খুবই যন্ত্রণাদায়ক পরীক্ষার হল
আজ--১৩ জৈষ্ঠ্যমাস | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সোমবার | গ্রীষ্মকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- যন্ত্রণাদায়ক পরীক্ষার হল
- আজ--১৩ইজৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
- সোমবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
আপনারা সকলেই জানেন যে গত কয়েকদিন আগেও অনেক বেশি গরম ছিল আর এই গরম থাকার কারণে জনজীবন অনেক বেশি অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। সত্যি বলতে এরকম গরম আগে কখনোই অনুভব করেনি। ঢাকা শহরে এর আগেও কয়েকটা গরমের সিজন কাটানো হয়েছে তবে এবারের গরমটা মনে হয় সব থেকে বেশি। যদিও আশেপাশের এরকম পরিবেশের জন্য আমরা মানুষেরাই অনেক বেশি দায়ী এ ব্যাপারে আর নতুন করে কোন কথা বলতে চাই না। যদিও আজ দুদিন যাবত গরমের তীব্রতা খুব একটা বেশি পরিলক্ষিত করা যাচ্ছে না আর মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে যার কারণে পরিবেশটা কিছুটা হলেও শীতল হয়ে গিয়েছে। যাইহোক যেহেতু কিছুদিন আগে অনেক বেশি গরম ছিল আর এই গরমের মধ্যেই ভার্সিটির পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। মূলত সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দেওয়ার জন্যই ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম। পরীক্ষা ছিল সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত্রি নয়টা পর্যন্ত। যেহেতু ঢাকা শহরে অনেক বেশি জ্যাম আর এই জ্যাম এর কথা চিন্তা করেই আমি সাড়ে পাঁচটায় বাসা থেকে রওনা দিয়েছিলাম পরীক্ষা শুরু হওয়ার বিশ মিনিট আগে ভার্সিটিতে পৌঁছে ছিলাম তার মানে বুঝতেই পারছেন কতটা বেশি জ্যাম ছিল। জ্যামের মধ্যে লেগুনাতে বসে থাকতে অনেকটাই কষ্ট হচ্ছিল ঘেমে একাকার হয়ে গিয়েছিলাম।
লেগুনাতে বসে যখন অনেক বেশি ঘাম ছিলাম তখন মনে মনে ভাবছিলাম এখানে বসেই শুধুমাত্র ঘামতে হবে ভার্সিটিতে গেলে তখন আর ঘাম বেরোবে না। কারণ ভার্সিটির প্রায় প্রত্যেকটা রুমেই এসির ব্যবস্থা আছে এই কারণেই নিজেকে কিছুটা শান্ত রেখে ছিলাম। এরপরে ভার্সিটিতে পৌঁছানোর পরেই জানতে পারলাম যে আমার সিট পড়েছে ৭০২ নম্বর রুমে। ৭০২ নম্বর রুম মানেই ভার্সিটির ছাদে। এরপরেও নিজের কাছে খুব একটা বেশি অবাক লাগেনি আমি ভেবেছিলাম সেখানেও হয়তোবা এসি আছে। এরপরে আমরা সকলেই ৭০২ নম্বর রুমে চলে যাই। সেখানে গিয়ে কিছুটা সময় অপেক্ষা করার পরে স্যারেরা চলে আসে। রুমে প্রবেশ করার পরেই রুমের মধ্যে থেকে গরম আভা আমাদের গায়ে এসে লাগছিল তখন আরো বেশি গরম লাগছিল এদিকে ওদিকে তাকিয়ে দেখি এসি লাগানো আছে। তখন ভেবেছিলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তোবা এসি ছেড়ে দেওয়া হবে আর সবকিছু ঠান্ডা হয়ে যাবে।
অনেকটা সময় অতিবাহিত হবার পরেও এসি ছাড়া হচ্ছিল না। পরবর্তীতে জানতে পারলাম যে এসিগুলো নাকি নষ্ট হয়ে গিয়েছে এই ব্যাপারটা জেনে এতটা বেশি খারাপ লাগছিল যে আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না। সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছিলাম যে এভাবেই পরীক্ষাটা দিতে হবে ঘামতে ঘামতে পরীক্ষা দিয়ে নিচে গিয়ে কিছুটা সময় এসির বাতাস খেতে হবে এটাই ভেবে রেখেছিলাম। ঘটে গেল আমাদের সঙ্গে আরেক বিপত্তি আসলে একটা কথা আছে যে খারাপ সময় যখন আসে তখন সব দিক দিয়েই খারাপ যায়। এমনিতেই রুমের মধ্যে অনেক বেশি গরম ছিল তার উপরে আবার পরীক্ষার প্রশ্ন আসতে দেরি হচ্ছিল। আধা ঘন্টা সময় অতিবাহিত হবার পরেও পরীক্ষার হলে পরীক্ষার প্রশ্ন এখন পর্যন্ত আসেনি বসে বসে ঘাম ছিলাম আর টিস্যু দিয়ে মুখ মুছছিলাম। তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা বিপত্তি করে একটা অবস্থার মধ্যে সময় অতিবাহিত করছিলাম।
প্রায় 40 থেকে 45 মিনিট অতিবাহিত হবার পরে হঠাৎ করে প্রশ্ন চলে আসে। এদিকে টি-শার্ট গায়ে দিয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়ে খাতায় যখনই লিখতে যাবো ঠিক তখনই হাতের ঘাম লেগে খাতা ভিজে যাচ্ছিল। পুরো শরীর একদম ঘেমে গিয়েছে শুধুমাত্র আমি যে ঘেমে গিয়েছি তা কিন্তু নয়। রুমের মধ্যে থাকা প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীসহ স্যার এবং ম্যাম সকলেই ঘেমে একাকার হয়ে গিয়েছে যদিও দুই থেকে তিনটা ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল তবে দুই থেকে তিনটা ফ্যান খুবই ছোট। খুবই ছোট ফ্যান এর ব্যবস্থা করার কারণে পুরো রুমে বাতাসের তীব্রতা খুব একটা বেশি অনুভব করা যাচ্ছিল না। শুধুমাত্র যেখানে ফ্যান লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে থাকা কয়েকজন মানুষ মোটামুটি ফ্যানের বাতাস অনুভব করতে পারছিল। কিন্তু যেখানে ফ্যান নেই সেখানকার মানুষেরা অনেকটাই কষ্ট করছিল। যদিও স্যারদেরকে আমরা রিকোয়েস্ট করেছিলাম যে এসি যেহেতু নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেহেতু কয়েকটা ফ্যান নিয়ে আসলেই হয়। কিন্তু স্যারেরা ফ্যানের ব্যবস্থা করতে পারেনি যার কারণে আমাদেরকে গরমের তীব্রতা অনুভব করেই পরীক্ষা দিতে হয়েছিল।
দু'ঘণ্টার পরীক্ষা দিতে গিয়ে আমি ঘেমে একদম গোসল করে ফেলেছিলাম। বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা আমার টি শার্ট ভিজে নিতে জিন্স প্যান্ট ভিজে জুতা পর্যন্ত ভিজে গিয়েছিল। তার মানে বুঝতেই পারছেন কতটা ঘেমে ছিলাম সেদিন। দু'ঘণ্টার পরীক্ষা প্রায় দেড় ঘন্টায় শেষ হয়ে গিয়েছিল তবে একটা ব্যাপার অনেক বেশি ভালো লেগেছিল যে পরীক্ষাটা অনেক বেশি ভালো হয়েছিল কারণ প্রশ্ন কমন ছিল অনেক। যার কারণে মনে আনন্দ নিয়ে লিখছিলাম গরমের তীব্রতা অনেক বেশি থাকার পরেও নিজের মনের মধ্যে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিল। দেড় ঘন্টায় পরীক্ষা শেষ করে দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে গ্রাউন্ড ফ্লোরে চলে যাই। ভার্সিটির গ্রাউন্ড ফ্লোর টা এসি থাকার কারণে সব সময় ঠান্ডা থাকে সেখানে গিয়ে প্রায় ১০ থেকে ২০ মিনিট বসেছিলাম। ততক্ষণে ঘামটা শরীরের সঙ্গে একদম বসে গিয়েছে বুঝতেই পারছিলাম বাসায় গিয়ে হয়তো বা অসুস্থ হয়ে পড়বো। ভার্সিটি থেকে বের হয়েই লেবুর শরবত খেয়েছিলাম চার থেকে পাঁচ গ্লাস। লেবুর শরবত খেয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম তখন প্রায় সাড়ে নটা বেজে গিয়েছিল।
আবার যখন লেগুনাতে উঠি তখন আবার ঘামতে শুরু করেছিলাম মানে সেদিন বিকেলের পর থেকে রাত্রি দশটা পর্যন্ত আমি একদম ঘামার উপরেই ছিলাম। শরীর দিয়ে এতটা বেশি ঘাম বের হয়েছিল যে লেগুনার মধ্যে আমি প্রায় ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ কারো ডাক শুনে লেগুনা থেকে নেমে একটা রিক্সা নিয়ে সরাসরি বাসায় চলে যাই। বাসায় গিয়ে যেন শরীরটা একদম চলছিলই না ফ্রেশ একটা গোসল দিয়ে অনেক বেশি ভালো লাগছিল। গোসল করে খাওয়া দাওয়া করে তখন নিজের কাছে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছিলাম সেই সাথে শরীরের শক্তিটা আগের মতই ফিরে আসছিল। সত্যি বলতে এই প্রথমবার এইরকম একটা যন্ত্রণাদায়ক পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিলাম এর আগে এরকম কখনোই কষ্টের মধ্যে পরীক্ষা দিইনি। আমি মনে করি ভার্সিটির কর্তৃপক্ষের উচিত যেখানে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে এবং পরীক্ষা দেয় সেই জায়গাটা মোটামুটি ভাবে একটু পরিপাটি রাখার। যাতে করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে অথবা পরীক্ষা দিতে কোন রকম অসুবিধা না হয়।
যদিও ভার্সিটির প্রায় সকল রুমেই এসির ব্যবস্থা আছে আর, ভার্সিটির ছাদে এসি থাকার পরেও হয়তোবা সেটা নষ্ট হয়েছিল যার কারণেই আর মেরামত করা হয়নি। মেরামত না করার কারণেই অনেকটা কষ্টের মধ্যে পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। সেদিন খুবই বিপত্তিকর একটা সময় অতিবাহিত করেছিলাম তারপরেও পরীক্ষা ভালো হয়েছিল এটাই অনেক বড় কথা। এটাই আমার পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | খুবই যন্ত্রণাদায়ক পরীক্ষার হল |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
গরমের সময় পরীক্ষা দেওয়া সত্যি অনেক ঝামেলার। আর ঘামের কারণে ছাতা একেবারে ভিজে যায়। আপনারও দেখছি সেরকমটাই হয়েছে ভাইয়া। কি আর করার ভাইয়া পরীক্ষা তো দিতেই হবে। আর এই সময় যদি প্রশ্নপত্র দিতে দেরি হয় তাহলে মেজাজ আরো খারাপ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে এরকম বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের।
আপনার অবস্থা তো একেবারেই খারাপ ছিল। গরমের মধ্যে ঘাম কী যে এক অসহনীয় ব্যাপার সেটা আমি জানি। তার উপর আপনি পুরো পাঁচ ঘন্টা ধরে ঘেমেছেন বলা যায়। পরীক্ষার হলে গিয়েছেন কিন্তু সেখানেও শান্তি নেই সেখানে এসি নষ্ট। কী একটা অসহনীয় অবস্থা। মাঝে মাঝে এমন খারাপ অবস্থা খুবই অসহনীয় হয়ে উঠে।