গল্প // নিরক্ষরতা ও দারিদ্রতার বেড়াজাল (দ্বিতীয় পর্ব)।
যত দিন যায় সখিনার উপর সৎমার তত অত্যাচার বেড়ে যায়। এভাবেই শত যন্ত্রণা সহ্য করে সখিনা দিন দিন বড় হচ্ছে। এখন সে অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে। সে এখন কৈশরে পা দিয়েছে, তার আর পড়ালেখা হলো না। এখন সে নিজে কিছু করার স্বপ্ন দেখছে যেহেতু পড়ালেখা হয়নি তাই চিন্তা ভাবনা করছে মায়ের মত সে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করবে, এতে করে তার বাবার সংসারে কিছুটা হলেও হেল্প হবে, কারণ সে তার বাবাকে খুব ভালোবাসে। একদিন সখিনা তার বাবাকে বলল যে আমি মায়ের মত কাজ করতে চাই। সামসু মিয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রেমে এতটাই পাগল ছিল যে মেয়েকে সে ভুলে গিয়েছে, মেয়ের তেমন খোঁজ খবর রাখে না। তার স্ত্রী যেভাবে বোঝায় সে সেভাবেই বুঝে। সামসু মিয়া মেয়ের কথা শুনে খুশি হয়ে গেল তখন সে তাকে বলল যা যা কাজ খুঁজে নিয়ে কাজ কর গা।
তখন সখিনা কাজ খোঁজার উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেল। যেহেতু আগে মায়ের সাথে বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি যেত মাঝেমধ্যে তাই বেশ কয়েকটা বাড়ি সে চিনত। সেসব বাড়ির লোকজন ও সখিনাকে চিনত, তাই সে বাড়িগুলোতে যায় কাজ খোঁজার জন্য। দুই একটা বাড়িতে গিয়ে সে কাজ পায়নি কিন্তু ভাগ্যক্রমে একটি বাড়িতে গিয়ে সে কাজ পেয়ে যায়। এভাবে সে ওই বাড়িতে প্রতিদিন কাজ করতে থাকে। এটা দেখে তার সৎ মা এবং তার বাবা অনেক খুশি কিন্তু সৎ মা এর পরও মেয়েটার উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করতো, ঠিকমতো খাবার দিত না। শত কষ্ট সহ্য করে সখিনা তার দিন অতিবাহিত করছে।
হঠাৎ একদিন কাজে যাওয়ার পথে একটি ছেলের সাথে সখিনার দেখা হয়। তখন সখিনা মোটামুটি প্রাপ্তবয়স্কা সে সবকিছুই বুঝতে শিখে গেছে। সেই ছেলেটি বেশ কিছুদিন হল সখিনাকে ফলো করছে। সখিনা গরিব ঘরের মেয়ে হলেও দেখতে শুনতে ভালই ছিল। তাই ছেলেটি তাকে প্রেমের অফার দিয়ে দেয়। সখিনা প্রথমে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। তারপর সে আস্তে আস্তে নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করে এবং সে ভাবতে থাকে তাকে এই সৎমার হাত থেকে বাঁচতে হলে এই বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে। তখন আরও বেশ কয়েকদিন পর সখিনা ছেলেটিকে আস্তে আস্তে কাছে আসার সুযোগ দেয়।
সুযোগ দিলে কি হবে সখিনার ভিতরে কিছুটা ভয়ও কাজ করে কারণ সে ছেলেটাকে চিনে না জানে না, ভালো কিনা মন্দ তাও সে জানে না। এভাবেই প্রতিদিনই তাদের রাস্তার মাঝে দেখা হতো কথা হতো একে অপরকে জানার বোঝার সুযোগ তৈরি হলো। সখিনা ও ছেলেটাকে আস্তে আস্তে ভালবাসতে শুরু করে দিল। ছেলেটাও সখিনাকে অনেক উপহার দেওয়া শুরু করলো বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়া দাওয়া, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি এভাবে তাদের ভালোবাসার রোমান্টিকতা দিন দিন বেড়ে যেতে লাগলো। ছেলেটি সখিনাকে একটা সুন্দর সংসার দেওয়ার স্বপ্ন দেখালো। অনেক সুখে রাখবে অনেক শান্তিতে রাখবে এই আশ্বাস দিল ছেলেটি। মে এত কিছু সখিনাকে স্বপ্ন দেখালো তার নামটাই তো বলা হলো না, ছেলেটির নাম হল কুদ্দুস।
কথায় আছে না গরিবের কপালে কি আর সুখ সয়। সখিনা ও কুদ্দুসের ভালোবাসার কথা কোন এক মাধ্যমেই সখিনার সৎ মা জানতে পেরে যায়। সখিনার সৎমা মানুষ হিসাবে খুবই খারাপ একটা মহিলা। সেই এই বিষয়টাকে খুবই খারাপ দৃষ্টিকোণ থেকে নিয়ে সখিনার বাবাকে উল্টোপাল্টা বুঝিয়ে দিল। সখিনার সৎ মা সখিনা বাবাকে বলে মেয়ে তো খারাপ হয়ে গেল রাস্তাঘাটে ছেলেদের সাথে আড্ডা মারে বাজে কাজ করে তোমার মেয়েকে ফিরাও, এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মান সম্মান ধুলোয় মিশে যাবে। আমরা সমাজে মুখ দেখাবো কি করে। এই কথা শুনে সখিনার বাবা সখিনাকে ধমক দিয়ে তাকে সতর্ক করে দিল। সকিনার সৎ মা এটাতেই ক্ষান্ত হয়নি সে কিভাবে সখিনাকে হেসনেস্ত করবে তার জন্য অনেক চিন্তা ভাবনা শুরু করল।
এদিকে সখিনা অনেক ভয় পেয়ে গেল সে কুদ্দুসকে সবকিছু জানালো। কুদ্দুস তাকে আশ্বস্ত করলো যে তাকে বিয়ে করার জন্য তার বাবা মার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবে। এদিকে কুদ্দুস এখনো তেমন কোন কাজ করে না, সেও তেমন একটা লেখাপড়া করেনি। গরিব ঘরের সন্তান তার বাবা একজন কৃষক। তাই সে সখিনাকে দেওয়া কথা রাখার জন্য কোন মুখ নিয়ে বাবা মার সামনে দাঁড়াবে এই চিন্তা করতে করতে সে তার বাবা-মার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সাহস করে। তার বাবা-মা তাকে বলল বিয়ে-শাদির কথা মাথায় থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও, আগে কিছু করো ইনকাম কর বিয়ে করে যে আনবে বউকে খাওয়াবে কি? এইগুলো বলে তাকে বুঝিয়ে দিল। কিন্তু কুদ্দুস এক পায়ে খাড়া সখিনাকে সে বিয়ে করবেই, সে তার ভালোবাসাকে বিসর্জন দিতে পারবে না তাই সে চিন্তা করল বাবা মার অমতে বিয়ে করার জন্য। এদিকে সৎ মাও সখিনার পিছে লেগে রয়েছে কোথায় যায় কি করে সব খোঁজখবর নিয়ে কিভাবে কি করা যায় সেই পরিকল্পনা করছে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সখিনা অজানা একটা ছেলে প্রেমে পড়ে তাও অনেক দিন পরে। সেই ছেলেটা সুখিনাকে ফলো করতো প্রতিদিন এবং একদিন প্রেমের প্রস্তাব দেয় সখিনা প্রথম প্রথম ভয় পেলেও পরে তার প্রস্তাব মেনে নেয় এবং তার সাথে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া ঘুরাঘুরি করে। এই কথাগুলো তার স্বপ্ন জানার পরে ভিন্নভাবে তার বাবাকে বোঝায় এবং সখিনা কে হেসনেস্থ করার জন্য বিভিন্নভাবে পরিকল্পনা করতে থাকে। যাই হোক আপনার আজকের এই গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে ভালো লেগেছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমার গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি খুবই মনোযোগ সহকারে পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম। খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হব ইনশাআল্লাহ।
আমাদের সমাজে এমন কিছু কিছু মহিলা আছেন তারা কিন্তু সৎ মা হিসাবে খুব খারাপ পরিচিত তারা মা হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। কপাল খারাপ হলে সবদিকে খারাপ হয়। সখিনার কপালেও তাই হবে অবশেষে কুদ্দুস ছেলেকে বিয়ে করেও কষ্টে পড়ে যাবে সখিনা। প্রথম পর্ব না পড়লেও দ্বিতীয় পর্ব পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি।
আপনি ঠিকই বলেছেন আপু কিছু কিছু সৎ মা এরকমই হয় সব দিকে খারাপ হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু খুবই মনোযোগ সহকারে আমার গল্পটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
সখিনা অজানা একটি ছেলের প্রেমে পড়েছিল এবং সেই প্রেম আস্তে আস্তে এগোচ্ছিল। সখিনার উদ্দেশ্য ছিল সৎমার হাত থেকে তাকে বাঁচতে হবে।আমাদের সমাজে কিছু মা আছে যার কারণে সন্তানেরা বিভিন্ন অজুহাত খুঁজতে বাধ্য হয়।সখিনার কথাগুলো পরিবার জানার পর তাকে অন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। তবে গল্পটি পড়ে ভালই লাগলো প্রথম পর্বটি যদিও পড়া হয়নি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
আপনি গল্পটি পড়ে খুবই পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছেন যে সখিনা সৎমার হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু খুবই মনোযোগ সহকারে আমার গল্পটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম।
আপু আপনার গল্পটির প্রথম পর্বও আমি পড়েছিলাম। আসলে সমাজে এমন অনেক সৎ মা আছেন যাদের জন্য সখিনারা একটু শান্তিও পায় না। পায় না কোন সুখের ছোয়া। যদিও খুব দেরী করে সখিনা ছেলেটির প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়। কিন্তু তার সৎ মায়ের কারনে তাকে আবার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে হয়ত। অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য।
জি আপু আপনি একদম ঠিকই বলেছেন কিছু কিছু সৎমার জন্য সখিনার মত মেয়েরা তার জীবনটাকে সুন্দরভাবে সাজাতে পারে না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে খুবই গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
প্রথম পর্বে পড়েছিলাম যে সখিনার মা হঠাৎ মৃত্যু হওয়াতে সখিনা অসহায় হয়ে পড়ে ৷ এরপর তার যত অত্যাচার তার সৎ মা করে ৷
আসলে এসব ঘটনা আমাদের সমাজে ও ঘটে
থাকে ৷ যে বাবা জন্ম দাতা অথচ শেষ মেষ সেই সত্নানের প্রতি আগ্রহ নেই ৷ এমন বাবা থাকার চেয়ে না থাকা ভালো ৷ যা হোক সখিনা এমন বয়সে পা দিল ৷ যে বয়সে মনে প্রেম জাগে ৷ শেষ মেষ কি কুদ্দুস আর সখিনার ভালোবাসা পূর্নতা পাবে ৷ পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমার গল্পটি খুবই মনোযোগ সহকারে পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। আপনি ঠিকই বলেছেন এরকম বাবা থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো, এরা মনে করে সন্তান জন্ম দিলেই তার দায়িত্ব শেষ। আজ তার বাবার জন্যই সখিনার এরকম একটি দুর্দশা।
এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিল। আজকে দ্বিতীয় পর্ব পড়ার পরও খুব ভালো লাগলো আপু। সখিনা পরের বাড়িতে কাজ করে টাকা ইনকাম করে। তবুও তার সৎ মা ভালো ভাবে তাকে খেতে দেয় না। উল্টো সখিনাকে নির্যাতন করে। আর সখিনার বাবা তো চোখ থাকতেও অন্ধ। যাইহোক কুদ্দুসের সাথে সখিনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে জেনে খুব ভালো লেগেছে। সখিনার বিয়ে হোক কুদ্দুসের সাথে এবং সখিনার সৎ মায়ের নির্যাতন থেকে সখিনা মুক্তি পাবে এমনটাই আশা করছি।