আজ--০৩ চৈত্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বসন্তকাল |

আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

তো চলুন শুরু করা যাক...!

শুভ দুপুর সবাইকে......!!

ঘুরাঘুরি করতে পছন্দ করে না এরকম মানুষ খুব কমই আছে, যদিও এই কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত হবার পর থেকেই দেখছি যে সকলেই ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসা এবং পছন্দ করে। ঘুরাঘুরির মাধ্যমে অনেক কিছু সম্পর্কে দেখা যায় জানা যায় বোঝা যায় আর নতুন নতুন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালো লাগে। আমি মনে করি যে ঘুরাঘুরির মাধ্যমে যতটা জ্ঞান অর্জন করা যায় হয়তোবা অন্য কোন মাধ্যমে এরকম জ্ঞান অর্জন করা যায় না। কোন একটা জায়গায় ঘুরতে গেলে সেই জায়গা সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কিছু না কিছু ধারণা জন্মে এটা হয়তোবা বই পুস্তকে পড়ে ধারণা নেওয়া কখনোই সম্ভব নয় কারণ বই-পুস্তকে তো আর সব জায়গা সম্পর্কে লেখা থাকে না। যাই হোক ঢাকার মধ্যে ঘোরাঘুরি করার জন্য অনেক জায়গা রয়েছে। আর এই অনেকগুলো জনপ্রিয় জায়গার মধ্যে ধানমন্ডি লেক অন্যতম বলে আমি মনে করি। এখানে সকাল বিকেল সন্ধ্যে থেকে শুরু করে গভীর রাত অব্দি মানুষের ভিড় সেই সাথে মানুষের আনাগোনা পরিলক্ষিত করা যায়। দিনের অথবা রাতের অন্যান্য সময়ে মানুষজন খুব একটা বেশি দেখা না গেলেও বিকেল থেকে শুরু করে সন্দেহ অব্দি এখানে প্রচুর মানুষের ভিড় থাকে। জায়গাটা খুবই নিরিবিলি হওয়ায় মানুষজন এখানে এসে সুন্দর সময় অতিবাহিত করে।

এছাড়া যারা প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ তারা প্রকৃতির মাঝে এসে সময় কাটাতে অনেক বেশি ভালোবাসে। কিছুদিন আগে ভার্সিটি শেষ করে আপুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। যদিও আপুর বাসা থেকে আমার বাসা দূরত্ব খুব একটা বেশি দূরে নয় তিন থেকে চার কিলো হবে। আমার দুটো ছোট ভাগ্নি আছে তারা প্রায় মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে বলে মামা আসো, মামা আসো। কিন্তু আমার কোথাও যাওয়ার খুব একটা তেমন ইচ্ছে না থাকায় তাদের বাসায়ও যাওয়া হয় না। হঠাৎ করেই সেদিন ভার্সিটি শেষ করে আপুর বাসায় গিয়েছিলাম আপুর বাসায় যেতে যেতে প্রায় বিকেল হয়ে গিয়েছিল। ভার্সিটি থেকে আপুর বসার দূরত্ব আবার একটু বেশি যার কারণে সময়টা বেশি লেগেছিল আর রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল। প্রথম অবস্থায় আমি ভেবেছিলাম যে আপুর বাসায় গিয়ে শুধুমাত্র ওদের সঙ্গে দেখা করে সন্দেহের আগেই আমি আবার আমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করব। আমাকে দেখে তো আমার ভাগ্নি দুটো খুবই খুশি যদিও তারা ছোট একজনের বয়স পাঁচ বছর আর একজনের বয়স ২ থেকে আড়াই বছর।

অনেকদিন পরে তাদের সাথে অনেকদিন পরে বেশ সুন্দর একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম বেশ ভালো লেগেছিল। এরপরে বিকেল শেষ হবার আগ মুহূর্তেই আমি বাসায় যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো শুরু করে দিয়েছিলাম কিন্তু আপু আমাকে আর আসতে দিতে চাচ্ছিল না কারণ অনেকদিন যেহেতু যাওয়া হয় না যার কারণে আমাকে দেখেই আপু রান্না করতে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে অনেকবার নিষেধ করেছিলাম যে রান্নাবান্না এখন আর করার দরকার নেই আমি আবার অন্য একদিন আসবো সময় করে কিন্তু কে শোনে কার কথা। আমার কথার কোন পাত্তা না দিয়েই সে রান্না ঘরে চলে গেল এবং রান্না করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

হঠাৎ করেই ভাইয়া বলল যে তোমার আপু তাহলে রান্নাবান্না করুক আমরা চলো ধানমন্ডি লেক থেকে ঘুরে আসি। যদিও সারাদিন ক্লাস করার পরে বাহিরে যাওয়ার তেমন কোন ইচ্ছে ছিল না তারপরও ভাইয়া যেহেতু বলেছে আমি আর না করতে পারিনি। মনের বিরুদ্ধেই বললাম ঠিক আছে তাহলে চলেন ঘুরে আসি। আমাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য ভাগ্নি দুটো পিছু নিয়েছিল কিন্তু ছোট বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়াটা খুবই যন্ত্রণাদায়ক আমি তাদেরকে বললাম তোমরা বাসায় থাকো আমরা কোথাও ঘুরতে যাচ্ছি না দোকানে গিয়ে চা খেয়ে আবার এখন চলে আসব। কোন রকম ভাবে তাদেরকে বুঝিয়ে চলে গেলাম ধানমন্ডি লেকে যদিও আপুর বাসা থেকে ধানমন্ডি লেকে যেতে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট সময় লাগবে। ধানমন্ডি লেক এর খুব কাছে আপুর বাসা থাকায় দ্রুত আমরা সেখানে পৌঁছে যাই। ততক্ষণে মানুষজনের আনাগোনা অনেকটাই পরিলক্ষিত করা যাচ্ছিল। যদিও মাঝে মাঝেই ধানমন্ডি লেকে ঘুরতে যাওয়া হয় যার কারণে খুব একটা বেশি এক্সাইটেড ছিলাম না কারণ একই জায়গায় কয়েকবার ঘুরতে গেলে নিজের মধ্যে কতটা ভালোলাগা কাজ করে সেটা আপনারা অনেকেই জানেন।

যাই হোক যেহেতু আমরা এখানে এসেছি সময় কাটানোর জন্য যাতে করে কিছুটা সময় ঘোরাঘুরি করা যায় আর বাসায় গিয়ে আপুর রান্না করা খাবার খেয়ে আমি দ্রুত আমার বাসায় রওনা দিতে পারি এটা ভেবেই মূলত ঘুরতে আসা। ভাইয়ার সঙ্গে সেদিন হাঁটতে হাঁটতে অনেক বিষয় নিয়ে গল্প করেছিলাম। কখন যে দু'ঘণ্টা সময় এখানে কাটিয়ে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি আমরা কোথাও একটুও বসে বসে গল্প করিনি দু'ঘণ্টা একদম হেঁটে হেঁটে এপাশ থেকে ওপাশ গিয়েছি আর গল্প করেছি। বুঝতেই পারছেন অনেকদিন পরে ভাইয়া আর আমি একসঙ্গে হয়েছি ভাইয়ার সঙ্গে ঘুরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালো লাগে কারণ সব সময় শুধু এটা ওটা খাওয়ার কথা বলে আর আমি আবার খাওয়া-দাওয়া করতে একটু বেশিই ভালোবাসি যার কারণে বুঝতেই পারছেন নতুন করে আর কি বলব হাহাহা।

বিকেলবেলা সন্ধ্যে হবার আগ মুহূর্তে যখন আমরা ধানমন্ডি লেকে প্রবেশ করেছিলাম তখন দেখছিলাম যে ধানমন্ডি লেকের ধারে অনেকেই মাছ ধরছিল। তারা বড়শি দিয়ে মাছ ধরছিল বরশি দিয়ে মাছ ধরা দেখে সেখানে কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে ছিলাম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের মাছ ধরা দেখছিলাম। অনেকদিন পরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরা দেখলাম সেটাও আবার ঢাকার মত একটা জায়গায় বুঝতেই পারছেন কতটা ভালো লাগা কাজ করছিল। মাছ ধরার জন্য তারা এত প্রকার খাদ্য ব্যবহার করেছে যে বলে বোঝাতে পারবো না, আমরা সেখানে প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট দাড়িয়ে দাড়িয়ে তাদের মাছ ধরে দেখছিলাম কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে এটাই যে আমরা একটাও মাছ ধরা দেখে নি তাদের। যাই হোক সেখানে আর বেশিক্ষণ অতিবাহিত না করে আমরা আবার সামনের দিকে অগ্রসর হই সিদ্ধান্ত নিই যে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাসা পর্যন্ত আমরা হেঁটে হেঁটে যাবো। আবার গল্প করতে করতে আমরা দুজন সামনের দিকে অগ্রসর হই।

আমি শুধুমাত্র এই রবীন্দ্র সরোবর এ কিছুটা সময় অতিবাহিত করার জন্যই ধানমন্ডি লেকে ঘুরতে যাই। কারণ এই রবীন্দ্র সরোবরে সন্ধ্যে হবার সাথে সাথেই শুরু হয়ে যায় এখানে অনেক মানুষের আনাগোনা। এখানে অনেক কপোত কপতি ঘুরতে আসে সেই সাথে অনেকেই আবার গিটার বাজায় আর গান গায় এই ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। রবীন্দ্র সরোবরে অনেকটা সময় আমরা বসে ছিলাম বসে বসে অন্যের ভালোবাসা দেখছিলাম আমি,ভাইয়া কি দেখছিল সেটা আমি বলতে পারিনা। অন্যের ভালোবাসা দেখতেও ভালোলাগে,দেখছিলাম কত রোমান্টিক মুড নিয়ে তারা একে অপরের সঙ্গে গল্প করছে আবার কেউ কেউ গিটারের তালে তালে গান গাইছে। বেশ ভালো লাগছিল সেখানে বসে থাকতে কিন্তু যেহেতু আরো কিছুটা পথ আমাদের হেঁটে হেঁটে ৩২ নম্বর বাসা পর্যন্ত যেতে হবে তাই আমরা আবার সেখান থেকে উঠে রওনা দিলাম।

হাঁটতে হাঁটতে আমরা চলে যাই বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাসার সামনে, যদিও আমরা লেকের এপাশে ছিলাম ও পাশে যেতে হলে আবার অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে যার কারণে ও পাশে আর যাওয়া হয়নি। এ পাশ থেকেই দেখছিলাম বাড়িটা সন্দেহ করবার সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে লাইট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় থাকার পরে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় দু'ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করে ফেলেছি। এরপরে আমি ভাইয়াকে বলে দ্রুত বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হতে বললাম। দ্রুত বাসায় গিয়ে আপুর রান্না করা খাবার খেয়ে সকলের থেকে বিদায় নিয়ে রাত্রি প্রায় সাড়ে নয়টার আগেই আমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম। বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় দশটা বেজে গিয়েছিল।

এটাই ছিল আমার আজকের ধানমন্ডি লেকের ঘুরাঘুরি করার কিছু মুহূর্ত। আশা করছি আপনাদের সকলের কাছে আমার ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তটা ভালো লেগেছে।আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!

আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy