বাগান থেকে সবজি সংরক্ষণ
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি সকাল সকাল পুকুরপাড়ের সবজি বাগান থেকে সবজি সংরক্ষণ করার মুহূর্তের ফটোগ্রাফি নিয়ে। আশা করব আমার আজকের এই সুন্দর অনুভূতিটা করে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বেশ কিছুদিন ধরে রাজের আব্বুর মুখে শুনছিলাম শীতকালীন অতিথি পাখি পুকুর পাড়ের দিকে আসা শুরু করেছে। পাখি বিষয়ের কথা শুনলে আমার মাথায় কাজ করে না। আমি কেন জানি ছোট থেকে পাখিকে অনেক পছন্দ করি। সে জায়গায় শীতের অতিথি পাখি। তাই কয়দিন ধরে তাকে বলতে থাকলাম সকালে পুকুরে বেড়াতে যাব। কিন্তু ঠান্ডার জন্য যা হচ্ছিল না। কালকে দেখলাম বাড়িতে সবজি একদমই নেই। তাই সকালে সবজি রান্না করতে হলে হয় বাজার থেকে আনতে হবে অথবা পুকুর পাড়ে সবজি বাগান থেকে তুলে আনতে হবে। রাতে সিদ্ধান্ত নিলাম সকালে হালকা নাস্তা করেই আমরা তিনজন চলে যাব পুকুর পাড়ে সবজি তুলবো এবং অতিথি পাখি দেখব। ঠিক সেভাবে আমরা আমাদের প্রথম চারটা পুকুর অতিক্রম করে চলে গেলাম আমাদের বড় সবজি বাগান আলা বড় পুকুরটাতে। সেখানে উপস্থিত হতেই আমার ছেলেটা একটু বেশি লাফালাফি করে সামনে এগিয়ে যাওয়াই পাশের এক বড় পুকুর থেকে অতিথি বুনো হাঁস পাখিগুলো উড়ে গেল। পাখিগুলো খুবি নিকটে ছিল। মোবাইলের ক্যামেরা অন করতে করতে পাখি গুলো অনেক দূর চলে যায়। তাই সেভাবে পাখি দেখার সুযোগ হলো না।
এরপর সবজি বাগানের সবজি গাছগুলোর কাছে চলে গেলাম। দেখলাম বেশ কিছু গাছে ঝাল রয়েছে। সবজি রান্না করতে হলে আগে ঝালের প্রয়োজন। হালকা হালকা ঝিরি ঝিরি বাতাস বইছে। ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভব। এদিকে পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠে পড়েছে তাই ঠান্ডা বাতাস তেমন বেশি কিছু মনে হচ্ছিল না গায়ে গরম পোশাক থাকায়। ধীরেসস্থে ঝাল গাছের মধ্য থেকে ঝাল তুলতে থাকলাম। অনেকদিন পর এত সকাল সকাল পুকুরপাড়ে উপস্থিত হয়ে খুব ভালো লাগছিল। তা আবার সবজি তুলতে আশা। আমার ছেলে তো মহা খুশি, পুকুর পাড়ে আসতে পেরে। মাঝেমধ্যে তার আব্বুর সাথে পুকুরে আসে তবে এত সকাল করে আসা হয় না তাকেও আনা হয় না।
বাড়িতে যেয়ে সবজি রান্না করতে হবে তাই বেশিক্ষণ পুকুর পাড়ে অবস্থান করা যাবে না। দ্রুত চেষ্টা করতে থাকলাম যে সমস্ত সবজিগুলো সংরক্ষণ করা যায় সেগুলো দ্রুত সংরক্ষণ করার জন্য। যখন গাছ থেকে বেগুন তুলছিলাম তখন আমার ছেলে একটু কান্না করা শুরু করল হাতে নেওয়ার জন্য। দুইটা বেগুন তার হাতে দেওয়া মাত্র সে অনেক খুশি এবং আনন্দে আটখানা। বাবুর মুখের হাসি আনন্দ দেখে খুবই ভালো লাগছিল। যেন অন্য রকম এক ভালো লাগার মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম আমরা সবাই।
এরপর মুলা পালন গাজর রয়েছে এমন একটি স্থান থেকে বেশ অনেকগুলো মুলা তুললাম। গত বছর আমাদের সবজি বাগানের মধ্যে বড় বড় মুলা হত। এবার আমাদের বাগানে ছোট ছোট মূলা হয়েছে। রাজের আব্বুকে জিজ্ঞেস করলাম এবার মুলা গুলো ছোট কেন। উনি উত্তর দিলেন এগুলো দেশাল মুলা, তাই এগুলো ছোট হয়েছে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে হয়ে গেছে। তবে গাজর গাছগুলো হয়ে উঠেছে মাত্র, গাজর হতে অনেক দেরি লাগবে। আর এভাবেই দ্রুত বেশ কিছু শাকসবজি সংরক্ষণ করে ফেললাম।
সবজি সংরক্ষণ করে যখন বেগে রাখলাম। তখন মনে হল বাগানের মধ্যে কোন সবজির ফুল আছে কি না একটু দেখি। দেখলাম করলা গাছে করলার ফুল ফুটেছে। শিম গাছের শিমের ফুল। তাই এই সমস্ত কিছু কয়েকটা ফটো ধারণ করবো এমন মুহূর্তে ছেলের বাবা ছেলেকে নিয়ে দ্রুত চলে যাওয়া শুরু করে। তাই তেমন আর বাড়তি কোন ফটো ধারণ করার সুযোগ হলো না। আমিও তাদের পিছু পিছু হাটা শুরু করে দিলাম। আর এভাবেই আজকের সকালটা যেন অনেক ভালোলাগা ও আনন্দের ছিল সবুজ প্রকৃতির মাঝে। তবে আশা করছি কয়েকদিন পর আবারো সকাল করে পুকুর পাড়ে উপস্থিত হব অতিথি পাখি দেখার জন্য। তবে মাথায় বুদ্ধি থাকলে এবার চেষ্টা করব ছেলেকে তার আব্বুর হাতে রাখতে আর আমি চুপিচুপি যেন অতিথি পাখির ভিডিও ধারণ করতে পারি। আর এমন আশা মাথায় রেখে,হাসি আনন্দের মধ্য দিয়ে সবজি সংরক্ষণ করে বাড়ি পৌঁছে গেলাম আমরা।
ধন্যবাদ সকলকে
বিষয় | সবজি সংরক্ষণ |
---|---|
স্থান | জুগীরগোফা |
লোকেশন | জুগীরগোফা,গাংনী-মেহেরপুর |
মোবাইল | Infinix Hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
দেশ | বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
সবজি বাগান থেকে সবজি সংরক্ষণ করছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো আপু। বর্তমান সময়ের সবজির দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে আমাদের সকলেরই উচিত বাড়ির আশেপাশে থাকা জায়গাতে এমন সবজি উৎপাদন করা। আর এমন সবজি বাগান থাকলে সেখান থেকে ফরমালিনমুক্ত খাবার খাওয়া সম্ভব হয়।
হ্যাঁ সবজির দাম অনেক বেশি।
শীতের শুরুতে অতিথি পাখি আসে আবার শেষে চলে যায় এই পাখিগুলো দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। ভাইয়া বলার সাথে সাথে আপনি পাখি দেখায় এবং সবজি তোলার জন্য পুকুরে চলে গেছেন বেশ ভালই করেছেন। আপনাদের পুকুর পাড়ে দেখছি অনেক ধরনের সবজি হয়েছে। নিজের হাতে লাগানো এ ধরনের টাটকা সবজি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আমার কাছেউ খুব ভালো লাগে
আজকের কাজ সম্পন্ন
আপনার আজকের পোস্ট আমার কাছে বেস্ট লেগেছে । পুকুরপাড়ে দারুন সবজির বাগান করেছেন । যেখানে সব ধরনের সবজি রয়েছে মুলা, বেগুন, লাউ এবং ধনিয়া পাতা অনেক ভালো লাগলো দেখে। এই ধরনের সবজি বাগান গুলো দেখলে ভালো লাগে। সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আমাদের সবজি বাগানে অনেক রকমের সবজি আছে।
নিজেদের গাছের সবজি হলে সেগুলো তুলতে আলাদা একটা মজা লাগে আপু। খুব সুন্দর একটা সকাল অতিবাহিত করেছেন আপনারা তিনজন মিলে। অতিথি পাখিগুলো দূর থেকে দেখা যাচ্ছে। আর এতগুলো সবজি নিজের বাগান থেকে তুলে নিয়েছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো।
এটা কিন্তু আপনি একদম ঠিক বলেছেন
অতিথি পাখির আগমন ঘটলে সত্যি অনেক ভালো লাগে। পাখি আমরা সকলেই অনেক পছন্দ করি। আপনিও পাখি পছন্দ করেন জেনে ভালো লাগলো আপু। নিজের বাগান থেকে সবজি সংগ্রহ করার মুহূর্তগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো।
অসংখ্য পাখি এসেছে এখানে
শীতকালে নানা রকম সবজি পাওয়া যায়। তরতাজা সবজি রান্না করলে খেতে খুব ভালো লাগে। বাগান থেকে সবজি সংরক্ষণ করার অনুভূতি শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। পুকুর পাড়ে দেখছি অনেক ধরনের সবজি লাগানো হয়েছে। মুলা, বেগুন, লাউ এবং ধনিয়া পাতা অনেক ভালো লাগলো দেখে আপু। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া তার মধ্যে আমাদের নিজেদের বেশ কিছু হয়ে থাকে।
শীতকাল চলে আসলেই বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের দেশের পুকুর গুলোর মধ্যে অতিথি পাখি চলে আসে। আপনার পুকুরের মধ্যে অতিথি পাখি এসেছে, দেখে বেশ ভালো লাগলো। আপনাদের এতো সুন্দর একটি সবজি বাগান রয়েছে, এটা বেশ ভালো। আসলে বর্তমান সময়ে নিজের একটি সবজি বাগান থাকলে বাজার খরচ অনেক টা কমে যায়।
হ্যাঁ ভাইয়া ঠিক বলেছেন
আপনারা পাখির প্রতি ছোটবেলা থেকে ভালোবাসা জেনে ভালো লাগলে।আমারও বেশ ভালো লাগে পাখি দেখতে।আপনার পুকুর পাড়ে এতো প্রকারের শাক,সবজি দেখে অবাক হয়ে গেলাম আপু।কি সুন্দর সব তরতাজা সবজি।গাছ থেকে টাটকা সবজিও শাক তুলে এনে রান্না করার মজাই আলাদা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর অনুভূতি ও ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করে আমাদের কে দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।
আমি ছোটবেলা থেকে ফসলের মাঠ ও পশুপাখি বেশি পছন্দ করি