অনেক দিন পর বাড়ি ফেরা

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ - ১৩ কার্তিক | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | হেমন্তকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে অনেকদিন পরে বাড়ি ফেরার গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • অনেক দিন পরে বাড়ি ফেরা
  • আজ ১৩ কার্তিক, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • রবিবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ দুপুর সবাইকে......!!


Picsart_23-10-29_13-43-38-863.jpg

কভার ফটো তৈরিতে--@jibon47



আমরা অনেকেই লেখাপড়া অথবা চাকরি বাকরি করার কারণে বাসার বাহিরে থাকি। অনেকদিন হয়ে যায় বাসায় ফেরা হয় না কিন্তু মনটা বাসাতেই থাকে সবসময়। আমরা সকলেই চাই কোন একটা নির্দিষ্ট সময় পরে কর্মস্থল বা লেখাপড়া শেষে বাসায় ফিরে যেতে। অনেকদিন বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় এসেছিলাম এর মধ্যে আর বাসায় তেমন একটা যাওয়া হয়নি। যদিও অনেকদিন আগেই বাসায় এসেছি তবে বাসায় ফেরার গল্পটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করা হয়নি তাই সিদ্ধান্ত নিলাম যে বাসায় ফেরার গল্পটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করি। বাসায় যেদিন ফিরবো তার একদিন আগেই আমি আমার জামা কাপড় গুলো ধুয়ে দিয়েছিলাম এবং সেগুলো আয়রন করে রেখে দিয়েছিলাম। সেদিন খুব সকাল সকাল ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম রাত্রি বারোটার আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কারণ পরের দিন সকালবেলা আমাকে বাসায় যেতে হবে এই কারণে। ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে সকাল ৯:৩০ টার দিকে রওনা করলাম বাসার উদ্দেশ্যে। সেদিন সকাল থেকেই পরিবেশটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল আকাশে কোন মেঘ ছিল না সাদা মেঘের ভেলা আর টগবগে সূর্য উঠেছিল সেদিন।

ভেবেই নিয়েছিলাম আজ প্রচন্ড গরম পড়বে আমার চিন্তা ভাবনা এমনটাই ছিল। যদিও খুব ভোরে রওনা দেয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু ঘুম থেকে ভোরবেলায় উঠতে পারেনি যার কারণেই রওনা দিতে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু বাসায় ফিরব বুঝতেই পারছেন মনের মধ্যে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিল আর এই ভালোলাগাটা কখনো বলে প্রকাশ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। ঢাকাতে যদিও ভাই ব্রাদারের সঙ্গেই থাকি কিন্তু সকলেই একসঙ্গে ছুটিতে এসেছে আমি একমাত্র দেরিতে বাসায় যাচ্ছি যার কারণে ভালোলাগাটা আরেকটু বেশি কাজ করছিল। বাসায় গিয়ে সকলের সঙ্গে দেখা হবে কথা হবে আড্ডা হবে এটা ভাবতেই ভালো লাগছিল। মনে মনে চিন্তা করেই নিয়েছিলাম যখনই রওনা দেই না কেন নির্দিষ্ট একটা সময় পরে বাসায় গিয়ে পৌঁছাব।

এরপরে আমি বাসে করে এরপরে আমি বাসে করে চলে টেকনিক্যাল। টেকনিক্যাল থেকে একটা রিকশা নিয়ে চলে যাই গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে গিয়ে আরেকটা বাসে করে আমি চলে যাই ফেরিঘাটে। যদিও এই ফেরিঘাটে পৌঁছাতে প্রায় ঘন্টা তিনেক সময় লাগে। এই তিন ঘণ্টা আমি বাসের মধ্যে বসেছিলাম আর কানের মধ্যে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিলাম। বেশ ভালই লাগছিল সেই সময়টা। আর বরাবরই আমি বাসে উঠলে জানালার পাশে সিট নেওয়ার চেষ্টা করি।

IMG_20231029_134145.jpg

IMG20230614172451.jpg

IMG20230614172637.jpg

জানালার পাশের সিটে বসে প্রকৃতির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। ছোটবেলায় যখন কোন গাড়িতে উঠতাম তখন রাস্তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম মনে হতো যেন রাস্তাগুলো দৌড়ে পিছিয়ে চলে যাচ্ছে। আর এখন বাসে উঠলে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকি তখন মনে হয় যেন প্রকৃতি চারদিকে ঘুরছে আর আমি কোন এক গোলক ধাঁধার মধ্যে আটকে গিয়েছি। এই ব্যাপারটা বরাবরই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে এবং আমি এতে অনেক বেশি আনন্দ পাই বেশ ভালই লাগে। এরপরে প্রায় ঘন্টা তিনের পরে আমি পাটুরিয়া ফেরিঘাটে গিয়ে পৌঁছাই। যদিও প্রথমে ভেবেছিলাম যে ফেরিতে পার হবো কিন্তু ফেরিতে পার হতে আবার অনেক বেশি সময় লাগবে যার কারণে সিদ্ধান্ত নিলাম যে লঞ্চে চলে যাই খুব দ্রুতই চলে যেতে পারবো। লঞ্চঘাটে গিয়ে আমি কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম এবং সেখানে প্রচন্ড রৌদ্র ছিল যার কারণে বাহিরে না থাকলে লঞ্চের মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম খুব দ্রুতই।

প্রচন্ড গরমের মধ্যে প্রায় সকলেই ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু কিচ্ছু করার ছিল না কারণ সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ যাত্রী বসার জায়গা ছিল না লঞ্চের ভেতরে। অনেকেই ছাদের উপর বসে ছিল আমি অনেক আগেই লঞ্চের মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম কিন্তু ভেতরে গরম থাকার কারণে আমিও তারপরে ছাদের উপর উঠে পড়ি। যদিও প্রচন্ড রৌদ্র ছিল কিন্তু বাতাস থাকার কারণে তেমন একটা বেশি কষ্ট হচ্ছিল না শরীরটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল নিমিষেই। এরকম একটা মুহূর্তে যদি আরেকজন পাশে থাকতো তাহলে খুবই ভালো লাগতো মূলত ভাই ব্রাদার যদি পাশে থাকে তাহলে যেকোনো জার্নি অনেক বেশি ভালো লাগে একা একা জার্নি করতে খুব একটা বেশি ভালো লাগে না। কিন্তু কিছু করার ছিল না যেহেতু একা একাই বাসায় পৌঁছাতে হবে তাই চিন্তাভাবনা ছিল খুব দ্রুত বাসায় চলে যাওয়া।

IMG20231021133132.jpg

IMG20231021131045.jpg

IMG20231021133135.jpg

IMG20231021131043.jpg

IMG20231021133126.jpg

IMG20231021131041.jpg

যখন লঞ্চ ছেড়ে দিয়েছিল ঠিক সেই সময়টা তো অনেক বেশি ভয় লাগছিল কারণ চারিদিকে শুধু পানি আর পানি সেই সাথে ছিল প্রচন্ড স্রোত। নির্দিষ্ট একটা সময় পরে আমরা সকলেই লঞ্চ থেকে নেমে গিয়েছিলাম এরপরে আবার একটা বাসে উঠে আমাকে যেতে হবে খোকসা বাসস্ট্যান্ডে। সেখানেও প্রায় আমাকে ঘন্টা তিনে বাসের মধ্যে বসে থাকতে হবে আমি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ৫০০মিলি একটা স্প্রাইট, একটা ব্রেড, এবং চারটা কলা কিনে নিয়ে বাসের মধ্যে উঠেছিলাম। যেহেতু সকাল বেলা বাসা থেকে খাওয়া-দাওয়া করে বের হয়েছি আর এর মাঝে কোন খাওয়া দাওয়া হয়নি প্রায় দুপুর হয়ে গিয়েছে তাই ভেবেছিলাম বাসের মধ্যে গিয়ে খাব। বাসের মধ্যে কি আবার কানের মধ্যে হেডফোনটা লাগিয়ে গান শুনছি আর সেগুলো খেয়ে শরীরের কিছুটা শক্তি এসেছে। যতই সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তত বেশি ভালো লাগছে এটা হয়তোবা আপনারা সকলেই অনুভব করতে পারেননি যে থেকে।

অনেকদিন পরে যখন বাসায় ফেরা হয় তখন গাড়ি যত সামনের দিকে অগ্রসর হয় নিজের কাছে তত বেশি ভালো লাগে। ঘন্টা তিনের জার্নির পর আমি খোকসা বাসস্ট্যান্ডে নেমে সেখানে একটা টং দোকানে বসে এক কাপ চা খেয়ে শরীরটা আরো বেশি চাঙ্গা করে তুলি। এরপরে সেখান থেকে একটা সিএনজিতে করে চলে যাই নিজের এলাকায়। যখন নিজের এলাকায় গিয়ে পৌছালাম তখন এতটা বেশি ভালো লাগছিল যে বলে বোঝাতে পারবো না। খুব দ্রুতই বাসায় গিয়ে গোসল খাওয়া-দাওয়া করে বের হয়ে পড়ি ভাই ব্রাদারের সঙ্গে দেখা করার জন্য। তারপরে অনেক রাত অব্দি আড্ডা দিয়ে রাত্রি সাড়ে এগারোটায় বাসায় ফিরেছিলাম।

এটাই ছিল আমার আজকের অনেক দিন পরে বাড়ি ফেরার গল্প। আশা করছি এই গল্পটা আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়অনেক দিন পরে বাড়ি ফেরা
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

ভাই আপনি অনেকদিন পর বাড়িতে ফিরেছেন জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। আশা করি বাড়ির সকল আত্মীয়-স্বজনের সাথে বেশ সুন্দর সময় অতিবাহিত করবেন। আসলে লঞ্চ উঠলে আমারও বেশ ভয় লাগে ভাই। আসলে যখন চারিদিকে শুধু পানি আর পানি দেখতে পাই তখন ভয়ে জিনটা সুখে আসে। বাড়িতে গিয়ে রাত অব্দি আড্ডা দিয়েছেন জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

বাড়িতে আসলে ভাই ব্রাদারের সঙ্গে খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত পাঠানো হয় সব সময়। আর লঞ্চে উঠলে বড় বড়ি আমার অনেক বেশি ভয় লাগে তার জন্য আমি ফেরিতে পারাপার হয় কিন্তু সেদিন হঠাৎই লঞ্চে পার হয়ে ছিলাম বেশ ভালোই লেগেছিল। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

আপনার বাড়ি ফিরা দেখে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া আমাদের কর্মের তাগিদে বাইরে থাকতে হয়।তবে আমরা বাইরে যতই থাকি না কেন আমাদের মন সব সময় বাড়ির জন্য ছুটে চলে। যাইহোক ভাইয়া আপনি বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে আড্ডা দিয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

অনেকদিন পরে বাড়িতে ফিরলে নিজের কাছে অন্যরকম ভালো লাগার কাজ করে আর এই ভালো লেখাটা কখনো বিশ্লেষণ করা যায় না। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপনার বাড়ি ফেরার কথাটা শুনে আমার আর ভালো লাগছে না আপু। আফসোস হচ্ছে। প্রায় তিন মাস হলো বাড়ি থেকে এসেছি। সাধারণত আমাদের ঐদিকের মানুষ বাসে করে এইভাবেই বাড়িতে যায়। বাসে উঠলে গান শোনা আমারও একটা স্বভাব। আর বাড়িতে গিয়ে ফ্রেশ হয়েই বেরিয়ে পড়েছেন অন্যদের সঙ্গে দেখা করতে। অনেক মিস করছি এগুলো ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আপনি তো দেখছি অনেকদিন বাড়ি থেকে বের হয়েছেন এর আগে এরকম আমিও তিন মাসের জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। যাই হোক খুব দ্রুতই বাসায় ফিরবেন বলে আশা রাখি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

জি ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন, বাইরে কোথাও কাজ অথবা পড়ালেখা করার জন্য গেলে মনটা কিন্তু বাড়িতেই পড়ে থাকে, এটা একদম বাস্তব কথা। আমি মেসে ছিলাম তখন সব সময় বাড়ির কথা মনে পড়তো।

 last year 

যারা মেসে থাকে একমাত্র তারাই বুঝতে পারে যে বাসা থেকে বের হয়ে গেলে আর সহজে বাসায় ফেরা হয় না। যেখানেই থাকি না কেন মনটা সব সময় বাসাতেই পড়ে থাকে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 78880.92
ETH 3188.85
USDT 1.00
SBD 2.68