আজ--১৫ পৌষ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | শীতকাল|

আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

তো চলুন শুরু করা যাক...!

শুভ বিকেল সবাইকে......!!

ছবিঃ- ইউটিউব থেকে স্কিনশট নেওয়া।

source

নাটকের কিছু তথ্য

নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনীঃ-

পিতা বনাম পুত্রগং নাটকের ৫৪ পর্বের প্রথম অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে হঠাৎ করেই নাদিয়ার সঙ্গে আরফানের দেখা হয়। অনেকদিন পরে নাদিয়ার সঙ্গে আরফানের দেখা হয়েছে নাদিয়া যদিও আরফানের সঙ্গে খুব একটা বেশি কথা বলতে চায় না, কিন্তু আপনারা হয়তোবা অনেকেই জানেন যে নাটকের প্রথম অবস্থায় নাদিয়া আরফানকে অনেক বেশি পছন্দ করত এবং ভালোবাসতো বটে। কিন্তু কোন একটা কারণে নাদিয়া এখন চঞ্চল চৌধুরীকে অনেক বেশি ভালোবাসে। নাদিয়া কেন তাকে ভালোবাসে না একথা জিজ্ঞেস করার জন্যই আরফান নাদিয়ার কাছে যায় কিন্তু নাদিয়া তাকে খুব ভালোভাবে পরিষ্কারভাবে বলে দেয় যে সে আর তাকে এখন ভালোবাসে না আগেও কখনো ভালোবাসিনি।

মেয়েদের আসলে এটাই এক সমস্যা এরা এমন একটা ভাব করে থাকবে যে পরবর্তীতে যখন সেই ছেলেটা তাকে জিজ্ঞেস করবে যে তাহলে আমাদের মধ্যে কি কখনো ভালোবাসা ছিল না..? ঠিক তখনই সেই মেয়েটা বলবে যে আমি কি কখনো তোমাকে বলেছি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি..!! শেষ, এই একটা কথার মাধ্যমে সবকিছু শেষ হয়ে যায় মেয়েদের মন আসলে বোঝা বড় দায়। এই নাটকে আরফান এখন পর্যন্ত নাদিয়ার মন বুঝতে পারেনি যে আসলে সে তাকে ভালবেসেছিল কিনা...!!

এত পূর্বে আপনারা জেনেছেন যে বাসার সাহেবের ছোট ছেলে তার গার্লফ্রেন্ডের নিয়ে সিনেমা দেখতে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর এ কথা সে তার দুলাভাইয়ের কাছে গিয়ে জানায়। কিন্তু তার গার্লফ্রেন্ড শাহনাজ খুশির ছোট ভাইকে সাথে করে নিয়ে যেতে চায় আর এ কথা শুনে বাসার সাহেবের জামাই তার ছোট ছেলেকে বলে যে শাহনাজ খুশির ভাইকে কখনোই নিয়ে যাওয়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত সে তাকে এ কথাও বলে যে তোমার প্রেমিকা হয়তোবা সেই ছেলেটার সঙ্গে নতুন করে আবার প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে যার কারণে সে তোমার সাথে তাকেও নিয়ে যেতে চায়।

আর এ কথা শুনে বাসার সাহেবের ছোট ছেলে অনেক বেশি চিন্তায় পড়ে যায়। আসলে চিন্তা হবারই কথা, কারণ গার্লফ্রেন্ড যখন অন্য কোন ছেলে নিয়ে সিনেমা দেখতে যেতে চায় তখন প্রত্যেকটা ছেলেরই মাথায় চিন্তার ভাঁজ পড়বে এটাই স্বাভাবিক। বাসার সাহেবের ছোট ছেলের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই ঘটেছে।

যেহেতু বাসার সাহেবের জামাই তার ছোট ছেলের কাছে তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলেছে। আর সে এ কথা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। ছেলেরা হয়তোবা এমনই প্রিয় মানুষকে কখনো হারাতে চায় না তারা সবসময়ই প্রিয় মানুষকে আগলে রাখতে চায়। যার কারণে সে, রাতের বেলা তার গার্লফ্রেন্ডের বাসায় চলে যায় এবং তার কাছে গিয়ে জানতে চাই যে সে কেন সেই ছেলেটাকে নিয়ে যেতে চায় আর তার গার্লফ্রেন্ড তাকে দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যায় কারণ রাত্রেবেলা তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছে। এখানে গিয়ে সে কোন রকম ভাবে তার গার্লফ্রেন্ডকে ম্যানেজ করে সেখান থেকে খুব দ্রুতই চলে যায়।

এর পরের অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বাসার সাহেব খুবই চিন্তিত এবং সে তার রুমে শুয়ে আছে। হঠাৎ তার বোন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং তার সঙ্গে তার মেয়ের ব্যাপারে কথা বলতে চায়। যদিও তার ফুপু বুঝতে পেরেছে যে তার মেয়ে খুবই চালাক চতুর একজন মানুষ এবং সে বরাবরই তার সম্পত্তি দখল করার ফন্দি আটছে। এক্ষেত্রে বাসার সাহেব যদিও আগেই বলে দিয়েছে যে সে কারো সম্পত্তি ভাগ করে দেবে না কখনোই। বাসার সাহেব বর্তমান সময়ে অনেক বেশি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে কারণ সে কোন দিকে যাবে কি করবে এখন পর্যন্ত বুঝতে পারছে না।

বাশার সাহেবের বোন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ব্যাপারে কথা বলতে গেলেই সে তাকে বলে যে সে তাকে সত্যি সত্যিই বিয়ে করেনি আর এই দ্বিতীয় স্ত্রীকে অর্থাৎ মৌসুমী হামিদকে এসে এখন পর্যন্ত চেনে না। সত্যি বলতে আমি নাটকের এ পর্যায়ে এসে এখন পর্যন্ত বুঝতে পারলাম না যে মৌসুমী হামিদকে আসলেই বাসার সাহেব বিয়ে করেছে নাকি বিয়ে করেনি..?? এটা মোটামুটি ভাবে আমার কাছে একটা রহস্যময় হয়ে আছে। বাসর সাহেব এমনভাবে বলে মনে হয় বাসার সাহেব তাকে সত্যি সত্যিই বিয়ে করেনি, এদিকে মৌসুমী হামিদ এমনভাবে বলে মনে হয় সত্যিই বাসার সাহেব মিথ্যে কথা বলছে মৌসুমী হামিদ সত্যি কথা বলছে। আমি দ্বিধাদ্বন্দের মধ্যে পড়ে গিয়েছি।

এদিকে বাসার সাহেবের মেয়ে এবং তার জামাই সবসময়ই বাসার সাহেবের জমি এবং তার মৃত মায়ের স্বর্ণ হাতিয়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। মূলত এই নাটকের এ পর্যায়ে এসে বুঝলাম যে সম্পত্তি এবং টাকা-পয়সার জন্য সন্তানেরা যে পিতা-মাতাকে ভুলে যায় এটা চিরন্তন সত্য। স্বার্থের কাছে সকলেই সব কিছু বিক্রি করে দিতে পারে। স্বার্থ যখন সামনে আসে তখন আর ভালবাসাটা থাকে না ভালোবাসাটা হয়তোবা তখন হারিয়ে যায় অথবা নিঃশেষ হয়ে যায় যা হয়তোবা কখনো ছিল আবার হয়তোবা কখনো ছিল না। বাসার সাহেবের জামাই বরাবরই অনেক বেশি চালাক চতুর একজন মানুষ সে তার স্ত্রীকে অনেক রকম বুদ্ধি দিয়েছে যাতে করে সে খুব সহজেই সম্পত্তি ছিনিয়ে নিতে পারে।

এদিকে চঞ্চল চৌধুরী এবং নাদিয়া রাতের বেলা একে অপরের সঙ্গে কথা বলছে যদিও তাদের কথা বলার মূল বিষয়বস্তু ছিল আরফানকে নিয়ে। আরফান নাদিয়াকে প্রেমের কথা বলেছে আর এ ব্যাপারটা নিয়ে না দিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত এবং সে তাকে অনেক রকম ভাবেই হুমকি দিয়েছে যার জন্য নাদিয়া চঞ্চল চৌধুরীর জন্য অনেক বেশি চিন্তা করছে। কিন্তু এদিকে চঞ্চল চৌধুরী বরাবরই অনেক বেশি চালাক চতুর একজন মানুষকে সবসময়ই নাদিয়াকে বিয়ে করার কথা বলছে সে তাকে বিয়ে করতে চায়। কারণ চঞ্চল চৌধুরী এটা জানে যে নাদিয়াকে একবার বিয়ে করতে পারলেই তার আর তেমন কোন সমস্যা হবে না।

এখন এটাই দেখার বিষয় যে আসলেই নাদিয়া চঞ্চল চৌধুরীকে বিয়ে করবে নাকি শেষ পর্যায়ে গিয়ে সে আবার আরফানের প্রেমে হাবুডুবু খাবে..!! যদিও এই ব্যাপারটা নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত তবে পরবর্তী পর্বগুলো দেখলে হয়তো বা বোঝা যাবে যে কি ঘটে। এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!

শিক্ষণীয় দিক-

পিতা বনাম পুত্রগণ নাটকটি মূলত একদম বাস্তবতা অবলম্বনে নির্মিত করা হয়েছে। ‌ অনেক আগে গ্রাম অঞ্চলের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে পিতা মাতারা তাদের সন্তানদেরকে বিয়ে দিতে মোটেও চাইত না। মূলত তারা বিয়ে দিতে চাইতো না কারণ তারা ভাবতে হয়তো অন্য ঘরের মেয়েরা সংসারে আসলে তারা সংসারটা নষ্ট করে দেবে বা তাদের ছেলেরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। কিন্তু ছেলেদেরকে বিয়ে না দিলে তারা যে কতটা উতোলা হয়ে পড়ে সেটা এই নাটকটা দেখলে বোঝা যায়। নাটকের মধ্যে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বিয়ে করার জন্য বাসার সাহেবের পাঁচ সন্তান খুবই উৎফুল্ল কিন্তু বাসার সাথে তাদেরকে বিয়ে দিচ্ছে না। মূলত এই নাটকের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত বয়সে বিয়ে না দিলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

ব্যক্তিগত মতামত-

প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সকাল আহমেদ স্যারকে এত সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। পিতা বনাম পুত্রবাগ নাটকের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি এবং শিখছি। আমার মনে হয় এটা একটা বাস্তবধর্মী নাটক যেটা কিনা বর্তমান সময়ের সঙ্গেও কিছুটা মিল রয়েছে। বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা কিনা সন্তানদেরকে দিয়ে দেয় না কিন্তু তার সন্তানেরা বাবা মার কাছে বলতেও পারে না যে তারা বিয়ে করবে। এটাই মূলত নাটকের মূল বিষয়বস্তু। আমি মনে করি এই নাটকটি সকল পিতা-মাতার দেখা উচিত এতে করে তারা এই নাটকের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে।

ব্যক্তিগত রেটিং-