দীপাবলি র(৫/১১/২০২১) কিছু মুহূর্ত|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।চলে এলাম দীপাবলীর নেক্সট পার্টের অর্থাৎ ৫ তারিখের কিছু মুহূর্তের প্রতিচ্ছবি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে ।যেহেতু আগের দিন ঠাকুর দেখতে বের হইনি ।আজকে সকাল থেকে ইচ্ছা ছিল যত যাই হোক কিছুক্ষণের জন্য হলেও ঠাকুর দেখতে বেরোব।

আমি আর আমার কলিজার টুকরো দুটো 😅😅😜😜🤪🤪

20211105_200644.jpg

কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে শরীরটা কেমন যেন খারাপ করতে শুরু করল ।বুঝতে পারলাম যে ঠান্ডা লেগে গেছে ।কি করে লেগেছে তা জানিনা। হয়তো কাশ্মীরের ঠান্ডাটা বসে গেছে। আর এই ওয়েদার এর সাথে ম্যাচ করতে না পেরে ঠাণ্ডাটা এখন লেগে গেছে। গলা ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে আসছিল। তখন বাজে পাঁচটা। এত শরীর খারাপ করছিল যে আমি ভাবলাম হয়তো আজকেও ঠাকুর দেখতে যেতে পারবো না। এবার কালী পূজা বুঝি ভেস্তে গেল।

20211108_132452.jpg

কিন্তু বেশ দেড় ঘণ্টা ঘুমানোর পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যে ঘুমটা ভাঙলো। তারপর দেখলাম শরীরটা সুস্থ লাগছে । আমার ভাই এ দিকে জেদ শুরু করেছে, আমাকে ঠাকুর দেখতে নিয়ে চলো!!! যাই হোক এরপর আমি চোখে মুখে জল দিয়ে ফ্রেশ হলাম। তারপর সাজুগুজু করা শুরু করলাম। ঈশান কেউ জামাকাপড় পরিয়ে দিলাম।

পোজ দিতে কারণ ছাড়া হাসি( মেয়েরা যেটায় এক্সপার্ট)

20211105_200705.jpg

তারপর রেডি হয়ে বাবাকে ফোন করলাম ।বাবা তখন আমাদের বাড়ি থেকে বেশ পনেরো-কুড়ি মিনিট দূরে একটি অনাথ আশ্রম, নাম শংকর মিশন, সেখানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। ঠাকুর দেখতে যাওয়ার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই ।ফোনে দুটো চারটে কথা শোনাতে বাধ্য হলাম ।😜দেখলাম কিছুক্ষণ পরেই বাবা চলে আসলেন ,তারপরে আর কি, ঘুরতে বেরোনো হলো।

মা আগুনেশ্বরী

20211108_132411.jpg

যেহেতু শরীরটা সেরকম ঠিক ছিলনা ,আর আমার ভয়টা ঈশানকে নিয়ে ছিল। কারণ আমার যখন একবার ঠান্ডা লেগেছে। ঈশানের ও ঠান্ডা লাগতে পারে ।কাশ্মীরে ভাগ্যিস শরীরটা খারাপ ছিল না। ঠাকুরকে এই জন্য কোটি কোটি প্রণাম। কৃষ্ণনগরের বড় বড় অনেকগুলোই প্যান্ডেল হয়েছিল। কিন্তু সব আমি ঘুরতে পারিনি। মোট ৫ টা ঠাকুর আমি হয়তো দেখেছি ।মাঝপথে এক জায়গায় মায়ের জন্য চিকেন চাওমিন কিনলাম ।আর সাথে কিনলাম কোকোকোলা।

নির্জীব অবস্থা ( সজীবতা যখন হারিয়ে যায়)

20211105_200900.jpg

আমার বাড়ির থেকে ঠিক পাঁচ মিনিট দূরে একটি বড় মাঠ আছে। মাটির নাম কারবালা মাঠ ।এখানে খুব বড় করে প্রতিবছর পুজো হয় ।ক্লাবের নাম রক্ত জবা। এখানে মাঠজুড়ে মেলা বসে ।স্টেজ শো হয়। বেশ একটা জবরদস্ত ব্যাপার ।আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমার বান্ধবীর সাথে আজকের দিনটি কাটানোর।

20211105_190611.jpg

কিন্তু ও ওর দাদার সাথে বেরিয়েছিল কিছু কাজে ,আমি যখন বাড়ি ঢুকলাম ,মাকে চাওমিন দিতে ,তখনই ঠিক করেছিলাম যে আমার বান্ধবী কে একবার ফোন করে দেখবো, যদি ও রাস্তায় থাকে তাহলে রক্ত জবা ক্লাবের মাঠে আমরা মিট করব ।তো ভগবানের কৃপায় সেই মতই কাজ হল। আমি বাড়িতে ঢোকার পরে ওকে যখন ফোন করি, ও বাড়ির দিকে ফিরছিল ।আমার ফোন পেয়ে ও বাড়ি না ফিরে ,ক্লাবে চলে আসলো ।তারপর আমরা দুজন মিলে ক্লাবে মিট করলাম ।সাথে ওর দাদা ছিল ।আর আমার সাথে ভাই আর বাবা ছিল।

আমার পর্ণবী

20211105_200954.jpg

বান্ধবীকে পেয়ে কি আর কিছু চোখে পড়ে!! শরীরটা খারাপ করছিল ,কিন্তু সেটা মাথার উপর দিয়ে গেছে ।বেশ কিছুক্ষণ ধরে গল্প-আড্ডা হল ।কাশ্মীর থেকে ফিরে এসে এই ওর সাথে প্রথম দেখা। অনেক নানান রকম গল্প স্টার্ট হল ।ঠাকুর কি দেখব আর 😅😅😅মেলায় ঘুরবো কি!! ওর দাদাকে দিয়ে পটাপট কয়েকটা ছবি তুলিয়ে নিলাম। তারপরে আমরা ঠাকুর দেখলাম , চারিপাশটা একটু ঘুরলাম, কিছু কিনিনি যদিও।

মহাকালী

20211105_201315.jpg

বাবা প্রথমেই জানতেন যে আমার সময় লাগবে এই গল্পসল্প করতে ,তাই আমাকে প্রথমে বলেছিলেন ,তোরা ঘোর ,আমি এক জায়গায় চুপ করে বসে আছি ।স্টেজ এর পাশেই ক্লাব কমিটির মেম্বাররা চেয়ার নিয়ে একটি ঘরের মধ্যে করে প্যান্ডেল করে বসে রয়েছে। তাদের সাথে বাবার বেশ পরিচয় রয়েছে। বাবা তাদের সাথে গল্পে মত্ত হয়ে গেল। এদিকে আমি পর্নবী আর দাদা আর আমার ভাই মিলে মজা করতে লাগলাম।

ঈশান কুমার

20211105_201206.jpg

যখন বাড়ি যাবার পালা তখন মোমো খাওয়া হলো। ঈশান ফুচকা খেল। ফুচকা খেতে ও খুব ভালোবাসে। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে আমি ফুচকা খুব একটা পছন্দ করি না। হ্যাঁ তবে দই ফুচকা আমার খুব পছন্দের।

কিন্তু শীতকালে আমার মতে মোমো টা দুর্দান্ত লাগে। আমরা ভেজ মোমো অর্ডার করলাম। তারপর খাওয়া-দাওয়া হল ।তারপর গল্প করতে করতে টাটা বাই বাই ।আমরা যে যার বাড়ি ফিরে এলাম। এই ভাবেই শেষ দিনটি কেটে গেল ।

20211105_202128.jpg

এখানে বলে রাখি, আমাদের কৃষ্ণনগরে কালী পূজার বিসর্জন দুদিন হয় ।কিন্তু এ বছরে একদিনে ,সব ঠাকুর বিসর্জন দেওয়ার কথা সরকার থেকে জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পরের দিনে আমার শরীর আরও অসুস্থ হয়ে পড়ল ।আমার বাড়ি থেকে বেরোনোর মতো হাল ছিলনা ।তাই বিসর্জনে আমি যেতে পারিনি ।ফোনে অনেক স্টেটাস দেখেছি। সারা কৃষ্ণনগরের রাস্তায় কত ভীড়! ভিড়ের প্রবণতা দেখে আমার যতদূর মনে হচ্ছে করোনা আমাদের চারিদিকে আবার খুব শিগগিরই ছড়িয়ে যেতে চলেছে।

তাই একটাই কথাই বলবো ,সকলে সাবধানে থাকুন। ভেবে বসবেন না যে করোনা নেই ,ভাইরাস চলে গেছে, তা একদমই না ।সাবধানতা অবলম্বন করুন ।নিজের সেফটি নিজের কাছে। নিজে যেটুকু পারবেন সে টুকুনি সাবধানের সাথে চলাফেরা করুন ।নিজে সুস্থ থাকুন ।অপরকেও সুস্থ রাখার পথ তৈরী করে দিন ।নমস্কার।

@isha.ish

Sort:  
 3 years ago 

ঈশান কে দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। এই টুকু একটা বাচ্চা, মুখটায় সবসময় হাসি লেগে থাকে সেই সাথে মায়া ভরা চেহারা। দেখেই একটু গাল টেনে দিতে ইচ্ছে করে। ভীষণ বদ অভ্যাস আমার এটা। যদিও একেবারে হাল্কা করে টানি।
আপনার ড্রেসটা কিন্তু দারুণ হয়েছে। মেয়েরা আগে যা খেয়াল করে আরকি। 🤪আর আপনার বান্ধুবীর হাসিটাও সুন্দর। ফুচকা কি করে পছন্দ করেন না তাই তো মাথার উপর দিয়ে গেলো। ফুচকার ব্যাপারে দেখছি আমি আর ঈশান একদম সেইম।

 3 years ago 

হ্যাঁ ভাই এর মুখটা বেশ মায়াভরা ।সবাই বলে। আর আমার ড্রেস এর ব্যাপারে খুব শিগগিরই আমি পোস্টের মাধ্যমে জানাবো ।তাই কমেন্ট বক্সে বেশি কিছু লিখছি না ।অনেক ধন্যবাদ দিদি সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।ফুচকা পছন্দ করতাম আগে ।কিন্তু এখন কেন জানিনা দই ফুচকার দিকেই বেশি চোখটা যায়। ওই যে টেস্ট একরকম থাকে না, বয়সের সাথে অনেক কিছু বদলেছে।

 3 years ago 

তিনজনকে একসাথে বেশ ভালো লাগছিল🥰স্বর্দি-কাশি জয় করে যে বেরিয়েছিলেন সেটাও কিন্তু এক ধরনের যুদ্ধ জয়😁
আর হ্যাঁ, লেখার মাঝে ইমোজির ব্যবহার লেখাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে।কারণ ছাড়া হাসি কিন্তু ভালো ছিল😁
যাইহোক,শুভ কামনা রইলো দিভাই❣️

 3 years ago 

আপনি যে আমার ইমোজি গুলো খেয়াল করেছেন, এটাই খুব ভালো লাগলো জেনে ।সত্যিই তাই ,ইমোজি গুলো লেখাগুলোর মাহাত্ম্য টাকে আরও বুঝিয়ে দেয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago (edited)

জয় মা কালী।

আচ্ছা দুজনে যেভাবে মাথা ঠেকিয়ে ছবি তুলেছ, চুলে জট লাগেনি তো? 😛😆

আমাদের এখানে খুব একটা ঠান্ডা পড়েনি, তবে দুপুরে গরম আর সন্ধ্যে হতেই অল্প অল্প ঠান্ডা। এটাতেই বেশি শরীর খারাপ হচ্ছে। আমিও পাঁচদিন ধরে সর্দিতে ভুগছি

 3 years ago 

আমাদের চুল স্ট্রেইট। কোঁকড়ানো না। চিরুনি ও স্লিপ কেটে নিচে পড়ে যায় ।আর তুমি বলছো জট লাগবে! 🤪🤪🤪😅😅😅🤣🤣🤣🤣
সকলেরই সময় খারাপ, সর্দি-কাশি ,কারণ ওয়েদার টা হঠাৎ করেই চেঞ্জ হয়ে গেছে, এবার তো কালি পুজোতে পোকার আমদানিও হয়নি।🤪
তোমার শরীর তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনা রইল। ভালো থেকো দাদা।

 3 years ago (edited)

তাহলে তো ভালো। সাবধানে থেকো, এইভাবে দু একটা উকুন আদান প্রদান হয়ে গেলে সমস্যা 😛।

কালীপোকা গুলো কোথাও নেই, হয়তো মানুষের চাপে হারিয়ে গেলো।

আমি তো ওষুধ খেয়েও লাভ পাচ্ছি না। কান বন্ধ হয়ে আছে। 😭

 3 years ago 

উকুন নেই, আমরা খুব রাগী, মাথা গরম অলটাইম, গরম মাথায় উকুন থাকেনা।

 3 years ago 

কান কেন!!

 3 years ago 

ঈশান কে খুব সুন্দর লাগছে। ঈশানের হাসিটা অনেক সুন্দর।দিদি আপনাকে দেখতে ও কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে। আপনার সুন্দর মুহুর্তটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।

 3 years ago 

অনেক অনেক ধন্যবাদ বৌদি, পুজোর দিন একটু সাজুগুজু না করলে মনটা যেন কেমন কেমন করে। সেদিন যে শরীরটা খারাপ ছিল ,আমি খুব টেনশনে পড়ে গেছিলাম। যাহোক ভগবানের কৃপায় সাজুগুজু করে একটু বের হতে পেরেছি এবং মনটা ভালো হয়ে গিয়েছিল।

 3 years ago 

দীপাবলিতে আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো অনেক সুন্দর ছিল। মুহূর্তগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। হাসিমুখে পোজ নিয়ে উঠানোর দুজনের ছবিটা ক্যান্ডিড না হলেও বেশ সুন্দর লাগছিল। আপনার সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ দাদা ।আসলে এই কারণ ছাড়া হাসতে হাসতে অভ্যাস হয়ে গেছে, এই ধরুন যদি আমি পোস্টে না লিখতাম যে, আমি পোজ দিতেই হেসেছি,

তাহলে কিন্তু আপনারা বুঝতেন যে এটা আসলেই আমি হাসছিলাম ,তাহলে বুঝতে পারছেন তো আমরা কতখানি এক্সপার্ট!

 3 years ago 

শ্যামা মায়ের পূজা মন্ডব খুব সুন্দর তাছাড়া প্যান্ডেল অসাধারণ। সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন সবাই মিলে। ভাল থাকবেন । শুভেচ্ছা।

 3 years ago 

আপনিও সুস্থ থাকুন এই কামনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57408.28
ETH 3079.77
USDT 1.00
SBD 2.31