জগদ্ধাত্রী পূজার বিশেষ আরতীর কিছু মুহূর্ত|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা, বেশ অনেকগুলো গল্প কাশ্মীর এর আর জগদ্ধাত্রী পূজা নিয়ে, সেগুলো শেষ করা হয়নি। আমার কথা মতো মাঝে মাঝে সেগুলো নিয়ে আমি পোস্ট করছি কারণ এক ঘেয়েমি পোস্ট দেখতে আপনাদেরও ভালো লাগবেনা।
চলুন তাহলে আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেলি কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পূজার একটি প্রতিচ্ছবি অর্থাৎ আমাদের বাড়ীর পাশের বারোয়ারীর বিশেষ আরতী র কিছু মুহূর্ত।
প্রথম কথা হলো সকালের ষষ্ঠী ,সপ্তমী ,অষ্টমী নবমী শেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আবার কখনো সেটা সাতটা ও হতে পারে, এই সময় ওখানে পুজো শুরু হয়। এটাকে সন্ধিপুজো বলা ভুল হবে ।যাইহোক এই সন্ধ্যার নাগাদ যে পুজোটি হয়, তাতে একটি বিশেষ ভাবে আরতী হয় ।
এই জন্যই আমাদের শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ সেখানে ভিড় করে ।আর যেটা মূল ব্যাপার সেটা হল সকাল থেকে একটানা উপস এর পর এই পুজো শেষ হতে হতে প্রায় দশটা অথবা সাড়ে নটা বেজে যায়, তারপর গিয়ে আমি মায়ের নবমী পূজার ভোগ যেটা,সেইটা মুখে দিয়েই জল গ্রহণ করি ।আর এই কারণে এই আরতীর সময়টুকু আমার জীবনে অত্যন্ত মূল্যবান।
আরতীর সময় আমাদের বারোয়ারির ব্রাহ্মণের ধুনুচি নাচের সাথে যে আনন্দ আমরা পেয়ে থাকি।তা হয়তো অন্য কোথাও পাওয়া বড়ই মুশকিল ।বাদ্যযন্ত্রের তালে, ঢাকের তালে সারা শরীর শিহরিত হতে থাকে। মাতাল ছন্দে সেই শব্দ উপভোগ করতে করতে ,সেই অপূর্ব দৃশ্য, মায়ের আরাধনা করতে দেখি আমরা সকলে। ক্ষণিকের জন্য মনে হয় যেন সত্যিই কিছু শুভ শক্তি আবির্ভূত হয়েছেন ।
সামনে এই দৃশ্য না দেখলে বলে বোঝানোর নয়। দূর দূর থেকে যারা আসেন তারাই বলে এই আরতির একটানা দেখতে থাকলে কোন ঘোরের মধ্যে যেন পৌছে যায় ।আমি লিখতে গিয়েও আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে ।বলে বোঝাতে পারবোনা ।
এই শক্তির পূজাই হয়তো আমরা করি ।ভগবান আল্লাহ ঈশ্বর যিনি আছেন নিরাকার, তার রূপ তার শক্তি তার শুভশক্তির আশীর্বাদ নিয়ে আমাদের প্রত্যেকটি মুহূর্তে প্রত্যেকটি সেকেন্ডে চলে ।আমি নিজে ভীষণ বিশ্বাসী এই শক্তির ।
এবারে পুজোর সময় ছিল সারে সাতটার সময়। সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হলো। দুপুরবেলায় আবার ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে ছিলাম যেহেতু বাড়িতে কাকাতো দাদা বোন এসছে ।আসার সাথে সাথেই বাড়িতে পুজো দেওয়ার পর আবার ড্রেস চেঞ্জ করে ছুটলাম বারোয়ারী।
আমার বোন বলছে তুই আর কতবার ড্রেস চেঞ্জ করবি।আসলে এই একটিমাত্র পুজোতে এত বেশি আনন্দ লেগে থাকে বলতে পারেন ।আমি শুধু নয় পুরো কৃষ্ণনগর বাসী সেদিনকে যে ভাবে উপভোগ করে, তা সত্যিই হা করে তাকিয়ে দেখার মত।
যাই হোক আবার সুন্দর করে সাজুগুজু করে উপস্থিত হলাম বারোয়ারী তে। আপনারা হয়তো আমার চোখ মুখের অবস্থা দেখে বুঝতে পারছেন একটু শরীরটা খারাপ হয়ে রয়েছে। তবুও মেকাপের যতটা আবডাল করতে পেরেছি ,ততটাই করেছি ।😜
সন্ধিপুজো শেষ হতে হতে সময় লেগে গেল প্রায় সাড়ে নটার কাছাকাছি ।তারপর বাড়ি ফিরে আসলাম নবমী পূজার ভোগ নিয়ে ,যে মহাভোগ গুলো আমি ছবি দিয়েছিলাম কিছুদিন আগে ওই মহাভোগ এর একটি থালা আমাদের বাড়িতে আসে।
মায়ের ভোগ মায়ের প্রসাদ মায়ের অন্ন মুখে তুলে তবেই জল গ্রহণ করলাম ।আজ চার বছর হবে হয়তো ,আমার ঠিক খেয়াল নেই আমি এই উপস করে আসছি ।বাড়িতে ছোটখাটো পুজো করলে উপস থাকি ,কিন্তু এরকম প্রায় সারাদিন বলতে পারেন ২৪ ঘন্টা, আগের দিনের রাতের সাড়ে নটা দশটা নাগাদ খেয়ে নেওয়া ,তারপর থেকে আর অন্য কোন কিছুর স্পর্শ না করা ।তাহলে ২৪ ঘন্টা দাঁড়াচ্ছে । আমাকে কেউ এই উপস নিয়ে জোর করেনি, না কেও বলেছে। আমি আমার মন থেকেই উপস টা রাখি ।
যাই হোক মা মহামায়া সকলের মঙ্গল করুক। আশা করি যে ছবিগুলি এবং ভিডিওটি আমি দিয়েছি তাতে আপনারা বুঝতে পারছেন ,আমাদের এই সন্ধ্যাবেলার পুজোর অঙ্গিভঙ্গি। আশা করছি আবার পোস্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে ।আপনাদের সকলের কমেন্টের অপেক্ষায় থাকলাম। নমস্কার।
আমি জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখলেও কখনো সেভাবে আমার পুজো দেখা হয়ে ওঠেনি। খুব ভালো লাগলো আপনাদের এই বারোয়ারি পুজো দেখতে। এইভাবে এতক্ষণ উপোস আমি কখনো করিনি,অনেক ভক্তি ও নিষ্ঠা আপনার মধ্যে আছে বলতেই হবে।কত নিষ্ঠা সহকারে আপনি পূজোর কাজ করেছেন। আরতি আর ধুনুচি নাচ দেখেও খুবই ভালো লাগলো।এবং বোঝাই যাচ্ছে আপনি খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা মুহূর্ত আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
হ্যাঁ, পুরো মন প্রাণ দিয়ে পুজো টা দিই। ভালো লাগলো আপনার কমেন্ট পড়ে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথম ছবিটিতে আমার মনে হচ্ছিল দুজন দেবী দাঁড়িয়ে রয়েছে এক কাতারে 💜
দুজন দেবী একদমই স্বর্গীয় রুপে প্রতিয়মান হয়েছে এখানে। সুদ্ধতা আর শুভ্রতায় ভরপুর সবকিছু। স্বর্গীয় শান্তি বর্ষিত হোক এই কামনায় বিদায় নিলাম ❤️
দাদা কমেন্টটি পড়ে মন ভরে গেল সত্যি। এত মিষ্টি কমেন্ট বোধ হয় এর আগে কেউ কখনও করেনি 🥰🥰। অনেক ভালো থাকবেন দাদা ❤️
সারা দিন উপোস থেকে আরতির পর জল গ্রহণ করা। বিষয়টা বেশ দারুন লেগেছে আমার কাছে। এবং জগদ্ধাত্রী পুজোর ছবিগুলো খুব সুন্দর ছিল। বেশ ভালো একটা পোস্ট ছিল।ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।।
ধন্যবাদ দাদা।
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের পুজো সম্পর্কে আমার তেমন একটা ধারণা নেই।তবে আপনি অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন আপু।ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
পুজোতে বেশ মজা করেছেন বুঝা যাচ্ছে। আর আপনি ফটোগ্রাফীও খুব সুন্দর করতে পারেন। আর আরেকটি কথা যেটা আমি আপনার লেখা পড়ে ফিল করলাম। তা হচ্ছে আপনি প্রতিটি ধর্মকেই খুব সুন্দরভাবে সম্মান করেন। যা আমার কাছে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। একেবারে মন ছুঁয়ে গেল ব্যাপারটি। আর আপনাকেও দেখতে খুব দারুণ লাগছে।
হ্যাঁ দিদি, আমি ধর্ম ভেদ মানিনা। আমি পুরোপুরি শক্তির আরাধনা করি। শক্তি ছাড়া এই বিশ্ব অচল পুরো।
আপু আপনার পুজোর পোস্টটি পড়তে দারুন লাগলো। সারাদিন উপশকরে দিনের শেষে জল পান করা বিষয়টা আমার কাছে দারুন লেগেছে। আপু আমি আপনার বেশ কয়েকটি পোস্ট এর আগে পড়েছি। আপনি বেশ সব ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। আর ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। ঠাকুরমশাই ফটোগ্রাফি দেখতে দারুণ লাগছে। আপু আপনার ফটোগ্রাফি টা চমৎকার হয়েছে।
অনেক ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে আপনার মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য। ভালো থাকবেন।