ফেলে আসা জগতে ঘুরে আসা - ১ || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আমাদের জীবনে আমরা যখন গল্প লিখি, আমরা নিজেরাই বুঝতে পারিনা আমরা গল্প লিখছি। লেখা কখন শেষ হয় সেটাও টের পাইনা আমরা। বহু সময় পর যখন গল্প চোখের সামনে আসে, পাতা উল্টে গল্প পড়ি। কি হয়? আনন্দ হয় , আর সাথে কি হয়? চোখের কোণায় জল আসে। আসে তো?

20220530_120412.jpg

জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত কতটা মূল্যবান , আপনারা জানেন? বর্তমানে আপনি যা করছেন , যে বা যারা আপনার সাথে আছে তারা কত ইম্পর্টেন্ট , আপনারা জানেন? সময় টা চলে গেলে এই মুহুর্তগুলো কে আর পাবেন? এই মানুষ গুলো কি সারাজীবন থাকবে? নাহ থাকবে না। কেও থাকে না।

তাহলে কেন এত রেষারেষি ?!?? একটু কি সুস্থ থাকা যায় না? একটু কি সুস্থ রাখা যায় না? একটু কি নিজেকে ভালো রাখা যায়না? অন্যকে ভালো রাখা যায় না? ভাবুন নাহ একবার। কি করে চলেছেন প্রতিদিন!

কলেজ ছেড়ে এসছি বেশ বহু দিন হলো। সেকেন্ড ইয়ার এর মাঝপথে হয়ে গেল করোনা। সব ছারখার হয়ে গেল। যে মানুষ গুলো ছাড়া ভাবতাম একটা দিনও চলবে না। তাদের ছাড়াই দিন গুলো বানিয়ে ফেললাম। আমি আমার গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি কৃষ্ণনগর গভর্মেন্ট কলেজ থেকে।

কলেজের প্রথম দিনের কথা যতটা নাহ মনে আছে, মনে আছে আনন্দের মূহুর্ত গুলো বেশি করে। আমি খুব পাগল টাইপের মেয়ে। ক্লাসের সবার সাথে বন্ধুত্ব থাকলেও আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব হয় অন্য দের সাথে। মানে জুনিয়র , সিনিয়র এদের সাথে।আমার স্কুলেও এমন হতো। কলেজের প্রথম দিন থেকে আমি খেয়াল করেছি , যে যার মতো গ্রুপ বানিয়ে ফেললো । আড্ডা মজা। কিন্তু ওদের কারোর চিন্তা ভাবনা , গল্প করার টপিকের সাথে আমার মিল খেত না। আমি প্রথম দিন থেকে একা হয়ে গিয়েছিলাম যেন।

20220530_131613.jpg

ক্লাসের সবাই আমাকে খুব ভালোবাসত। অন্য চোখে দেখত। কিন্তু আমি কারোর সাথেই ওই গলায় গলায় বন্ধুত্ব করতে পারিনি। তারপর রবীন্দ্র জয়ন্তী র অনুষ্ঠান আসলো। স্কুল লাইফ থেকে অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নিই সব জায়গায়। সেবারেও আমিই নিয়েছিলাম। গানের মানুষ খুঁজতে খুঁজতে আলাপ হলো দুজন বোনের সাথে - সোমদত্তা আর মানালি আর আলাপ হলো একটা দাদার সাথে। নাম - নাদিম দা। ব্যাস ।এদের সাথে আমি মিশে গেলাম হঠাৎই।

কিভাবে এত গলায় গলায় ভাব হলো জানিনা। কিন্তু আমরা খুব একই রকম ছিলাম। সোম ভালো ছবি আঁকতে পারে,হাতের লেখা খুব সুন্দর, মানালি নাচ গান দুটোই পারে। নাদিম দা খুব ভালো দায়িত্ব নিতে পারে আর ভীষণ কালচারাল এরা সবাই। আমার সাথে এদের খুব ভালো একটা বন্ডিং তৈরি হয়ে গেল।আমার একাকীত্বের বাঁধ ভেঙে দিল এরা তিন জন।

ক্লাস শেষ করেই ডিপার্টমেন্টের বারান্দায় আমরা আড্ডা দিতাম। কখনও আবার ফাঁকা ক্লাসরুমে লাফিয়ে বেড়াতাম বেঞ্চের ওপর দিয়ে। চার জনের বন্ধুত্ব হাঁ করে সবাই দেখত। এমনকি প্রফেসররাও।

তারপর লক ডাউন , সব বন্ধ। শুধু হতো ফোন যোগাযোগ। কলেজের কথা মাথায় আসলে প্রথমেই যদি প্রিয় প্রফেসরের কথা মনে পড়ে, তার সাথে সাথে মাথায় চলে আসে আমার এই তিন বন্ধুর কথা - দুটো ছোট বোন আর একটা বড় দাদা। আমরা কিছু মাস এত মজা করেছি যে বলে বুঝাবার নয়। সেই স্মৃতিগুলো এতটাই মূল্যবান যে ভাবলে গোটা রাত কেটে যাবে হয়তো । সারাটা জীবন ওদের সাথে না দেখা হলেও ওদের স্মৃতি নিয়ে থাকা যথেষ্ট।

লোকেশন

https://w3w.co/ticked.clipboard.remove

বাকিটা পরের পোস্টে বলবো।
@isha.ish

Sort:  
 2 years ago 

দিদি আপনার মত আমারও সমবয়সী বন্ধু খুবই। কম সিনিয়র জুনিয়র আমাদের একটা গ্রুপ আছে। আমরা সবাই মিলে আড্ডা দেই, হইহুল্লোড় করে অনেক মজা করি।
আসলে মনের মিল টাই আসল বয়সটা কোন ব্যাপার না।
পরবর্তী পোষ্টে হয়তো আপনার এই বন্ধুদের সাথে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা জানতে পারবো। সে অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা রইল দিদি।

 2 years ago 

একেবারেই, মনের মিলটাই তো সবাই খোঁজে। ভালো লাগলো মন্তব্য পড়ে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ফেলে আসা জগতে ঘুরে আসার স্মৃতিচারণ অনেক সুন্দর ছিল। আসলেই অতীতের কাটানো জায়গায় গেলে খুবই ভালো লাগে ।যেখানে গেলে অতীতের সব কথা মনে পড়ে যায়। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলেই ঠিক বলেছেন। ভালো সময় কাটিয়েছি ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33