অবশেষে আবার ধুলাবালির শহরে
আজ - ৩১ আষাঢ় | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এখন জনপ্রিয় কয়েকটি কমিউনিটির মধ্যে একটি। এটা ভাবতেই আমার অনেক বেশি ভালো লাগে,সেই সাথে আমি সত্যিই অনেক বেশি গর্বিত আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য হয়ে।
- আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
- ধুলোবালির শহরে
- আজ ৩১শ আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- শনিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ সকাল সবাইকে.....!!
খুব ছোটবেলা থেকেও যারা গ্রামে বড় হয়েছেন একমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন যে গ্রামটা কতটা সুন্দর এবং কতটা নিরিবিলি। আমরা অনেকেই লক্ষ্য করলে দেখি যে গ্রাম থেকে হঠাৎ যখন শহরে মানুষ আসে তখন তার মধ্যে অনেক রকম পরিবর্তন দেখা যায়। তার শারীরিক এবং মানসিক অনেক রকম পরিবর্তন পরিলক্ষিত করা যায় সর্বোপরি মানুষ পরিবর্তন হতে বাধ্য হয়। লেখাপড়ার কারণে বেশ অনেকদিন ধরেই এখন শহরে বসবাস করছি কিন্তু শহরের প্রতি সেই ভালোবাসা বা মায়া এখন পর্যন্ত কাজ করেনি। এখন পর্যন্ত সে ভালোবাসাটা গ্রামের প্রতি থেকে গিয়েছে যে ভালোবাসা জন্মানো হয়েছিল খুব ছোটবেলায়। ছোটবেলার জন্মানো ভালোবাসাটা কখনো শেষ হবে কিনা সেটা হয়তো বলতে পারব না। কিছু কিছু ভালোবাসা আছে যে ভালবাসাগুলো কখনো শেষ হয় না, আমরা যত দূরেই থাকি না কেন ভালোবাসা গুলো সব সময় আমাদের পাশাপাশি কাছাকাছি থাকে। আর আমি মনে করি এটাই সত্যি কারের ভালোবাসা। সত্যি কারের ভালোবাসা গুলোর কোন বর্ণনা হয় না হয় না কোন রং হয় না কোন বর্ণ। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় আমি গ্রামে যেভাবেই থাকি না কেন সেটা আমার ভালোবাসার স্থান। কিন্তু শহরে যত জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে জীবন যাপন করি না কেন বরাবর সেটা আমার কাছে মনে হয় কারাগার।
একজন আসামি যখন জেলের মধ্যে যায় তখন সে বুঝতে পারে যে জীবনটা আসলে কতটা কষ্টের। সে বুঝতে পারে যে বাইরের পরিবেশটা আসলে কতটা সুন্দর। কারাগারের মাঝে চার দলে বন্দি থাকতে কেউ পছন্দ করেনা সবাই চায় একটু বাহিরে ঘোরাঘুরি করতে চারদিকের পরিবেশটা সুন্দরভাবে দেখতে। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে সকলের মন চায়। এই যে তার মন থেকে এত এত চাওয়া এতো এতো কিছু সে মন থেকে চায় আসলে কি সেগুলো পায়...?? সে কখনোই সেগুলো পায় না চার দেয়ালের মাঝেই তাকে বন্দী থাকতে হয়। শহরটা আমার কাছে ঠিক তেমনি মনে হয় মনে হয় চারিদিকে শুধু ইট পাথরে গড়া বড় বড় অট্টালিকা আর তার মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র নবী পাথর। যাকে ধুলাবালি আর রাস্তার যানজট চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে বাহিরে বের হওয়ার মাত্র সুযোগ নেই।
এরকম অবস্থায় কখনো সময় থাকতে মন চায় না ঠিক ওই বন্দী থাকা অসমের মতই নিজেকে অনেক বেশি অসহায় মনে হয়। বরাবরই গ্রামে কাটানো বিকেলটা অনেক বেশি মিস করি মনে পড়ে বিকেল বেলা নদীর পাড়ে বসে থাকার মুহূর্তটুকু। কিন্তু চাইলেও যখন তখন আর গ্রামে ফিরে যেতে পারে না এটা আসলে কখনো সম্ভব হয়ে ওঠে না। জানি এই সম্ভাবনা একদিন শেষ হবে ফিরে যেতে হবে সেই গ্রামে কিন্তু তখন আর সেই বয়স থাকবে না হয়তো অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে পরিবর্তন হবে আমাদের মন মানসিকতার ও। তবুও চাই এটা পরিবর্তন হোক থেকে যেতে চাই সেই গ্রামে যেখানে ছোট্টবেলায় অনেক সুন্দর সুন্দর স্মৃতি রয়েছে।
আমার কাছে সব থেকে বেশি মনে হয় গ্রামের মধ্যে কাটানো ছোটবেলার স্মৃতিগুলো সুন্দর ছিল। এই সুন্দর স্মৃতিগুলো হয়তোবা থেকে যাবে আজীবন আরো সুন্দর মুহূর্ত গুলো থেকে যাবে স্মৃতির পাতায় কমা দাড়ি অথবা সেম ক্লোন এর মত। যারা গ্রামে বসবাস করেছে তারা শহরে এসে খুব একটা ভালো নেই। সব সময় তাদের মাঝে কোনো না কোনো কিছুর আক্ষেপ থেকেই গিয়েছে। আর সেটা থেকে যাবে বহু শতাব্দি পর্যন্ত।
ঈদের ছুটিতে বাসায় গিয়েছিলাম বাসায় গিয়ে খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছি যে সুন্দর মুহূর্ত গুলো কাটানোর কিছু ফটোগ্রাফি কিছু ভিডিও আমার কাছে এখন পর্যন্ত রয়ে গেছে। যদিও সেগুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত পোস্ট করা হয়নি তবে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে সেগুলো নিয়ে হাজির হব বলে ভেবেছি অনেক আগেই। বর্তমান সময়ে অনেক বেশি ব্যস্ত, যার কারনে গ্রামে গিয়ে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারছি না তবে সত্যিই একদিন অনেকটা সময় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে সেই সুন্দর মুহূর্ত গুলো তুলে ধরার জন্য। এত বড় হয়ে গিয়েছি তারপরেও ছোটবেলার মতই ঘুরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালো লাগে ঘোরাঘুরি করতে করতে কখনো তৃপ্তি মেটে না। একটা জায়গা ঘোরাঘুরি শেষে মন চায় অন্য আরেকটা জায়গায় ঘোরাঘুরি করে আসি। যদিও এ ব্যাপারটা নিয়ে বাসায় অনেক রকম কথা শুনতে হয় তবে ঘোরাঘুরি করা কখনো বাদ যায় না। এবার ঈদে ছুটিতে বাসায় গিয়ে বেশি দিন থাকতে পারিনি তবে চেষ্টা করে দিয়েছি একদম পুরো সময়টা জমিয়ে আড্ডা দেয়ার যেহেতু আগেই ভেবে রেখেছিলাম ঈদের ছুটির পরে ঢাকায় গেলে আর ফেরা হবেনা সহজে।
জমিয়ে আড্ডা দিয়েছি রাতের পর রাত কেটে গিয়েছে স্কুলের মাঠে। দিনের পর দিন কেটে দিয়েছে ছোট্ট একটি বাগানে যে বাগানে আমরুপালি আম ছিল, প্রতিদিন সবাই মিলে আম পেতে অনেক রকম ভাবে পেয়েছি আর সেই সাথে বসে বসে লুডুর প্রতিযোগিতা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এরকম ভাবেই চলেছে বিকেল বেলা শুরু হয়ে গিয়েছে ফুটবল খেলা। ঠিক এরকম ভাবেই আমাদের প্রতিটা দিন কেটেছে এত এত ভাল লেগেছে যে বলে কখনোই বোঝাতে পারবো না আর এই মুহূর্তগুলো কখনোই আমাদের কাছে বিরক্তি কর মনে হয় না। প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু নিয়ে হাজির হতাম যার কারনে বিরক্তি শব্দটা কখনো মাথায় আসেনি।
হঠাৎ ঈদ শেষ হয়ে গেল। ঈদ শেষ হবার চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই যে যার মত গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গেল কর্মের তাগিদে। যদিও অনেকেই যেতে যায়নি কিন্তু সমাজ পরিবেশ এবং পরিবার তাকে বাধ্য করেছে সেই গ্রাম ছাড়তে। সেই গ্রাম থেকে ছাড়তে বাধ্য করেছে যে গ্রামে সে ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছে ছোটবেলার স্মৃতি তার মধ্যে আবদ্ধ রয়েছে সেটা হয়তো বা তাকে বাধ্য হয়ে ছাড়তে হয়েছে যেটা অনেক বেশি কষ্টকর এবং দুঃখজনক বলে আমার মনে হয়েছে। আমিও একটা পর্যায়ে গ্রাম ছেড়ে ছি যদিও গ্রাম ছাড়তে মন চায় তবে ওই যে বললাম, সমাজ এবং পরিবেশ আমাদেরকে অনেক কিছু করতে বাধ্য করে, আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। যেদিন গ্রাম ছেড়ে শহরের উদ্দেশ্যে পারি জমাচ্ছিলাম সেদিন মনটা অনেক বেশি খারাপ ছিল কাউকে এই খারাপ লাগার কথাটা আমি বলে বোঝাতে পারছিলাম না।
আমি জানি আমার এই খারাপ লাগার কথা যদি আমি কাউকে বলি সে আমার কথা শুনবে না যদিও কাউকে তেমনভাবে বলতে চাইনি। সময় হয়েছে ফেরার তাই ফিরে এসেছি। শহরটা বরাবরই আমার কাছে অনেক বেশি ধুলাবালি ট্রাফিক ইট পাথরে গড়া বড় বড় অট্টালিকা এসব আমাকে টানে না বরাবরই অনেক বিরক্তি এবং বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়। শহরটা বরাবরই আমার কাছে কেমন যেন বিভীষিকাময় হয়ে উঠছে ভালো লাগছে না মোটেও। যদিও এই খারাপ লাগাটা কয়েকদিন পরে শেষ হয়ে যাবে আমি জানি তবে বর্তমান সময়ে শহরটা আমার কাছে একদমই ভালো লাগছে না। বাসার মধ্যে যতটুকু সময় থাকি খুবই ভালো লাগে কিন্তু বাহিরে যখন বের হই তখন মন চায় আমার যদি পাখির মতো ডানা থাকত তাহলে এক্ষুনি উড়ে চলে যেতাম চিরচেনা সেই গ্রাম।
হয়তো কার কাছে কেমন সেটা আমি বলতে পারব না তবে আমার কাছে গ্রামটা মনে হয় স্বর্গের মতো। যেখানে শহরের তুলনায় মানুষের হিংসা-বিদ্বেষ অহংকার অনেকটাই কম। যেখানে প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে উপভোগ করা যায় মানুষের মধ্যে মিশে মানুষের মনের কথাগুলো জানা যায়। একটা মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এর থেকে সুন্দর আর কি হতে পারে...?? আপনারাই বলুন...!!
আজ আর নয় এখানেই আমি আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট শেষ করছি আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের খুবই ভালো লেগেছে। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | অবশেষে আবার ধুলাবালির শহরে |
পোস্টের কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
গ্রামে বসবাস করে কতটা যে শান্তি যারা বসবাস করে তারাই জানে। যারা গ্রামে বসবাস করে শহরের মুখী হয় তারা গ্রামের এই আনন্দ গুলো এই মুহূর্ত এই ভালোবাসা জায়গাটা ভুলে থাকতে পারে না। তারপরও জীবিকা তাগিদে শহরে যেতে হয়। অনেক সময় ইচ্ছা না করলে অনেক কিছু করা লাগে। যেহেতু ঈদ শেষ হয়ে গেছে আবারও নিজেদের গন্তব্যস্থানে যেতে হবে কাজে কর্মে ফিরতে হবে। আর এটাই হলো জীবন।
বেশ ভালোই লিখেছেন। আপনার লেখার মধ্যে গ্রামের প্রতি যে আপনার অসীম ভালোবাসা তার বহিঃ প্রকাশ ঘটিয়েছেন দেখা যাচেছ। একটি কথা না বললেই নয় জন্ম আমার ঢাকায়, আর বেড়ে উঠাতা ও ঢাকায়। কিন্তু কেন যেন হৃদয়ের গভীরে গ্রামের জন্য একটি লুকানো ভালোবাসা কাজ করে। ঈদে কাটানো গ্রামের সময়গুলো বেশ মিস করছেন এটা বেশ ভালোই বুঝা যাচেছ। আশা করি সব শেষে গ্রামের ছেলে গ্রামেই রয়ে যাবেন। এই ইট পাথরের শহর ছেড়ে।
ধুলাবালি আর দুর্গন্ধযুক্ত শহর থেকে গ্রামের পরিবেশ যে কতটা ভালো আসলে এটি বলে বোঝানো অসম্ভব।
শহরের জীবন থেকে গ্রামের জীবন আমার কাছে খুবই ভালো লাগে সবুজ শ্যামল পরিবেশ দূষণমুক্ত অক্সিজেন পাখিদের কলতান এক কথায় খুবই ভালো।
কর্ম ব্যস্ততাময় জীবন লেখাপড়ার ঝামেলা সব মিলিয়ে ভালোই কাটছে তাহলে আপনার জীবন ভালো থাকেন শহরের জীবন নিয়ে ফিরে আসিয়েন আবার সময় হলে আমাদের গ্রামে।
ভাইয়া সব কিছুরই শেষ আছে। আমিও ধীর্ঘ দশ দিন ছুটি কাটিয়ে অবশেষে কর্মস্থেলে ফিরে আসলাম। যে যেখানে জন্মগ্রহন করে সেই জন্মস্থানের মায়া কেউ ভূলতে পারে না। নিজের গ্রাম,পাড়া প্রতিবেশি,স্কুল মাঠ,কলেজ মাঠ সব কিছু মিস করি। তারপরও বাস্তবতা কে মেনে নিয়ে কর্মস্থলে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।