তেলের পিঠে র রেসিপি || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন।আমিও সুস্থ আছি ।আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি তেলের পিঠে র রেসিপি ।যেহেতু পৌষ পার্বণ কিছুদিন আগেই গেল ,আশা করছি আপনাদের সকলের বাড়িতেও পিঠে ভাজার একটা ধুম উঠেছিল সেদিন।
ঠিক সেরকমই আমার বাড়িতে সেদিন পিঠে ভাজা হয়েছে ।আমার মায়ের শরীর অসুস্থ থাকায় পিঠাগুলো আমি বানিয়েছিলাম । সেই সুযোগে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করবো বলে ছবি তুলে রেখেছি।
আমার কাছে মনে হয় এই তেলের পিঠেটা যতটা তৈরি করতে সহজ ,ততটাই কিন্তু কঠিন ।কারণ এই পিঠের মিশ্রনটা অর্থাৎ ব্যাটার বানানোই হচ্ছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ঠিকমতো ব্যাটার না তৈরি হলে পিঠে কিন্তু হবেনা ।তেলের মধ্যে ভাসতে নিলেই ,হয় ফেটে যাবে অথবা ফুলে উঠবে না। অপরদিকে ভাসমান হবেনা ।আর পিঠে গুলোর ভেতরটাও কাঁচা থাকবে।
তাই সবদিক দিয়ে দেখতে গেলে উপকরণগুলো যতই কম হোক ,যতই সহজ হোক এবং পিঠে তৈরীর সময় কম লাগুক ,কিন্তু ঠিকমত ব্যাটার তৈরী না হলে সমস্যা কিন্তু ওখানেই হয়ে দাঁড়াবে।
আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি আমি কি কি পরিমানে কি কি জিনিস নিয়ে সবকিছু তৈরি করেছি, কিন্তু জলের পরিমাণটা তো সেভাবে আমি বলতে পারব না। তাও আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিচ্ছি সবটা ।আপনারা চাইলে এই রেসিপির ওপর আমার একটি ভিডিও ইউটিউবে বানানো রয়েছে। সেটা দেখতে পারেন। যদিও সেটা বহুদিন আগেকার ।তবুও এর লিংক আমি এখানেই দিয়ে রাখছি।
চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক , তেলের পিঠে তৈরি করতে কি কি লাগছে।
উপকরণ
সিরিয়াল নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | চালের গুড়ো | ৫০০ গ্রাম |
২ | ময়দা | ৪০০ গ্রাম |
৩ | সুজি | ১০০ গ্রাম |
৪ | নুন | ছোট এক চামচ |
৫ | খেজুরের ঝোলা গুড় | ৪০০গ্রাম |
৬ | গরম জল | পরিমাণ মতো |
৭ | তেল | পরিমাণ মতো |
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
প্রথম ধাপ |
---|
আমি যেহেতু এখানে অনেকটা পরিমাণ পিঠে বানাবো তাই একটা বড় দেখে গামলা টাইপের নিয়ে নিলাম। আপনারা অল্প পিঠে বানাতে চাইলে ভিডিওটিতে উপকরণ বলা রয়েছে, সেটা ফলো করতে পারেন।
যাইহোক আমি এরপর গামলায় ময়দা, চালের গুঁড়ো ,নুন এবং ঝোলাগুড় টা দিয়ে দিলাম ।আপনারা চাইলে এখানে পাঠালি গুড় ব্যবহার করতে পারেন ,তবে পাঠালি গুড়টাকে ভেঙে, তবে ব্যবহার করতে হবে ।আর এছাড়াও যদি আপনারা চান আখের গুড়ও ব্যবহার করতে পারেন ।যেহেতু এখন শীতকাল আর খেজুরের গুড়ের একটা আলাদাই মর্যাদা আছে শীতে, তাই পৌষ পার্বণ উপলক্ষে খেজুরের গুড় আমরা বেশি ব্যবহার করে থাকি। যাই হোক সবকিছুকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিচ্ছি আমি একটা বড় হাতা দিয়ে।
দ্বিতীয় ধাপ |
---|
প্রথম ধাপে আমি সুজি দিইনি, এবারে আমি এখানে এড করে দেব সুজি। তারপর অল্প অল্প করে উষ্ণ গরম জল দিয়ে আমি ব্যাটারটা তৈরি করে নেব ।খুব বেশি গাঢ় হবে না। আবার খুব বেশি পাতলা হবে না ।পাতলা করলে কিন্তু পিঠেটা ভাঁজতে গিয়ে ফেটে যাবে এবং চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে, একটা থকথকে ব্যাপার রাখতে হবে।
তৃতীয় ধাপ |
---|
ব্যাটার টা তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে আমরা এটাকে ৩০ মিনিটের জন্য ঢাকা দিয়ে রেখে দেব। যেহেতু এর মধ্যে সুজি দিয়েছি তাই জন্য এবং পুরো মিশ্রণটা যাতে ভালোভাবে তৈরি হয়ে যায়, এই কারণে আমরা এটা কিছুক্ষণ রেখে দেবো।
চতুর্থ ধাপ |
---|
গ্যাসের উপর একটা কড়াই বসিয়ে দিলাম এবং কড়াই টা গরম হলে তাতে দিয়ে দিচ্ছি সাদা তেল, আপনারা চাইলে সরষের তেল ব্যবহার করতে পারেন ।এখানে যেহেতু অনেকগুলো পিঠে ভাজতে হবে, তাই সেই পরিমাণ তেল এখানে ব্যবহার করতে হয়েছে।
এবারে এই তেলটা গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করবো।
পঞ্চম ধাপ |
---|
তেল গরম হয়ে গেছে কিনা এটা দেখার জন্য আপনি ওই ব্যাটার থেকে এক চামচ তুলে তেলের মধ্যে দিয়ে দেখতে পারেন, যদি ওপর দিকে ভেসে ওঠে, তাহলে জানবেন যে তেলটা গরম হয়েছে।
তারপর বড় হাতার এক হাতা ব্যাটার নিয়ে আমি কড়াই এর মধ্যে এক হাতা ব্যাটার ঢেলে দেবো। ঠিক এক জায়গায় ।চারিদিকে ছড়ালে হবে না ।আমাদের ব্যাটারটা যদি ঠিকঠাক তৈরি হয়ে থাকে ,অবশ্যই কিছুক্ষণ পরেই পিঠেটা ফুলে উঠবে। এবং তেলের উপর ভাসমান হয়ে যাবে। তারপর আমরা কয়েক সেকেন্ড পর ,এই পিঠেটা উল্টে দেবো এবং দুই পিঠ ভাল করে ভেজে নেব। ভাজার সময় আপনার গ্যাসের আঁচ মিডিয়াম থেকে হাই এর মধ্যে রাখতে হবে।
এই জায়গায় একটা কথা বলে রাখি ,যদি দেখেন যে পিঠেটা ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে না অর্থাৎ এক হাতা ব্যাটার দেওয়ার পর চারিদিকে ফেটে যাচ্ছে এবং ছড়িয়ে যাচ্ছে , ফুলে উঠছেনা তেলের মধ্যে । তাহলে জানবেন আপনার ব্যাটারটা পাতলা হয়ে গেছে অর্থাৎ আরো কিছু পরিমাণ ময়দা তার মধ্যে অ্যাড করে দেবেন।
এইভাবে আমরা সবকটা পিঠে লাল লাল করে ভেজে নেব। আর তৈরি হয়ে যাবে তেলের পিঠে।
টপাটপ্ খেয়ে নিন |
---|
পিঠের ঢিবি |
---|
আশা করছি আমি যেভাবে সবকিছু বর্ণনা করেছি ,আপনাদের এই পিঠে তৈরি করতে বেশি সমস্যা হবে না। শুধু একটা জিনিস মনে রাখবেন ,এই পিঠের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যাটার তৈরি করা। এই পিঠে খেতে দুর্দান্ত লাগে আমার ।আপনাদের কেমন লাগে আমি জানিনা। তবে এটা সত্যি অপূর্ব খেতে হয়। তাই পৌষ পার্বণ উপলক্ষে প্রথমেই আমি আমার পছন্দের এই তেলের পিঠের রেসিপি টা শেয়ার করে ফেললাম।
আবার ,সবথেকে ভালো যেটা ,এই পিঠেটাকে যদি চিনির শিরার মধ্যে আপনি দিয়ে ভিজিয়ে রাখেন, তাহলে কিন্তু সেটা মালপোয়া তে পরিণত হবে ।আশা করছি আমার আজকের পোস্টটি আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে ।সকলে ভাল থাকুন ।আজকের মত এখানেই শেষ করছি ।নমস্কার।
@isha.ish
আপু কি সুন্দর এবং মজাদার পিঠা বানিয়েছেন। ছবি দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে।তেলের পিঠা আমার অনেক পছন্দে।আমার না কখনো সুজি দিতে দেখিনি।তবে সুজি দিলে মনে হয় এই পিঠা খেতে আরো ভালো লাগে।
হ্যাঁ, একটু মুচ মুচে হয় , তাই সুজি দিয়েছি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বাড় আপু আমার পছন্দের একটি পিঠা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। তেল পিঠা আমিও খেতে খুবই ভালোবাসি। তবে ঠিক বলেছেন যদি ব্যাটার ঠিকমতো তৈরি না হয় তাহলে পিঠা ভালো হয় না। ভিতরে আটাই থেকে যায় বা ফুলে না । ধন্যবাদ আপনাকে আপু এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার তালের পিঠা টি আপনি খুবই সুন্দর ভাবে ভালোবেসে এবং গুছিয়ে বানিয়েছেন। আমারও একটা এরকম ধরনের রেসিপি জানা আছে, তবে সেটা একটু ছোট হয় এবং পদ্ধতি টা একটু অন্যরকম। আমাদের সেটা তালের বড়া রেসিপি। তবে আপনার এই রেসিপিটি খুবই সহজ ভাবে এবং সুন্দরভাবে আপনি উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
দাদা, তাল এর না , তেলের পিঠে গো।
শীতের সময় তেলের পিঠা খেতে বেশ চমৎকার লাগে। তেলের পিঠা গুলো খুবই সুন্দর করে বানিয়েছেন। প্রতিটি ধাপ অসাধারণ ভাবে বুঝিয়েছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
একদম ঠিক, শীত মানেই তেলের পিঠে।
দিদি তেলের পিঠা রেসিপি অসাধারণ হয়েছে। আমাদের এলাকাতেও খেজুরের গুড়ের রস বা আখের গুড় দিয়ে এই ধরনের পিঠা তৈরি করা হয়। এই পিঠা খেতে বেশ সুস্বাদু আমার অনেক ভালো লাগে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে তেলের পিঠা রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যে কেউ খুব সহজেই তেলের পিঠা রেসিপি তৈরি করতে পারবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।
আমি চেষ্টা করেছি যতটা ভালোভাবে রেসিপি বর্ণনা করা যায়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার তৈরি করা তেলের পিঠা রেসিপি দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে । শীতের সময় এসব তেলে ভাজা পিঠা খেতে খুবই ভালো লাগে। আপনার পোস্টের ভিডিওটি দেখে খুবই ভালো লাগলো অনেক সুন্দর ভাবে ভিডিওটি আপনি সম্পন্ন করেছেন । ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
দিদি অসাধারণ হয়েছে। আমার তো ৩য় ধাপের ব্যাটার গুলো দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। আর পিঠা গুলোর কথা কি বলবো একদম দারুণ হয়েছে। দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে। আর আপনার ভিডিও তে আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন দিদি, সব গুলো ধাপ আমি একদম পরিস্কার ভাবে বুঝেছি। সব মিলিয়ে দারুণ ছিলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি এতো সুন্দর তেলের পিঠের রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
হাহাহা, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।
পিঠা আমার খুব পছন্দের। আপনি খুব সুন্দর করে পিঠা তৈরি করেছেন। দেখি আমার খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
অনেক ধন্যবাদ দাদা।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।