পারিজাত - ১ম পর্ব
সকলকে মহালয়ার অনেক অনেক শুভেচ্ছা । গতকাল সন্ধ্যাবেলায় লেখাটা লিখেছি। হঠাৎ করেই লেখা। দুই ভাগে লেখাটা পোস্ট করবো । আজ করলাম কিছুটা। কাল বাকিটা। আশা করছি ভালো লাগবে আপনাদের।
প্রায় কুড়ি মিনিট হল হেঁটে চলেছি ।আর সাথে এটাও বোধগম্য হয়েছে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি বহু আগে । শীত ঘেরা সকাল না হলে হয়তো এতক্ষণে আমি রাস্তার ধারে বসে পড়তাম। নিরুপায় হয়ে একবার ভাবলাম পিছন ফিরে হাঁটা দিই ।যে রাস্তা ধরে এসেছি ঠিক সেই দিকে।পিছন ঘুরে তাকাতেই একটার জায়গায় আরো তিনটে রাস্তা দেখতে পেলাম।যে নরখাদক রাস্তা ধরে এত দূরে চলে এসেছি, তাকে চিনতে পারলাম না কিছুতেই ।অগত্যা কপালের দুর্ভোগকে প্রণাম করে হেঁটে চলেছি ।
এতক্ষণ ধরে বেশ ভয় হচ্ছিল। কিন্তু অবস্থা শিখিয়ে দিল ভয় পেয়ে কোন লাভ নেই। উপরন্ত চারপাশের উজার করে দেওয়া যে উপহারগুলো, তা নিয়ে কিছুক্ষণ আনন্দে থাকাটাই ভালো। আসল কথা বলা হয়নি । বলা হয়নি, আমি এখানে কি করছি আর আমার এই বিখ্যাত হারিয়ে যাওয়ার গল্পটাও বকেয়া রয়ে গেছে। তাহলে এই সুযোগে একটু বিশ্রাম করে নেওয়া যাক।
নমস্কার ,আমি হলাম প্রজিতা সান্যাল । বাবা অরূপ সান্যাল। বর্তমানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিদ্যার ওপর স্নাতকোত্তর লাভের জন্য দৌড়াদৌড়ি করছি। সে উদ্ভিদবিদ্যার হাত ধরে আজ আমি হারিয়ে গিয়েছি। আসলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই এডুকেশনাল ট্যুর - এর আয়োজন করা হয়েছিল। এই ট্যুর সম্পর্কে বাড়িতে বলতেই যেটা হবে ভেবেছিলাম ,সেটাই হয়েছিল।
পরিবারের একমাত্র সন্তান। আমার মনে আছে , দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াকালীন ক্লাস টিচার শেষ অব্দি আমার বাবাকে ফোন করে রাজি করিয়েছিল স্কুল এক্সকার্সান নিয়ে যাবে বলে। এবারে অনেকটা সেরকমই ঘটনা ঘটেছিল। বরং এবারে আরও বেশি জেদাজেদি করতে হয়েছে। যেহেতু দূরত্বটা অনেকটা।
শিলং আমার বাড়ির ওখান থেকে বেশ দূর। এর আগে কখনও আসা হয়নি বলে আরও বেশি পরিমাণে ইচ্ছা ছিল । আর তারপর যেমন হয় আর কি । নাচতে নাচতে মজা করতে করতে গতকাল এখানে এসে পৌঁছেছি । আর আজকেই আমার সাথে সকাল থেকে কত কিছু যে হয়ে যাচ্ছে আমি নিজেই বুঝতে পারছি না।
যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ নিজের দোষে । প্রফেসর কিংবা সাঙ্গবাঙ্গদের সাথে আমি উদ্ভিদ নিরীক্ষণ করতে করতে হারিয়ে যাইনি। ভোরবেলায় জাগা পেয়েছিলাম আজ। নিজেই মাতব্বরি করে চারিপাশটা দেখবো বলে দুই বন্ধুর সাথে বেরিয়ে পড়েছিলাম সকালবেলায়। শীতের সকাল আর কুয়াশা মাখা বন-জঙ্গলগুলো আমাকে ঘর থেকে ছিনিয়ে বার করেছে বলতে পারি।
ফোনের নেটওয়ার্ক বেশ কিছুক্ষণ হলো কাজ করছে না। যেখান থেকে কাজ করছে না, হয়তো সেখান থেকেই আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে দুই বন্ধুকে ডেকেছি অনেকবার। কারোর কোন সাড়াশব্দ নেই। আর এই সব শুনে অথবা পড়ে আপনারা ভাবতেই পারেন একটা সিনেমা দেখছেন অথবা গল্পের বই পড়ছেন। কিন্তু আমি যে আসলেই এই সিনেমার নায়িকা হয়ে যাব, তা ভাবতেও পারিনি।
পরের পোস্টে বাকি লেখা শেয়ার করবো। আজ এই অব্দি রাখলাম।ভালো থাকুন সকলে।
গল্পের শুরু টা দুর্দান্ত হয়েছে।আশা করি দুর্দান্ত একটি গল্প পেতে যাচ্ছি।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দিদি।
আপনার সাথে ঘটে যাওয়া সুন্দর মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। গল্পের শুরুটা অনেক সুন্দর হয়েছে আশা করি শেষটা অনেক বেশি সুন্দর হবে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দিদি।