স্বরচিত কবিতা-" পাহাড়ি মায়া" || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করি সকলে ভালো আছেন। সকলকে জগদ্ধাত্রী পুজোর আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। কাল থেকেই মেতে উঠেছে আমার ঐতিহ্য পূর্ণ শহর কৃষ্ণনগর। ভীষনই ব্যস্ততার মধ্যে কাল থেকে সময় কাটছে। জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রতিটি মন্ডপের ছবি এবং প্রতিটি প্রতিমার গল্প নিয়ে কিছু দিনের মধ্যেই পোস্ট করা শুরু করবো।
এখনো কাশ্মীরের গল্প শেষ হয়নি। কত কিছু বাকি আছে। এই ফাঁকে আমি আমার একটি স্বরচিত কবিতা আপনাদের সকলকে শেয়ার করে নিচ্ছি।
কবিতাটার পিছনে ছোট্ট একটা কাহিনী রয়েছে, আমি সকাল ছটা নাগাদ হোটেল থেকে যখন রওনা দিলাম ,গুলাম কাকা গাড়ি চালাচ্ছিলেন। বাবা ড্রাইভার সিটের পাশের সিটে বসে ।আমি আর মা পেছনের দিকে বসে। ঠিক যেভাবে এসেছিলাম, সেভাবেই ফিরে যাচ্ছি বাড়ির পথে। দেখতে দেখতে সেই চেনা রাস্তা ,নদী ,ঠান্ডা ,গাছ, পরিচিত পাথর গুলো, যেখানে কতইনা খেলা করেছি একদিন ,কত ছবি তুলেছি, সমস্ত কিছু গাড়ির গতিবেগের সাথে সাথে আমার জীবনের সময় থেকেও সরে যাচ্ছিল ।
চারিদিকে প্রকৃতি নিস্তব্ধতা আমার মন এত গলিয়ে দিয়েছিল যে আমার চোখে জল এসে যায়। এরকম আগে কখনো হয়নি। বহু জায়গায় ঘুরতে গিয়েছি। ফিরে আসার সময় কখনও এতটা খারাপ লাগেনি ।কোথাও ঘুরতে গেলে তার থেকে ফিরে আসা স্মৃতি ,একটা খারাপ লাগা লেগে থাকে। কিন্তু এই যে শান্তি, এ হল নিস্তব্ধতার মায়া। আর কোন ভালোবাসার গভীরতা।
প্রকৃতির সাথে এই কদিনে আমার যে সম্পর্ক টি গড়ে উঠেছে, ফিরে ফিরে বারবার যেন মন এখনো চাইছে যে ছুটে যাই কাশ্মীরে।কাশ্মীরের প্রতিটি জায়গায় প্রতিটি কোণায় কোণায় কিছুনা কিছু জিনিস চোখ আকর্ষণ করবে। এই ভয়ানক পাহাড় গুলির মাঝে মাঝে কত শান্তি যে লুকিয়ে আছে তা ওখানে না গেলে বোঝা বড়ই মুশকিল।
গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে থাকতে যখন এইভাবে এই রাস্তা গুলো আমার জীবন থেকে সরে যাচ্ছিল, আমি দেখছিলাম অবাক হয়ে চারিদিকটা আর ভাবছিলাম এখানে আদৌ আবার পরে ফিরে আসতে পারবো কিনা। জানিনা। চোখ ছল ছল করছিল ।এই প্রথমবার বুঝতে পারছিলাম যে একটি জায়গাকে আমি হয়তো মন থেকেই খুবই ভালবেসে ফেলেছি ।তখনই হঠাৎ মনে হল অনেক কিছু, ভেতর থেকে আপন ইচ্ছায় কয়েকটি লাইন বেরিয়ে এল এ জায়গাটি নিয়ে। আর তা থেকেই আমার এই কবিতার সৃষ্টি।
পাহাড়ি মায়া
হয়তো এসেছিলাম সেদিন তোমার কোলে,
তোমার ভারী গভীরতা,
কখনও ভয় পেয়ে
চোখ ঢেকেছে আমার।
আবার কখনও তোমার সাদা হিমের
খেলায় ঝলমল করেছি আমি।
দু 'হাত বিস্তার করে ডাকবে আমাকে রোজ।
নিঃশ্বাসে তোমার পাহাড় মাখা গন্ধ
হটাৎ করেই ঘ্রাণে এসে পৌঁছবে।
লাল সবুজে চুণার অপেক্ষা করবে আমার।
আমি আসবো হয়তো আবার কোনো পড়ন্ত বিকেলে
শীতের পশমে ঢাকা তোমার ঘরে।
পাথরের মেলায় ঘুরবো কোনো একদিন।
আমার ঢেউ খেলানো জীবনে
তুমিও একটি ঢেউ হয়ে থেকে গেলে,
আমাকে মনে পড়বে তো তোমার?
তৎক্ষণাৎ গাড়িতে বসে লেখা কবিতা আমি জানিনা আপনাদের কত টা মন এ লাগবে। তবে এই কবিতা আমার নিজের অনুভূতি ।আমার লেখা প্রত্যেকটি কবিতা আমার নিজের কোন না কোন সময়ে কোনো না কোনো পরিস্থিতির অনুভূতির সৃষ্টি ।এটি আমার একটি স্মৃতির পাতায় থাকা সম্পত্তি বলতে পারেন।
কবিতাটি যতবার পড়ি মনে হয় আমি গাড়িতে বসে আছি, আর চারিদিকের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে আমার চোখ জলে ছল ছল করছে, আর তখন আমি কবিতাটা লিখছি। সেই মুহূর্তের কথা আমার তৎক্ষণাৎ মনে পড়ে যায়। ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি কাশ্মীরকে। আবার যাওয়ার খুব ইচ্ছে রয়েছে। এ যে মায়া সৃষ্টি হয়েছে আমার ভেতরে ওই জায়গাটির প্রতি, আমি বলে আপনাদের বোঝাতে পারব না।
আজ এত দিন হয়ে গেছে, এই পোষ্টের মাধ্যমে কবিতাটি শেয়ার করতে গিয়েও আমার এখনও হাত-পা কেঁপে কেঁপে উঠছে। শুধুমাত্র এই জায়গাটির কথা ভেবে। কষ্ট হচ্ছে যে জায়গাটি ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে।
আপনাদের সকলের মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকুন । নমস্কার
@isha.ish
আমার মনে হয় এই লেখা টার উপলব্ধি সবাই করতে পারবে না। অনেকে শুধু কমেন্ট করার জন্য কিছুটা পড়বে। কিন্তু যারা নিজেকে নিয়ে গভীরতায় ভাসতে পারে তারা হয়ত আরেকটা বার গভীরতায় স্নান করে নেবে। ভালবাসা রইলো ।
❤️❤️❤️
কবিতাটা জাস্ট মন ছুয়ে যাওয়ার মত। এত সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে উপহার দিলেন । কি বলে প্রশংসা করবো তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা আপনার কবিতাটা পড়ে প্রকৃতির মায়ায় পড়ে গেলাম শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ দাদা। এভাবেও পাশে থাকবেন সব সময়। ভালো থাকুন।
আপনি কি চমৎকার কবিতা লিখেছেন।কবিতার প্রত্যেকটির লাইন কাশ্মীরের অভিজ্ঞতাকে আপনি তুলে ধরেছেন। নিজের অনুভূতিকে কবিতার মাধ্যমে লেখা এক আলাদা সৃষ্টি। খুব ভালো লাগলো কবিতাটা পড়ে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আসলে দিদি জায়গাটা এত সুন্দর লেখাগুলো আপনাআপনি ভেতর থেকে চলে আসে। ভালো থাকবেন দিদি
খুবই চমৎকার কবিতা লিখেছেন দিদিমণি কবিতার প্রতিটি শব্দ চয়ন যেন হৃদয় স্পর্শ করলো শুভ কামনা আপনার জন্য♥♥
ধন্যবাদ দিদি।
আপু জীবনে একবার হলেও কাশ্মীর যাবো ঘোরার জন্য। ছবিতে আপনাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। আর গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে অনেক সুন্দর একটা কবিতা লিখে ফেলেছেন আপনি। কবিতাটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো আপু।
আপনার মনের ইচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি পূর্ণতা পাক। ভালো থাকবেন দাদা।
আপু কবিতাটি পড়ে সত্যি বুঝতে পারছি কিরকম প্রকৃতির মায়ার জালে পরে গিয়েছিলেন। প্রথমত বলব আপনার কবিতার পিছনে কাহিনীটি পড়ে খুব ইচ্ছে করছে কাশ্মীর ঘুরে আসি। যদিও কখনো যাওয়া হবে কিনা জানিনা। তবে বোঝা যাচ্ছে যে জায়গাটি কতটা সুন্দর ছিল যে পাহাড়ের মায়ায় পরে আপনার চোখে জল এসেছিল। আর কবিতা লেখার প্রশংসা তো যতই করবো ততই কম হবে আপু। সবার মধ্যে ঈশ্বর এই ধরনের গুণ দেয় না। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর অনুভূতি সম্পন্ন একটি কবিতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। অনেক ভালোবাসা এবং শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
কি মিষ্টি ভাবে কথা বলেন দিদি আপনি। ভালবাসা রইলো। আর আপনার ইচ্ছেরা পূর্ণতা পাক অতি দ্রুত।
এক নিঃশ্বাসে পুরো পোস্টটি পড়ে শেষ করলাম। কবিতা আমি খুব ভালো বুঝিনা। তার পরেও যেন প্রত্যেকটা শব্দ আলাদা করে অনুভব করতে পারলাম। চমৎকার লিখেছেন আপনি। আপনার লেখনীর প্রশংসা করতেই হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। যতটা পারি নিজের অনুভূতি দিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। ভালো থাকবেন দাদা।
আসলে ভালোবাসা গুলো এমনই হয় ভালবাসতে যে কোনো একজন বিপরীত দিকের মানুষ ই লাগবে এমনটা নয়। ভালোবাসা যে কোনো জিনিসকে যায়। আর ভালবাসতেও কোনো কারন লাগেনা। তবে আপনার এই ভালবাসায় অনেক কারণ ছিল। আসলে এতটা সুন্দর মুগ্ধ করা জায়গা তো খুব কমই আছে আমাদের পৃথিবীতে। আর আপনার ছবিগুলো দেখে দেখে আমি একেবারে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম ছবিগুলো দেখাতে। আমার নিজেরও খারাপ লাগছিল আপনি যখন চলে এলেন। আসলে মন খারাপ করবেন না। আশা করি আপনি আবার যেতে পারবেন। আর কবিতাটিও খুব দারুন হয়েছে আপু। কারণ মন থেকে লেখা কবিতা সবসময় দারুণ ই হয়।
কি গুছিয়ে কথা বলেন গো দিদি সব সময়। মনটা জুড়িয়ে যায়। এক গুচ্ছ গোলাপ আর এক বুক ভালবাসা আপনার জন্য সব সময় তোলা আছে। ❤️❤️
👌👌আপু আপনি একজন দারুণ লেখক সেটা আজ আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। আপনি এতোটা সুন্দর করে পোস্টের কথা গুলো গুছিয়ে লিখেছেন তার সাথে কবিতা, আমি আপনার প্রসংশা না করে পারছি না। অসাধারণ আপু।
আপনাদের এত ভালবাসা পাই বলেই হয়ত কিছু কিছু সময় একদম মনের ভেতর থেকে লিখে ফেলি। অনেক ভালো থাকবেন দিদি।
নতুন করে কি বলবো! এক কথায় অসাধারন হয়েছে কবিতাটি। আপনার কবিতা লেখার হাত খুবই সুন্দর।অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন আমি তো দুই থেকে তিন বার পড়েছি এত ভালো লেগেছে আমার।❤️❤️❤️আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
এত ব্যস্ত সময়ের মাঝেও যে আপনি আমার লেখা টা এত বার পড়েছেন বৌদি, সত্যি নিজের লেখা সার্থক মনে হচ্ছে। এভাবেই পাশে থাকবেন বৌদি। ❤️❤️