"আমাদের সৌরজগৎ"||10% for shy-fox||
কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সকলে মহান আল্লাহর রহমতে ভালো ও সুস্থ আছেন। আমিও মহান আল্লাহর রহমতে সুস্থ ও ভালো আছি।ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ সম্পর্কে জানা অনেক ইচ্ছা।যখনই সময় পাই মাহাকাশ নিয়ে ঘাটাঘাটি করি তথ্য সংগ্রহ করি।কত বিষ্ময়কর সব গ্রহ,নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, উপগ্রহ যা সম্পর্কে জানার কোনো শেষ নেই।আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমাদে বাসস্থান সৌরজগৎ সম্পর্কে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
সৌরজগৎ হচ্ছে সূর্যকে প্রদিক্ষণকারী অভিকর্ষজ টানে আবদ্ধ মহাজাগতিক বস্তুগুলোকে নিয়ে একটি ব্যবস্থা।আকাশগঙ্গার কেন্দথেকে ২৬০০০ আলোকবর্ষ দূরে এই গ্রহ ব্যবস্থাটি অবস্থান করছে।আমাদের সৌরজগতে ৮টি গ্রহ বৃহত্তম এর মধ্যে ক্ষুদ্রতর গ্রহ হচ্ছে বামন নামক গ্রহ।সৌরজগতের বয়স প্রায় ৪৫৬.৮ কোটি বছর।সৌরজগতের জন্ম হয় একটি বৃহত্তম আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘের মহাকর্ষীয় পতনের ফলে।এই আণবিক মেঘটি প্রায় কয়েক আলোক বর্ষ দীর্ঘ ছিলো এবং এর থেকে কয়েকটি তারার সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।বুধ,শুক্র,পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহকে বলা হয় শিলাময় গ্রহ কারণ এই গ্রহগুলো শিলা ও ধাতু দ্বারা গঠিত।
মধ্য সৌরজগতের প্রধান বস্তু হলো বিশাল আকৃতির গ্যাস দানব।স্বল্পকালীন ধূমকেতু "সেন্টাউর" এখানে অবস্থান করে।এই জায়গার বস্তুগুলো গাঠনিক উপাদান হলো বরফ(পানি),অ্যামোনিয়া বা মিথেন।সৌরজগতের বাইরের দিকে চারটি গ্রহ অবস্থান করে যা গ্যাস দানব নামে ডাকা হয়। এই গ্রহগুলোকে জোভিয়ান গ্রহ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।সূর্যকে ঘূর্ণনকৃত সকল বস্তুর মোট ভরের ৯৯ ভাগের জন্য দায়ী এই গ্রহগুলো।শনি ও বৃ্হস্পতি গ্রহের বায়ুমন্ডলে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম এর পরিমাণ বেশি।নেপচুন ও ইউরেনাসের বায়ুমন্ডলে বরফের পরিমাণ বেশি। এই বরফ মিথেন এর জমাট হওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়।পৃথিবী থেলে শুধু শনি গ্রহের বলয় দেখা যায়।
মধ্যযুগ পর্যন্ত বিশ্বাস ছিলো যে পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত।গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টারকাস সূর্যকেন্দ্রিক মহাবিশ্ব- বিন্যাসের কথা চিন্তা করলেও পরবর্তীতে নিকোলাস কোপারনিকাস প্রথম সূর্যকেন্দ্রিক গ্রহব্যবস্থার গাণিতিক প্রমাণ দেন।সপ্তদশ শতাব্দীতে গ্যালিলিও গ্যালিলেই আবিষ্কার করেন
সৌরকলঙ্ক ও বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ।পরবর্তীতে ক্রিস্টিয়ান হিউজেনস শনির উপগ্রহ টাইটেন ও শনির বলয়ের বিশেষ আকৃতি আবিষ্কার করেন।১৭০৫ সালে এডমন্ড হ্যালি বুঝতে পারেন যে বিশেষ ধূমকেতু প্রতি ৭৫ বছর অন্তর অন্তর ফিরে আসে। এভাবেই প্রমাণিত হয় যে গ্রহ উপগ্রহ ছাড়াও অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুও সূর্যকে প্রদিক্ষন করে।ঠিক এই সময় সৌরজগৎ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ "সোলার সিস্টেম" প্রচলিত হয়।
সৌরজগতের প্রথম উপাদান হলো সূর্য। সৌরজগতের মোট ভরের শতকরা ৯৯.৮৬ ভাগের জন্য সূর্যকে দায়ী করা হয় এবং সূর্য সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করে।সূর্যকে বাদ দিলে বাকি ৯০ ভাগ ভরের জন্য দায়ী হলো বৃহস্পতি ও শনি।সৌরজগতের ভিতর সকল গ্রহ ও অন্যান্য বস্তু সূর্যের ঘূর্ণনের সাথে ঘড়ির কাঁটার উল্টোদিকে ঘুরতে থাক। এটি বুঝার একমাত্র উপায় হলো সূর্যর উত্তর মেরুর উপর অবস্থিত একটি বিন্দু।সূর্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান বস্তুসমূহ কেপালের গ্রহীয় সূত্র মেনে চলে।
সূর্য হলো সৌরজগতের প্রধান মাতৃতারা। তারার শ্রেণীবিন্যাস অনুযায়ী সূর্য মাঝারি "হলুদ বামন" শেণীতে পড়ে।আমাদের ছায়াপথের অন্যান্য তারার তুলনায় সূর্য অনেক বড়।"হের্টসস্ প্রুং-রাসেল চিত্র অনুসারে তারার বিন্যাস করা হয়।সূর্যের উজ্জ্বলতা ক্রমেই বেড়ে চলছে। সূর্যের হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের অনুপাত নির্ণয়ের মাধ্যমে জানা গেছে সূর্য তার জীবনকালের মধ্য পর্যায়ে রয়েছে।৫০০ কোটি বছরের মধ্যে সূর্য লোহিত দানবে পরিণত হবে।দৃশ্যমান আলোর সাথে সূর্য প্লাজমা বিকিরণ করে।এই ক্ণার সাথে ঝড়েএ মিল থাকায় একে সৌরবায়ু বলে।এর গতিবেগ প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার ঘণ্টায়।পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তার বায়ুমন্ডলকে সৌরবায়ু থেকে রক্ষা করে।
আজ এই পর্যন্তই।আশা করি সকলের কাছে"আমাদের সৌরজগত" এর তথ্যগুলি ভালো লেগেছে।সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
সৌরজাগতিক ছোট বস্তুদের মধ্যে ধূমকেতু অন্যতম।ধূমকেতুর ব্যাস হয় প্রায় কয়েক কিলোমিটার।স্বল্প-পর্যায়ের ধূমকেতু তার কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয় ২০০ বছরের কম।আর দীর্ঘ-পর্যায়ের ধূমকেতু সময় নিয়ে থাকে হাজার বছরেরও বেশি।স্বল্প-পর্যায়ের ধূমকেতরর জন্ম হয়ে থাকে "কাইপার-বেষ্টনীতে" এবং দীর্ঘ-পর্যায়ের জন্ম হয়ে থাকে "উওর্ট মেঘে"।সেন্টাউর ৯-৩০ জ্যোতির্বিজ্ঞান একক দূরত্বে অবস্থিত বরফসমৃদ্ধ বস্তু যেগুলো প্রায় ধূমেকেতুর মতো।এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সেন্টাউর হচ্ছে "১০১৯৯ ক্যারিকলো" যার ব্যাস ২০০-২৫০০ কি.মি. প্রায়।সর্বপ্রথম যে সেন্টাউর আবিষ্কার হয়ে তার নাম হচ্ছে ২০৬০ কাইরন যাকে ধূমকেতু বলা হয়।
আমাদের এই মহাবিশ্ব নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা করে চলছে। আর আমরা প্রতিনিয়ত নতুন কিছু জানতে পারছি আমাদের মহাবিশ্ব নিয়ে। সৌরজগৎ সম্পর্কে এত তথ্য আমার জানা ছিল না। অনেক কিছু বিষয় জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ উপকারী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্য প্রকাশের জন্য।আপনাদের উৎসাহ পেলে আরো মহাকাশ সম্পর্কিত পোস্ট করবো।
সৌরজগৎ সম্পর্কে অনেক সুন্দর তথ্য। তার সাথে অসাধারণ চিত্র সংযুক্ত করেছেন।
তবে
আপনি যেখান থেকে এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছেন সেই তথ্যগুলোর [ উৎস] দিলে ভালো হতো।
যদি আপনি এই তথ্যগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করে থাকেন.।
ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।ভাইয়া আসলেই আমি অনেক তথ্যই সংগ্রহ করি মহাকাশ সম্পর্ক নিয়ে।আর যা জানিনা সেগুলো আমার ভাইয়ার কাছে থেকে জেনে নেই সে ফিজিকাল সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করে সেও অনেক ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ সম্পর্কে অনেক আগ্রহী তথ্য সংগ্রহ করে।তাই বাইরে থেকে তথ্য নেওয়ার দরকার পরেনা খুব।নিলে অবশ্যই [উৎস] দিবো ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। আসলে আপনি এই বিষয়ে অনেক পারদর্শী তাই কোথা থেকে কোন তথ্য সংগ্রহ না করেই নিজের থেকে লিখতে পেরেছেন।
স্যালুট জানাই আপনার কঠোর সৃজনশীলতাকে।
দোয়া করি আপনি যেন আগামীতে আরো সুন্দর কিছু করতে পারেন। অনেক অনেক দোয়া শুভকামনা এবং ভালোবাসা রইল আগামী দিনের প্রতি।
ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। কিছুদিন আগেও ভাবতাম এই কমিউনিটিতে হয়তো এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমিই একমাত্র আগ্রহী ব্যক্তি। আপনার পোস্ট গুলো পড়ার পর ধারণা ভেঙে গেল। এমন তথ্যবহুল পোস্ট আগে কখনো পড়িনি। একটি পোষ্টের মাধ্যমে সৌরজগতের প্রায় সবকিছু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিয়ে দিলেন। আশা করি পরবর্তীতে এ ধরনের আরও পোস্ট আপনার কাছ থেকে পাব। শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ ভাইয়া।আশা করি মহাকাশ সম্পর্কিত আরো বহু তথ্য শেয়ার করতে পারবো।