কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ১৬ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।

বিউটি তার নিজের নামে মিথ্যা কলংক রোটিয়েছে গ্রামে। তাও আবার আলতা সুন্দরীর নাম দিয়ে। এজন্য আলতা সুন্দরী ও তার প্রেমিকা পারুলের মধ্যে প্রেম ভেঙ্গে যাওয়ার পথে। কেন যে বিউটি এভাবে তাদের ভালোবাসাকে তিলে তিলে নষ্ট করে দিচ্ছে কেউ বুঝতে পারছে না। যখনই আলতা সুন্দরী জানতে পারলে তার নামে এত বড় মিথ্যা একটা প্রচার করেছে বিউটি সে তো বেশ আর্তনাদে ফেটে পড়লো। কারণ খুব শীঘ্রই তাদের বিবাহ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিউটির মুখে এমন কথা শোনার পর তার বান্ধবী পারুল আর কিছুতে রাজি নয় প্রেমিকের সাথে বিয়ে করার। এমন অবস্থায় আলতা সুন্দরী ছুটে গেল গুলজার বংশে। গুলজার এর সাথে দেখা হল। সে বিউটির নাম ধরে ডাকা শুরু করেছে। বিস্তারিত বিষয় জানতে চাইলে সে কিছুতেই বিউটির ভাইয়ের কাছে বলছে না। এদিকে বিউটি আসলো। সেও তার ভাইকে কিছু বলছে না। তাই গুলজার আরো রেগে গেল। কারণ এমন উচ্চ বংশের একজন মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে তারা ঝগড়া করছে আর সে কিছুই জানছে না কিছুই বলছে না বিষয়টা কেমন লাগে। গুলজার মনে করেছিল তার বাড়ির সীমানার মধ্যে কেউ প্রবেশ করার পূর্বেই তার অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারে না আর এমন একজন গানের দলের নায়িকা কিভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে মুখ উচ্চ স্বরে কথা বলে। বিষয়টা তার কাছে বেশ খারাপ লাগার মনে হল।

এদিকে গানের দলে তেমন আর গান-বাজনা হয় না। গানের দলের একেক জনার এমন কাহিনী ঘটতে থাকায় বেশ উস্তাদের মন খারাপ হয়ে গেছে। একদিকে রহিম বাদশা এসে যেমন ঝামেলা তৈরি করেছে। নতুন করে ঝামেলা তৈরি হয়েছে বিউটির মুখের কথা শোনার পর। আর সে সুযোগে হাসেম জোয়ারি বারবার যেন গানের দলের ওস্তাদ কে বলতেই আছে তার দলের নায়িকা ভালো নয়। এখন তো নতুন করে সুযোগ হয়েছে আলতা সুন্দরীর নামে এটা সেটা বলে অপবাদ দেওয়া। এদিকে হাসেম জোয়ারি তাকে সাজার জন্য এর আগে আলতা লিবিসটিক সব দিত। এখন যেন আর দেয়ার সে মন-মানসিকতা নেই কারণ সে বুঝে ফেলেছে আলতা সুন্দরী তার প্রেমিকাদের সবগুলো দিয়ে দেয় নিজে না সেজে। যেহেতু গানের দলে কোন মেয়ে মানুষ নাইকা নেই একজন পুরুষ মানুষ নায়িকা সাজে, সেও যদি এমন করে তাহলে কিভাবে দল চলে, কিভাবে তাকে বিশ্বাস করা যায় এমনটাই হাসেম জোয়ারির মনে।

এদিকে গুলজারের মনে সংশয়ে রয়েই গেছে প্রশ্ন রয়ে গেছে। কেন আলতা সুন্দরী তাদের বাড়িতে এসে বড় গলায় কথা বলছিল তার বোনের সাথে। কিন্তু বিউটি সবকিছুর মূলে একটা কথা বলে থামিয়ে দেয় ভাইকে, তা হচ্ছে আলতা সুন্দরী তার বান্ধবী। তবে তার ভাইয়ের মধ্যে প্রশ্ন আলতা সুন্দরী একজন ছেলেমানুষ বান্ধবী হয় কি করে,হয়তো সে গানের দলে নায়িকা হয়ে নাচে, তা বলে তো সে আর মেয়ে মানুষ নয়।

আলতা সুন্দরী ওরূপে নছের এর এমন এক দুর্নামের মুহূর্তে সুযোগ নিচ্ছে তারই গানের দলের ভিলেন নসু। সে খুব ভালো করে গানের দলের ওস্তাদের বউকে বোঝানোর চেষ্টা করছে আলতা সুন্দরী আগে থেকে ভালো নয়। কিন্তু গানের দলের ওস্তাদের স্ত্রী এটা বুঝল যে, এত ভালো ছেলে যদি হঠাৎ এমন খারাপ কাজ করে বসে তাহলে কাকে সে বিশ্বাস করবে। তাই নসু ভিলেন যেন তাদের বাড়ির সীমানার মধ্যে নাই আসে। কারণ তাদের তো একটা সেয়ানা মেয়ে আছে কখন না জানি কি হয়ে যায়। এমন কথায় সে খুবই কষ্ট পেল এবং দ্রুত বাড়ি থেকে চলে গেল। কারণ তার মনের মধ্যে ওস্তাদের মেয়ে মাসুমার প্রতি একটা টান রয়েছে। এই বিষয়টা মাসুমাও বুঝে মাসুমার আম্মাও বোঝে।

দীর্ঘদিনের ভালবাসা আলতা সুন্দরীর সাথে পারুলের। হঠাৎ করে বিউটির মুখে এমন কথায় যেন সকল আশা ভরসা ভেঙ্গে গেল এক নিমিষে। তাই ঘরের মধ্যে শুয়ে বসে সব সময় কান্না করে পারুল। অতীতের স্মৃতিগুলো বার বার মনে করতে থাকে আর কষ্ট পায়। কারণ মন প্রাণ দিয়ে তাকে ভালোবেসেছে দীর্ঘদিনের দীর্ঘ স্বপ্ন আশা যেন এক নিমিষে ভেঙে গেল। আজ আর তার প্রেমিকার প্রতি কোনো রাগ দেখানোর সেই অজুহাত নেই। চাইলেও পূর্বের মতো প্রেমিকের মুখ দেখার ইচ্ছে থাকলেও হচ্ছে না আর। এমনই এক মনে কষ্ট নিয়ে শুধু অতীতের স্মৃতিগুলো স্মরণ করছে আর কান্নায় ভেঙে পড়ছে পারুল।

আবারো গুলজারের বাড়িতে পারুলের মায়ের উপস্থিতি। কোনদিন পারুলের মা গুলজারদের বাড়িতে আসেনি,এমনকি গুলজারের বউ দেখার জন্য আসেনি। আজ কেন হঠাৎ করে ডিউটির খুঁজে তাদের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে। এই মুহূর্তে পারুলের আম্মা বলে বসলো বিউটি তাদের বাড়িতে যায় গুলজারের বউ তাদের বাড়িতে গেছে অনেকবার। এ কথা শুনে তো সে সাপের মতো ফস করে ওঠে। গুলজার এর স্ত্রী অন্যের বাড়িতে যায় তাকে না বলে,এটা সে কখনোই মন থেকে মেনে নিতে পারল না। সে বলল তার বোনের কারণে বউয়ের আশ্পর্ধা হয়েছে। এদিকে উনি কেন এসেছেন সেটাও বলছে না তার বিউটির সাথে প্রয়োজন। তাই গুলজার ভাবতে থাকল আলতা সুন্দরী এসেছে বিউটির কাছে, আবার পারুলের মাও এসেছে ডিউটির কাছে, এ বিষয়টা কি।

আলতা সুন্দরী নাটকের ১৬ তম পর্বের লক্ষ্য করা গেছে গুলজারের শক্তি এবং তার বংশের অহংকার দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। কেউ তাকে আগের মত মান্য করছে না। আলতা সুন্দরীর মত একজন মানুষ তার বাড়ির উপরে এসে গলাবাজি করে,এত সাহস কোথা থেকে পায়। এদিকে পারুলের মা এসে বিউটির খোঁজ করে কেন কিন্তু কেন কি বলবে সেটা তাকে বলে না। একদিকে বিউটি তার নিজের নামে মিথ্যা কলঙ্ক উঠেছে সেটা এখনো বোঝারের কানে আসেনি। আর এই মিথ্যা কলঙ্ককে ঘিরেই যত কিছু। কিন্তু গুলজার বিষয়টা না জানা পর্যন্ত তার কাছে বেশ অস্থির মনে হচ্ছে, এক এক জনের আর আসা-যাওয়ার কথা গোপন রাখা দেখে। আর এখানেই নাটকের এক সুন্দর অভিনয় ফুটে উঠেছে, ফুটে উঠেছে নাটকের গভীরতা। যেটা দেখা আর গভীরভাবে বিনোদন পাওয়ার প্রত্যাশায় বসে থাকে দর্শক শ্রেণী।

আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।