অস্বস্তিকর একটা দিন
আজ - ০২ আশ্বিন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | শরৎকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- অস্বস্তিকর একটা দিন
- আজ ০২রা আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ বিকেল সবাইকে......!!
আমাদের জীবনের প্রতিনিয়তই দিনের পরে রাত আসে আবার রাতের পরে আসে দিন। প্রত্যেকদিনই যে আমরা একই রকম ভাবে কাটাই তা কিন্তু নয়। এক একটা দিন আমরা এক এক রকম ভাবে কাটাই কোন কোন দিন খুব একটা ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করি না। ঠিক একই রকম ভাবে আবার কোন কোন দিন আমরা অনেক ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করি যে সময় গুলো আমাদের জীবনে হঠাৎ করেই আসে এবং অনেক বেশি ব্যস্ত করে তোলে। ব্যস্ত সময় কাটাতে অনেকেই অনেক বেশি ভালোবাসে তবে অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে গেলে আবার খুবই সমস্যা। ছোটখাটো কাজ কর্মের মধ্য দিয়ে দিন পার করতে ভালোই লাগে কিন্তু এই ছোটখাটো কাজ কর্ম যখন আস্তে আস্তে বড় রোগ ধারণ করে তখন আর তেমন একটা ভালো লাগে না। এইতো গত কয়েকদিন আগে রাত্রিবেলা একটু রাত জেগে ছিলাম যার কারণে ঘুম থেকে উঠতে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল। যদিও নিজে থেকে ঘুম ভাঙ্গিনি ফোনের রিংটোনে ঘুমটা ভেঙেছে তখন দেখি দুপুর ১:৩০ টা বাজে।
বড় ভাই ফোন দিয়েছে ফোন দিয়ে বলল আমাকে তিনটার মধ্যে যেতে হবে গাবতলী টেকনিক্যাল। কেন এই কথা জিজ্ঞেস করাতেই ভাই বলল ভাইয়ের ভোটার আইডি কার্ড কোন এক বাসের কন্টাকটার নিয়ে আসছে আমাকে গিয়ে সেই বাসের কন্টাকটার এর কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে আসতে হবে। ঘুম ঘুম চোখে বললাম ঠিক আছে আমি তিনটার মধ্যে ওখানে পৌঁছে যাব যদিও গভীর একটা ঘুম হয়েছে বুঝতেই পারছিলাম। এখন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে তিনটার মধ্যে গাবতলী টেকনিক্যালে যাওয়া আমার কাছে কোন ব্যাপারই না। খুব দ্রুতই ঘুম থেকে উঠলাম ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে রেডি হয়ে চলে গেলাম গাবতলী টেকনিক্যাল এর উদ্দেশ্যে। বাসস্ট্যান্ডে গিয়েই পড়তে হলো এক ঝামেলায় বাসে ওঠার পরে এত বেশি ট্রাফিক জ্যাম আর সিগনাল ছিল যে গাবতলী পৌঁছাতে আমার প্রায় সাড়ে তিনটে বেজে গিয়েছিল।
আমি ভেবে রেখেছিলাম হয়তোবা যে এই বাসের কন্টাকটার ভাইয়ের আইডি কার্ড নিয়ে এসেছিল সেই বাস হয়তোবা চলে গিয়েছে কারণ আমি অলরেডি সময় অতিবাহিত করে ফেলেছি। ভেবে রেখেছিলাম আমাকে হয়তো বা গাবতলী গিয়ে ফিরে আসতে হবে কিন্তু ভাগ্যক্রমে আমি সাড়ে তিনটের মধ্যে গাবতলী পৌঁছে গিয়েছিলাম তখন আমি ভাইয়ের দেওয়া সেই বাস কন্ডাক্টরের নাম্বারে ফোন দিলাম। ফোন দিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করাতেই সে বলল গাবতলী টেকনিক্যালে পৌঁছাতে আমাদের বিকেল পাঁচটা বেজে যাবে। রীতিমতো হতাশ হয়ে ফোনটা কেটে দিয়ে একটা চায়ের দোকানে গিয়ে বসলাম। সেখানে বসে বসে চা খাচ্ছিলাম আর বাসের কন্টাকটার এর জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
অপেক্ষা করাটা যে কতটা কষ্টের সেটা আমি সেদিন বুঝেছিলাম যদিও এর আগে অনেক রকম ভাবেই অপেক্ষা করেছি অপেক্ষার প্রহর কখনো শেষ হয় না। এই সময় কখনো দ্রুত চলে যায় না খুবই খারাপ লাগে সেই সময়টাতে। মাঝে মাঝেই আমি কন্টাক্টর কে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছিলাম কতদূর পর্যন্ত এসেছে এবং আমাকে বলা হয়েছিল একটা পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে। যথারীতি আমি সেখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
Location |
---|
Device :realme 6i |
সেদিন দুপুরবেলা এতটা বেশি রোদ্র ছিল যে বসে থাকা অথবা দাঁড়িয়ে থাকা দুটোই অনেক বেশি কষ্টের একটি কাজ ছিল। ঘেমে আমি একাকার হয়ে যাচ্ছিলাম আমার শার্ট ঘেমে টপটপ করে পানি পড়ছিল প্রচন্ড বেশি রাগ হচ্ছিল। এরপরে প্রায় সাড়ে চারটার দিকে বাস কন্টাকটারের নাম্বার থেকে আমার ফোনে ফোন আসলো তিনি আমাকে যে পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছিল আমি সেই পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু এখানে এই বাসের কন্টাকটার সেই পেট্রোল পাম্প ছেড়ে অনেকটা দূরে চলে গিয়েছে। এবার তাকে আমি বললাম আপনি আমাকে পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছেন আমি এখানেই দাঁড়িয়ে আছি তিনি বললেন যে আমি ভুলে একটু দূরে চলে এসেছি আপনাকে এখানে আসতে হবে। তিনি যে জায়গাটির কথা বলল সেই জায়গাটা আমি চিনি সেখানে যেতে ১০ মিনিট সময় লাগবে। যথারীতি আমি একটা রিকশা নিয়ে খুব দ্রুত এসে জায়গাতে চলে গেলাম এবার সেখানে গিয়ে দেখি সে সেখানে নেই। মূলত সে আমাকে তার বাসের নাম্বার দিয়ে দিয়েছিল এবং বাসের যে নাম সেটাও বলে দিয়েছিল আমি সেখানে গিয়ে তাকে ফোন দিলাম সে বলল আপনি ওখানে দুই মিনিট দাঁড়িয়ে থাকেন আমি আসছি। এবার তাহলে আপনারাই বলুন কেমন লাগে নিজেকে কি কোনো ভাবে কন্ট্রোল করা যায়..??
আপনি কি আপনার রাগ কন্ট্রোল করতে পারবেন..??আপনি হয়তো বা পারবেন কিন্তু আমি কোন ভাবেই আমার রাগ কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না। এতটা বেশি রাগ হচ্ছিল যে আমি আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না কিন্তু তার কাছ থেকে আমার সেই ভোটার আইডি কার্ড নিতে হবে যার কারণে আমি তার সঙ্গে কোন রকম খারাপ ব্যবহার বা খারাপ আচরণ করিনি। এরপরে সে প্রায় ১৫ মিনিট পরে সেই জায়গাতে এসে আমার কাছে ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে চলে গেল খুব ইচ্ছে ছিল তাকে দুটো কথা শোনাবো কিন্তু এই গরমের মধ্যে এমনিতেই নিজের মেজাজ খারাপ হয়ে আছে তার মধ্যে এর সঙ্গে কথা খরচ করার মত শক্তি আমার ছিল না। যার কারণে তাকে ধন্যবাদ দিয়ে সেখান থেকে চলে আসি। এরপরের টেকনিক্যাল বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে লেবুর শরবত ঢক ঢক করে দু গ্লাস মেরে দিলাম। শরীরটা একদম ঠান্ডা হয়ে গেল নিমিষে।
এরপরে সেখান থেকে বাসে করে রওনা দিলাম মোহাম্মদপুরের উদ্দেশ্যে কিন্তু আমি যখনই বাসে করে দুই মিনিট সামনের দিকে অগ্রসর হলাম ঠিক তখনই কোথা থেকে যেন এক চিমটি মেঘ এসে সবকিছু একদম ঠান্ডা করে দিল। আমি বাসের জানালার পাশে বসে ছিলাম শুরু হয়ে গেল প্রচন্ড রকম বৃষ্টি। চারিদিকের পরিবেশ টা শীতল হয়ে গেল খুবই ভালো লাগছিল সেই সময়টাতে। অনেকটা সময় পরে প্রায় সন্ধ্যের আগ মুহূর্তে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে নামলাম, ভাগ্যক্রমে আমি আগেই আমার ব্যাগের মধ্যে ছাতাটা নিয়ে গিয়েছিলাম যার কারণে আর বৃষ্টিতে ভিজতে হয়নি।
Location |
---|
Device :realme 6i |
দেখতেই পাচ্ছেন বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমার প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল আর এর মধ্যে আস্তে আস্তে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। ছাতাটা মাথায় দিয়ে আমি হাঁটতে হাঁটতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম ততক্ষণে রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোস্টের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর কিছুক্ষণ আগে যেহেতু বৃষ্টি হয়েছে যার কারণে পরিবেশটা দেখতে এতটা বেশি সুন্দর এবং রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছে যে বলে বোঝানো যাবে না। এই সুন্দর পরিবেশে বসে যদি এক কাপ চা না খাই তাহলে কি হয় বলুন...?? বাসার সামনে গিয়ে ছোট একটা টং দোকানে বসে এক কাপ লেবু চা খেলাম নিমিষেই মনটা একদম ফ্রেশ হয়ে গেল। এরপর আর বেশিক্ষণ বাহিরে থাকেনি খুব দ্রুতই বাসায় চলে গিয়েছিলাম।
এটাই ছিল আমার অস্বস্তিকর একটা দিনের গল্প আশা করছি এই গল্পটা আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | অস্বস্তিকর একটা দিন |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আসলে অপেক্ষা জিনিসটাই কষ্টের। আপনি এই আইডি কার্ড নিতে গিয়ে যথেষ্ট কষ্ট করেছেন স্পষ্ট বুঝতে পারলাম। হ্যা আপনার ঐ অবস্থায় আমি থাকলে আমারো অনেক খারাপ লাগতো। সবথেকে বড় বিষয় আপনি আইডি কার্ড হাতে পেয়েছেন।
সত্যি বলতে এটাই অনেক বড় কথা যে শেষমেশ আইডি কার্ড হাতে পেয়েছিলাম যদি আইডি কার্ড হাতে না পেতাম তাহলে হয়তো বা আরো বেশি খারাপ লাগতো। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হা হা ভাই কোথায় ভাবলেন বাস কন্টাকটার চলে এসেছে গিয়েই আইডি কার্ড টা নিয়ে চলে আসবেন। কিন্তু তিনি আসলেও সেই বিকেলে হা হা। আসলেই এইরকম হলে ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। আর এইরকম গরম হলে তো মেজাজ আরও বেশি খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক। সবমিলিয়ে বেশ খারাপ একটা দিন অতিবাহিত করেছেন আমি বলব।
প্রথমে আমি এটাই ভেবেছিলাম কিন্তু বাস কন্টাকটার যে এতটা দেরিতে আসবে সেটা কখনো ভাবি নি। আর গরমে নিজের মেজাজটাও হারিয়ে ফেলছিলাম ক্ষণে ক্ষণেই। মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে ঠিক বলছেন মানুষের মধ্যে হঠাৎ করে বিপদ আসে অনেক ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়। সেই বিপদ চলে যায় আবারও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে হয়। আবারো কোন ঝামেলা এসে জড়িয়ে যায় এটাই হচ্ছে জীবনের নিয়তি। তবে বিপদে যখন পড়েছেন কি আর রাগ দেখার হয়তো নিজের ক্ষতি হয়ে যাবে। সে ভেবে আপনি অনেক কষ্ট করে রাগ কন্ট্রোল করলেন অনেক ভালো লাগলো। অবশেষে অনেক কষ্টের বিনিময়ে আপনি আইডি কার্ড টা ফিরে পেলেন অনেক ধন্যবাদ।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে আসলে রাগ কন্ট্রোল করা উচিত রাগ কন্ট্রোল করলে নিজের লাভই হয়। আসলে আমি যদি সেখানে রাগ করে চলে আসতাম তাহলে হয়তো বা আইডি কার্ড হাতে পেতাম না। যাইহোক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
দুপুরবেলায় আপনার সকাল হয়েছে,হা হা হা। যাই হোক সব সময় রাগ কন্ট্রোল করাই উচিত, বেশি রাগ থাকা ভালো নয়। অতিরিক্ত গরমে লেবুর শরবত খাওয়া খুবই উপকারী তবে শেষ বিকেলের দিকে বৃষ্টি হয়ে আবহাওয়াটা অনেকটাই ঠান্ডা হয়েছিল যাইহোক আপনার গল্পটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে এখন প্রতিনিয়ত দুপুরবেলায় সকাল হচ্ছে ঘুম ভাঙতে ভাঙতে প্রায় দুপুর হয়ে যাচ্ছে। গরমের সময় শরবত খেতে আসলেই অনেক বেশি ভালো লাগে আর সেটা যদি লেবুর শরবত হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মাঝে মাঝে বাইরে বের হলে ধৈর্যের সীমা পার হয়ে যায়। আসলে কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা করাটা যেন খুবই কষ্টকর। দুপুরবেলায় রোদে পুড়ে বিকেলে আবার বৃষ্টিতে ভেজা সত্যি অসহ্যকর। তবে যাই হোক দেরিতে হলেও আপনি বাসায় পৌঁছে গেছেন। বাসায় এসে লেবুর চা খেয়ে মনটাকে ফ্রেশ করলেন খুব ভালো । এরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
আসলে বর্তমান সময়ে ঢাকা শহরে এত বেশি যানজট যে যার কারণে ছোট একটি কাজ করতে গিয়ে অনেকটা সময়ের প্রয়োজন হয়। যাইহোক সেদিন অস্বস্তি করে একটা দিন অতিবাহিত করেছিলাম তবে বাসার সামনে এসে লেবু চা খেয়ে মনটা একদম ফ্রেশ হয়ে গিয়েছিল। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।