আমার জন্মদিন || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। প্রথমেই ঝটপট আমাকে উইশ করে ফেলুন ,কারণ আজকে তো আমার জন্মদিন ছিল।😜

প্রতিবছর রাত ১২ টায় যার মুখ থেকে শুভ জন্মদিন শুনবো বলে বসে থাকি, আর বলতে থাকি ৫৭ হলো,৫৮ হলো, এবার বলে ফেল, সেই মানুষটাকে দিয়েই আমার জন্মদিন শুরু হয়। কালকেও সেই ভবা পাগলা এই পাগলামো গুলো করেছিল, এতো কিউট মানুষকে কোথায় রাখি!!!

রাত ১২ টার পর থেকেই আমার কাছের বহু মানুষ রা আমাকে উইশ করতে শুরু করলো। আসলে একেবারেই বছরের শেষে মাসের শেষে জন্মদিন তাই অনেকেরই মনে থাকে। কিছু জন তো রাত আড়াইটে নাগাদ ,ভোর পৌনে চারটে নাগাদ আমাকে ফোন করেছে। যদিও আমি অঘোরে ঘুমিয়েছিলাম। তাই ফোন ধরতে পারিনি। কিন্তু মানুষজন যে আমাকে এত ভালবাসে এবং আমার কথা একটু হলেও মনে রাখে এটা দেখে সত্যিই ভালো লাগে।

পার তো হয়ে গেল রাত , এবার আসি সকাল থেকে কি হয়েছে তার খবরে।

বেশ অনেকদিন পর বন্ধুবান্ধব এবং কাছের কিছু মানুষ নিয়ে সেলিব্রেট করলাম জন্মদিন। সাধারনত বাড়ি র চারজন মিলে জন্মদিনের মজাটা নেওয়া হয় প্রতিবছর। এবার একটু অন্য রকম ভাবেই সময়টা কাটলো।

জন্মদিনের কেক আমি নিজেই পছন্দ করে অর্ডার দিয়ে এসেছিলাম । খেতেও দুর্দান্ত ছিল ।আর দেখতে কেমন ছিল তারা তো আপনারা বুঝতেই পারছেন।

আমার পাশের দুই বাড়ির মানুষজন। আমার চারজন বান্ধবী এবং ভাইয়ের কিছু বন্ধু ।সাথে পরিচিত আরো কজন মিলে জমিয়ে আনন্দ হল। প্রতিবছর জন্মদিন আসার একমাস আগে থেকে বলতে পারেন আমার ভেতরে উত্তেজনা কাজ করে।

আমি অন্যের জন্মদিন নিয়ে যতটা উচ্ছাস প্রকাশ করি ।ততটা নিজের জন্মদিন নিয়েও। বাড়িসুদ্ধ লোকের মাতামাতি সে তুলনায় বহুগুণ কম থাকে। কিন্তু আমি প্রায় একমাস আগে থেকেই লাফাতে শুরু করি যে আমার জন্মদিন আসছে।

যখন ছোট ছিলাম আমার দাদু থাকাকালীন দাদুর সাথে বসে বসে প্রায় একমাস আগে থেকে প্ল্যানিং করতাম কাকে কাকে নেমন্তন্ন করব। কি কি রান্না হবে ।দাদু ১৮ ই ডিসেম্বর চলে যান ।তার কিছুদিন আগেও আমি দাদুর সাথে প্লানিং করছিলাম যে সেই বারের জন্মদিনে আমরা কাকে বলব, কি কি হবে , কেক কিরকম দেখতে হবে সবকিছুই। দিনটা খুবই মনে পড়ে ।

যদিও দাদু নেই । দাদু যাওয়ার আগে অব্দি জন্মদিন বেশ ভালোভাবেই বাড়িতে পালন করা হতো ।আমার পরিবারের বহু সদস্য আছে ।যেটাকে বাংলায় বলে চৌদ্দগুষ্টি ।সেরকমই বলতে পারেন। সবাই মিলে একটা জন্মদিনের মাতামাতি হত।

দাদু চলে যাওয়ার পর থেকে এই ব্যপারগুলো আর কাজ করে না ভেতরে ।তারপর বেশ অনেকদিন পরে ঘরোয়া করে জন্মদিন করা হতো চারজন মিলে ।আজ বেশ অনেক অনেক বছর পর আবারো বেশ অনেক জন মিলে বাড়িতেই জন্মদিন হলো। খুব মজা হলো ।

তো যাই হোক বেশ অনেকদিন ধরে এই সমস্ত প্ল্যানিং আজকে সম্পূর্ণ হল এবং সবাই খুব মজা করলাম একসাথে ।আজকের রাতের মেনু ছিল - সাদা ভাত, ভেজ ডাল ,আলুর চিপস, ফ্রাইড রাইস ,চিকেন কষা ,চাটনি, পাপড়, খেজুরের গুড়ের সন্দেশ ,কেশরী ভোগ।

খাওয়াটাও জবরদস্ত ছিল ।আমি মাকে প্রথমেই বলেছিলাম মা যেন রান্নাবান্না না করে ।প্রতিবারে আমার মায়ের হাতের রান্না খেয়ে অভ্যাস ।নিজের জন্মদিনে মায়ের হাতে রান্না না হলে যেন জন্মদিনটা অসম্পূর্ণ হয়ে যায়।

কিন্তু এবারে এতজনের রান্নাবান্না মায়ের একার পক্ষে সম্ভব না। তাই একজন কে দিয়ে সমস্ত কন্টাক্ট করিয়ে খাবার-দাবার বানিয়ে নিয়েছিলাম ।আর সত্যিই ওনারা দুর্দান্ত বানিয়েছেন।

পরপর আমি কেক খাওয়ার ছবি দিয়ে যাচ্ছি তার একটাই কারণ, কেক খাওয়ানোর সময় এক একজনের মুখের এক এক রকম ভঙ্গি হয় ।আর যেটা দেখতে একটু অকোয়ার্ড হলেও বেশ মজাদার ।তাই আপনাদের সবার সাথে একটু মজা গুলোকে ভাগ করে নিচ্ছি।

বলতে পারেন শরীর একেবারে ক্লান্ত ।লাফালাফি নাচানাচি হৈ-হুল্লোড় করার পর মানুষের যা অবস্থা হয় ,অনেকটা সেরকমই আমার অবস্থা ।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।ছবিগুলো দেখে আশা করছি আপনারা সকলেই মজা পেলেন। সকলে সুস্থ থাকুন ।ভালো থাকুন ।নমস্কার।

সবার শেষে একটা মানুষকে আমি বাদ দিতে পারিনা, যার জন্যই হয়তো এবারের জন্মদিন দারুন গেল। @roy.sajib ❤️❤️

@isha.ish