বড় ভাইয়ের বিদায় বেলার মুহূর্ত
আজ--১২ ফাল্গুন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বসন্তকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- বড় ভাইয়ের বিদায় বেলা
- আজ--১২ইফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ রাত্রি সবাইকে......!!
বিদায় কথাটার সঙ্গে আমরা সকলেই গভীরভাবে পরিচিত। বিদায় বেলাটা কখনই সুখকর হয় না বিদায় বেলা সবসময়ই অনেক বেশি কষ্টের এবং দুঃখের হয়। আমরা কখনই কাউকে বিদায় দিতে চাই না তবে সময় এবং পরিবেশের সাথে চলাচল করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই স্থান পরিবর্তন করতে হয়। বিদায় দুই রকমের হতে পারে একটা বিদায় হতে পারে সেটা চিরজীবনের জন্য আমাদের কাছ থেকে চলে যাওয়া আবার আরেকটা বিদায় আছে যে বিদায়টা ক্ষনিকের বিদায়। হয়তোবা কোন একটা সময়ে কোন একটা দিনে আবার তার সঙ্গে আমাদের দেখা হয় এই হৃদয়টা ক্ষনিকের হলেও এই বিদায়টা দিতেও আমাদের অনেক বেশি কষ্ট লাগে। ঠিক তেমনি ভাবে অনেকদিন আগে এক বড় ভাই আমাদের কাছ থেকে কিছুদিনের জন্য বিদায় নিয়েছিল বিদায়টা নিয়েছিল প্রায় দুই থেকে আড়াই মাসের জন্য। কিন্তু তারপরও আমাদের অনেকটা খারাপ লেগেছিল। আমরা জেনেছিলাম এই এই খারাপ লাগাটা কিছুক্ষণের জন্য, তারপরেও আমাদের অনেকটাই কষ্ট লেগেছিল যে দুই থেকে আড়াই মাস আর বড় ভাইয়ের সঙ্গে খুব একটা দেখা হবে না। হঠাৎ করে জানতে পারলাম যে বড় ভাই কোন একটা প্রশিক্ষণের জন্য দু থেকে আড়াই মাস আমাদের ছেড়ে অন্য কোন জেলায় অন্য কোন জায়গায় থাকবে, জানার পর থেকেই অনেকটা খারাপ লাগছিল।
যেদিন বড় ভাইয়ের বিদায় বেলা ছিল সেদিন আমার কোন একটা কাজ ছিল হয়তো বা নানাদের বাসায় কোন একটা অনুষ্ঠান ছিল যার কারণে সকালবেলা ভাইয়ের থেকে বিদায় নিতে গিয়েছিলাম যে হয়তোবা বিদায় বেলা আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারবো না। ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেই আমি নানাদের বাসায় গিয়েছিলাম সেখানে প্রায় রাত্রি আটটা পর্যন্ত অবস্থান করেছিলাম তারপরে বাসায় চলে এসেছিলাম। বাসায় যাওয়ার পরে বড় ভাইকে ফোন দিলাম এবং বড় ভাই জানালো যে সে এখন পর্যন্ত যায়নি সে বাজারে আছে কিছুক্ষণের মধ্যেই রওনা দেবে। এ কথা শুনে আর বাড়িতে বিন্দুমাত্র বসে থাকতে পারিনি দ্রুত চলে গিয়েছিলাম বাজারে গিয়ে দেখি বড় ভাই সহ আরো কয়েকজন সেখানে বসে আছে ভাই হয়তোবা ০৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই বিদায় নিয়ে চলে যাবে। আবারো বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলো কথা হলো বেশ ভালই লাগলো। যেহেতু ভাই বাসে করে চট্টগ্রাম চলে যাবে আর আমরা আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে বাইকে করে ভাইকে আমরা কুষ্টিয়াতে নামিয়ে দিয়ে আসবো ভাই সেখান থেকে বাসে উঠে চট্টগ্রামে চলে যাবে।
আমরা প্রায় তিন থেকে চারটা বাইক নিয়ে পাঁচ থেকে ছয় জন লোক আর বড় ভাইকে সাথে নিয়ে রওনা দিলাম কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে। যদিও যাওয়ার সময় আমরা অনেকটা এনজয় করেছিলাম আস্তে আস্তে গান করতে করতে সবাই কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করছিলাম রাত্রি তখন প্রায় নটা বেজে গিয়েছে। আমরা বাইক টা খুব একটা জোরে চালাচ্ছিলাম না আস্তে আস্তে যাচ্ছিলাম আর সবাই মিলে গল্প করছিলাম রাস্তার এক সাইড দিয়ে লাইন ধরে সবাই সারি সারি যাচ্ছিলাম দৃশ্যটা দেখে মনে হচ্ছিল কোন এক মিছিল যাচ্ছে। আমাদের বাসা থেকে কুষ্টিয়া যেতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট লাগার কথা সেখানে আমরা প্রায় এক ঘন্টা সময় নিয়ে কুষ্টিয়াতে পৌঁছে গিয়েছিলাম।
কুষ্টিয়ার চৌরহাঁস নামক একটা জায়গায় গিয়ে আমরা থামলাম মূলত ভাই এখান থেকেই বাসে করে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করবে। ভাই থাকাকালীন সময়টা আমাদের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগছিল যদিও ভাইয়ের বাসের সময় ছিল ১০ঃ৪৫ এ। এরপরে আমরা সেখানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম মূলত ভাই আমাদের বারবার বলছিল যে অনেক রাত হয়ে গিয়েছে তোমরা সবাই চলে যাও কিন্তু এভাবে কি আর কাউকে একা রেখে বাসায় চলে আসা যায় আপনারাই বলুন..?? আমরা ভাইকে বারবার বলছিলাম যে আমরা আপনাকে বাসে তুলে দিয়ে তারপরে বাসায় যাব রাত হোক তাতে কোন সমস্যা নেই। যদিও সবার গাড়ির লাইসেন্স ছিল আর প্রত্যেকটা গাড়িতে দুজন করে মানুষ থাকার কথা যার কারণে রাস্তায় যদি পুলিশ গাড়ি ধরে তাতেও কোন সমস্যা নেই যার কারণে ভাই কিছুটা নিশ্চিত হয়ে বসে আমরা গল্প করছিলাম। মনে হচ্ছিল রাজ্যের যত গল্প আজ আমাদের মাথার উপর এসে ভর করেছে এ গল্প সেই গল্প কত গল্প আর হাসি ঠাট্টা। দিনটা সত্যিই অনেক বেশি স্মরণীয় ছিল সারাদিন নানা বাড়ি থেকে সকলের সঙ্গে আনন্দ করে এসে রাতের বেলা ভাইকে এরকম বিদায় দিতে অনেকটাই খারাপ লাগছিল, যদিও খারাপ লাগছিল কিন্তু কিছু করার ছিল না কারণ তাকে তো যেতেই হবে বিদায় তো তাকে জানাতেই হবে।
এরপরে চলে আসো সেই সময়টা যে সময় ভাই বাসে উঠে পড়ে। যদিও ভাইয়ের সঙ্গে বসে চা খাওয়া হয়েছে তারপরে ভাইকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে আমরা চৌরহাসে কিছু সময় বসে ছিলাম। বসে বসে আমরা আবার একটা চায়ের দোকানে গল্প করছিলাম সেই সাথে রং চা খাচ্ছিলাম কারণ তখন কিছুটা শীতের সময় ছিল শীতের সময় রং চা খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে এটা আপনারা সকলেই জানেন। যেহেতু অনেকটাই রাত হয়ে গিয়েছিল যার কারণে রাস্তাঘাটে খুব একটা গাড়ি চলাচল করছিল না শুধুমাত্র দূরপাল্লার বাস ট্রাকগুলো রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছিল মাঝে মাঝে শব্দ করে বাস এবং ট্রাক চলাচল করছিল। ১১ টার পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এখন আমরা বাসায় যাব যেভাবে সেই কাজ সবাই বাইকে করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
আমি আপনাদেরকে আগেই বলেছি যে তখন একটু শীতের সময় ছিল যার কারণে যে বাইক চালাচ্ছিল তার অনেকটাই শীত লাগছিল। কিন্তু যে পিছনে বসে ছিল তার খুব একটা বেশি শীত লাগছিল না তারপরেও আমরা খুবই আস্তে আস্তে বাইক চালাচ্ছিলাম। যদিও মনটা অনেক বেশি খারাপ ছিল তারপরেও কিছুটা সময় আমরা এনজয় করেছি কারণ বাইকের উপর গভীর রাতে বসে থাকলে অনেকের হয়তোবা ঘুম চলে আসতে পারে আর ঘুম যদি চলে আসে বাইক থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে এ ধারণা থেকেই আমরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলছিলাম যাতে করে কেউ ঘুমিয়ে না পড়ে। এরপরে আমরা চলে আসি কুমারখালীতে কুমারখালী নামক একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা আবার সিদ্ধান্ত নিয়ে যে এখান থেকে একটা চায়ের দোকানে বসে আমরা আবার চা খাব যাতে করে কিছুটা গা গরম হয়ে যায় সেই সাথে কারো ঘুম ঘুম চোখ থেকে ঘুমটা যেন দ্রুতই পালিয়ে যায় এই চিন্তা ভাবনা থেকেই আমরা আবার একটা চায়ের দোকানে বসে রং চা খেয়ে এবার সোজা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। বাসায় যখন আমরা পৌঁছায় তখন প্রায় রাত্রি সাড়ে বারোটা।
বাসায় পৌছিয়ে আমরা আর খুব একটা বেশি আড্ডা দেইনি যে যার বাসায় চলে গিয়েছিলাম যেহেতু অনেক রাত হয়ে গিয়েছে আর শীতের রাত সাড়ে বারোটা মানে তখন অনেক রাত। বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ভাইয়ের খোঁজ খবর নিলাম জানতে পারলাম যে ভাই খুব ভালো মতোই তার গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। মাঝে মাঝে এটা ভেবে অনেক বেশি খারাপ লাগছিল যে ভাইয়ের সঙ্গে অনেকটা দিন দেখা হবে না কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়ে ভাই প্রায় ১৫ দিন পরে আবার বাসায় চলে আসে কোন একটা কারণে। সেদিন আমরা অনেক বেশি খুশি ছিলাম অনেক বেশি আনন্দ করেছিলাম সেই রাতে। সেই রাতের আনন্দঘন মুহূর্তটা নিয়ে আবার আরেকটা পোস্ট আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | বড় ভাইয়ের বিদায় বেলার মুহূর্ত |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
আসলে যে কোন কাউকেই বিদায় দেওয়াটা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে থাকে। তা যত দিনের জন্যই হোক না কেন। আপনারা আপনাদের বড় ভাইকে কয়েক মাসের জন্য বিদায় দিয়েছিলেন। বুঝতেই পারতেছি সময়টা অনেক বেশি দুঃখের এবং কষ্টের ছিল। কাউকে বিদায় জানিয়ে যদি বাড়িতে আসা হয়, তাহলে তার কথা এবং তার সাথে থাকার মুহূর্ত এবং সব স্মৃতি মনে পড়ে যায়। আপনাদের ভাই আবার ১৫ দিন পরে চলে এসেছিল সবাইকে অবাক করে দিয়ে, এটা শুনে তো আমি নিজেও অবাক হলাম। আনন্দঘন মুহূর্তটা দেখার জন্য আমি অধীর অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি শীঘ্রই শেয়ার করবেন।
আসলেই যখন কেউ কাছের মানুষ কিছুদিনের জন্য দূরে চলে যায় তখন বারবার তার কথা মনে পড়ে আমাদের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই ঘটেছিল। তবে আসলেই আমরা সকলেই রীতিমত অবাক হয়েছিলাম যে ভাই এত তাড়াতাড়ি এবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
ঠিক বলেছেন বিদায় শব্দের সাথে আমরা সবাই পরিচিত। কারণে-অকারণে মানুষ মানুষকে বিদায় দিতে হয়। আপনার বড় ভাইকে দুই থেকে আড়াই মাসের জন্য বিদায় দিয়েছেন আপনারা। চাকরির সুবাদে সে অন্য জায়গায় গিয়েছে। তারপরও এই ধরনের লোকগুলোকে বিদায় দিতে কষ্ট হয়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে বড় ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা খুবই গভীর যার কারণে দুই থেকে তিন মাস সে আমাদের থেকে দূরে থাকবে এটা ভাবতেই অনেক বেশি খারাপ লাগছিল। এরপরেও সব কিছু মেনে নিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।