ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না//পর্ব:-০৩
আজ--০৬ ফাল্গুন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | বসন্তকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না
- আজ-০৬ইফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- সোমবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে......!!
গত পর্বে আমি আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম যে আমার পরিচিত সেই খালাতো ভাই ভালোবাসা করে বিয়ে করেছিল কিন্তু কয়েক মাস পরে এই মেয়েটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল যে তারা আর একসাথে থাকবে না। এটা শোনার পরে রীতিমতো অবাক হয়েছিলাম সেই সাথে দুঃখ লেগেছিল মনে হয়েছিল যে ভালোবাসা বলে আসলে পৃথিবীতে তেমন কিছু হয় না। সেই সাথে এটাও মনে হয়েছিল যে পৃথিবীতে ভালোবাসা বলে কিছু নেই হয়তোবা সেটা হতে পারে ক্ষনিকের ভালোলাগা বা ক্ষনিকের আবেগ। আবেগের বশে আমরা মানব জাতি একটা সময় গিয়ে অনেক কিছুই করে বসে অনেকের কাছে অনেক রকম কথা দিই কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেগুলো পাল্টে যায়। ভালোবাসা থাকাকালীন অবস্থাটা একরকম থাকে ঠিক তেমনি ভাবে যখন বাস্তবতা সামনে আসে তখন পুরো ব্যাপারটা একদমই ভিন্ন। ভালোবেসে পাশে থাকা মানুষগুলোর সংখ্যা খুবই কম। বরঞ্চ ভালোবেসে হঠাৎ করেই হারিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এই হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলো কখনোই সত্যিকার অর্থে কাউকে ভালবাসতে পারে না শুধুমাত্র তারা ক্ষনিকের ভালোলাগা হতে পারে মাত্র। ভালোবেসে সুখী হতে পারে এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম ঠিক তেমনি ভাবে ভালবাসে পাশে থাকা মানুষের সংখ্যা আরো বেশি কম। অনেক আগে থেকেই শুনেছিলাম এবং জেনেছিলাম যে ভালোবাসা আর ভালোলাগা কখনোই এক নয়।
যাইহোক মেয়েটা যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছিল যে তারা আর এক সঙ্গে থাকবে না আর এ কথা শুনে আমার খালাতো ভাইয়ের মনটা আরো বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। যদিও শুনেছি যে মেয়েটার মা নাকি তাকে অনেক রকম ভাবেই উসকে দিয়েছে। মেয়েটার পরিবার সম্পর্কে আমি আপনাদেরকে অনেক আগেই বলেছিলাম যে তার পরিবারের মানুষজন খুব একটা ভালো ছিল না তারা সবসময়ই অনেক অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল বিশেষ করে ওই মেয়েটার বাবা এবং চাচারা সেগুলো আর আপনাদের সঙ্গে নাই বলি। মেয়েটার মা চেয়েছিল যে এই ছেলেটা যেহেতু ভালো একটা চাকরি করে মেয়েটা যদি তার সঙ্গে বিয়ে দিতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে এই ছেলেটাকে সাথে নিয়ে তারা খুব ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। আর এই কথাটা মেয়েটার মা আমার খালাতো ভাইয়ের কাছে এরকম ভাবেই বলেছিল যে আমার মেয়ে যদি তোমার সঙ্গে রাখতে চাও তাহলে তোমার মা-বাবাকে ছেড়ে আমাদের বাসায় চলে আসতে হবে। আমি মনে করি একটা সন্তানের কাছে এর থেকে খারাপ প্রস্তাব আর কিছুই হতে পারে না।
যখন মেয়েটার মা আমার খালাতো ভাইয়ের কাছে এরকম একটা প্রস্তাব রেখেছিল তখন আমার খালাতো ভাই সোজাসুজি বলে দিয়েছিল এটা আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। আমি কখনোই আমার মা বাবা এবং আমার বোনকে ছেড়ে আপনাদের এখানে এসে থাকতে পারবো না। সত্যিকার অর্থে একটা মেয়ে তার সংসার ছেড়ে দেয় শুধুমাত্র তার মায়ের কিছু কথার উপর নির্ভর করে, পৃথিবীতে সকল মা একরকম নয় আবার পৃথিবীতে কিছু মা আছে যারা সব সময় নিজের চিন্তা করে ছেলেটার পরিবারের কথা কখনোই চিন্তা করে না এক্ষেত্রে এই মেয়েটার মা ঠিক তেমনি ছিল। যতটুকু বুঝেছিলাম যে মেয়েটা তার মায়ের কথাতেই সংসারে বিচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এরকম ভাবেই চলছিল প্রায় কয়েক মাস দেখতে দেখতে তাদের বিয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে প্রায় ৮ থেকে ১০মাস। আমার খালাতো ভাই অনেক রকম ভাবেই চেষ্টা করেছে মানিয়ে নেওয়ার অনেক রকম ভাবেই মেয়েটাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু মেয়েটা তার মায়ের কথার উপর অটল। মাঝে মাঝে আমার কাছে ফোন দিত আমার খালাতো ভাই এবং বলতো যে তার বউ এরকমভাবে কথা বলছে এখন আর তার কি করা উচিত। আমি তাকে কখনোই খারাপ দিকনির্দেশনা দেইনি আমি কখনোই চাইনি যে তাদের বিচ্ছেদ ঘটুক। আমি সবসময়ই তাকে চেয়েছি মেয়েটাকে সে যেন ভালোমতো বোঝায় যেহেতু তারা ভালবেসে বিয়ে করেছে এখন যদি তাদের সংসারে বিচ্ছেদ ঘটে তাহলে পরিবার থেকে তাকে অনেকেই অনেক রকম কথা শোনাবে কারণ বিয়ের আগে কেউই তার এই বিয়েতে মত দিয়েছিল না, সকলের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে সে ওই ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করেছিল।
সবসময় আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি যে ভালোবাসার ক্ষেত্রে ছেলেরা সবসময়ই সত্যিকার অর্থেই ভালবাসে কিছুসংখ্যক ছেলেরা হয়তোবা সত্যিকার অর্থে ভালবাসতে পারে না তবে এক্ষেত্রে আমার খালাতো ভাই যে তাকে সত্যিকার অর্থে ভালোবেসেছিল সেটা বোঝা যায়। সত্যিকার অর্থে ভালো না বাসলে কেউ পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পারে না সকলেই যেখানে দ্বিমত পোষণ করেছিল সেখানে সকলের বিরুদ্ধে গিয়ে এই মেয়েটাকে সে বিয়ে করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে মেয়েটা যে তাকে সত্যি সত্যিই এরকম ভাবে ছেড়ে দেবে সেটা সে বা আমরা কখনোই বুঝতে পারিনি কখনো ভাবেও নেই যে ভবিষ্যতে এরকম কিছু ঘটবে। যেহেতু মেয়েটা তার মায়ের বাসাতে চলে গিয়েছিল আর তার মা তাকে অনেক রকম ভাবেই যুক্তি পরামর্শ দিয়েছিল এবং মেয়েটা তার মায়ের কথা মতোই চলছিল।
হঠাৎ করেই একদিন আমার খালাতো ভাইয়ের বাসায় মেয়েটা ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়। এটা দেখে পরিবারের মানুষ সকলেই হতাশ হয়ে গিয়েছিল সত্যি সত্যি এই মেয়েটা তাকে ছেড়ে দিল। যদিও এই কথাটা সেই সময়টাতেই খালাতো ভাইকে জানানো হয়নি কারণ আমার খালাতো ভাই অনেক দূরে কোথাও চাকরি করত সেই সময়টাতে যদি তাকে জানানো হতো তাহলে সে হয়তো বা অন্যরকম কিছু ঘটিয়ে ফেলত। এরপরে খালাতো ভাইকে কোন একটা কথা বলে বাসায় নিয়ে আসা হয় বাসায় নিয়ে এসে তারপরে তাকে পুরো ব্যাপারটা জানানো হয়। এটা জানানোর পরে সে অনেকটাই ভেঙে পড়ে।
ভেঙে পড়াটাই স্বাভাবিক একটা ছেলে ভালবেসে বিয়ে করেছে পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে, আর যখন সেই মেয়েটা তখন তাকে ছেড়ে যায় তখন নিজের বলতে আর কিছুই থাকে না নিজের ভালোবাসার উপর থেকে বিশ্বাস চিরতরে হারিয়ে যায় এবং উঠে যায় কাউকেই আর আপন মনে হয় না,ওর ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটাই ঘটেছিল।
এরপরেও ঘটে গিয়েছিল আরো অনেক ঘটনা যেগুলো আমি পরবর্তী পর্বে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করছি এই পর্বটি আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না//পর্ব:-০৩ |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
এই গল্পের আগের পর্ব গুলো আমার যদিও পড়া হয়নি, তবে আমার কাছে এই পর্বটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে। এই পর্বটা পড়ে এটা বুঝতে পারলাম যে, ছেলেটা এবং মেয়েটা একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। কিন্তু মেয়েটা শেষ পর্যায়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছিল। আর এইসব কিছুই হয়েছিল মেয়েটার মায়ের কারণে। মেয়েটার মা তাকে উসকিয়ে দিয়েছিল বলে মেয়েটা তার সাথে এরকম আচরণ করেছিল। আর সে কিছুতেই তার সিদ্ধান্ত বদলায়নি। ডিভোর্স লেটার দেখার পর একটা ছেলে ভেঙে পড়ারই কথা। দেখা যাক এই গল্পের পরবর্তীতে কি হয়।
যখন একটা ছেলে বিয়ে করে আর যখন সেই মেয়েটা তাকে কোনো কারণ ছাড়াই ছেড়ে দেয় তখন সেই ছেলেটার কতটা খারাপ লাগে এটা একমাত্র সেই মানুষটা ছাড়া কেউ কখনো বুঝতে পারে না। খুবই সুন্দর একটা মন্তব্য করেছেন আপু আপনার মন্তব্যটি পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।