গল্প:-মা-বাবার ভুলের জন্য ছেলে-মেয়েরও কষ্ট।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

IMG-20230819-WA0000.jpg

ক্যানভা দিয়ে তৈরি,

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করব। আশা করবো গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। আমাদের চারপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক বিষয় রয়েছে। এজন্য এই সকল বিষয়গুলো আপনাদের শেয়ার করলে আপনারাও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। এমনকি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন। এইজন্য আমি চেষ্টা করি বিভিন্ন বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। এখন মানুষের আসলে ভরসা নেই। একেকজন একেক ধরনের, এবং একেক জন একেক ধরনের মানসিকতার।

মা-বাবার ভুলের জন্য অনেক সময় ছেলে মেয়েরা কষ্ট করে বাস্তব একটি গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আমি। আমাদের নিজ বাড়ির বাস্তব ঘটনা। আমাদের বাড়ির একটি মহিলা যখন আমরা ছোট ছিলাম তখন আমাদের পাশের এলাকায় তার বিয়ে হয়েছে। মহিলাটির নাম হচ্ছে শিল্পী। ওই সময় শিল্পী আপাকে দেখে তার ফ্যামিলি বিয়ে দিয়েছে। প্রথম অবস্থা জামাইয়ের বাড়ি অনেক সুখেই ছিল তারা। তাদের সংসারে বিয়ের এক বছর পর একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়েছে। ছেলেটি দেখতে খুব সুন্দর নাম রাখল তার সোহাগ।

সোহাগ যখন জন্ম গ্রহণ করল তখন কি কারনে তার মা-বাবা দুজন ঝগড়া লেগে আলাদা হয়ে গেল। ওই সময় সোহাগের বয়স মাত্র ১ বছর। এমত অবস্থায় সোহাগকে নিয়ে তার মা তাদের বাড়িতে চলে আসলো। ওই সময় সোহাগের বাবা তার মাকে তালাক দিয়েছিল। এর এক বছর পর সোহাগের মায়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গেল। কারণ শিল্পী আপার বাবা-মা তাকে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দিয়েছেন। যদিও শিল্পী আপার পরের বিয়ের জামাইয়ের ছেলে সন্তান আছে। এদিকে সোহাগের বাবা হঠাৎ করে কোথায় যেন চলে গেল কেউ তার খোঁজ খবর ও আর নেয় নাই।

সোহাগ ওই সময় অনেক ছোট ছিল। দুই থেকে আড়াই বছর হবে। তার বাবা কোথায় চলে গেল মা অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গেল। এমত অবস্থায় সোহাগের লালন-পালন করলে তার নানু। তার নানু অত্যন্ত ভালো মানুষ। সোহাগ যখন একটু বড় হল তাকে তার নানু ইস্কুলে ভর্তি না করিয়ে একটি দোকানে কাজে দিয়ে দিলেন। মূলত সোহাগ বড় হওয়ার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। মানুষের কাজ করে কোন মতে সে আর তার নানু চলতো। বলতে গেলে সোহাগ মানুষের কাছে করুনার পাত্র হয়ে বেঁচে ছিল। ওই সময় তার মা-বাবার কোন ভূমিকায় ছিল না।

এখন যখন সোহাগ বড় হয়েছে বর্তমানে সেই বিয়ে করেছেন। এই বিগত ২০ বছর তার বাবার কোন খবর ছিল না। মা ছিল অন্য বাড়িতে। যখন সোহাগ বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন কোথায় থেকে তার বাবা এসে সোহাগের বাড়িতে উঠলো। সোহাগ তার বাবাকে সিদা বললেন তাকে সেই চিনে না। কারণ এত বছর যে বাবা তার ছেলের খবর নেই নাই এরকম ভাবার পরিচয় তার দরকার নেই। আর মা অন্য সংসারে নিজের মতো করে আছে। এখন সোহাগের বাবা মানুষের কাছে বিচার দে তার ছেলে তাকে বাড়িতে জায়গা দিতেছে না।

অথচ সোহাগ যে জায়গার মধ্যে বসবাস করতেছে সেই জায়গাটি সোহাগ অনেক কষ্ট করে টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে অন্যজন থেকে। সোহাগের কথা হচ্ছে আমার মা-বাবা যদি ঠিক থাকতো তাহলে আমি এত কষ্ট করতাম না। মানুষের মত মানুষ হতে পারতাম। তাদের কারণে আমি লেখাপড়া সুন্দর একটি জামা ব্যবহার করতে পারিনি। আজ সোহাগের বাবা ছেলের দোহাই দিয়ে তার বাড়িতে উঠতে চেষ্টা করতেছে। তবে বর্তমানে সোহাগের বাবা বৃদ্ধ হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু লোক সোহাগ কে বলতেছে বাবা ফেলে দেওয়া যাবে না।

অথচ সোহাগের মনের ভিতর তার বাবার জন্য কোন জায়গা নেই। আসলে কিছু কিছু মা-বাবার জন্য ছেলে সন্তান সত্যি অনেক কষ্ট করে। কারণ সোহাগ তিন বেলা ভাত খেতে পারে নাই। সোহাগের এই কষ্টগুলো সব সময় তার মনের মধ্যে ব্যথা দেয়। যদি সোহাগের মনে দয়া হয় তাহলে তার বাবাকে হয়তোবা জায়গা দেবে। আশা করে আমার এই বাস্তব ঘটনা পরে আপনাদের ভালো লাগবে।

আমার পরিচয়

IMG_20221006_094439.jpg

আমার নাম মোঃ জামাল উদ্দিন। আর আমার ইউজার নাম @jamal7। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। প্রথমত বাঙালি হিসেবে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি। কারণ বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। তার সাথে ফটোগ্রাফি করা আমার অনেক শখ। আমি যে কোন কিছুর সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করি। তার সাথে ভ্রমণ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তার সাথে লেখালেখি করতে ও ভীষণ ভালো লাগে। যে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা যে কোন গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা। নতুন ধরনের কিছু দেখলে করার চেষ্টা করি।
35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 last year 

ছোটকাল থেকে মা-বাবার কারণে সোহাগের জীবন অনেক কষ্টে গেল আপনার পোস্ট পড়ে বোঝা যাচ্ছে। একদিকে সোহাগের মা শিল্পী অন্য জায়গায় বিয়ে বসে গেল ।আর বাবা কোথায় যেন হারিয়ে গেল। তবে সোহাগ নানুর কাছে থেকে অনেক কষ্টে বড় হয়েছে। যদিও এখন সোহাগ বিয়ে করে মোটামুটি ভালো অবস্থা আছে কিন্তু তার বাবা এত বছর পর কোথায় থেকে আসলো। তবে আমার মতে সোহাগ তার বাবাকে বাড়িতে জায়গা না দিয়ে ভালোই করল। যে ভাবা তার ছেলের খোঁজ রাখে নাই ।এবং তার কোন ভূমিকাই ছিল না ছেলের জন্য। সত্যি সেই অনেক পাষাণ বাবা। আর মা অন্য জায়গায় বিয়ে বসে সে সংসার নিয়ে রইল। গল্পটি সুন্দর করে পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আসলে কিছু কিছু মা-বাবার কারণে ছেলেমেয়েদের জীবন অনেক কষ্ট হয়। গল্পটি পড়ে খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

পৃথিবীতে এমন কিছু বাবা আছে যারা ছেলে মেয়ে জন্ম দিয়ে তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে ফেলে রেখে চলে যা। এমন ঘটনা আমাদের দেশে প্রায় শুনা যায়। এখানে সোগের কোন ‍দুষ নেই। যে বাবা তার দায়িত্ব পালন করে নাই,এখন সোহাগ কেন দায়িত্ব পালন করবে। হয়তো সমাজের চাপে এখন তার বাবাকে মানতে হবে। সমাজ তখন দেখে নাই এখন দেখবে। ধন্যবাদ।

 last year 

ঠিক বলেছেন এখানে সোহাগের কোন দোষ নেই। তার বাবা সোহাগের দায়িত্ব পালন করে নাই। সুন্দর মন্তব্য করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপনার এই পোস্ট এর মধ্যে বাস্তব জীবনের কিছু কথা আপনি তুলে ধরেছেন। পিতা-মাতার ছোট ছোট কিছু ভুলের কারণে সন্তানের জীবনে চলে আসে অন্ধকার কালো ছায়া।সোহাগ ভাইয়ের জীবন কাহিনী পড়ে একটু কষ্টই পেলাম।এটা ভালো লাগলো যে এখন তিনি অনেক ভালো সুখে শান্তিতে আছেন শুভ কামনা রইলো সোহাগ ভায়ের জন্য।

 last year 

সোহাগের জীবনে এমনিতে অনেক কষ্টে গিয়েছে। আপনার চমৎকার মন্তব্য শুনে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ভাই আজকে আপনি যে বিষয়টি আলোচনা করেছেন বা লিখে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এই বিষয়টি প্রায়ই বাংলাদেশে ঘটে চলেছে। শিল্পী নামে যে মহিলাটা আপনার গ্রামের বাড়ির পাশে বিয়ে হয়। জামাই তাকে সুখে রাখছিল কিন্তু হঠাৎ করে তাদের মধ্যে একটা ঝামেলায় তাদের সংসারটা ভেঙে যায়। তাদের মধ্যে যত ঝামেলাই হোক না কেন তারা কি পারত না তাদের এই ছোট সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে একত্রিত হয়ে থাকতে। ইচ্ছা করলে তারা পারতো। কিন্তুু তারা তা করে নাই। আজ এই সন্তান বড় হয়ে কি করবে? এই সোহাগ যদি আজ তার বাবা মাকে পেতো তাহলে সে নিশ্চয়ই সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে অনেক বড় কিছু করতে পারতো। পিতা মাতার ভুলে নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমাদের উচিত সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেদের ছোটখাটো বিষয় গুলো এড়িয়ে চলা।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

ঠিক বলেছেন সোহাগের মা বাবার ইচ্ছে করলে ঝগড়া গুলো সমাধা করতে পারতো। ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা ঝগড়া বন্ধ করতে পারতেন। খুব সুন্দর করে আমার পোস্ট নিয়ে মন্তব্য করায় ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58482.75
ETH 2615.94
USDT 1.00
SBD 2.42