কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ১৭ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।

বিউটির কাছে পাড়া-প্রতিবেশীরা আসে গল্প করে কিন্তু কি বিষয়ে তারা গল্প করে সেটা তার ভাই জানেনা। যখনই তার ভাই পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে বা তার বোনের কাছে জানতে চাই কি এত দরকার। সবাই তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। তাই বিউটির ভাই গুলজার খুবই রেগে গেছে বিউটি উপর। বিউটি, রান্নাঘরে কাজ করছিল এমন মুহূর্তে গুলজার দাওহাতে এসেছে কি বিষয়ে সবাই তার সাথে এত আলোচনা করে জানার জন্য। আজকে বোন যদি তার কাছে সবকিছু খুলে না বলে তাহলে সে এক কপে কল্লা ফেলায় দিবে। কিন্তু বিউটি সবকিছু শোনার পর সহজে বলে দিল, কাপুরুষরা শুধু গলাবাজি করে কাজের কাজ করে দেখাতে পারেনা। তার এমন কথা শুনে গুলজার বিউটির কাছ থেকে সরে গেল।

এদিকে আলতা সুন্দরী অর্থাৎ নছেরের নামে মিথ্যা রটার পর সবাই তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে। এমনকি তার গানের দলের সঙ্গিরাও তাকে এড়িয়ে চলছে সব সময়। ঠিকমত কেউ তার সাথে কথাই বলছে না। তাই আলতা সুন্দরী পড়েছে মহা বিপদে। সবাই যদি তাকে এভাবে এড়িয়ে চলে তাহলে সে কার কাছে উঠবে, কার সাথে কথা বলবে। কিন্তু দেখা যায় পূর্ব থেকেই তাদের দলের নসু গেলেন তাকে অপমান করে কথা বলে। এখন তো তার আরো সুযোগ হয়ে গেছে।

গোলজার এর আগে জানে গানের দলের নায়ক তার বোনের সাথে কি কি বলার জন্য বাড়িতে এসে উপস্থিত হতো। তাই পথ দিয়ে চলতে তাকে দেখে ডাক দিল গুলজার। গানের দলের নায়ক বেশ ভয়তে ভয়তে গুলজার এর কাছে আসলো। এরপর গোজার তখন তার কাছে কিছু জানার চেষ্টা করল সে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। সে এমন ভাব ভঙ্গি দেখালো যে কিছুই জানে না। তাই গুলজারের মনের মধ্যে কনফিউশন আরো বেড়ে গেল। কি এমন হয়েছে যে তার বোন কিছুই বলছে না কিন্তু প্রায় এমন কিছু কানে আসছে যে ক্লিয়ার হচ্ছেনা গুলজারের। কিন্তু গুলজার এখনো তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে ঘটনাটা কি। কারণ এতদিন তার বাড়িতে তেমন মানুষ আসা যাওয়া করত না এখন হঠাৎ কেন এত আসা যাওয়া শুরু করেছে তার বোনের কাছে।

এরপর হঠাৎ হাসেম জুয়ারী সাথে দেখা হল। হাসেম জুয়ারী বিস্তারিত বিষয় গোলজার কে খুলে বলল। এরপর গোলজার সব কিছু জানার পর অতিশয় কষ্ট পেয়ে রেগে গেল। সে সিদ্ধান্ত নিল আজকে বড় কিছু একটা করব কিন্তু কি করব নিজেও জানেনা। হাসেম জোয়ারী তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কিন্তু এখানে সান্তনার কিছুই নেই। তার বোন তাদের বংশের চুনকালি সৃষ্টি করেছে। সে এখন মানুষের মাঝে মুখ দেখাবে কিভাবে ভেবেই পাচ্ছে না। কারণ সে একটি বংশীয় ঘরের ছেলে আর তার বোন এমন একটা কান্ড করেছে এতে তার মাথা হিট হয়ে আসছে। সে রেগে ছুটে বাড়িতে চলে গেল। তারপর তার বোনকে খুঁজতে থাকলো সে কোথায় রয়েছে।

এদিকে গানের দলের সদস্যরা ওস্তাদের সাথে আলোচনা করতে থাকলো।এমন একটা ঘটনা ঘটে গেছে এতে গানের দলের বেশ বদনাম সৃষ্টি হয়েছে। যে মানুষটা মেয়ে মানুষ সেজে গানের দলে নাচ গান করে সুনাম অর্জন করত, সে আজকে কিভাবে এমন দুর্নামের কাজ করতে পারলো। অনেকে আবার বিশ্বাস করতে পারছে না এই কথা। কেউ কেউ বলতে থাকলো আলতা সুন্দরী ওরূপে নছের এর মাধ্যমে কখনোই কলঙ্কের কাজ হতে পারে না। বিউটি হয়তো মিথ্যা বলছে। আবার অনেকে বলছে কোন মেয়ে নিজের নামে কলঙ্ক রটাতে পারে না। তবে গানের দলের ওস্তাদ একটা কথাই বলল যদি কথা সত্যি হয় তাহলে অবশ্যই আলতা সুন্দরীর বিচার হবে।

এদিকে রাতে বিউটি যখন কাজ করছে, ওই মুহূর্তে তার ভাই দাও হাতে তেড়ে এসেছে। সে কি সুনছে, কথা কি সত্যি না মিথ্যা এটা যাচাই করার জন্য। কিন্তু ভাইয়ের কথা সেভাবে আমলে না নিয়ে বিউটি চুপ থাকলো। তার ভাই বলল আমি ভেবে পাচ্ছি না তোর কল্লা ফেলাবো নাকি নিজেই মরে যাব। এরপর বিউটি ঠান্ডা মাথায় বলল কারোর কল্লা ফালানো লাগবে না বরঞ্চ আলতা সুন্দরীর সাথে বিয়ে দিয়ে দাও তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে। সকল কথার একটাই কথা বিউটি নিজের নামে মিথ্যা কলঙ্ক রোটিয়েছে আলতা সুন্দরীকে পাবার আশায়। যেখানে পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে পারুল আলতা সুন্দরীকে পাওয়ার চেষ্টা করেছিল, সেখানে বিউটি মিথ্যা পথ অবলম্বন করে পাওয়ার চেষ্টা করছে।

আলতা সুন্দরী নাটকের এই পর্বের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় দর্শকের মনের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং একটাই ভাবনা কি আছে আলতা সুন্দরীর মধ্যে যা অন্য কারোর মধ্যে নাই। যে মানুষটা একজন মেয়ে মানুষ সেজে নাচ গান করে থাকে গানের দলে, তাকে পাওয়ার জন্য পাশের গ্রামের রহিম বাদশা পাগল। রহিম বাদশা তো কিছুতে বিশ্বাস করতে চায় না সে একজন ছেলে মানুষ। এদিকে আলতা সুন্দরী আর পারুলের ভালোবাসা মিথ্যা কথা অবলম্বন করে ধ্বংস করে চলেছে বিউটি। বিউটি আলতা সুন্দরীকে পাবার আশায় নিজের নামে মিথ্যা কলঙ্ক রটিয়েছে যা সারা গ্রামে চুনকালি ফেলে দিয়েছে। এমনকি বিউটির এই ঘটনার পর গানের দল প্রায় ভেঙে যায় যায়। এদিকে নসুভিলেন মাসুমাকে এক নজর দেখার আশায় তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না। আজকের নতুন যা কিছু সৃষ্টি হচ্ছে সবকিছুর মূলে যেন বিউটির মিথ্যা কথা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তবে দেখা যাবে আগামী পর্বে বিউটির ভাই গুলজার কি ভূমিকা রাখে এবং গানের দলের ওস্তাদ কি করেন। তবে এখানে নিখুঁত এক অভিনয় সবার মাধ্যমে হতে হতে দারুন একটা পর্যায়ে সৃষ্টি হয়েছে যা বেশ চিন্তার বিষয়। নাটকের সার্থকতা কিন্তু এখানেই নিহিত থাকে। যেখানে দর্শক শ্রেনীর মানুষ নতুন কিছু দেখার জন্য উৎসাহিত হয়ে বসে থাকে, আগামীতে কি ঘটতে চলেছে সেই প্রত্যাশায়। আর এখানে একটি নাটকের সাফল্য নিহিত থাকে। আমার বেশ ভালো লাগে এই নাটকের অভিনয়গুলো এবং বিউটির মিথ্যা অভিনয়টা নিখুঁত হওয়া দেখে। সেক্ষেত্রে বলতে পারি বিউটির অভিনয়টা যেন ঠান্ডা মাথায় সবাইকে বিভ্রান্তির পথে আনার মত। আশা করব আগামী পর্বে দারুন কিছু দেখব।

আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।