সবাই তো মানুষ আমরা || 10% for shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

জনবহুল এই শহরে কত রকমই মানুষ, কত রকমই স্বপ্ন, একেক জনের একেক স্বপ্ন। কেউ কেউ স্বপ্ন দেখছে বিশাল এক অট্টালিকার, কেউ স্বপ্ন দেখছে নিজের একটা ফ্ল্যাট,আবার কেউ স্বপ্ন দেখছে দিনে তিন বেলা খেয়ে সন্তানদের মানুষের মত মানুষ করার, কেউ কেউ আবার দিনে অন্তত এক বেলা খাবারের স্বপ্নে দিন পার করছে তাও জুটেনা কপালে।

শহরটা যেন স্বপ্ন পূরণের এক মহানগর, সবাই স্বপ্ন পুরণের জন্য এই শহরে আসে, এমনই এক স্বপ্ন নিয়ে সুৃমন এই শহরে, সুমন বেসরকারী একটি কোম্পানিতে চাকরী করে মাস শেষে যা মাইনা পায় তাতেই তার ছোট সংসার খুব সুন্দর ভাবেই চালিয়ে নিতে পারে সুমন।সুমনের স্বপ্ন খুব একটা বড় না, তার স্বপ্ন ছেলে মেয়েকে মানুষ করা আর দু বেলা পেট ভরে খাওয়া। চলছে সুমনের সংসার হঠাৎ যেন বিশ্ব জুড়ে চলে আসলো করোনা মহামারী, বিশ্বের অন্যান দেশের মত আমাদের দেশেও ঘোষনা আসল সারা দেশ জুড়ে লক ডাউন, সাথে যেন সুমনের স্বপ্নকেও লক ডাউনের আওতা ভুক্ত করা হল।

IMG_20211230_192134.jpg

চলছে লক ডাউন সুমনের অফিস বন্ধ, এভাবেই যেন চলে গেল তিন মাস সুৃমনের জমানো টাকা গুলোও যেন শেষ কিন্তু লক ডাউন আর শেষ হচ্ছে না, অফিস ও খুলছেনা, সুমন দিশেহারা কিভাবে এত টাকার জুগান দিবে, কোম্পানি ও যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সুমন এক সময় সিদ্ধান্ত নিল এই শহর চেড়ে বাড়ি চলে যাবে, কিন্তু সুমনের ছেলে মেয়ে তাতে রাজিনা, কারণ তারা যে ছোট বেলা থেকেই এই শহরে তাদের সকল বন্ধু সবাই তো এই শহরে। তবুও যে সুমনের যেতে হবে, পিক আপ ভ্যান ভাড়া করে সুমনের সংসারের যত আসবাবপত্র ছিল সব নিয়ে আজ বাড়ির পথে, সুমনের ছেলে মেয়ে তারা ৭১ এর যুদ্ধ দেখেনি। যুদ্ধে ও মানুষ এভাবেই বন্ধুদের রাতের আধারে হারিয়েছে।

কত বন্ধুরা যে রাতের আধারে পালিয়ে অন্য এক দেশে চলে গেছে তা হিসেব কে করবে, আজ তারাও যে ৭১ দেখেনি দেখেছে covit 19 আজ তাদের কে তাদের বন্ধু থেকে তাদের চির চেনা সেই স্কুল থেকে তাদের পিতা মাতার মত আপনজন সেই প্রিয় স্যার ম্যাডামদের থেকে আজ আলাদা করে দিয়েছে, হয়তো জীবনে আর কখনো বন্ধুদের সাথে স্যার ম্যাডামদের সাথে দেখা হবেনা, এই দিকে সুমনের বউ বসে বসে কি যেন ভাবছে হয়ত ভাবছে বাড়িওয়ালা যদি আমাদের তিন মাসের বাসা ভাড়া ফ্রি করে দিত হয়তো আমাদের এই শহর ছেড়ে যেতে হতনা।

IMG_20220106_154900.jpg

এগুলো ভাবছে আর তার পিক আপ ভ্যানটা তার স্বপ্নের শহর ছেড়ে পালাচ্ছে। আসলে আমাদের সমাজে অনেক লোকজনই আছে যারা বিকেলের নাস্তা খেতে রেষ্টুরেন্টে গিয়ে মিটবল পিচ্ছা ফোর সিজন পিচ্ছা এক একটা পিচ্ছার দাম বারশত টাকা থেকে পনেরশত টাকা পযন্ত খেয়ে আসি, আর ঐ দিকে কত মানুষ কয়টি টাকার জন্য না খেয়ে থাকে, আসুন না আমরা আমাদের বিকেলের একদিনের নাস্তার বাজেট কমিয়ে, করোনায় যারা সর্বএ হারিয়েছে তাদের পাশে দাঁড়াই ।

Sort:  
 2 years ago 

আসলে কবিরের সময় তা আমরা অনেক কষ্টে কাটিয়েছি। যা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমার মনে হয় যে আমরা যারা মধ্যম ফ্যামিলি যারা আছি তারাই সবচেয়ে বেশি বিপদে ছিলাম। পারিনা কারো কাছে হাত পাততে পারিনা কোন ছোট কাজ করতে। উপরওয়ালা আমাদেরকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন সেই সময় টাকে। আমি অনেক মানুষ দেখেছি তারা শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গিয়েছে। কারণ টাকার অভাব কেউ পূরণ করতে পারেনা। খারাপ লাগে ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য। তারা তো আর বুঝবে না যে বাবার উপরে কতটা চাপ। খুব ভালো লিখেছেন ভাই। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

আসলে ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো খুব চমৎকারভাবে আপনি মধ্যবিত্তের আর্থিক অবস্থা তুলে ধরেছেন। আসলে যারা মধ্যবিত্ত রয়েছে তারাই সবচেয়ে বেশি কষ্টের মধ্যে রয়েছে । এত অসাধারন পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

আমাদের সমাজে মধ্যবিত্তদের অবস্থিত সবথেকে বেশি খারাপ কেননা তারা পারে না ভালো ভাবে জীবন যাপন করতে আবার তারা পারে না কারো কাছে হাত পাততে। লকডাউন এর কারণে আমাদের দেশের অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের অবস্থা এরকম শোচনীয় হয়ে গিয়েছিল।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67814.21
ETH 2401.94
USDT 1.00
SBD 2.34