দাদা বৌদির ১৯ বছরের সাধনার ফল || পিসি মণি হয়ে গেলাম 💙❤️
বেশ কিছুদিন আগে, ৮ ই মে আমার পিসতুতো দাদার বউয়ের সাধ এর অনুষ্ঠান হয়। সেই নিয়ে আমি একটা বড় পোস্ট লিখেছিলাম। দাদা বৌদির ১৯ বছর হলো বিয়ে হয়েছে। কিন্তু সব কিছু থাকার সত্ত্বেও দাদা বৌদি হ্যাপি ছিলনা। বহুবার বহু ডক্টর দেখিয়েছে ওরা। কিন্তু বেবি হচ্ছিল না। এই করে করে ১৯ বছর পর বৌদির যেদিন প্রেগনেন্সির খবর আসলো। আমরা বাড়ির সকলে খুব খুশি হলাম। আমাদের পরিবারের সকলের ঘরে ঘরে বাচ্চা, আর সত্যিই বাচ্চা না থাকলে ফ্যামিলি যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বৌদি আজ ১৯ বছর হলো সেই কষ্ট টা পেয়েছে।
তো সেই সাধের অনুষ্ঠান নিয়ে যে পোস্ট লিখেছিলাম। সেখানে আমি আমার বৌদির জন্য আপনাদেরকে প্রার্থনা করতেও বলেছিলাম। আজ তার ফল আপনাদের চোখের সামনে। কালকে হঠাৎ বৌদি কে সন্ধ্যা বেলা নার্সিং হোম এ ভর্তি করতে হয়।আমার বাড়িতে ঈশানের শরীর ভালো না থাকায়, মা যেতে পারেনি। আমি আর বাবা তৎক্ষণাৎ বাইক নিয়ে সেখানে পৌছে যাই। সবার খুব চিন্তা হচ্ছিল।
বৌদিকে অনেক অনেক যত্ন করা হয়েছে খেয়াল রাখা হয়েছে এই কটা মাস। আর এই সময় কত ধরনের চিন্তা আসতে পারে।যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তারা জানে। বৌদি কে ওটি তে নিয়ে গেলো। এদিকে আমার বাবা চিন্তায় ঘেমে যাচ্ছে।আমার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। ওখানে মোট আমরা ১০ জন গিয়েছিলাম।
আমি এর আগে কখনও কারোর বেবি হওয়ার আগে নার্সিং হোম এ যাইনি।আমি ওই সব রক্ত , তারপর সিরিঞ্জ নানান কিছুতে খুব ভয় পাই। তাই হসপিটাল নার্সিং হোমে আমি যাইনি সেরকম। কাল আমি আর নিজেকে আটকাতে পারলাম না। বৌদির দিন রাতের কান্না গুলো আমার এখনও মনে আছে। মা হতে পারছেনা বলে মানুষটা কত ছ টফট করেছে, আমি একটু বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে নিজে বুঝেছি।
তাই আমি চলে গেলাম ওখানে। ওই কিছু মিনিটকে হাজার হাজার মনে হচ্ছিল। আর কান খাঁড়া হয়ে ছিল শুধু বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শোনার জন্য। আমি ভগবানের নাম নিচ্ছিলাম আর বলছিলাম বৌদি আর বেবি যেন সুস্থ থাকে। আর ওই টুকু সময় যতক্ষণ আমরা অপেক্ষা করেছি। আমাদের যে কি হচ্ছিল আমরা বলে বোঝাতে পারবোনা। তারপর খবর এলো অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। আর একজন নার্স এসে আমাদের জানালেন ছেলে হয়েছে রাত ৯.৫ এর সময়।
আমার বাবা আমার পিসতুতো দাদার চোখে তখন খুশির জল। আমার পিসির মুখে হাসিটা যেন ওই সময় সব থেকে শান্তির হাসি। আমি ভীষণ ভীষণ লাকি যে ওই মুহুর্ত টুকুর অভিজ্ঞতা আমার হলো। তারপর কিছুক্ষণ পর বেবি নিয়ে আসলো। আমাদের দেখালো। আমি তো দেখে ... ভেতরে যে কি হচ্ছিল। আমার কোনো ভাষা নেই। আমি এখনও এক্সপ্লেন করতে পারবোনা। ছোটো বাবুটা বৌদির পেটের ভেতর এতদিন কিভাবে ছিল, আমি এটাই ভাবছিলাম।
সাধের কিছু ছবি
কি মিষ্টি , আর ভগবানের কত বড় আশীর্বাদ ও, লাল সাদা হাত পা , ছোটো ছোটো। চোখ ছোটো ছোট, কিন্তু তাকাচ্ছে মিট মিট করে।
এই দৃশ্য দেখার অনুভূতি আমার পক্ষে বোঝানো সম্ভব নয়।
কালকে খুব ভালো দিন ছিল। ঈদ এর দিন। ঈশ্বর , আল্লাহ , ভগবান আমার কাছে সেই পরমাত্মার কোনো ভেদ নেই। আমি শক্তিতে বিশ্বাস করি ।আর তার অশেষ কৃপায় সব ঠিক মত সম্ভব হয়েছে।
দাদা বৌদির ১৯ বছরের সাধনার ফল ও। ওদের পরিবার এবারে সম্পূর্ণ হলো। বৌদি এবং পুচকে দুজনেই সুস্থ আছে। আর ওরা ভালো থাকুক। সুস্থ থাকুক। পুঁচকে বাবু ভালো মনের মানুষ হোক। এটাই চাওয়া।
আর এই নিয়ে আমি পাঁচ জনের পিসি হয়ে গেলুম। চার জন অলরেডি পিসি পিসি করে মাথা খারাপ করে দেয়। এবার এই বাবুর মুখ থেকে পিসি ডাক শোনার অপেক্ষায় আছি।
সকলকে অনেক ধন্যবাদ আবারও। আমি জানি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সবথেকে বেশি ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
শুনে খুবই ভালো লাগলো যে,অনেক দেরিতে হলেও তাদের ঘর আলো করে একজন নতুন সদস্য এসেছে।
মাশাল্লাহ,দেখতে খুবই সুন্দর হয়েছে।দোয়া করি,সবসময় যেন সুস্থ থাকে💙।
🙏🙏🙏🙏
এর আগের পোস্ট দেখে ছিলাম।আপনার বৌদির সাধের অনুষ্ঠানের ছবি। আজকে ভালো
লাগছে বাবুকে দেখে।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি ঠিক বলেছেন বাচ্চা ছাড়া একটা পরিবার যেন অপূর্ণ থেকে যায়। ১৯ বছর ধরে তাদের অপেক্ষা যে সার্থক হলো তা দেখে আজকে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনি অনেক সুন্দর লাগলো বাবুটাকে দেখে। যেন সব সময় ভালো এবং সুস্থ থাকে।
আমাদের পরিবারে আনন্দ ভরে গেছে যেন
এটা অনেক আনন্দের সংবাদ আপনি পিসি মনি হয়ে গেলেন। আর বেবিটি দেখতে অনেক কিউট হয়েছে। একটা পরিবারের প্রাণ হচ্ছে একটি সন্তান। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিদি।
অনেক কিউট!!😊😊🥰🥰🥰