বেলুড় মঠ ঘোরাঘুরি|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমষ্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজ বেশ অনেক দিন পর হাজির হয়েছি নতুন আরেকটা গল্প নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি বেলুর মঠ ঘোরাঘুরির অভিজ্ঞতা।

Notes_220401_135021_cdd.jpg

কলকাতায় আসার পর যখনই সুযোগ পাচ্ছি, এদিক ওদিক ঘুরে নিচ্ছি। বাঁধা গরু যেমন ছাড়া পেলে, ছোটে।বলতে পারেন আমার হাল অমন হয়েছে। হাহাহা। যাইহোক আমার যাওয়ার জায়গা হুট করে বেলুড় মঠ কেন হল। তার পেছনেও কারণ আছে ।

Notes_220401_134806_8e9.jpg

আমি যেখানে থাকি , সেখান থেকে হাঁটা পথে ৪০ মিনিটের মধ্যেই কুঠি ঘাট রয়েছে। সেখান থেকে লঞ্চ এ করে বেলুড় যাওয়া যায়। আমি প্রথমে সিঁথির মোড় গেলাম হাঁটতে হাঁটতে। ১০ মিনিট লাগে সিঁথির মোড় যেতে।তারপর আমার বন্ধুর সাথে আমি অটো ধরলাম সিঁথির মোড় থেকে।

Notes_220401_134813_aa8.jpg

তারপর অটো করে ১০টাকা নিল কুঠি ঘাট নামালো। ঘাটের সামনে যেতেই দুর্দান্ত হাওয়া। অনেক লোকের ভিড় ছিল। বেলুড় খোলা থাকে বিকেল ৪ থেকে ৫.৩০ অব্দি। সেই মতই আমরা বেড়িয়েছিলাম। যাইহোক লঞ্চের টিকিট কাটলাম। ছয় টাকা করে টিকিট। তাতেই এত সুন্দর জায়গা। ভাবা যায়!

Notes_220401_134824_0ab.jpg

একটা ব্রিজের মত ছিল সামনে টা। গেট টা খুললো।লাইন করে সব আস্তে আসতে লঞ্চে ওঠার জন্য পাস হলো। তারপর লঞ্চে উঠে পড়লাম। জায়গা নিয়ে বসেও পড়লাম। একটু পর যখন লঞ্চ চলা শুরু হলো। কি আনন্দ। এত সুন্দর হাওয়া দিচ্ছিল। মনে খুব শান্তি পাচ্ছিলাম।

Notes_220401_134832_8dc.jpg

বন্ধু কে দিয়ে অনেক গুলো ছবি তুলিয়ে নিয়েছি সেদিন। বিকেলের ক্লান্ত সূর্যের আলো টা এত স্নিগ্ধ ছিল। তারপর নদীর ওপর আলো টা অসাধারন ভাবে চকচক করছিল। আর সাথে আমার খোলা চুলগুলো হাওয়ায় মেতে উঠছিল। সব মিলিয়ে রবি ঠাকুরের গান জাগছিল।- "তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে"।

Notes_220401_134840_825.jpg

বেশ অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম নদীর ওপারে। ওখানে গিয়ে ঠিক একই ভাবে একটা ব্রিজ বরাবর নেমে আমরা সোজা রাস্তায় হাঁটা দিলাম। হাঁটতে হাঁটতে একজায়গায় দাঁড়িয়ে কোল্ড ড্রিংকস খেলাম। তারপর আবার একটু হেঁটে মঠের ভেতর প্রবেশ করলাম।

Notes_220401_134907_0c4.jpg

চারিদিকে কত লোকজন। সবাই মঠ দেখতে এসেছে। নদীতে লঞ্চে যখন ছিলাম। বেলুড় এর মন্দির গুলো দূ র থেকে দেখা যাচ্ছিল।খুব সুন্দর লাগছিল দেখতে। এবারে মঠের এলাকায় ঢুকে সৌন্দর্য্য আরও যেন বেশি করে চোখ কেড়ে নিচ্ছিল। এত সুন্দর একটা মঠ। খুবই সুন্দর দেখতে ।

Notes_220401_134927_89e.jpg

মায়াপুর ইসকনে ঢোকার আগে যেমন জুতো খুলে রাখতে হয়। এখানেও সেরকম সিস্টেম ছিল। আমরা দুই বন্ধু জুতো রেখে টিকিট নিয়ে নিলাম। তারপর মঠের ভেতর ঢুকলাম। মঠের ভেতর ছবি তোলা বারণ ছিল তাই ভেতরের কোনো ছবি আমি শেয়ার করতে পারলাম না।

Notes_220401_134934_d9a.jpg

ভেতরের শিল্প কলা , স্থাপত্যের ঐতিহ্য বহন করছিল। হল রুমের মত সোজা জায়গা। চারিদিকে এদিক ওদিক ঠাকুরের শিষ্য । এভাবেই দেখা মিলল রামকৃষ্ণ পরমহংস অর্থাৎ ঠাকুরের মূর্তির। জ্বলজ্বল করছিল পুরো মূর্তিটা। পুরো স্থাপত্যের যেন কেন্দ্র কেঁড়েছে এই মায়াময় মূর্তিটি।

Notes_220401_134957_6a9.jpg

দেখে খুব শান্তি হলো। তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলো। কারণ ওখানে আমাদের কাউকেই দাঁড়িয়ে থাকতে দিচ্ছিল না কেউ। বাইরে বেরিয়ে বড় একটা মাঠ। গাছে গাছে ঘেরা। আর পাশেই নদীর ঠান্ডা হাওয়া। মাঠে কত কত লোকজন। আমরাও বসলাম কিছুক্ষন। এত সুন্দর জায়গায় গেলে মন এমনি হালকা হয়ে আসে।

Notes_220401_134959_f44.jpg

কিছুক্ষণ গল্প করলাম। তারপর ঠিক যখন ৫.৩০ বাজে। ওখানকার স্টাফরা সকলকে মাঠ থেকে ওঠানো শুরু করলো। আমরাও উঠলাম। হেঁটে এগোলাম।ভিড় কি ভিড়। তারপর জুতো গুলো নিলাম। আর একই ভাবে মঠের বাইরে বেরিয়ে আসলাম। তারপর আবার পার হব তাই লঞ্চের টিকিট কাটলাম।

Notes_220401_135010_f83.jpg

একই টাকা লাগলো। তখন সন্ধ্যার আলো আঁধারি চকমকি আলো গুলো জলের মধ্যে কলকল করছিল। ঠিক একই ভাবে হাওয়ায় ভেসে ভেসে আমরা লঞ্চ এ করে পার হলাম।আর তারপর একই ভাবে বাড়িও ফিরলাম। অত সুন্দর জায়গা ছেড়ে আসতে ইচ্ছা করছিল না একদম। ঠাকুর চাইলে আবার যাব। কাছেই যেহেতু তাই যাওয়া তো হবেই আবার।

Notes_220401_135012_2a0.jpg

Notes_220401_135016_e0a.jpg

Notes_220401_135026_393.jpg

Notes_220401_135028_d20.jpg

Notes_220401_135031_7ee.jpg

Notes_220401_135034_a0b.jpg

Notes_220401_135101_bee.jpg

Notes_220401_135135_dc9.jpg

Notes_220401_135144_24b.jpg

Notes_220401_135146_13b.jpg

এই ছিল আমার আজকের গল্প। আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে।সকলে সুস্থ থাকুন। নমস্কার।
@isha.ish

Sort:  
 2 years ago 

প্রথম পিকচারটি আমাকে মুগ্ধ করলো আপনি দারুণভাবে প্রথম পিকচারটি ফুটিয়ে তুলেছেন
তথাপি ভিতরে ঢুকতেই অনেক দারুন দারুন ফটোগ্রাফি দেখতে পেলাম ।বিশেষ করে সূর্যের সাথে আপনার ছবিটি দারুণ ভাবে ফুটে উঠেছে।বেলুড় মঠ ঘোরাঘুরি দারুন ছিল অনুভূতিগুলো। সব সময় সূর্য আপনাদের সাথেই ছিল। বেশ ভালো লাগলো । আপনার জন্য শুভকামনা রইল

 2 years ago 

অনেক সুন্দর সত্যিই । আমারও অনেক পছন্দ হয়েছে প্রথম ছবিটা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।ভালো থাকুন।

 2 years ago 

সুর্যের পাশে আপনার ছবিতে জাস্ট অসাধারণ ছিল আপু। ফটোগ্রাফার বেশ পাকা, মনে হয় আপনার বন্ধুই। আপনার বন্ধুর সাথে একটা ছবি শেয়ার করলে ভালো হতো, তাকে একটু দেখে নিতাম😝। আর মঠের ভিতরে দেখার আগ্রহ হচ্ছে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে আপু সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

শুভকামনা রইল আপনার জন্য 🙂

 2 years ago 

বন্ধুর অনেক লজ্জা, তবে আশা করি শিঘ্রই সাক্ষাৎ হবে তার এই কমিউনিটির সাথে। হ্যাঁ , ভালো ছবি তোলে সে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

খুব সুন্দর একটি সময় পাড় করেছেন, সাথে অসাধারণ কিছু ছবি তুলেছেন ৷ আপনার তোলা প্রতিটি ছবিই দুরন্ত ছিলো ৷ধন্যবাদ আপনাকে দিদি সুন্দর একটি গল্প , ও সুন্দর কিছু ছবি , সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ৷ অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য ৷

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন।

 2 years ago 

বাংলাদেশ থেকেও অনেক কিছু জানতে পারি আপনার ব্লগিয় এর কারনে। আপনি অনেক ভালো কন্টেন্ট তৈরী করেন প্রতিটা কন্টেন্টে নতুন কিছু নিয়ে আসেন।ধন্যবাদ আমদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইল আপনার জন্য

 2 years ago 

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

বেলুড়মঠে ঘোরাঘুরি করে আপনি খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন আপু ,সেটা কিন্তু আপনার এই পোস্ট পড়ে এবং এই সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি দেখে বোঝা যাচ্ছে। আসলেই আপনি অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন যেগুলো অসাধারণ ছিল ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে উৎসাহিত করার জন্য।

 2 years ago 

খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন আপু, বেলুড়মটের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে, ঘুরাঘুরি আমারও অনেক প্রিয়, আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার মনের ভাব প্রকাশ করেছেন, শুভকামনা রইলো আপনার জন্য আপু।

 2 years ago 

আমার ভালো লাগে আপনাদের সাথে সবটা শেয়ার করতে।ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার ডেইলি লাইফ ব্লগগুলো মাঝে মাঝেই দেখা হয় আমার। খুব সুন্দর ভাবে ব্লগ গুলো গুছিয়ে লিখেন। ভালো লাগে পড়তে । আপনার মাধ্যমে কলকাতার অনেক জায়গা আমরা বাংলাদেশে বসে দেখতে পারি । অসাধারণ কিছু ছবি তুলে আমাদের উপহার দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago (edited)

আমি বেলুড় মঠে মাঝে মাঝেই যাই, খুব ভালো লাগে! গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে বেশ হাওয়া খাওয়া যায় সাথে শান্তি।

শুধু অবাক লাগছে মূল মঠের ছবি তোলা পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকলেও সবাই ছবি তুলছে। দুর্ভাগ্যজনক।

 2 years ago 

কি জানি। ভেতরে তুলতে দিচ্ছিল না। কিন্তু বাইরে তো তুলছে সকলে।

ঐতিহাসিক পূরা কীর্তি ও ধর্মীয় স্থান ভ্রমনেচ্ছা মনে জাগলেই মনটা আপনাআপনি ক্লেশ মুক্ত হয়ে উঠে। আর সেখানে উপস্থিত হতেই পবিত্রতায় ভরে উঠে। ভাল ভাবনার প্রতিফলন ছিল।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।ভালো থাকুন।

 2 years ago 

আপনি সত্যি বলেছেন বাঁধা গরু ছাড়া পেলে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করে। আপনিও কলকাতায় এসে সুন্দর সুন্দর স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখে নিচ্ছেন। যা আপনার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা কে আরও বাড়িয়ে দিবে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুভ কামনা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74