রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন পার্ট -২ || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আমিও আপাতত ভালো রয়েছি। মনের অবস্থা এক এক সময় এক এক থাকে। তাই সেই অবস্থার কথা নির্দিষ্ট করে বলতে পারলাম না। বাকি শরীর আমার ঠিক আছে। গতকালের আগের দিনের পোস্টে এবছরের রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন নিয়ে আলোচনা করা শুরু করেছিলাম। যেখানে শেষ করেছিলাম সেখান থেকে শুরু করছি ।
জোড়াসাঁকোতে পৌঁছানোর পর বৃষ্টিভেজা জোড়াসাঁকো কে দেখতে একটু অন্যরকম লাগছিল। তবে ওয়েদারটার উপর আমার কোন রাগ ছিল না। সবার মাথায় ছাতা থাকলেও রবি ঠাকুরের আশীর্বাদ যেন আকাশ থেকে ঝরে ঝরে পড়ছিল ।বর্ষার দিনে রবীন্দ্রসঙ্গীত গুলো যেন আরো মন ছুয়ে যায় ।আর সেটাই হচ্ছিল ।
গেটের অনেক আগে থেকেই রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা যাচ্ছিল কারণ ভেতরে অনুষ্ঠান হচ্ছে ।ধীরে ধীরে আমি আর পল্লব জোড়াসাঁকোতে ঢুকে পড়লাম। ওদিকে বাবা আর পিসেমশাই কৃষ্ণনগরের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। ঢুকেই দেখি একটা জায়গায় বেশ প্যান্ডেল করে অনুষ্ঠান হচ্ছে। প্রচুর লোক চারিদিকে ।এত লোক যে বলে বোঝাবার নয়।
ঢুকতেই কিছুটা এগিয়ে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের যে মূর্তিটা রয়েছে ,সেটা তো পুরোপুরি মালা দিয়ে ভর্তি হয়ে গেছে। সবাই এত পরিমাণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মালা পড়াচ্ছে যে রবীন্দ্রনাথের মুখ পর্যন্ত ঢেকে গিয়েছে, দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। আর সবাই ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে। পরিবেশটা দেখে কেমন অনুভূতি হচ্ছিল তা আমি বলে বোঝাতে পারবো না ।চারিদিকে খালি শাড়ি আর পাঞ্জাবিতে ভর্তি ।সবাই সুন্দর করে সেজেগুজে রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন করতে এসেছে ।রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করে তার প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করতে এসেছে।
রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করছে একটা গ্রুপ। তালে তালে আমার মনের ভেতরটাও গান গাইছিল। আমার এখনো মনে আছে ঢুকতেই প্রথম গান শুনছিলাম ধ্বনিল আহবান। আর এই গানটা সমবেত সংগীত অসাধারণ লাগে। একই তালে সবাই মিলে ঠিকঠাক গাইতে পারলে ভেতরে একটা প্রবল উত্তেজনা এবং শক্তি কাজ করে। আর সেটা ঐ মুহূর্তে আমি অনুভব করতে পারছিলাম।
বন্ধুদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না কারণ চারিদিকে এত ভিড় ছিল যে বলে বোঝাবার নয়। ফোনের পর ফোন দিয়ে ডাকাডাকি শুরু করলাম ।আসলে চারিদিকে এত আওয়াজ ফোনের আওয়াজটা কারোর কানে যাচ্ছিল না। শ্রেয়া বলে আমাদের এক বন্ধু আমাদের কাছে এসে পৌঁছল ।ততক্ষণে আমাদের আরো দুটো বন্ধু আহেল আর অয়ন চলে এসেছে ।কিছুক্ষণ অনুষ্ঠানের ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে গান শুনে তারপরে আমরা শ্রেয়ার পিছু পিছু বিল্ডিং এর একটি সাইডে চলে গেলাম।
বিল্ডিং এর ভেতরে গিয়ে একটা বড় রুমের মধ্যে ঢুকতেই দেখি একদিকে গানের রিহার্সেল চলছে। গান বলা ভুল হবে মিউজিক ইন্সট্রুমেন্ট এর মাধ্যমে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করতে চলেছে একটা গ্রুপ। সেখানে ভায়োলিন থেকে শুরু করে ড্রাম থেকে শুরু করে বাঁশি হারমোনিয়াম তবলা আরো অনেক কিছু রয়েছে। তখন সুর ভেসে আসছিল প্রাণ চায় চক্ষু না চায় ।ঘরের মধ্যে আবহাওয়াটা দুর্দান্ত ছিল।
বাইরে বৃষ্টি হলেও গরম ছিল ।কিন্তু ঘরের মধ্যে এসিতে একদিকে রিহার্সেল চলছে, আরেকদিকে দেখছি আমাদের সকল বন্ধুবান্ধব জুনিয়র সিনিয়র অর্থাৎ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন এর সকল সদস্য সাথে তাদের কিছু বন্ধুবান্ধব সকলেই এক জায়গায় হাজির হয়েছে। আমিতো ইউনিভার্সিটিতে ইউনিয়ন এর সদস্য নই ।কিন্তু আমার দুইজন কাছের বন্ধু ইউনিয়নে থাকায় এদের সুবিধাগুলো মাঝেমধ্যে আমিও ভোগ করি। সেই মতোই ওদের সাথে বসে পড়লাম ।
দুই বন্ধু আমার ইউনিয়নে থাকায় ইউনিয়নের বাকি সবার সাথেও আমার পরিচয় রয়েছে ।বসে পড়ার সাথে সাথে টিফিন হাতে এসে হাজির হলো । মীও আমর থেকে দুটো বাক্স পেয়ে গেলাম আমি আর পল্লব ।বাক্স ভর্তি খাবার দাবার দেখে পল্লব আর আমি তো ক্ষেপে উঠলাম। কারণ আমরা ভাবিনি ওরা খাবার এর আয়োজন করে রাখবে। খিদে পেয়েছিল সত্যি সত্যি,তাই দুই পেটুক শুরু করলাম। এদিকে খাওয়া-দাওয়া চলছে আর ওদিকে যেন অজান্তেই আমাদের এন্টারটেন্ট করছে ওই বাদ্যযন্ত্রের গ্রুপটা। ভীষণ ভালো লাগছিল চারিদিকে আওয়াজগুলো। আজকের মত এখানেই শেষ করছি পরের পোস্টে বাকি কথা বলব।
@isha.ish
খুব ভালো দিনে গেছিলি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে।
আশা করি বন্ধুদের সাথে খুব ভালো সময় কাটিয়েছিস।
হ্যাঁ রে, খুব ভালো দিনে গিয়েছি।
সকলে মিলে খুব চমৎকারভাবে রবীন্দ্রজয়ন্তীর উদযাপন করেছেন। দেখে খুব ভালো লাগলো। সুন্দর ভাবে মুহূর্তগুলো অতিবাহিত করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। এত চমৎকার পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।