গল্প :- নিষ্ঠুর সন্তান।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

IMG-20230610-WA0011.jpg

ক্যানভা দিয়ে তৈরি,

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করব। আশা করবো গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। আমাদের চারপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক বিষয় রয়েছে। এজন্য এই সকল বিষয়গুলো আপনাদের শেয়ার করলে আপনারাও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। এমনকি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন। এইজন্য আমি চেষ্টা করি বিভিন্ন বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। এখন মানুষের আসলে ভরসা নেই। একেকজন একেক ধরনের, এবং একেক জন একেক ধরনের মানসিকতার।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে বাস্তবে একটি ঘটনা শেয়ার করব। ঘটনাটি হচ্ছে আমাদের পাশের বাড়ির বাস্তব একটি ঘটনা। আমাদের পাশের বাড়ির একটি লোকের নাম হচ্ছে কামাল। আমরা ছোট বেলা থেকে দেখতেছি কামাল সাহেব বিদেশ থাকেন। তার একটি মাত্র ছেলে আর একটিমাত্র মেয়ে। ছোটকাল থেকে ছেলে মেয়ে দুটিকে অনেক আদর করে সে মানুষ করেছে। কারণ একটি ছেলে একটি মেয়ের কারণে তারা মা বাবার কাছে ছিল খুব আদরের। ছেলেমেয়েগুলো যখন বড় হল তখন মেয়েকে খুব ভালো ঘর দেখে বিয়ে দিলেন। তবে তার ছেলেমেয়ে দুটির নাম হচ্ছে পারভেজ এবং আয়েশা।

আশার বিয়ে অনেক বড় করে আত্মীয়-স্বজন সবাইকে দাওয়াত দিয়ে নিমন্ত্রণ করলেন। এবং আমাদের আশেপাশের সব মানুষকে দাওয়াত দিলেন। এদিকে ওই সময় ছেলেটি ও বড় হয়ে গেছে। এবং ছেলেটি ওই সময় তার খালাতো বোনের সাথে প্রেম ছিল। বোনের বিয়ের পর পরে সেই বলতে লাগলো খালাতো বোনকে সে বিয়ে করবে। প্রথমে ফ্যামিলির মা-বাবা রাজি ছিল না। পরে ছেলে পারভেজ বলতে লাগলো তাকে না বিয়ে করালে সে আত্মহত্যা করবে। কারণ একটি মাত্র ছেলে সেই কারণে তারা পারভেজের কথা মেনে নিলেন। কিছু মাস পর পারভেজকে তার খালাতো বোনকে বিয়ে করালেন। এর কিছু মাস পর পারভেজকে তার বাবা বিদেশ নিয়ে গেলেন।

পারভেজ বিদেশ যাওয়ার পর বলতে লাগলো বাড়িতে মা এবং তার ওয়াইফ ছাড়া কেউ নেই। এই কারণে তার বাবাকে বলতে লাগলো সে দেশে চলে আসতে। প্রথমে পারভেজের বাবা কামাল সাহেব আসতে রাজি হলেন না। এরপর ছেলের কথা শুনে কামাল সাহেব দেশে চলে আসলেন। প্রথম বাড়িতে আসার পর কামাল সাহেব কোন কাম কাজ করতেন না। কারণ বিগত সে ৩০ বছর পর্যন্ত বিদেশ করেছেন। এদিকে ছেলের ওয়াইফ তার মা-বাবাকে দেখতে পারেনা। সব সময় পারভেজকে নানার ধরনের কথা বলে থাকে। পারভেজ প্রথম প্রথম মা-বাবাকে কিছুই বলতেন না।

এভাবে কামাল মিয়া বাড়িতে যখন আসলেন দেখতে পারলেন তার ছেলের ওয়াইফ তাদেরকে দেখতে পারে না। এদিকে পারভেজ অন্য একটি খারাপ কাজ করেছে। বাড়িতে তার বাবা আসার পর সেই বাবার হাতের টাকা না দিয়ে তার ওয়াইফের হাতে টাকা দিতেন। কোন দরকারে পারভেজের বাবা তার ওয়াইফের কাছে টাকা চাইলে সে বলে তার হাতে টাকা নেই ।তার ছেলের টাকা দেই নাই । এমত অবস্থায় কামাল সাহেব অনেক ছিনতাই পড়ে গেলেন। কারণ তাকে তার ছেলের ওয়াইফ চা-নাস্তা খাওয়ার টাকাও দেয় না। এদিকে পারভেজ প্রায় চার বছর পরে দেশে আসলেন। আশার সপ্তাহ 10 দিন পরে এলাকার এবং বাড়ির কয়জন লোককে ডাকলেন।

এবং সে সবাইকে ডেকে বললেন তার মা-বাবাকে খাওয়া-দাওয়া ওষুধপত্র করে তার তিন লাখ টাকা দেনা হয়েছে। এই কারণে সে তার মা-বাবাকে আর খাওয়া-দাওয়া এবং দেখাশোনা করতে পারবে না। তখন এলাকার মুরব্বিগণ তাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করল। তোমার বোনকে বিয়ে দিয়ে দিল। সন্তানের মধ্যে তুমি একজন এখন তারা কোথায় যাবে। কিন্তু পারভেজ কথাগুলো শুনতে রাজি নয়। সে আর মা বাবাকে খাওয়া-দাওয়া বা টাকা-পয়সা দিতে পারবে না। এবং সবাই বোঝানোর পর সে বলতে লাগলো তার তিন লাখ টাকা দেনা আছে। সেইগুলো পরিশোধ করার পর মা বাবাকে সে আবার খাওয়া-দাওয়া এবং টাকা পয়সা দেবে।

এর আগে সে আর তাদের দেখাশোনা করতে পারবে না। এই কথা শুনে কামাল সাহেব এবং তার ওয়াইফ অনেক কান্নাকাটি করলেন। কামাল সাহেব বলতে লাগলো আমি তো কখনো ছোট কাল থেকে তোর সাথে কিছুই হিসাব করলাম না। তোকে বিদেশ পর্যন্ত নিলাম কিন্তু তুই এখন তোর ওয়াইফের কথা শুনে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতেছিস। এবং সবার সামনে কামাল সাহেব বলতে লাগলো আমি দোয়া করি তুই অনেক বড় হও। এত কষ্টের পরও কামাল সাহেব তার ছেলের জন্য দোয়া করলেন। এই হচ্ছে নিষ্ঠুর সন্তান পারভেজের কাহিনী।

আমার পরিচয়

IMG_20221006_094439.jpg

আমার নাম মোঃ জামাল উদ্দিন। আর আমার ইউজার নাম @jamal7। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। প্রথমত বাঙালি হিসেবে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি। কারণ বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। তার সাথে ফটোগ্রাফি করা আমার অনেক শখ। আমি যে কোন কিছুর সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করি। তার সাথে ভ্রমণ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তার সাথে লেখালেখি করতে ও ভীষণ ভালো লাগে। যে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা যে কোন গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা। নতুন ধরনের কিছু দেখলে করার চেষ্টা করি।
35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

এজন্যই বাবা-মাদের কখনোই শুধুমাত্র ছেলে মেয়ের উপর ভরসা করে থাকা উচিত নয়। নিজেদের জন্য কিছু সঞ্চয় করা উচিত যাতে করে এরকম পরিস্থিতি গুলোতে তাদের সমস্যায় পড়তে না হয়। এটা কোন বাবা মারি কাম্য নয় ছেলের কাছে তবে এরা একটা সময় বুঝতে পারে তখন আর কিছুই করার থাকেনা। ভালোই লিখেছেন পড়ে খুব ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

তবে সব মা বাবাই ছেলের আদর ভালোবাসা এবং তাদের কাছে থাকতে চাই। অনেক সুন্দর মন্তব্য করায় তাই ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আসলে আমাদের বর্তমান সমাজিক কাঠামোগুলো দেখলে বেশ খারাপ লাগে। এত ছোট কাল থেকে কষ্ট করে বড় করলো বিয়ে দিল এবং বিদেশ নিয়ে গেল কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবাকে খাওয়াতে পারবে না এ কেমন নিষ্ঠুর আচরণ। আমি যতটুকু মনে করি এই ছেলের ভবিষ্যৎ পরিণতি তেমন ভালো হবে না। পড়াটি পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম বেশ ভালই লাগলো।

 last year 

তবে এই কথা আমাদের এলাকার মুরুব্বীগণ বলতেছে ছেলের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। আপনার মন্তব্য শুনে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

কামাল সাহেব আসলে মনে হয় অনেক দুঃখী। কারণ ছোট কাল থেকে ছেলে মেয়ে দুটিকে অনেক আদর করে বড় করলেন। ছেলে পারভেজের পছন্দের মেয়ে তার খালাতো বোনকে বিয়ে করালেন। অথচ এত বছর বিদেশ করে তার ছেলের কাছে দাম পেল না। তবে আমাদের সমাজে এরকম পারভেজের মত অনেক লোক আছে। যারা মা বাবাকে দেখাশোনা করে না। তবে আমার কাছে বেশি খারাপ লাগলো সে এলাকার এবং বাড়ির লোক ডেকে মা-বাবাকে দেখাশোনা এবং খাওয়া-দাওয়া করানোর কারণে তার তিন লাখ টাকা লস হয়েছে। এই কথাগুলো আসলে পারভেজ কি হিসাবে বলল বুঝতে পারলাম না। আসলে মা-বাবা এমন এত কষ্টের পরও কামাল সাহেব তার ছেলে পারভেজের জন্য দোয়া করতেছে আল্লাহ যেন তাকে ভালো রাখে।

 last year 

আসলে কিছু কিছু ছেলে মেয়ে আছে সেগুলো পশুর চেয়ে খারাপ। তবে এগুলো মা-বাবার মান ইজ্জত এবং নিজের মান ইজ্জত চিনেনা। সুন্দর মন্তব্য করাই ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62102.31
ETH 2432.92
USDT 1.00
SBD 2.67