বড় ভাইয়ের দোকান উদ্বোধন
আজ--০৫ অগ্রহায়ণ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | হেমন্তকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- বড় ভাইয়ের দোকান উদ্বোধন
- আজ--০৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- সোমবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
বর্তমান সময়ে আমরা অনেকে চাকুরির পিছনে ছুটছি আর চাকুরির পিছনে যে শুধুমাত্র স্কুল কলেজ ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্ররাই ছুটছে তা কিন্তু নয়। সকলেই এখন কোনো না কোনো চাকরি করতে চাই কেউই আর বেকার বাসায় বসে থাকতে চায় না। সবাই কর্মের তাগিদে গ্রাম থেকে শহরের দিকে পদার্পণ করছে। সকলেই হয়তো এটা ভাবে যে গ্রাম থেকে শহরে আসলেই হয়তো বা কোনো না কোনো চাকরি হয়ে যাবে তো আসলে গ্রামটা যতটা সহজ শহরটা ততটা সহজ নয়। এখানে কেউ কাউকে মূল্যায়ন করে না এখানে নিজের মূল্যায়ন নিজেকেই করতে হয় এবং নিজের ছোটাছুটি দৌড়াদৌড়ি নিজেই করতে হয়। কেউ কাউকে পাত্তা দেয় না। তবে আমি মনে করি বর্তমান সময়ে চাকুরীর পিছনে না ছুটে নিজে যদি ছোট একটা উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হওয়া যায় তাহলে ব্যাপারটা খুব একটা খারাপ হয় না।
চাকুরী করা মানেই অন্যের গোলামী করা,তার কথা মত চলা, অপর পাশের ব্যক্তিটি যা বলবে সেই ভাবেই জীবন চালাতে হয়। কোনটা ভালো কোনটা খারাপ এসবের কোন পাত্তা দেওয়া যাবে না। নিজের কোন স্বাধীনতা নেই নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে হবে এই চাকরির পিছনে। তবে ছোট একটা উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে যদি নিজের জীবনটা পরিবর্তন করা যায় তাহলে কে এই চাকরি করতে চায় আপনারাই বলুন..!! আমার এলাকার এক বড় ভাই যে কিনা ছোটখাটো একটা চাকরি করতো। বেশ অনেকদিন ধরেই শুনছি যে ভাই চাকরি ছেড়ে দেবে। যদিও এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়েছিল তিনিও জানিয়েছিলেন যে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে বাসায় এসে কোন একটা ব্যবসা শুরু করবে। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটা হয়তোবা এমনিতেই বলছে চাকুরী আবার কেউ ছেড়ে দেয় নাকি...!!
কিন্তু আমাকে রীতিমতো অবাক করে দিয়ে হঠাৎ করেই একদিন ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমি তো চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। কথাটা শুনে রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম,এ আবার কেমন ছেলে..!! যে কিনা ভালো একটা বেতনের চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। বর্তমান সময়ে সকলে একটা চাকরি পাবার আশায় কত জায়গায় নিজের সিভি ড্রপ করে যাচ্ছে এবং ইন্টারভিউ দিয়ে যাচ্ছে তবুও কোথাও চাকরি হচ্ছে না। হঠাৎ করে চাকরি ছেড়ে দিল নিজের কিছু করবে বলে। ভাইয়ের কাছে একথা জিজ্ঞেস করার পরে ভাই বলল এসব চাকরি বাকরি আমার দিয়ে হবে না বুঝলি। বাসায় এসে আমি নতুন কিছু করব।
এটাও প্রায় মাস তিনের আগের কথা। ভাই বাসায় চলে আসলো বাসায় এসে ভাইয়ের সঙ্গে খুব একটা বেশি দেখা হয়নি কারণ আমি সেই সময়টাতে ঢাকায় ছিলাম। এরপরে বাসায় গিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো ভাই বলল যে আমাদের বাজারে ছোট একটা দোকান নেব এবং সেখানে কসমেটিকসহ জামাকাপড় এবং ছোট্ট একটা শোরুমের দোকান দিবো। যদিও এসব ব্যাপারে আমার কেমন একটা ধারণা নেই আমি ভাইকে বললাম আপনার যেটা ভালো মনে হয় আপনি সেটাই করেন তবে বেশি ইনভেস্ট করার দরকার নেই আগেই। করতে থাকেন শোরুমটা পরে দিয়েন আগে কসমেটিক সহ অন্যান্য কিছু দোকানে তুলে দেখেন বেচা বিক্রি কেমন হয়। যদি ভালো বিক্রি হয় তখন দোকানটা আরো একটু বড় পরিসরে বৃদ্ধি করলেন সমস্যা নেই।
একথা বলার পরে ভাই ও হ্যাঁ সূচক মন্তব্য করে বলল আচ্ছা দেখি কি করা যায়। কোথায় ছিল ভাইয়ের সঙ্গে আমার লাস্ট কথা এর পরে প্রায় ৭-৮ দিন তেমন কোনো কথা হয়নি। হঠাৎ একদিন ভাই ফোন দিয়ে বলল যে গতকাল দোকান উদ্বোধন করব তুই কিন্তু চলে আসবি সন্ধ্যার আগেই। কিন্তু সেদিন আবার আমার একটা কাজ পড়ে গিয়েছিল আমি ভাইকে বললাম ভাই আমার তো একটা কাজ করে গিয়েছে আমি তো যেতে পারবো না। যদিও ভাই একটু মন খারাপ করেছিল কিন্তু কোন ব্যাপারটা বোঝানোর পরে ভাই গুলো ঠিক আছে তাহলে যখন মন চায় এসে দেখে যাস। দোকান যদি নতুন উদ্বোধন করা হয় সেদিনও যেতে পারেনি তবে পরের দিন সন্ধ্যেবেলায় আমি ঠিকই ভাইয়ের দোকানে গিয়েছিলাম।
দোকানে যাওয়ার পরে দেখি ভাই অনেক সুন্দর হবে দোকানটা সাজিয়েছে চারিদিকে বেলুন দিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে যার জন্য পূর্ণ করে দোকানটা উদ্বোধন করেছে বোঝাই। এরপরে ভাইয়ের সাথে দোকানের নিচে দেখা করলাম ভাইয়ের দোকানটা দোতলায়। আমি আর ভাই দুজনে চলে গেলাম ভাইয়ের নতুন দোকানে। আশেপাশের পরিবেশটা অনেক বেশি ভালো লেগেছে নতুন এই বিল্ডিং এ নতুন পরিবেশে ভাইয়ের নতুন দোকান উদ্বোধন দেখে খুবই ভালো লাগলো। বিক্রি যদি ভালো মত হয় তাহলে আশা করি ভাই এখান থেকে লাভবান হবে। আমি ঘুরে ঘুরে প্রতিটা রুমে গিয়ে দেখছিলাম বেশ ভালই লেগেছে।
ঘুরতে ঘুরতে যখন বের হয়ে আসবো তখন ভাইয়ের টেবিলের সামনে গেলাম আর সেখানে গিয়েই দেখতে পাই অনেকগুলো ইন্ডিয়ান টাকা। যদিও এর আগে কখনো ইন্ডিয়ান টাকা দেখিনি এই প্রথমবার ভাইয়ের নতুন দোকান উদ্বোধনের সময় গিয়ে দেখলাম বেশ ভালো লাগবে। ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এটা আপনি কোথায় পেয়েছেন ভাই বলল সে নাকি তার কোন বন্ধুর কাছ থেকে নিয়েছিল। তার টেবিলের উপর কাচের নিচে এই টাকাগুলো সাজিয়ে রেখেছে দেখতে বেশ ভালই দেখাচ্ছিল। শেষমেষ ভাইকে অভিনন্দন জানালাম এবং নতুন কর্মের জন্য শুভকামনা জানালাম। এবং তাকে এটাও বলে আশ্বস্ত করলাম যে দোকানটা অনেক ভালো জায়গায় নিয়েছেন বিক্রি অনেক ভালোই হবে। ভাই আমাকে শুধু এতোটুকুই বলল যে আমি নিজে কিছু করতে চেয়েছি অন্যের অধীনে আমি চাকরি করতে চাই না।
ভাইয়ের এই ছোট্ট কথাটা আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে কারণ অন্যের অধীনে চাকরি করার থেকে নিজেকে নিজে কিছু টাকা দিয়ে নতুন একটা ব্যবসা শুরু করাই ভালো বলে আমি মনে করি। এতে করে দিনশেষে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। আর আমি এটাও মনে করি যে চাকুরীর পিছনের না ছোটাছুটি করে নিজের কোন একটা ব্যবসা শুরু করা উচিত হোক সেটা ক্ষুদ্র পরিসরে একটা সময় গিয়ে সেটাও অনেক বড় হয়ে যাবে।
এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত একটা পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | বড় ভাইয়ের দোকান উদ্বোধন |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বর্তমান বাজারে এখন যতই ভালো চাকরি হোক না কেনো চাকরি করতে ভালো লাগে না। সবাই নিজের অধীনে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে চায়। আপনার বড় ভাই খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দোকান তো বেশ বড়। ভাইয়া আসলে এটা কিসের দোকান? আপনার লেখা গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বড় ভাইয়ের এই সিদ্ধান্তকে আমি বরাবরই এপ্রিশিয়েট করি। এরকম সিদ্ধান্ত আসলে যে কেউ নিতে পারে না চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন করে উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছাটা জাগাতে অনেক বেশি সাহসের প্রয়োজন হয়। এখানে কসমেটিক্স সহ প্রয়োজনীয় জামাকাপড় পাওয়া যাবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমিও মনে করি চাকরির চেয়ে ব্যবসা করা খুব ভালো। কারণ চাকরি করলে কোনো স্বাধীনতা থাকে না। অনেক সময় প্রয়োজন হলেও অফিস থেকে ছুটি নেওয়া যায় না। আপনার এই বড় ভাইয়ের মতো, আমার এলাকার এক ছোট ভাই কিছুদিন আগে চাকরি ছেড়ে, আমাদের বাজারে একটি ফার্মেসী দিয়েছে। আশা করি আপনার বড় ভাইয়ের ব্যবসা খুব ভালোভাবে চলবে। দোকানের ডেকোরেশনও চমৎকার হয়েছে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমিও সেটাই মনে করি মাঝে মাঝে কিছু উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে মানুষের জীবন বদলে যায়। অন্যের অধীনে কাজ করার থেকে নিজে কিছু করা অনেক ভালো বলে আমি মনে করি এতে করে নিজের স্বাধীনতা থাকে সবসময়। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
দোকান উদ্বোধনের সময়টা অনেক মিস করেছি। বাসায় থাকলে অবশ্য আমিও এখানে থাকতাম। তবে তোমরা খুবই সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছ। সাইফুল ভাইয়ের দোকান মানে নিজেদের দোকান। যখন খুশি তখন দোকানে গিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে। সুন্দর একটি পোষ্ট ছিল।
আপনি একদম সত্য কথা বলেছেন সাইফুল ভাইয়ের দোকান মানে আমাদের নিজেদেরই দোকান যখন খুশি গিয়ে আড্ডা দিতে পারব সমস্যা নেই। আর ভাইয়ের এরকম উদ্যোগ গ্রহণ সাধুবাদ জানাই। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।