"পিতা বনাম পূত্রগং"পর্বঃ-৪৯//নাটক রিভিউ
আজ--১০ অগ্রহায়ণ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | হেমন্তকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- নাটক রিভিউ (পিতা বনাম পূত্রগং--৪৯)
- আজ ১০ম অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- শনিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ বিকেল সবাইকে......!!
ছবিঃ- ইউটিউব থেকে স্কিনশট নেওয়া।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | পিতা বনাম পূত্রগং । |
---|---|
পরিচালনা | সকাল আহমেদ। |
প্রযোজক | কাজী রিটন |
রচনা | বৃন্দাবন দাশ |
গল্প | রমজান আলী |
আবহ সংগীত | অধ্যায়ন ধাড়া (কলকাতা)মেহেদি হাসান তামজিদ |
চিত্রনাট্য | শামসুল আলম লেলিন। |
অভিনয়ে | মাসুম বাসার,আজিজুল হক,নাদিয়া আহমেদ,শাহনাজ খুশি,প্রাণ রায়,আরফান আহম্মেদ,মৌসুমি হামিদ,শিরিন আলম,ইকবাল হোসেন,আশরাফুল আর্শিষ,শেলি আহসান,সৌম,সেতু,তৌহিদুল ইসলাম তায়েব এবং চঞ্চল চৌধুরী,সহ আরও অনেকে । |
দৈর্ঘ্য | ২০ মিনিট ০৫ সেকেন্ড |
পরিবেশনায় | Maasranga TV Official |
মুক্তির তারিখ | ০৯-ই অক্টোবর, ২০২২ ইং |
ধরন | সামাজিক,বাংলা ড্রামা সিরিয়াল |
পর্ব | ৪৯ |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনীঃ-
পিতা বনাম পুত্রগং নাটকের ৪৯ পর্বের প্রথম অংশ লক্ষ করলে দেখা যায় যে, বাসার সাহেবের মেয়ের জামাই তাদের বাসায় এসে হাজির হয়েছে এবং সে যে বরাবরই বাসার সাহেবের সম্পত্তির উপর চোখ রাখছে সেটা লক্ষ্য করলেই দেখা যায়। বাসার সাহেবের জামাই সে তার সন্তানদেরকে এমন ভাবে মাথার মধ্যে কুবুদ্ধি প্রবেশ করাচ্ছে যে তারা যেন তার বাবার সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে মারামারি শুরু করে যাতে করে সে নিজের সম্পত্তি নিজের করে পায়। হঠাৎ করেই বাসার সাহেবের ছোট ছেলের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং সে খুবই মন খারাপ করে বসে ছিল আর এ ব্যাপারটা সে জানতে চায়। বাসার সাহেবের ছোট ছেলে এদিকে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অনেকটাই দুঃখ পাচ্ছে আর সেই সুযোগটা তার দুলাভাই কাজে নিয়েছে। সে তাকে বলে তোর কোন চিন্তা নেই আমি তোদেরকে বিয়ে দিয়ে দেব। কিন্তু বাসার সাহেবের ছোট ছেলে এমন ভাবে তাকে বলে যে সেই মেয়েটা তাকে কোনভাবেই এখন আর ভালোবাসে না কিন্তু সে শুধু নিজেই তাকে ভালোবেসে যাচ্ছে। এই ব্যাপারটা সত্যিই অনেক বেশি কষ্টকর।
এরপরের অংশের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, নাদিয়া এবং চঞ্চল চৌধুরী একটা জায়গায় বসে রয়েছে মূলত নাদিয়া অনেক বেশি চিন্তিত কারণ গত পর্বে আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন যে শাহনাজ খুশি তার কাছে গিয়ে জানতে চেয়েছে তারা পালিয়ে বিয়ে করবে কিনা। নাদিয়া চঞ্চল চৌধুরীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাই যে সে শাহনাজ খুশির কাছে কিছু বলেছে কিনা কিন্তু চঞ্চল চৌধুরী তাকে এমন ভাবে কিছু কথা শোনায় তাতে মনে হচ্ছে যে চঞ্চল চৌধুরী কিছু বলেনি। কিন্তু বাস্তবিকভাবে তো চঞ্চল চৌধুরী শাহানাজ খুশি কে এ কথা বলেছিল। এখানে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে চঞ্চল চৌধুরীর নাদিয়ার ব্রেনওয়াশ এমনভাবে করেছে যে নাদিয়া চঞ্চল চৌধুরীর প্রেমে একদম মাতোয়ারা হয়ে গিয়েছে।
আসলে মেয়েরা কখন যে কাকে ভালোবাসে সেটা কেউ বুঝতেই পারেনা। একটা সময় এই নাদিয়া আরফানকে কিছুটা পছন্দ করত এবং ভালবাসত আর চঞ্চল চৌধুরীকে দেখতেই পারত না। কিন্তু বর্তমান সময়ে একদম পুরোপুরি উল্টা হয়ে গিয়েছে, আর ভালবাসলে মানুষ যে অন্ধ হয়ে যায় সেটা নাদিয়াকে দেখলেই বোঝা যায়। সে এখন অনেকটাই অন্ধ হয়ে গিয়েছে চঞ্চল চৌধুরী তাকে যখন যা বলে সে সেটাই বিশ্বাস করে। এ থেকেই বোঝা যায় আসলেই ভালোবাসা অন্ধ।
ইতোমধ্যেই আপনারা জানেন যে বাসার সাহেবের মেজ ছেলে একটা মোটরসাইকেল কিনার জন্য তার বাবার কাছে অনেকবার গিয়েছে। মূলত মোটর সাইকেলের প্রতি এখন তার অনেক ভালোবাসা কাজ করছে কারণ সে এটা বিশ্বাস করে যে যদি একটা মোটরসাইকেল থাকে তাহলে মেয়েরা তাকে বিয়ে করতে চাইবে। একটা ছেলে বিয়ে করার জন্য যে এত কিছু করতে পারে সেটা বাসার সাহেবের ছেলেদের না দেখলে বোঝা যায় না তারা বিয়ে করার জন্য যে কত কিছু করছে সেটা আপনারা হয়তোবা বুঝতেই পারছেন। সে বরাবরের মত তার বাবার কাছে গিয়ে মোটরসাইকেল কেনার ব্যাপারে টাকা চায় কিন্তু বাসার সাহেব তো এক কথার মানুষ সে বরাবরই সেটা না করে দিয়েছে।
ছোটবেলায় যখন বাবা-মার কাছে কিছু চাওয়া হতো তখন আমরা কত কাকুতি মিনতি করে সেটা চাইতাম। এ পর্যায়ে এসে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বাসার সাহেবের মেজো ছেলে তার কাছে মোটরসাইকেল কেনার জন্য যে রকম ভাবে টাকা চায় মনে হচ্ছে যে যেন ছোট একটা বাচ্চা তার বাবার কাছে টাকা চাচ্ছে। কিন্তু বাসার সাহেব টাকা দিতে রাজি না হয় সে অনেক বেশি রেগে যায়। রাগ হওয়ারই কথা, ছেলেটা বিয়ে করতে চায় বিয়ে দিতে চায় না আবার একটা মোটরসাইকেল কিনে যাচ্ছে সেটাও কিনে দিচ্ছে না। আসলে বাসার সাহেব একজন কৃপণ টাইপের মানুষ।
বাসার সাহেবের ছোট ছেলেই তো মধ্যে একটা মাথায় অন্যরকম বুদ্ধি চিন্তা-ভাবনা করেছে তার দুলাভাইয়ের কথা শুনে। তার দুলাভাইয়ের কথামতো সে তার প্রেমিকাকে একটা জায়গায় ডেকে নিয়ে গিয়ে তাকে ইমোশনাল ভাবে বলে যে তার সঙ্গে বিয়ের আগে সিনেমা দেখতে যাবে যদিও প্রথম অবস্থায় সেই মেয়েটা রাজি ছিল না কিন্তু তার অনেক জোরাজুরিতে অবশেষে রাজি হয়েছে। আসলে এখন এটাই দেখার বিষয় যে বাসার সাহেবের জামাই তার ছোট ছেলেকে সেই প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে দেয় কিনা। এবং সেই মেয়েটা তার সঙ্গে সিনেমা দেখতে যাবে কিনা এ ব্যাপারটা নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুবই চিন্তিত। যদি সিনেমা দেখতে যাই তাহলে হয়তো বা তাকে জোরাজুরি করে বিয়ে করতে চাইবে কিন্তু মেয়েটা কি আসলেই তাকে বিয়ে করবে..??
এর পরের অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বাসার সাহেবের ছোট স্ত্রী এবং চঞ্চল চৌধুরী একটা জায়গায় তারা বসে আছে আবার বাসার সাহেবের ছোট স্ত্রী খুবই কান্নাকাটি করছে কারণ তার মেয়ে তার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করেছে। যদিও বাসার সাহেবের মেয়েকে দেখে সকলেই একটু একটু ভয় পায় কিন্তু মৌসুমী হামিদ কোনোভাবেই তাকে ভয় পায় না সে মূলত তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে সকল কিছু কিন্তু বাসার সাহেবের মেয়ে সেটা কোনোভাবেই বুঝতে পারছে না। কিন্তু বাসার সাহেবের মেয়েও বর্তমানে সম্পত্তির লোভে অনেকটাই অন্ধ হয়ে গিয়েছে সে তার বাবাকে অনেক রকম ভাবেই শাসিয়েছে কিন্তু বাসার সাহেব তো ভয় পাওয়ার মানুষ নয়।
সম্পত্তির জন্য যে সন্তানেরা বাবা-মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এবং বাবা-মাকে ছেড়ে চলে যায় এটা পৃথিবী সূচনা লগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত রয়েছে। এবং বাস্তবেও এটা থাকবে কারণ একটা নির্দিষ্ট সময় পরে মানুষ সম্পত্তির মোহে অন্ধ হয়ে যায়। কে বাবা কে মা আর কে বা ভাই বোন এটা কেউ কখনো খোঁজ নেয় না সম্পত্তি মানুষকে নিঃশেষ করে দেয়, ঠিক তেমনিভাবে সম্পত্তি মানুষকে, মানুষ থেকে অমানুষ করে তোলে।
এখন এটাই দেখার বিষয় যে সম্পত্তির লোভে করে বাসার সাহেবের মেয়ে তার সঙ্গে আসলে কেমন ব্যবহার করে সেই সাথে তার ছেলেরা সঙ্গে কেমন ব্যবহার করে। যদিও বাসার সাহেবের কোন সন্তানই এখন তাকে তেমন একটা দেখতে পারে না বরাবরই তারা বাবার উপর অনেক বেশি রাগান্বিত।
এটাই ছিল আমার আজকের পিতা বনাম পুত্রগং নাটকের ৪৯ পর্বের রিভিউ। আশা করছি এই রিভিউটা আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
শিক্ষণীয় দিক-
পিতা বনাম পুত্রগণ নাটকটি মূলত একদম বাস্তবতা অবলম্বনে নির্মিত করা হয়েছে। অনেক আগে গ্রাম অঞ্চলের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে পিতা মাতারা তাদের সন্তানদেরকে বিয়ে দিতে মোটেও চাইত না। মূলত তারা বিয়ে দিতে চাইতো না কারণ তারা ভাবতে হয়তো অন্য ঘরের মেয়েরা সংসারে আসলে তারা সংসারটা নষ্ট করে দেবে বা তাদের ছেলেরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। কিন্তু ছেলেদেরকে বিয়ে না দিলে তারা যে কতটা উতোলা হয়ে পড়ে সেটা এই নাটকটা দেখলে বোঝা যায়। নাটকের মধ্যে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বিয়ে করার জন্য বাসার সাহেবের পাঁচ সন্তান খুবই উৎফুল্ল কিন্তু বাসার সাথে তাদেরকে বিয়ে দিচ্ছে না। মূলত এই নাটকের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত বয়সে বিয়ে না দিলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
ব্যক্তিগত মতামত-
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সকাল আহমেদ স্যারকে এত সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। পিতা বনাম পুত্রবাগ নাটকের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি এবং শিখছি। আমার মনে হয় এটা একটা বাস্তবধর্মী নাটক যেটা কিনা বর্তমান সময়ের সঙ্গেও কিছুটা মিল রয়েছে। বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা কিনা সন্তানদেরকে দিয়ে দেয় না কিন্তু তার সন্তানেরা বাবা মার কাছে বলতেও পারে না যে তারা বিয়ে করবে। এটাই মূলত নাটকের মূল বিষয়বস্তু। আমি মনে করি এই নাটকটি সকল পিতা-মাতার দেখা উচিত এতে করে তারা এই নাটকের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে।
ব্যক্তিগত রেটিং-
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | নাটক রিভিউ |
---|---|
বিষয় | পিতা বনাম পূত্রগং (৪৯ তম পর্ব) |
রিভিউ এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনি খুবই সুন্দর একটি পারিবারিক নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন। আপনার রিভিউটি পড়ে আমার বেশ ভালো লেগেছে। যদিও এই নাটকের কোন পর্ব আমি দেখিনি। তবে রিভিউ এত ভালো লেগেছে যে সময় পেলে পর্বগুলো একে একে দেখব।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
যেহেতু আপনি এই নাটকটি এখন পর্যন্ত দেখেননি তাই আমি আপনাকে বলতে চাই অবশ্যই এই নাটকটা দেখবেন খুবই ভালো লাগবে বলে আমি আশা রাখি। এই নাটকটা তো অনেক কিছু শেখার আছে নাটকটা আসলেই অনেক বেশি শিক্ষনীয়। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।