পর্দার পেছনের গল্প পার্ট - ৫ || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। ফটোগ্রাফি কনটেস্ট এর জন্য যে গল্প গুলো ছিল অর্থাৎ কনটেস্টে অংশগ্রহণের জন্য আমি যেখানে যেখানে গিয়ে গিয়ে ছবি তুলেছিলাম ,সেই নিয়ে বিগত কিছুদিন ধরে পোস্ট করছি ।আজকের এই পোস্টটি এই টপিকের শেষ পোস্ট।
আপনারা যারা কালকের পোস্ট লক্ষ্য করেছেন ,তারা হয়তো দেখেছেন আমি আবারও সকাল বেলায় উঠে গ্রামে গিয়েছিলাম এবং সেখানে গিয়ে গুড় জ্বাল দেওয়ার কাজ দেখতে শুরু করেছিলাম ।তারপর থেকেই আজকের গল্প শুরু করছি ।
গুড় তৈরী হয়ে যাওয়ার পর, যখন প্রায় দুপুরের মতো ভাব ।দুপুরই হয়ে গেছে বলা যেতে পারে ।গুড়ের কাজ শেষ করে কাকু চলল নিজের জমির দিকে । কাকু মনে ভবানী কাকু, আমাদের দুধ ওয়ালার বন্ধু,যিনি এতক্ষন ধরে গুড় তৈরী করলেন।
আমাদের দুধওয়ালা সমস্ত কিছু বলে রেখেছিল, ওনার বাড়ি থেকে জমিটা অল্প দূরে। কিছুটা হেঁটে তারপর যেতে হয় ।গ্রামের ভেতর দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম, অনেক কিছুই চোখে পড়ল, যেগুলো আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। যেমন চোখে পড়েছে ধান সিদ্ধ করা। আমি সেটা কখনো আগে দেখিনি ।হাড়ি করে দুজন ভদ্রমহিলা ধান সিদ্ধ করছিলেন ।
টমেটো বাগানে ঢুকে অনেকগুলো ছবি তোলার পর ,কয়েকটা টমেটো পেরেও নিয়েছিলাম ।তবে হ্যাঁ চুরি করে না। জিজ্ঞেস করে। সেই টমেটো হাতে ছবি তুলেছি। তারপর ওখান থেকে চোখে পড়ল মাঠের মাঝে মধ্যে কয়েকটা খেজুর গাছ। চোখে পড়লো কিছু মানুষ জমিতে কাজ করছে ।সেই ছবিগুলো আমি ক্যাপচার করেছি ।
তারপরে একটা আম বাগানের মধ্যে দিয়েই আমরা ক্ষেতের মধ্যে ঢুকে পড়লাম ।সেখানে মটরশুঁটির ক্ষেত থেকে শুরু করে ছিল ,বাঁধাকপি, টমেটো ক্ষেত, সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিছু ছবি তুলেছি ।আর হ্যাঁ, কলা গাছের বাগানও ছিল ।
তখনও দূরের থেকে হালকা হালকা কুয়াশা চোখের নজরে আসছিল। একেবারে ঠান্ডা ওয়েদার ছিল।আমি গায়ে মোটা দুটো সোয়েটার পড়েছিলাম। কাকু সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বার হয়েছিল। গাছ কাটতে যা যা লাগে,দা , হাঁড়ি আর যেভাবে তৈরি হয়ে বেরোয়, সেরকম ভাবেই বেরিয়েছিল।
এদেরকেই শিউলি বলে। তারপর কাকু আস্তে আস্তে গাছে উঠলো ।সেই ছবিগুলো আমি এক এক করে সব তুলে রেখেছিলাম ।কিভাবে গাছে উঠছে ।গাছে ওঠার পর কাকু গাছ কাটা শুরু করল।
আর এদিকে আমি নানানভাবে একবার দূরে গিয়ে, একবার পেছন দিকে গিয়ে ,একবার সামনে দিকে এগিয়ে, অনেকগুলো ছবি তুলে ফেললাম ।কাকু কলসিও বাঁধলো। পুরো ব্যাপারটাই বেশ মজা লাগলো ।যেটা আমি কখনো এর আগে দেখিনি ।আর এর থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পারলাম।
কাকু ভীষণ আনন্দিত ছিল যে আমি ওনার ছবি তুলছি এবং এই ছবি আমি যে অনলাইনে পোস্ট করব, এই কারণেও ওনার বেশ খুশি ছিল। ইনিও আগের দিনের কাকুটার মত গাছের উপর উঠে পোজ দেওয়ার জন্য আমার দিকে তাকাচ্ছিলেন। বারবার ক্যামেরার দিকে তাকাচ্ছিলেন।
আমি বারণ করার পর তখন পোজ দেওয়া বন্ধ করলেন। যাইহোক হাঁড়ি বাঁধা হয়ে যাওয়ার পর কাকু নিচে নেমে এলেন। সেই সমস্ত ছবি আমি ক্যাপচার করেছি ।যেখান থেকে আমাকে ছবি তুলতে হয়েছে, সেখানেও একটা ক্ষেত ছিল। ক্ষেতের ফসল গুলো যাতে নষ্ট না হয়ে যায় ,সদ্য চারা গাছ গুলো কে বাঁচিয়ে রেখে বসে দাঁড়িয়ে নানানভাবে ছবিগুলো তুলতে হয়েছে।
তবে আমার খুবই মজা হয়েছে পুরো ব্যাপারটা তে। আসার পথে কাকুকে বলাতে কাকু আমার সাথে একটা ছবি তুলে ফেললেন। তারপর বাড়িতে গুড় নিয়ে চলে আসলাম।
আর আমার ফটোগ্রাফী কনটেস্ট এর সমস্ত ছবিগুলো রেডি হয়ে গেল। তারপর সমস্ত ছবি গুলোকে এক জায়গায় রেখে ভালোভাবে বাছাই করে তবেই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলাম ।পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে দুর্দান্ত একটা ব্যাপার ছিল।
যেহেতু শীতকাল মানে পিকনিক। কিন্তু এবারে আমি একবারও পিকনিক করিনি। ঘুরতে যাইনি। কোথাও না কোথাও তাই আমার মনটা কেমন যেন খারাপ ছিল ।তবে এই অভিজ্ঞতাগুলো আমার মন ঠান্ডা করে দিয়েছে। এই অনুভূতি সত্যিই আগে কখনো হয়নি ।
আর এর জন্য আমি আবারও দাদাকে ধন্যবাদ জানাই। দাদা যদি ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন না করতো ,তাহলে আমার এত কিছু করার প্ল্যান মাথাতে আসতো না ।আর আমি এতকিছুর সাথে পরিচিত হতে পারতাম না। আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে ।সকলকে অনেক অনেক ভালোবাসা। সকলে ভাল থাকুন ।সুস্থ থাকুন। নমস্কার।
আপু আপনার এই পোস্টটি আমার খুবই ভালো লেগেছে, বিশেষ করে আপনার ভবানী কাকুর খাজুর গাছ কেটে রস উৎপাদন করার দৃশ্যটা মনমুগ্ধকর। আর আপনার এই পোস্টে যথেষ্ট গ্রাম বাংলার পরিচয় মিলেছে। আপনি খুব সুন্দর সুন্দর করে ফটোগ্রাফি করেছেন এক এক সবজি এবং গ্রামের মহিলাদের ধান সিদ্ধ করার দৃশ্য। আর আপনার পোস্ট দেখলাম ঠাণ্ডা অনুভূতি প্রকাশ করে দেন। সব মিলিয়ে যথেষ্ট কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট। আপনি খাজুর গাছ কাটা দেখে আনন্দিত হয়েছেন এজন্য আমিও আনন্দিত হয়েছি, আর ধান সিদ্ধ করার দৃশ্যটা প্রথম দিখলেন সেটা জানতে পেরে যেন কিছুটা অবাক হলাম, যেহেতু আমরা গ্রামে বাস করি,ছোট থেকে এগুলো দেখে আসছি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে খুঁটিনাটি পড়ে তারপর মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য।
গ্রাম্য পরিবেশের সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করতে কার না ভালো লাগে। আপনি আজ সবুজ শ্যামল প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে গিয়েছেন দেখছি। আমিও এইরকম সবুজ প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে পছন্দ করি। আপনার কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।