতে শুধুমাত্র তার মামা এবং তার মামি, এই দুজনের নিয়েই তাদের ছোট্ট একটি সংসার.......!!!
এখানেই আমি আমার অবিস্মরনীয় ভালোবাসার দ্বিতীয় পর্ব শেষ করছি। খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে বাকি পর্বগুলো শেয়ার করব ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ধৈর্য ধারণ করুন। সবাই যে যার জায়গা থেকে সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং পরিবারের সাথেই থাকুন। সেই সাথে প্রিয় মানুষটিকে হ্যাপি রাখার চেষ্টা করুন সবসময়। ধন্যবাদ সকলকে....!!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প |
---|---|
বিষয় | অবিস্মরনীয় ভালোবাসা,পর্ব দ্বিতীয় |
গল্পের কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
সবসময় সাপোর্ট করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ
ভাই আপনি যথার্থই বলেছেন ভালোবাসার গল্প পড়লে আমাদের অনেক পুরানো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে। বিশেষ করে দুজন দুজনের থেকে দূরে থাকে এই বিষয়টি কাকন প্রকৃতিকে দোষ দেয় যা আমাকে ভীষণভাবে ব্যথিত। করেছে ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প উপহার দেওয়ার জন্য।
আমাদের সবার জীবনে কিছু না কিছু স্মৃতি আছে যে স্মৃতি গুলো আমরা যখন সে রকম কিছু দেখি তখন সেগুলো আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে তখন নিজের কাছে খুব খারাপ লাগে। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সমস্ত প্রতিকূলতার মাঝেও যে ভালবাসা টিকে থাকে সেটাই তো রিয়েল লাভ। বস্তাবতা বড়ই কঠিন সেখানে যাদের নুন আনতে পানতা ফুরোয় বেলা শেষে ভালবাসা শুধু স্বপ্ন দেখার খোরাক মাত্র। লিখতে থাকুন । ধন্যবাদ।
কিছু কিছু ভালোবাসা আছে যেগুলো শত জনমের হলেও টিকে থাকে আবার কিছু কিছু ভালোবাসা আছে যেগুলো খুব নিমিষেই হারিয়ে যায়। আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে পর্ব আকারে গল্পটুকু সম্পূর্ণ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
অনেক ভাল লাগলো আপনার গল্পটা পড়ে, বর্তমান পরিস্থিতির সাথে মিলে যাচ্ছে, নাজানি এমন গল্প সিলেট বাঁশিদের কত জনের সাথে ঘটে গেছে। কণার ভাগ্যের চাকা কী ঘুরবে?
বর্তমান পরিস্থিতির কে সামনে রেখে আমি এই গল্পটি সাজিয়েছি কারণ বর্তমান সময়ে এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন সবাই হবে এবং সেই আলোকে আমি গল্পটি সাজাবো ভবিষ্যতে আশা করছি। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
প্রথম পর্বটি যেরকম রহস্য দিয়ে শেষ করেছিলেন সেরকম দ্বিতীয় পর্বটিও আপনি অনেক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শেষ করলেন। এর পরবর্তী পর্বগুলো আমরা আপনার কাছ থেকে তাড়াতাড়ি চাই ভাই।। আপনার জন্য দোয়া রইল এবং এরকম পোস্ট মাঝে মাঝে আমাদের উপহার দিবেন