হঠাৎ রাত্রিবেলা কফি খাওয়ার উদ্দেশ্যে
আজ - ২৪ বৈশাখ| ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | গ্রীষ্মকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- রাত্রিবেলা কফির নেশায়
- আজ ২৪শ বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ সন্ধ্যা সবাইকে......!!
আমরা সকলেই কফি খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি, আমরা অনেকেই আছি যারা চায়ের থেকে কফি অনেক বেশি পছন্দ করি। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে চা অনেক বেশি ভালো লাগে। অনেকেই বলতে পারেন আমি একজন চা প্রেমী মানুষ কফি মাঝে মাঝে শখের বসে ভাই ব্রাদারের সঙ্গে কোথাও ঘুরতে গেলে খাওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সকাল এবং সন্ধ্যে এই দুটো সময়ে বাজারে গেলেই চা খাওয়া হয়। চা খেতে ভালো লাগলেও মাঝে মাঝে কফি খাওয়ার নেশা উঠে যায় আর এই নেশার জন্য মাঝে মাঝে কফি খাওয়া হয়। প্রতিদিনের মতো সেদিন বিকেলবেলা ঘুম থেকে উঠে আসরের নামাজ-কালাম পড়েই বাজারের উদ্দেশ্যে বের হব বলে ভেবে রেখেছিলাম। রীতিমতো ঘুম থেকে উঠে নামাজ-কালাম পড়ে স্কুলের পাশে গিয়ে বসলাম মূলত আমাদের প্রথম মিলনমেলা সেখান থেকেই শুরু হয়। যাদের সঙ্গে প্রতিটা দিন প্রতিটা মুহূর্ত কাটাই তারা একে একে করে সেই স্কুলের ফিল্ডে চলে আসছিল। বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম খুবই ভালো লাগছিল।
এভাবেই কেটে গেল অনেকটা সময় দূর থেকে মোয়াজ্জিনের মাগরিবের আজান ভেসে আসছিল তখনই ভাবলাম সন্ধে হয়ে গিয়েছে এখন আর এখানে বসে থাকা যাবে না। আমরা চারজন মানুষ ছিলাম আর বাইক ছিল দুটো। যেহেতু এক ভাইকে দুজন করে ওঠা যাবে তাই তাড়াতাড়ি করে চলে যাই বাজারে আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলাম বাজারের মসজিদে গিয়ে মাগরিবের নামাজ পড়বো। যথারীতি বাজারে গিয়ে মাগরিবের নামাজ পড়ে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় আমরা যেখানে প্রতিদিন বসে থাকি সেখানেই বসে থাকলাম বসে বসে প্রতিদিনের মতোই আড্ডা দিচ্ছিলাম। আড্ডা দিতে দিতে কখন যে রাত্রি সাড়ে আটটা বেজে গিয়েছে বসতেই পারিনি। এর মাঝে কয়েক কাপ চা খাওয়া হয়ে গিয়েছে। হঠাৎ আমাদের ভেতর থেকে একজন বলল চা খেতে খেতে আর ভালো লাগছে না একটু কফি হলে মন্দ হয় না।
এ কথা শুনে আর কেউই স্থির থাকতে পারলো না আসলে আমাদের মধ্যে কেউ কোন কথা বললে সেটা যদি সবার কাছেই ভালো লেগে যায় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা পূরণ করতেই হবে এরকম অনেক বার হয়েছে আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়। সবাই মিলে তাড়াহুড়ো করে বাইক নিয়ে ছুটলাম কফি খাওয়ার উদ্দেশ্যে।
আমাদের বাজারও কফি পাওয়া যায় তবে আমরা আমাদের বাজার থেকে কফি এমন একটা খাই না কারণ এখানকার কফি তেমন একটা সুস্বাদু নয়। কফি খেতে হলে আমাদেরকে যেতে হবে তিন থেকে চার কিলো দূরে।
তিন থেকে চার কিলো দূরে হলেও সমস্যা নেই যেহেতু বাইক আছে তাই যেতে তেমন একটা বেশি সময় লাগবে না। রওনা হয়ে গেলাম কফি খাওয়ার উদ্দেশ্যে। আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ ছিল চারিদিকে একদম ঝলমলে দেখতে খুবই সুন্দর দেখাচ্ছিল সেই সাথে বাইকের হলুদ আলোয় চারিপাশ মুখরিত হয়ে যাচ্ছিল। আমরা পথে খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম। তিন থেকে চার কিলো পথ আমরা বাইকে করে সেই জায়গাতে গিয়ে পৌঁছাই। মূলত এখানে একটি ছোট্ট পার্ক তৈরি করে রাখা হয়েছে এই ছোট্ট পার্কে ভেতরে খুবই সুন্দর সুন্দর ছোট ছোট ঘর তৈরি করে রাখা হয়েছে যেখানে বসে অনেকেই কফি খেয়ে থাকে।
এই পার্কটি একদমই আমাদের বাসার পাশে যে নদীটি আছে সেই নদী ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে,মূলত নদীর পাশেই ছোট্ট একটি পার্ক বিকেল বেলা থেকে অনেক রাত অব্দি এখানে মানুষের ভিড় থাকে। তবে কোন উৎসব উপলক্ষে এখানে ঘোরাফেরা করাটা অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে কারণ, সেই সময়টাতে এখানে প্রচণ্ড রকম ভিড় থাকে তবে আমরা যেহেতু রাত্রিবেলা গিয়েছিলাম তখন তেমন একটা ভিড় ছিল না। যার কারনে রাত্রিবেলা সেখানে গিয়ে অনেক বেশি ফাঁকা ফাঁকা মনে হচ্ছিল।
আমরা যখন যাই তখন দেখতে পাই যে এই ছোট্ট পার্কের ভেতরে অনেক সুন্দর সুন্দর লাইটিং করা হয়েছে যার কারণে চারিদিকের পরিবেশটা দেখতে আরো বেশি সুন্দর দেখাচ্ছিল। এই এই পার্কের ভেতরে ছোট্ট একটি পুকুর আছে ছোট বলতে এই পুকুরটা লম্বার দিক থেকে অনেক বড় কিন্তু প্রস্থ একদমই চিকন এখানকার প্রতিপক্ষ মনে হয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই পুকুরের মধ্যে ছোট্ট নৌকার ব্যবস্থা করবে আর মানুষ এই নৌকাতে উঠবে টিকিট কাটবে এতে করে তাদের ব্যবসা অনেক বেশি জমজমাট হবে। এটা ভেবেই তারা হয়তোবা ছোট্ট রাজবংশী নৌকা কিনে নিয়ে এসেছে যখন আমরা সেখানে গিয়েছিলাম তখন দেখতে পাচ্ছিলাম যে নৌকা গুলো কিনে নিয়ে এসে সেগুলো রং করা হচ্ছে।
দুটো নৌকো তারা কিনে নিয়ে এসেছিল একটা সেই পুকুরে দেখলাম আরেকটা রং করে প্রস্তুত করছে দেখতে খুবই চমৎকার দেখাচ্ছে। এটা দেখতে একদম রাজহাঁসের মতোই তবে ভেতরে চারজন লোক বসে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে অনেকক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রং করার দৃশ্য দেখছিলাম আর সেখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনেক রকম গল্প করছিলাম খুবই ভালো লাগছিল সেই সময়টাতে।
অনেকটা সময় গল্প করার পরে এবার আমরা একটি ছোট্ট গোল ঘরের মধ্যে গিয়ে বসি। আপনাদেরকে আমি অনেক আগেই বলেছিলাম যে এখানে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে রাখা হয়েছে অতিথিদের জন্য যারা আসবে তারা এখানে বসে বসে চা কফি এগুলো খাবে এই ছোট্ট উদ্যোগ আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। রাত্রিবেলা যেহেতু আমরা গিয়েছিলাম তাই সেখানে লাইটিং এর ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল দেখতে অনেক বেশী সুন্দর দেখাচ্ছিল। নীল রংয়ের লাইটিং ব্যবহার করেছে পরিবেশটা সত্যিই অনেক বেশি আকর্ষণীয় লেগেছিল আমার কাছে। সেখানে বসে বসে আমরা কফি খাচ্ছিলাম আর একে অপরের সঙ্গে গল্প করছিলাম অনেক রাত অবধি আমরা সেখানে বসে ছিলাম আসতেই মন চাচ্ছিল না দখিনা বাতাস বইছিল শরীরে যখন সেই দখিনা বাতাস এসে লাগছিল তখন নিজের মধ্যে এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছিল।
অনেকটা রাত অব্দি বসে থেকে থেকে যখন রাত্রি সাড়ে এগারোটা বেজে গেল তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম অনেক রাত তো হলো এবার বাসায় ফিরতে হবে। কফির বিল দিয়ে আমরা অতি দ্রুত সেখান থেকে বাইক নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করি। বাসায় পৌঁছাতে আমাদের বেশি সময় লাগে নি তবে সেখান থেকে আসার পরে আবার আমরা আমাদের সেই স্কুল মাঠে গিয়ে বসি সেখানে বসে বসে আরও আধাঘন্টা গল্প করে তারপরে বাসায় গিয়েছিলাম।
সেদিনের সেই রাত্রিবেলার আড্ডাটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল অনেকদিন পরে এরকম সবাই মিলে আড্ডা দিয়েছিলাম।, যেহেতু অনেকদিন পরে এরকম ছোট্ট একটি আড্ডা দিয়েছিলাম তাহলে ব্যাপারটা বুঝতেই পারছেন যে কতটা সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম।
এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের খুবই ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, আবার দেখা হবে নতুন কোন পোষ্টের নতুন ভাবে নতুন রূপে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে.....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | সাধারণ লেখালেখি |
---|---|
বিষয় | হঠাৎ রাত্রিবেলা কফি খাওয়ার উদ্দেশ্যে |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
টুইটার লিংক:---
https://twitter.com/jibon472?t=J-a_WcZR3lpy9kIzLgd9Aw&s=09
সত্যি ভাইয়া এমন কফি খাওয়ার উদ্দেশ্যে গেলে বেশ ভালোই লাগে। আর আপনারা তো বাইক নিয়ে গিয়েছেন চার কি.মি.।আসলে বাইক নিয়ে এভাবে ঘুরতে ও বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বেশ ভালোই লাগে।ইস এভাবে যদি মাঝে মাঝে ঘুরতে পারতাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মেয়েদের ক্ষেত্রে যদিও মাঝরাতে এরকম ঘোরাঘুরি অনেকটাই কষ্টসাধ্য তবে এরকম সুন্দর মুহূর্ত যদি অতিবাহিত করতে পারেন তাহলে অবশ্যই ভালো লাগবে।
আপনার মত আমারও কফির থেকে চা খেতে বেশি ভালো লাগে। তবে মাঝে মধ্যে কফি হলে মন্দ লাগে না। আপনার মত নিয়মিত চা খাওয়া হয় না। তবে সময় পেলে চা খাই। আপনারা তো দেখছি অনেক রাত অব্দি গল্প গুজব করেন। সবাই মিলে মনে হয় অনেক মজা করেন তাই না। সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বরাবরই আমার কাছে চায়ের স্বাদ অনেক বেশি ভালো লাগে তাই আমি একজন চা প্রেমী মানুষ বলতেই পারেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
কয়েকদিন হল পূর্ণিমার চাঁদ ছিল আকাশে। আর এরকম সময়ে বন্ধুরা মিলে একসাথে কোথাও গিয়ে আড্ডা দেওয়া এবং তার সাথে চা কফি খাওয়াটা দারুন একটা অনুভূতির সৃষ্টি করে। লেখাগুলো পড়ছিলাম আর ভার্সিটি লাইফটাকে ভীষণ মিস করছিলাম ভাই। তবে দূরত্ব খুব একটা ছিল না আপনাদের ক্ষেত্রে। আর জায়গাটাও বেশ ভালো লেগেছে।
আমার এই লেখা পড়ে আপনি ভার্সিটি লাইফটাকে অনেক বেশি মিস করেছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলেই এরকম সুন্দর মুহূর্ত যে কেউ অতিবাহিত করতে চাইবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।