রুম খোঁজার গল্প || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। সেদিনই গল্পে গল্পে বলছিলাম যে ইউনিভার্সিটি খুলে গেছে। তো যেহেতু কলকাতায় আমাকে যেতে হচ্ছে। আর আমার শহর কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতা যেতে দু ঘণ্টা লাগে, আর বাড়ি থেকে রোজ ৩, সাড়ে তিন ঘন্টার জার্নি করা সম্ভব নয়। জার্নিতেই সারাদিন কেটে যায়।তাই ওখানেই রুম খুঁজতে হবে, থাকতে হবে ।
যখন থেকে সব ওপেন এর নিউজ , তখন থেকে এই নিয়ে ভাবনা শুরু হয়েছে। মা বাবা তো সেই প্রেসার এ, যেহেতু আমি এর আগে বাইরে থাকিনি একা, ওই বাড়িতেই এতদিন রাজত্ব ছিল। তাই ওরাও একটা ভালো রুম এর খোঁজ এ।
বেশ অনেক জন কে জিজ্ঞেস বকরার পর কিছু রুম এর খোঁজ পাওয়া গেল। তারপরেও সেগুলো মন মত হচ্ছিলনা। একদিক ভালো তো, আরেক দিক খারাপ।
বাবার কাজের ব্যস্ততা প্রচুর । কিছুতেই সময় বার হচ্ছিল না ।তার পরেও কোনরকমে একদিন সময় বার করে রওনা দিলাম কলকাতায় কয়েকটা জায়গায় দেখতে। যাবার পথে আমার বাবার এক বন্ধু অর্থাৎ শ্যামল জেঠুকে সাথে করে নিয়েছিলাম। ওনার বাড়ি ব্যারাকপুরে।
তারপর সবাই মিলে পৌঁছে গেলাম , বাবার বন্ধুর বাড়ি।উনি আসলে বলেছিলেন ওনার বাড়ি থেকে হাঁটা পথে ৫ মিনিট দূরেই একটা তিনতলা বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়ির তিনতলাটা পিজি টাইপের। ওখানে প্রায় আট জন মেয়ে থাকে।
যেহেতু বাবার পরিচিত, বাবার বন্ধু ।তাই ওনার বাড়ির পাশে থাকলেই বাবারও একটা চিন্তা দূর হবে ।আর সুবিধা অসুবিধায় জেঠু রয়েছে। এই কারণেই ওখানে যাওয়া হল প্রথমে ।বাড়িতে ঢুকেই তিনতলায় চলে গেলাম ।যাওয়ার পরে দেখি জায়গাটা বেশ চারিদিক দিয়ে খোলামেলা। ঢালা একটা বারান্দা ।এল সেপের বিল্ডিং।
বাড়িওয়ালারা দোতলা মিলে থাকে। আর তিনতলায় এরকম। আমি আমার একটা সিঙ্গেল রুম দেখে নিলাম। রুমটা বেশ বড়োসড়ো লাগলো। কারণ দুজনের বেড নিয়ে আমি থাকবো। ঢালা বারান্দাটা খুব সুন্দর লাগলো ,যেহেতু হাওয়া বাতাস ঢুকছে। যদিও গ্রিল দিয়ে ঢাকা চারিদিক আর ওপর তলার ছাদ।
তারপরে সবকিছু দামদরের কথাবার্তা হল ।যেহেতু আমি দুটো বেড নিয়ে থাকছি তাই আমাকে বেড ভাড়া ৩০০০ টাকা দিতে হবে ।সাথে আলাদা করে রান্নার মাসির খরচা থাকবে। তাকে প্রতি মাসে টাকা দিতে হবে। আর বাজারটাও যে কজন মিলে থাকবো, সে কজন ভাগাভাগি করে । ইলেকট্রিসিটিও ভাগাভাগি।সব মিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো জায়গাটা ।তাই বাবারও পছন্দ হয়ে গেল। আর আমারও ।আপাতত সেদিনকে বাবার এককথায় পছন্দ হয়ে যাওয়ায় ঐ রুমটাই ঠিক করে আসা হলো।
যেহেতু পরিচিত জনের মারফতে গিয়েছি। বাড়িওয়ালা টাকা নিলেন না অ্যাডভান্স বরং বললেন এক মাস থেকে তারপরে টাকা-পয়সার কথা হবে। এই কারণে সেদিন টাকার ব্যাপারে আর কিছু হয়নি। তবে ভদ্রমহিলার ব্যবহার ভালো লাগলো।আমার মায়ের থেকে বয়সে একটু বড় হবেন ।সবকিছুই খুবই ভালো লাগলো।
ওনার মেয়ের বিয়ে একুশ তারিখ , আর সেদিন থেকেই আমার ক্লাস শুরু। তাই উনি বললেন কিছুদিন ডেলি প্যাসেঞ্জার ই করতে। আর ২৫ তারিখের পর এখানে একেবারে চলে আসতে। তাই এখনও আমি ওখানে যাইনি। ২৫ তারিখের পর ওখানে সবকিছু নিয়ে গুটিয়ে চলে যাব।আপাতত ট্রেনে যাতায়াত করতে হচ্ছে ,যেটা আমার পক্ষে খুবই দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যাইহোক সেসব কথা পরে বলবো ।যেহেতু অন্য জায়গায় আর যেতে হলো না ।আমরা সোজাওই জেঠুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ।আশেপাশের কিছু জায়গা দেখে নিলাম। ইউনিভার্সিটি টা কাছেই হবে। ওখান থেকে ভেতর দিয়ে রাস্তা ধরে হাঁটা পথে হয়তো দশ পনের মিনিট। ব্যারাকপুরে শ্যামল জেঠুর বাড়িতে এসে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করা হলো।
জেঠু আর জেঠিমার গাছের শখ। সারা বাড়ি ভর্তি গাছ। আর ছাদে গেলে তো গাছের সীমানা নেই। সব রকম গাছ লাগিয়েছেন বলা যেতে পারে ।সেই গাছের আর ফুলগুলোর ছবি তো আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করবো বলে তুলে নিয়েছিলাম ।সেগুলো পরপর দেখতে থাকুন।
জেঠু দের বাড়ির গাছ থেকে কিছু টমেটো তুলে নিয়েছি ।কাঁচা টমেটো খুবই ভালো লাগে আমার।আর ওখানে ছাদে বেশ ভালো লাগছিলো ।অনেকক্ষণ ওখানে ছিলাম ।জেঠি আবার শখ করে কাঠের উনুন অর্থাৎ কাঠে রান্না করবে বলে উনুন বানিয়ে নিয়েছেন। ওটা দেখে বেশ ভালো লাগলো।
তারপর দেখলাম একটা ঘুঘু পাখিকে ।সে নাকি প্রত্যেকদিন আসে আর খেলে বেড়ায় ।জেঠু কিছু খাবার ছেটাতেই সাথে সাথে খেতে শুরু করে দিলো এবং আমরা পাশেই ছিলাম তবুও উড়ে গেল না ।ভয় পেলোনা। বলতে গেলে এক প্রকার এদের সাথে চেনা শোনা হয়ে গেছে।
সেই বেরিয়েছিলাম সকাল সাতটা নাগাদ ।রওনা দিতে দিতে আমাদের বেজে গেল সাড়ে চারটে। আর বাড়ি ফিরলাম সাড়ে আটটার পর।
রুমে এখনও উঠিনি, যেদিন যাব কিছুদিন পর থেকে বুঝতে পারব সবকিছুর হাল কেমন ।তবে আপনাদের আশীর্বাদ এবং ভগবানের আশীর্বাদ থাকলে অবশ্যই সবকিছু ভালো থাকবে ।এই আশা করছি ।নিজের জার্নি গুলোকে এভাবে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে খুবই ভালো লাগে।
আমার জীবনের একটা নতুন পর্যায়ে চলে এসেছি। নতুন একটা জার্নি শুরু হচ্ছে। আপনাদের শুভেচ্ছা গুলোকে সাথে নিয়ে এগিয়ে চলেছি প্রতিনিয়ত ।আপনারা ভাল থাকুন ।সুস্থ থাকুন।
আপু আপনার রুম খোঁজার গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।আপনার ইউিভার্সিটির জার্নির জন্য শুভ কামনা রইল।
আপু আপনার রুম খোজার গল্প পরলাম। ভালো লাগলো বেশি ভালো লাগলো যে বাসায় উঠবেন তার বাড়ির ছাদের গাছগুলো।আসলেই সুন্দর। তাছাড়া আপনার তোলা সবগুলো ফুলের ছবিই সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে।
যে রুমে উঠবো, সেই ছাদের ফুল না গো দিদি,এই ফুল গুলো ওই জেঠুর বাড়ির। লিখেছি দেখো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনার রুম খোঁজার গল্প শুনে খুবই ভালো লাগলো। আপনি আপনার জেঠুর মাধ্যমে খুব সহজেই পছন্দের রুম পেয়েছেন এটা জেনে ভালো লেগেছে। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আপনি আপনার এই মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আশা করছি আপনি নতুন জায়গায় ভালো থাকবেন। নতুন জায়গায় নতুন সময় যেন আপনার ভালো কাটে এই কামনা করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
রুম খোঁজার গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো দিদি আমার কাছে তো এধরণের ঘুরে ঘুরে রুম খুঁজতে ভালোই লাগে পুরো গল্পটি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য দিদি
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যা নতুন জার্নি একা থাকা , সব কিছু একা একা করা। নিজেকে ঠিক রাখার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। এভাবেই মানুষের জীবনে পরিবর্তন ঘটে। শুভ হোক সামনে দিন গুলো। পড়াশুনা করে নিজের পায়ে দাড়াতে হবে। ফটোগ্রাফি গুলো দারুন সুন্দর ছিল। ভাল থাকবেন বোন। ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ দাদা। আশীর্বাদ রাখবেন।
আপনার গল্প টা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনার সুন্দর মূহুর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
ধন্যবাদ।