সাঁতার পর্ব - ২|| ১০% বেনিফিট @shy -fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন।কালকে যেখানে লেখা শেষ করেছিলাম ।তারপর থেকে শুরু করছি ।প্রথমে ঈশানের সাঁতার শেখার কথা আমি লিখেছিলাম। তো ওখানকার হেড ট্রেনার সম্পর্কে আমি কিছু কথা এখানে শেয়ার করতে চাই। সমস্ত তথ্য ওনার মুখ থেকে আমি স্বয়ং নিজে সংগ্রহ করেছি।

20220703_202913.jpg

সাঁতারের হেড ট্রেনার - মিহির কুমার বেজ। বর্তমানে ওনার বয়স ৭৫ । উনি West Bengal Civil Emergency Force এ কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৮ সালে উনি ওই দপ্তরের সাথে যুক্ত হন । ১৯৭৪ সালে বালিগঞ্জ লেকফ্রেন্ডস ক্লাবে সরকারিভাবে উনি ট্রেনিং নিয়েছিলেন।আজ প্রায় ৩২ বছর যাবৎ উনি এই সাঁতারের ট্রেনিং দিয়ে আসছেন। ওনার প্রথম ট্রেনিং শুরু হয়েছিল ২১ জন কে নিয়ে কৃষ্ণনগর কলু পাড়া দীঘিতে ( ১৯৯০ সাল) । তারপর ছাত্র-ছাত্রী বেশি হওয়াতে বক্সি পাড়া ঘাট থেকে শুরু করে তরুণসংঘ ঘাট(১৯৯২ সাল) ,তারপর বালির ঘাট - এভাবে বর্তমানে ষষ্ঠী তলার সারদা মা ঘাটে ২০১২ সালের পর থেকে উনি ট্রেনিং দিয়ে আসছেন। বন্যার সময় সরকারি ভাবে ডিউটি চলাকালীন, পশ্চিমবঙ্গের বহু জায়গায় ওনাকে যেতে হতো। কোচবিহার,তুফান গঞ্জ এবং আসাম এরকম বহু জায়গায় ওইসময় কিছুদিনের জন্য উনি ট্রেনিং দিতে পেরেছেন। ওনার কাছে বর্তমানে সকাল ও বিকেল ব্যাচ মিলিয়ে ২৫০ জন স্টুডেন্ট রয়েছে। ওনার সহকর্মী ট্রেনার হিসেবে কুড়ি জন এভাবেই বছরের পর বছর সহযোগিতা করে আসছেন। ফিমেল ট্রেনার তারমধ্যে তিনজন রয়েছেন।

স্যার মিহির বেজ ( মিহির জেঠু) সার্ভে ডাইভিং শিখেছেন।অক্সিজেন ছাড়াই ১৫-২০ ফুট জলের তলায় উনি যেতে পারেন। উনি ম্যাক্সিমাম আড়াই মিনিট জলের তলায় বিনা অক্সিজেনে থাকতে পারেন।

এই শিক্ষা প্রদান করার পেছনে ওনার শুধুমাত্র একটাই উদ্দেশ্য ,যে মানুষ যেন নিজে বাঁচতে পারে এবং অপর কাউকেও বাঁচাতে পারে। কোন কম্পিটিশন এর জন্য উনি স্টুডেন্ট প্রস্তুত করেন না। নিজের জীবনে উনি যেটুকুনি এই কাজ থেকে শিখতে পেরেছেন ,সেটুকুনি দিয়ে গেছেন মানুষের সেবার্থে। ওনার মাধ্যমে কৃষ্ণনগর শহরে বহু ডেড বডি জলের তলা থেকে খুঁজে পাওয়া গেছে। কৃষ্ণনগরবাসী ওনার কাছে চির কৃতজ্ঞ। ওনার এই কর্মের জন্য মানুষের মুখে মুখে ওনার নাম এভাবেই আজও ছড়িয়ে আছে। আর ভবিষ্যতেও ওনার কর্মের মাধ্যমে উনি বেঁচে থাকবেন আমাদের কৃষ্ণনগরের গর্ব হিসেবে।

মিহির জেঠুর সাথে আমার কোনদিনও কথা হয়নি ।বিগত দুদিন ধরে সামান্য একটু হয়েছে। বাবার সাথে পরিচয় দীর্ঘদিনের ।মানুষটাকে দেখে ভীষণ রাগী মনে হয়। চেহারা স্বাস্থ্য একেবারেই মিলিটারির মত ।তাই সামনে গিয়ে কথা বলার সাহসটুকু পাইনি ।যা যা কথা এখানে আমি লিখে গেলাম সবই ওনার সাথে ফোনে কথা বলেই পেয়েছিলাম ।এরকম একটা মানুষকে নিয়ে আলোচনা করতে বেশ ভালো লাগলো। আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। কৃষ্ণনগরের একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষের পরিচয় দিতে পেরে নিজের কাছে নিজের খুব ভালো লাগছে।

@isha.ish

Sort:  
 2 years ago 

ওরে বাপরে পানির নিচে আড়াই মিনিট অক্সিজেন ছাড়া টিকে থাকা প্রফেশনাল না হলে কোনভাবেই সম্ভব না। যাইহোক আপনার পোষ্ট এর মাধ্যমে অনেক তথ্য তুলে ধরেছেন ভালো লাগলো ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

উনি সত্যিই অনেক ট্যালেন্টেড একজন মানুষ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61129.70
ETH 2660.38
USDT 1.00
SBD 2.55