কৃষ্ণনগর ক্যাথেড্রাল চার্চ || ১০ % বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা ।আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।মানুষের কখন কি সমস্যা হয়ে যায়, তা আমরা নিজেরাও টের পাইনা ।তাই আমার তরফ থেকে আপনাদের সকলের জন্য সব সময় শুভ কামনা থাকে ।সারা পৃথিবীর মানুষ যেন ভালো থাকে এবং সুস্থ থাকে ।
বৌদির শরীর ভালো নেই এবং এটা আমাদের কমিউনিটির প্রত্যেকটি মেম্বারদের জন্য খুবই খারাপ একটা খবর । এই কমিউনিটিতে আসার পর আমি কিছুটা হলেও অনুভব করেছি আমাদের প্রিয় বৌদি কতটা স্নেহ করে আমাদের সকলকে।
বৌদির জন্য আমরা সকলে প্রার্থনা করি , বৌদি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক এবং আবারও আমাদের ছোট বোন, ছোট ভাইদের নিজ ছায়া তলে নিয়ে নিক।
ক্রিসমাস সপ্তাহ চলছে। ২৬ শে ডিসেম্বর আমি আমাদের কৃষ্ণনগর ক্যাথিড্রাল চার্চ এ গিয়েছিলাম ।তারই কিছু ছবি আমি পোস্ট করছি। ভগবানের কাছে আমার আপনাদের সকলের জন্য এই শুভ কামনা, আশা করছি ,ভগবানের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।
ঈশ্বর আমাদের অবশ্যই দেখছেন। আমাদের সকলের সাথে অবশ্যই আছেন ।আমরা ওনার সঙ্গ ছাড়া এই পৃথিবীতে এক সেকেন্ডও টিকে থাকতে পারবো না ।তাই আমার এই পোস্টটি পুরোপুরি ভগবান /ঈশ্বর /আল্লাহ আমরা যে নামেই ডাকি সেই শুভশক্তির উদ্দেশ্যে।
আমার শহরে আমার কিছু প্রিয় জায়গা রয়েছে। তার মধ্যে একটি জায়গা হল আমাদের কৃষ্ণনগর ক্যাথিড্রাল চার্চ ।মন্দির মসজিদ গির্জা এবং গুরুদুয়ারা আমি সবকটা জায়গায় ভ্রমণ করেছি এবং প্রত্যেকটি জায়গায় একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি, সেখানে গেলে শরীর-মন মাথা ঠান্ডা হয়ে যায়। কোন একটা শুভশক্তি চারিদিকে এমন ভাবে আবৃত করে ধরে রাখে যে, অন্য কোনো অশুভ চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে না। শুধু মনে হয় নিজেকে বিলীন করে দিই, নিজেকে সপে দিই এই পরমাত্মার কাছে ,এই শক্তির কাছে ।মাথা নত হয়ে আসে ।আর শুধুমাত্র একটা তীব্র জ্যোতি চোখের সামনে ভাসতে থাকে।
কৃষ্ণ নগরে সব থেকে বড় চার্চ এটাই,ছোটখাটো আরো কিছু রয়েছে ।আমি মাঝেমধ্যে ওইখানে যাই ।যখন কেউ থাকে না সেই সময়। প্রার্থনা সময়টাও আমি এভোয়েড করি ।খালি খালি যখন শুধুমাত্র আমি যাচ্ছি ,এরকম সময় অর্থাৎ বিকেল নাগাদ, ঠিক প্রার্থনা হয়ে যাওয়ার পর আমি মাঝেমধ্যে চার্চে যাই।চারিদিকে নীরবতার মধ্যেও শব্দ বাজতে থাকে- হে ঈশ্বর, সকলের মঙ্গল করো, ঈশ্বর আমাদের তোমার পদতলে স্থান দাও ,হে ঈশ্বর আমাদের সাথে থেকো।
আমি জানিনা আপনারা এই অনুভূতিগুলো ফিল করেছেন কিনা, তবে চার্চে সত্যিই যখন আমি চুপিসারে বসে থাকি, তখন আমার অনুভব হয় যে আমি একটা খুব শুদ্ধ জায়গায় আছি ,যে জায়গায় আমার কোন ভয় নেই ।যেখানে আমার কোন ক্ষতি হতে পারে না ।
ভগবান চারিদিকে। শুভ শক্তি চারিদিকে ।শুধু মাত্র আমাদের গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে শুভ জিনিসকে এবং ভালো জিনিসকে গ্রহণ করার ক্ষমতা অর্জন করাটাই সব থেকে বড় ব্যাপার। আর এই ক্ষমতা যে অর্জন করে ফেলে সে তো সাধক ,সে তো সিদ্ধাচার্য ।আমরা সাধারন মানুষ প্রতিদিনের ব্যস্ততা, প্রতিদিনের শুভ-অশুভ, প্রতিদিনের ভালো খারাপের মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত করি।
তবু একবার খেয়াল করে দেখবেন, যখন ভগবানের কাছে যাচ্ছেন ,যখন মন্দিরে যাচ্ছেন ,মসজিদে যাচ্ছেন, গির্জায় যাচ্ছেন ,গুরুদুয়ারা যাচ্ছেন এবং যখন নিজের বাড়ির তে বসেও আপনি ভগবানের নাম ভজন করছেন ।আপনার মনে একটা অসীম স্বস্তি এবং শান্তি আপনারা অনুভূত হয়। আর এটাই তো হল প্রমাণ যে আপনাদের চারিদিকে ,আমাদের চারিদিকে বিরাজ করছে কিছু এমন একটা জিনিস ,যা প্রতিনিয়ত আমাদের সাথে আছে।
২৬ শে ডিসেম্বর যখন চার্চে গেলাম ,স্বাভাবিকভাবেই যেহেতু ক্রিসমাস গির্জার চারিদিকটা আলোয় আলোয় ঝলমল করছিল, মানুষের ভিড় এতটা পরিমাণে ছিল যে আমি মুখে বলে বোঝাতে পারবোনা ।পিঁপড়ের মতো মানুষ যাচ্ছিল চার্চের মধ্যে ।সকলেই শুধু সেদিনকে সেই আলোর ঝলকানি এবং আমাদের গির্জার কোলে যে ছোট্ট যিশু হাসছে ,তা দেখার জন্যই যাচ্ছিল।
চারিদিকের গির্জার পাশ ধরে রাস্তা ধরে বসে ছিল নানান রকমারি দোকান। মানুষের ভিড় এতটা পরিমাণে বেশি ছিল যে আমি বেশিক্ষণ ওখানে থাকতে পারিনি। তবে হ্যাঁ চার্চে কিছুটা সময় অতিবাহিত করেছিলাম ।এত ভিড় থাকায় ভালোভাবে সেভাবে প্রার্থনা করা হয়নি ,আমার মা বলে যেখানে আমরা আছি ,সেখানে ভগবান আছে। তাহলে প্রার্থনা করতে অন্য কোথাও যাব কেন ।কিন্তু ওই যে ওই সব জায়গায় গেলে কেন জানিনা হাতটা আপন ইচ্ছায় জোর হয়ে আসে। হাতজোড় করে বলতে ইচ্ছা করে হে ভগবান আমাকে নাও। আমায় তোমার আলোয় পবিত্র করে তোল।
সব থেকে খারাপ যে ব্যাপারটা লাগল সেটা আমি না বলেই পারছিনা ,আমি যতবার গির্জায় গিয়েছি চারিদিকে এতটাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। একটা প্লাস্টিক পড়ে থাকতে আমি দেখিনা। কিন্তু সেদিন আমি যখন গির্জায় পা রাখলাম ।মানুষের কি স্বভাব, গির্জার বাইরের সিঁড়িতে এতগুলো প্লাস্টিকের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখে আমার এতটাই খারাপ লাগছিল আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না।
আপনি কটা মানুষকে বারণ করবেন ওই সময় ওই দিনকে- যে আপনারা প্লাস্টিক টা ফেলবেন না এবং কজনই বা বারণ শুনবে আর আপনারা কজনের ওখান থেকে পড়ে থাকা প্লাস্টিক গুলো তুলে ডাস্টবিনে ফেলবেন। এগুলো তো পুরোপুরি মানবিকতা। প্রত্যেকটি মানুষের বোঝা উচিত ।এগুলো একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে তো শিখিয়ে দেয় না।
সেদিন কে ঐ সমস্ত দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছে ,কিন্তু আমি কিছু করতে পারিনি।
আমি সেদিন গিয়েছিলাম আমার ভাই, মা, দাদা এবং বৌদি কে সঙ্গে করে ।সবাই মিলে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছি ।চার্চের চারিদিকে এতটা ভিড় ছিল ।ওখানে কোন খাবার দোকানে খাওয়ার মত পরিস্থিতি ছিলো না। আর আমরা একটু ভিড় অভয়েড করছিলাম । সবই তো শুনছেন ,ভাইরাসের প্রকোপ কিভাবে বাড়ছে। তাই আমরা আমাদের মার্কেটে আবার চলে আসলাম এবং সেখানে এসে একটা ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে সবাই মিলে ফুচকা খাচ্ছিলাম ।
আমি সাধারণত জল ফুচকা খাই না ।দুই ফুচকা আমার খুবই পছন্দের ।তো ফুচকা খাওয়ার সময় কয়েকটা ছবি তুলেছিলাম, এগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
আজকে ক্রিসমাস সপ্তাহ শেষ ।আজকে এই বছরের এই দিনটি ও শেষ হয়ে যাচ্ছে ।এই বছরের মতো আর দেখা হবে না ।আর পোস্ট লেখা হবে না। আপনাদের সকলের জন্য আমার তরফ থেকে অগ্রিম শুভকামনা রইল পরবর্তী বছরের জন্য।
এবং আমি আশা করছি এই বছরে আমি যে ভুল ত্রুটিগুলো করেছি ও আপনাদের সাথে যদি আমার কোন আচরণে কমতি থেকে থাকে, সেগুলো আমি পরবর্তী বছরে অবশ্যই শুধরে নেব। আর কিছু মুহূর্তের সময় তারপর, তার পরেই হয়ে যাবে ২২ সাল ।আর এই গোটা বছরটি কিভাবে কেটে গেল ,দু'বছর কিভাবে ভাইরাসের প্রকোপ এ বাড়ি বসে কেটে গেল, তা তো আমরা নিজেরাও জানিনা ।চোখের পলকে যেন বছরটা চলে গেল বাড়ি বসে থেকেই।
ভগবানের কাছে আমার প্রার্থনা পরবর্তী বছর আসছে, পৃথিবী সুস্থ হয়ে উঠুক তাড়াতাড়ি ।আমাদের প্রিয় মানুষগুলো সুস্থ হয়ে উঠুক। সকলে ভালো থাকুক ।সুস্থ থাকুক। হাসতে থাকুক। কাজ করতে থাকুক। সকলের জন্য আমার অবিরাম ভালোবাসা ।নমস্কার।
আপু প্রথমে আপনাকে জানাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা হ্যাপি নিউ ইয়ার।কৃষ্ণনগর ক্যাথেড্রাল চার্চ এর বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।কৃষ্ণনগর ক্যাথেড্রাল চার্চ ভ্রমণের বিশেষ মুহূর্তের কথাগুলো অতি চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনার পোস্টে। পোস্টটি পড়তে অনেক ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটা পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।