ভিন্ন ধরনের এক দায়িত্ব,নতুন এক অভিজ্ঞতা।
আজ--১৪ আশ্বিন | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |রবিবার | শরৎকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- ভিন্ন ধরনের এক দায়িত্ব।
- আজ--১৪ইআশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে......!!
আমরা মানুষ হিসেবে এই পৃথিবীতে এসেছি। যেহেতু আমরা মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে এসেছি সেহেতু আমাদের কে অনেক ধরনের দায়িত্ব পালন করতে হয়। আপনি ছেলে অথবা মেয়ে যেটাই হন না কেন কোন না কোন একটা সময় গিয়ে আপনাকে নতুন নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। এখানে দায়িত্ব বলতে যে শুধুমাত্র চাকরি বাকরী করার ক্ষেত্রে ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ আপনাকে যে দায়িত্ব দেয় সেটাকেই বুঝিয়েছি তা কিন্তু নয়। মনে করুন আপনি একজন ছেলে তাহলে বুঝতেই পারছেন ছেলে হয়ে যেহেতু পৃথিবীতে এসেছেন তার মানে নির্দিষ্ট একটা বয়স পার হবার পরে অনেক ধরনের দায়িত্ব আপনার ওপরে অর্পিত হয় আর এগুলো আপনাকে খুবই যত্ন সহকারে গুরুত্ব দিয়ে পালন করতে হয় ঠিক তেমনিভাবে মেয়েদের ক্ষেত্রেও এমনই চাকরি বাকরীর ক্ষেত্রে গেলে দায়িত্ব নিতে হয় ঠিক তেমনি ভাবে যখন কোন একটা মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় তখন সেই সংসারের কিছুটা দায়িত্ব তার উপরে চলে আসে। এই দায়িত্বগুলো তাকে যথাযথভাবে পালন করতে হয় ছেলেদের ক্ষেত্রেও যে সাংসারিক দায়িত্ব নেই তা কিন্তু একেবারেই নয় ছেলেদের ক্ষেত্রেও সাংসারিক দায়িত্ব নিতে হয় বরঞ্চ মেয়েদের থেকে একটু বেশি। তবে শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব নিতেই হবে এটাই স্বাভাবিক এটাই প্রকৃতির নিয়ম দায়িত্ব এড়ানোর মত কোন সুযোগ হয়তোবা নেই,কারো পক্ষেই।
যেহেতু এখন একটা চাকরির মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে নতুন চাকরি বুঝতেই পারছেন। নতুন নতুন সব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হচ্ছে আর নতুন নতুন অনেক দায়িত্ব নিজের উপর এসে পড়ছে আর এই দায়িত্বগুলো আমাকে ঠান্ডা মাথায় পালন করতে হয়। যদিও সব দায়িত্ব পালন করতে পারি না মাঝে মাঝে অনেক দায়িত্ব নিজের উপর আসে যেগুলো যখন পালন করতে পারি না তখন কর্তৃপক্ষের নিকট জানাই এবং তারা সেটা সমাধান করার চেষ্টা করে তবে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি আমার দায়িত্বে অটল থাকার যখন আর নিজেকে একেবারেই মানিয়ে নিতে পারি না ঠিক তখনই কর্তৃপক্ষের নিকট ব্যাপারটা অবগত করি। আমি বর্তমান সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিযুক্ত আছি মেইনটেনেন্স ডিপার্টমেন্টে। এখানে মূলত আমাকে মেশিনের কাজকর্ম রক্ষণাবেক্ষণ পর্যবেক্ষণ করতে হয় বুঝতেই পারছেন, sub assistant ইঞ্জিনিয়ার মানেই সকল ধরনের কাজকর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই আমার উপর যে এরকম একটা ভিন্ন ধরনের দায়িত্ব চলে আসবে সেটা বুঝতেই পারেনি তবে অনেক নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম সেদিন।
কিছুদিন আগে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল সারাটা দিন অনেক বেশি মেঘলা ছিল আর টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছিলই মাঝে মাঝে এত বেশি ঝড় বাতাস বইছিল মনে হচ্ছিল নিমিষেই সবকিছু উড়িয়ে নিয়ে চলে যাবে। সে যাই হোক সেদিন অফিসে যাওয়ার পরেই তিনি ওর ম্যানেজার স্যার আমাকে জানায় যে আজকে আমাকে নাকি নতুন এক দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয়েছে তবে এটা বেশি দিনের জন্য নয় কয়েক দিনের জন্য মাত্র। আমি তার থেকে আমার দায়িত্ব টুকু বুঝে নিলাম আমার দায়িত্ব হচ্ছে ফ্যাক্টরিতে নতুন একটা বিল্ডিং হবে বিল্ডিং টা মূলত পুকুরপাড়ের জায়গাটায় বালি দিয়ে পুকুর ভরাট করে সেখানে নতুন বিল্ডিং স্থাপন করা হবে। আর সেই বিল্ডিং এর ধার ঘেঁষেই তৈরি হবে পানির লাইনের পাইপ লাইনের কাজ। যদিও পাইপলাইন এর কাজ সম্পর্কে আমার খুব একটা বেশি ধারণা নেই তবে চাকরির শুরুতে দুইটা ধারণা নিয়েছিলাম। সেই সাথে আরও একটা দায়িত্ব ছিল যে পুকুর ভরাটে যত ট্রাক বালি আসবে সেই ট্রাক এর হিসেব রাখা।
যেহেতু আমার উপরে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেহেতু আমি খুশি মনেই দায়িত্বটা গ্রহণ করলাম। সিনিয়র ম্যানেজার আমার হাতে একটা ড্রইং শীট দিয়ে বলল এই ড্রয়িং টা নিয়ে ডেপুটি ম্যানেজারের কাছে যেতে এবং সে আমাকে ড্রইং টা ভালোভাবে বুঝিয়ে দেবে এবং পাইপলাইনটা সেই রকম ভাবেই করতে হবে। এটা বলার পরে স্যার আমাকে এটাও বলে দেয় যে অবশ্যই তোমাকে সতর্কতার সঙ্গে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে পাইপ লাইনটা বসাতে হবে। এরপর আমি সেটা নিয়ে ডেপুটি ম্যানেজারের কাছে চলে যাই এবং ম্যানেজার স্যার আমাকে খুবই চমৎকারভাবে পাইপলাইনের ড্রইং টা বুঝিয়ে দিয়েছিল। এরপরে আমি কাজের জায়গায় চলে যাই যথারীতি সেখানে গিয়ে দেখি কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপরে সেখানে ৮ ইঞ্চি পাইপলাইন হবে পুরো ফ্যাক্টরির ওয়াটার লাইনের আউটপুট লাইনটা মূলত এপাশ দিয়েই আসবে। আর এই ওয়াটার লাইনের শেষ অংশ হবে ইনফ্লুয়েন্স ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এর নিচে। মানে পুরো ফ্যাক্টরির আউটপুট পানিটা ইনফ্লুয়েন্স ট্রিটমেন্ট প্লান্টে গিয়ে সেটা আবার রিসাইকেলিং করে ফ্যাক্টরির অন্যান্য কাজে সেই পানিটা ব্যবহার করা হবে আর এই কাজটার ড্রয়িং এবং দায়িত্বটা আমার উপরেই দেওয়া হয়েছিল বুঝতেই পারছেন বড় ধরনেরই একটা দায়িত্ব। প্রথমে কিছুটা নার্ভাস মনে হচ্ছিল তবে চেষ্টা করেছিলাম নিজের সাধ্যমত সবকিছু রক্ষণাবেক্ষণা করার।
সেখানে গিয়ে পাইপ লাইনের কাজের বর্ণনাটা আমি সেখানে থাকা ফোরম্যানকে খুব ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিলাম কিভাবে কোন পাশ দিয়ে কত ইঞ্চি লাইন হবে সেটা তাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার পরে আমি চলে যাই আবার পুকুর পাড়ে। পুকুর ভরাট করার জন্য কিছুক্ষণ পরপরই ট্রাক ভর্তি বালি আসছিল এবং সেগুলোর হিসেব আমার পড়তে হচ্ছিল আমি মূলত একটা খাতা নিয়ে গিয়েছিলাম সেই খাতাতেই সেগুলো তুলে রাখছিলাম। এটা ছিল আমার কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা এরকম অভিজ্ঞতা আগে কখনোই অর্জন করেনি বা এরকম কাজের সঙ্গে আগে কখনোই সম্পৃক্ততা ছিল না। সারাদিনই অনেক নতুন নতুন জিনিস সম্পর্কে জেনেছি অনেক নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছি সেই সাথে নতুন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এটা দারুন এক মুহূর্ত ছিল আমার জন্য তবে বৃষ্টির জন্য মাঝে মাঝে কাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। সারাদিন এভাবেই কাটছিল এভাবে শেষ করে অবশেষে সন্ধ্যার পরে সিনিয়র ম্যানেজার আবার আমাকে তার রুমে ডাকে আমি তার রুমে যাই, রুমে গিয়ে কত ট্রাক বালি পুকুরে নামানো হয়েছে সে ব্যাপারটা জানতে চায় আমি তাকে খাতা বের করে সেগুলো দেখাই।
পরবর্তীতে জেনারেল স্টোরের ম্যানেজার কে ফোন দিয়েছে জানতে চায় যে কত ট্রাক বালি পুকুরে দেওয়া হয়েছে, এরপরে জেনারেল স্টোরের ম্যানেজার তাকে জানায় যে ২৭ ট্রাক বালি দেওয়া হয়েছে। এখানে আমি আমার নতুন এক বুদ্ধি মাত্রা কাজে লাগিয়েছিলাম সেটা হচ্ছে যে বালির হিসেব রাখার পাশাপাশি প্রত্যেকটা গাড়ির নাম্বার আমি লিখে রেখেছিলাম সাইডেই। আমিও ২৭ ট্রাক বালির এন্ট্রি খাতায় লিখেছিলাম সেই সাথে প্রত্যেকটা গাড়ির নাম্বার পাশে লিখে রাখার জন্য স্যার আমাকে বেশ ভালই প্রশংসা করল। স্যারের মুখে প্রশংসা শুনে বেশ ভালোই লাগছিল এরপরে স্যার আমার সঙ্গে সেই জায়গায় গিয়ে পাইপ লাইনের কাজ দেখে। মোটামুটি ভাবে ড্রইং এর যেরকম ভাবে বলা ছিল ঠিক সেরকমভাবেই কাজ হচ্ছে। এরপরে স্যারের সঙ্গে অনেকটা সময় সেখানে থেকে সবকিছু বুঝে শুনে সেখানে থেকে যারা কাজ করছিল তাদের সঙ্গেও কথাবার্তা শেষ করে সেদিনের মত আমার ডিউটি শেষ হল। পরেরদিন ভেবেছিলাম একই কাজ আমাকে করতে হবে কিন্তু পরবর্তীতে স্যার আমাকে জানিয়ে দেয় যে ওখানে আর যেতে হবে না তোমাকে মেশিন সাইডেই থাকতে হবে।
মূলত মেশিন সাইডে কাজ করতেই আমার অনেক বেশি ভালো লাগে কারণ যেহেতু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া শেষ করেছি মেশিনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ না করলে আসলে ভালো লাগেনা। যেহেতু ওই দায়িত্ব থেকে আমাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আমি মনে মনে একটু খুশি হয়েছি। তবে মাঝে মাঝে সেখানে যাওয়া হয় কাজকর্ম কেমন হচ্ছে সেটা দেখে এসে আবার স্যারকে অবগত করা হয় মোটামুটি এভাবেই কাটছে দিন। যাই হোক ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম মাত্র একদিন এক দিনেই অনেক কিছু শিখেছি জেনেছি এটা হয়তোবা ভবিষ্যতে কাজে লাগতেও পারে আবার নাও লাগতে পারে তবে মাঝে মাঝে এরকম ভিন্ন দায়িত্ব নিতে বেশ ভালই লাগে।
এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমার এই ভিন্ন ধরনের দায়িত্বে নতুন অভিজ্ঞতার গল্প আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | ভিন্ন ধরনের এক দায়িত্ব, নতুন এক অভিজ্ঞতা। |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR