অবিস্মরনীয় ভালোবাসা/শেষ পর্ব [benificiary ১০% @shy-fox]|

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ - ২৮ শ্রাবণ | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | বর্ষাকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ছোট গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি, এই ছোট গল্পটি আমি কয়েকটি পর্বে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করেছিলাম। আজ আমি আপনাদের মাঝে সেই ছোট গল্পের শেষ পর্ব উপস্থাপন করবো। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • ছোট গল্প(শেষ পর্ব)
  • আজ ২৮ শ্রাবণ , ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
  • শুক্রবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ বিকেল সবাইকে.....!!


আমি গত পর্বে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম কনক তার নিজের দোকান বিক্রি করে তার প্রিয় মানুষ যাকে পছন্দ করে সে যেন চিরদিনের জন্য তাকে পায় এই ভেবে পুরো টাকাটা তার প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে সে ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জামানার পরে তার কোন খোঁজ খবর নেই সে কোথায় আছে কেমন আছে কেউ জানে না। এপর্যন্তই আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছিলাম এখন আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের বিগত পর্বের মতোই এই শেষ পর্ব অনেক বেশি ভালো লাগবে।


people-2562102_640.webp

source

সমস্ত রকমের অভিমান এবং আবেগ একত্রে করে কনক নিজেকে সান্তনা দিয়েছে যে প্রিয় মানুষটা ব্যক্তিগত জীবনের সুখে থাকলেই আমি সুখে থাকবো। সে মনে মনে ভেবে রেখেছে যে আমি যত দুঃখে কষ্টে দিন অতিবাহিত করি না কেন আমার প্রিয় মানুষটা যদি সুখে শান্তিতে থাকে তাহলেই আমি দূর থেকে তার সুখে থাকাটা দেখে হয়তো সুখী হব। মূলত এটা ভেবেই সে তার নিজের দোকান বিক্রি করে সেই টাকাটা তার প্রিয় মানুষটার প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়েছে সে যেন তাকে কষ্ট না দেয়। এদিকে কনক ঢাকা গিয়েছে কিন্তু তার কোন খোঁজ খবর নেই তার প্রিয় বন্ধু সোহাগের সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ নেই। এদিকে ঘটে গেছে আর এক ঘটনা সোহাগ কণার কাছে গিয়ে তার ছোটবেলা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যা যা ঘটেছে সমস্ত রকম ঘটনা সে কণাকে জানিয়ে দিয়েছে। ছোটবেলার সেই কথাগুলো কণা আজ জানতে পেরেছে এবং নতুন করে তার মনের মধ্যে কোনরকম অনুভূতি কাজ করছে। সে প্রথমে সোহাগের কথা বিশ্বাস করতে পারেনি সে প্রথমে ভেবেছিল যে সোহাগ হয়তো তার প্রিয় বন্ধু তাই হয়তো সে এসব বানিয়ে বানিয়ে তার কাছে বলছে যাতে করে কণা যেন তার প্রতি আকৃষ্ট হয়। পরবর্তীতে সোহাগ কণাকে বলে আমার কথা যদি আপনার বিশ্বাস না হয় তাহলে আপনি আপনার প্রেমিককে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। কনা আর বেশি দেরি না করে সে তড়িঘড়ি করে তার প্রেমিকের কাছে চলে যায় এবং পুরো ঘটনা জানতে চায়। তার প্রেমিক তাকে পুরো ঘটনাটা বলে এবং সেই ঘটনাটা সোহাগের সাথে একদম মিলে গেছে। এটা শুনে কনা সেখান থেকে কান্না করতে করতে চলে আসে। সে নিজেকে অপরাধী ভাবতে শুরু করে সে নিজেকে এজন্যই অপরাধী ভাবছে যে ছোটবেলা যার সঙ্গে তার এতটা সুন্দর মুহূর্ত কেটেছে তার সঙ্গেই সে খারাপ ব্যবহার করেছে এবং তাকে কষ্ট দিয়েছে। এরকম ভাবতে ভাবতে এসে নিজেকে খুব অপরাধী মনে করছিল এবং সে সোহাগের সঙ্গে দেখা করে এবং বলে যে কোনভাবেই হোক আপনার বন্ধুকে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কনকের কোন খোঁজ খবর নেই।

love-1731755_640.jpg

source

এদিকে সোহাগ অনেক রকম চেষ্টা করছে কনকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য কিন্তু কোন ভাবেই তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। ছোটবেলার সেই পুরনো স্মৃতিগুলো আঁকড়ে ধরে কণা কনকের আশায় পথ চেয়ে আছে হয়তো বা তার সঙ্গে দেখা হবে এটা ভেবেই সেদিন পার করছে। এদিকে কনক অনেক রকম ভাবেই চাকরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরে অবশেষে একটা চাকরি খুঁজে পেয়েছে মূলত এটা একটি মোবাইল সার্ভিসিং দোকান। যেহেতু কনকের আগে থেকেই মোবাইল সার্ভিসিং করার অভিজ্ঞতা ছিল সে তো সে সেখানে অনেক মোটা বেতনের একটা চাকরি শুরু করে। অনেকটা বছর অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে কনক আর কারো সঙ্গেই তেমন যোগাযোগ করেনি। এদিকে কনা কনকের আশায় পথ চেয়ে আছে। বেশ কয়েক বছর পরে কনক তার নিজ গ্রামে ফিরেছে। নিজ গ্রামে ফিরে এসে তার বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তার বন্ধু তাকে দেখে মহা খুশি দুই বন্ধু একত্রে অনেকটা সময় অতিবাহিত করে। তারপরে কনক তার সেই আগের দোকানটা নতুন করে টাকা দিয়ে আবার তার কাছ থেকে কিনে নেয় সে ভেবে রেখেছিল যে এবার গ্রামে গিয়ে আর ঢাকায় ফিরবে না। সে নতুন করে তার দোকান চালু করতে চায় যার কারণে সে আবার দোকানটি অন্য মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করে। তবে কনক এখন পর্যন্ত জানে না যে কণার কি অবস্থা সে এখন কোথায় আছে কি করছে বা তার আগের প্রেমিকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে কিনা। সে মনে মনে ভেবে রেখেছে যে কণা যেহেতু এখন অন্য কারো সেহেতু ওর কথা কারো কাছে জিজ্ঞেস না করাই ভালো। তাই সে নতুন করে আবার তার দোকান চালু করে এবং এভাবেই কয়েকটি দিন অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে।

people-2589047_640.jpg

source

সোহাগের সঙ্গে হঠাৎ বিকেলবেলা কনার দেখা হয় সোহাগ ওনাকে দেখে মুচকি মুচকি হাসছে আর বলছে কনক দেশে ফিরেছে। এই কথাটা শুনে কনা চরম খুশি এবং খুশিতে অনেকটা আত্মহারা সে কখনোই ভাবেনি যে এরকম কোন কথা শেষভাগের থেকে শুনবে। যাই হোক সেটা শোনার পরে সে অনেক খুশি হয়ে বাসায় চলে যায় পরের দিন সকাল বেলা কনক তার দোকান খোলে। দোকান খুলে বসেছে মোবাইল সার্ভিসিং কাজে ব্যস্ত ছিল হঠাৎ সেখানে কনার আগমন। কণাকে সেখানে দেখে কনক রীতিমতো অবাক হয়ে যায় এবং এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। কনক মনে মনে ভেবে রেখেছে কনার হয়তো অন্যত্রে বিয়ে হয়ে গিয়েছে সেই প্রেমিকের সাথে। তখন কোনা তাকে জিজ্ঞেস করে কেন আপনি বলেননি আপনি আমার সেই ছোটবেলার সেই মানুষটা যদি আমি আগে জানতাম তাহলে আপনার সঙ্গে এমন ব্যবহার কখনোই করতাম না। কনক এখন পর্যন্ত জানে না যে কণা সেই তার প্রেমিককে বিয়ে করেনি। কারণ যে মানুষটা তার জন্য এত কষ্ট সহ্য করেছে তাকে ছেড়ে দেওয়া তার মোটেই উচিত হবে না। পরবর্তীতে কনক জানতে পারে যে কণা এখন পর্যন্ত বিয়ে করেনি। তখন কণা তাকে জিজ্ঞেস করে এখন কি আমাকে বিয়ে করা যাবে...?? এই প্রশ্নটা শুনে কনক কোন কথা বলছে না, অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে এবং চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছে। যেহেতু কনক কোন কথা বলছে না তাই কনা ভেবেছে তার হয়তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে তাই সে চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ একটার সময় কনক বলে ওঠে হ্যাঁ বিয়ে করা যাবে। তখন দুজনেই সিদ্ধান্ত নেয় তারা দুজনেই বিয়ে করবে ধুমধাম করে তাদের বিয়ের উৎসব করা হয়। অনেকটা বছর পরে তারা একে অপরের সাথে মিলিত হয়। তারা হয়তো কখনোই ভাবেনি যে ছোটবেলার সেই প্রিয় মানুষটার সঙ্গেই তাদের শেষ পরিণয় পরিণতি হবে। এই পরিণতির হতে গিয়ে অনেকটা সময় লেগেছে অনেক রকম বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে উঠতে হয়েছে সমস্ত রকমের বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে তারা একত্রে মিলিত হয়েছে। এটাই যেন সত্যিকারের ভালোবাসা। সত্যি কারের ভালোবাসা কখনো নষ্ট হয় না যত দূরেই যাক না কেন একটা সময় তারা একত্রে মিলিত হবেই। এখানেই আমি আমার অবিস্মরণীয় ভালোবাসার শেষ পর্ব,শেষ করলাম। আশা করছি বিগত পর্বের মত এই পর্ব আপনাদের কাছে খুবই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ সকলকে...!!



আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন

বিবরণ
বিভাগছোট গল্প
বিষয়অবিস্মরনীয় ভালোবাসা,শেষ পর্ব
গল্পের কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

Sort:  
 2 years ago 

স্বল্প সংখ্যক সাপোর্ট করে সবসময় পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার অণুগল্প অবিস্মরণীয় ভালোবাসা পড়ে খুব ভালো লাগলো।আপনি খুব সুন্দর করে গল্প টি উপস্থাপন করেছেন।শত বাধা বিপত্তির পরও দুটি মন এক হওয়ার পরিণতি আমার কাছে দারুণ লেগেছে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে প্রিয় মানুষটার হাত ধরে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার নামই তো ভালোবাসা আর এরকম ভালবাসা সত্যিই অনেক বেশি রোমাঞ্চকর হয়। সুন্দর মন্তব্য করেছেন পড়ে খুবই ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার গল্পের শেষ পর্বটি পড়ে আমার ভালো লেগেছে। সত্যিই ভাইয়া প্রকৃত প্রেম বা ভালবাসা কখনোই নষ্ট হয় না বা হারিয়ে যায় না। ভাইয়া এরকম গল্প আমি আপনার নিকট থেকে আরো প্রত্যাশা করি। আশা করি পরবর্তীতে আপনার লেখা গল্প পড়তে পারব।

 2 years ago 

সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় না এটি সব সময় বৃদ্ধি হতে থাকে। আমি সবসময় চেষ্টা করি ছোট ছোট গল্প আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য কারণ ছোট ছোট গল্প আমার উপস্থাপন করতে খুবই ভালো লাগে মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 57453.27
ETH 2928.75
USDT 1.00
SBD 3.67