জুতো সমস্যা || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
হে বন্ধুরা। আজ আমি আপনাদের সামনে নিয়ে এসেছি নিজেকে। নিজের এক অবান্তর রূপ কে। আমি যে কি পরিমাণ পাগল এবং আমার জন্য মানুষজন কি পরিমাণ পাগল হয়ে যায়। তার এক ঝলক দেখাতে ।
বহুদিন ধরে ভাবছি জুতো কিনবো। আমার আজ অব্দি যে কটা জুতো কেনা হয়েছে একটাও আমার পছন্দের নয় ।কেন জানিনা জুতো কিনতে গেলে আর কেনার কথা ভাবলে আমার মাথাটা পাগল হয়ে যায়। কারণ আমার জুতো পছন্দ হতেই চায় না।
আজ অব্দি যতগুলি জুতো আছে সব মায়ের পছন্দ। কারণ মা দেখতে পায় প্রত্যেকটা দোকান গুলো ঘুরেও আমার পছন্দ হয় না ।তাই মা নিজের মন মত একটা বাছাই করে দেয়।
স্বাভাবিকভাবে মায়ের পছন্দ মায়ের মত হয়ে যায় অর্থাৎ আমাকেও সেটা পড়িয়ে ফেলে। কলকাতায় আসার পর থেকেই ভাবছি ভালো দেখে জুতো কিনবো। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে অনেক আলোচনা করেছি তারপরে জানতে পেরেছিলাম কলকাতায় ধর্মতলা শ্রীলেদারস নামে একটা বড় জুতোর দোকান আছে ।সেটা নাকি শুধুমাত্র জুতোর দোকান এবং দোকান টা অনেকটা বড়। গোটা দুতলা জুড়ে খালি জুতো আর জুতো। ছোট ছোট বাচ্চাদের থেকে শুরু করে বয়স্কদের থেকে শুরু করে ছেলে-মেয়ে সবারই রয়েছে। সেখানে যাওয়ার অনেকদিন ধরেই প্ল্যান।
মাঝে একবার একটা শপিং মলে জুতোর দোকান এ ঢুকেছিলাম। ভীষণ পছন্দ হয়েছিল দুটো জুতো। কিন্তু আমার বন্ধুদের জন্য আমার কেনা হলো না। কারণ ওখানে নাকি খুব দাম চাইছিল, কিন্তু কোয়ালিটি অনুযায়ী আমি যা চাই তা কিন্তু আমার ঠিকই লাগছিল। ওদের কথা মত শ্রীলেদার্সের অপেক্ষায় থেকে গেলাম ।
এই ভাবে দিন পার হতে হতে একদিন সত্যি সত্যি শ্রীলেদার্স যাওয়ার প্ল্যান হলো। তার আগেই কৃষ্ণনগর এ কতটা দোকান ঘোরা হয়ে গেছে।আশেপাশে যে দোকান ছিল , সেখানে আমার পছন্দ হয়নি ।অবশেষে বন্ধুকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ধর্মতলা স্প্লানেট । দমদম থেকে , তারপর দেখলাম নিউমার্কেট। কলকাতা নিউমার্কেট যে কি পরিমাণ বিখ্যাত , তা হয়তো আপনারা সকলেই জানেন।
এখানে খুব অল্প দামে সস্তা জিনিস পাওয়া যায় যেগুলো বাজারে আমরা অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনি। কিন্তু এখানে প্রচুর দামাদামি করতে হয়, দামাদামি করতে করতে মানুষ পাগল হয়ে যায় ।তবুও দামাদামি করা ছাড়ে না। জামা কাপড়ের প্রচুর দোকান যেমন রয়েছে ।সাথে রয়েছে জুতোর প্রচুর দোকান ।এর সাথে রয়েছে জুয়েলারির দোকান। সবকিছু দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম শ্রীলেদার্স দোকানটাতে ।প্রথমবার দোকানে ঢুকেই আমি অবাক।
এত বড় একটা দোকান শুধু জুতোর জন্য। আমি থতমত খেয়ে গেছি পুরোপুরি ।দোকানের ভেতর আবার এস্কেলেটর রয়েছে ।যেটা আমার চক্ষু চড়কগাছ করে দিল । পুরো দোকানটা যেন ছোটখাট একটা শপিং মলের মতো ।সব থেকে আজব লাগলো দোকানের ভেতরে ভিড় দেখে। উরে বাপরে বাপ ! কিভাবে মানুষজন সব ওখানে এসে ভিড় করেছে। আর আমি একমাত্র অবান্তর একটা মঙ্গল গ্রহের প্রাণী ।যার জুতো আর পছন্দ হলো না। আমার বন্ধুরা এই নিয়ে ভীষণ হাসাহাসি শুরু করল ।যে আমি ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের খেতাব অর্জন করেছি।
মন বেজায় খারাপ হয়ে গিয়েছিল কারণ এত দূরে গেলাম শুধুমাত্র জুতো কিনতে। আর পছন্দ হলো না। তারপরে বাইরে বেরিয়ে এসে নিউমার্কেটের সস্তা দামে জুতো গুলো দেখার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেখানে কোয়ালিটি গুলো পছন্দ হলো না। আর দামাদামির বেশি কিছু তো আমার ভালো লাগেনা।
আমাকে আমার বন্ধু বলেই দিয়েছে আর কোথাও নিয়ে যাবে না জুতো কিনতে । কারণ আমার পক্ষে এই পৃথিবীতে কোনো জুতো পছন্দ হওয়া সম্ভব নয়। এইতো গেল আমার পাগলামো। তবে সত্যি বলতে জামা কাপড়ের ক্ষেত্রে আমার এরকম হয়না। পছন্দ হলে এক দেখাতেই হয় ।বেশি ঘাটাঘাটি করি না ।কেন যে জুতো কিনতে গেলে আমার এরকম হয় ভগবান জানে।
নিউমার্কেটে জুতোগুলো যখন চারিদিকে ঝুলছিল, মনে হচ্ছিল উপর থেকে যদি ধপ ধপ করে সবকটা ঘাড়ের উপর পরে ।কি লাগাই নাহ লাগবে। বেশ মজা লাগছিল চারিপাশে খালি জুতো ঝুলত দেখে। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আপনারা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করুন যাতে, আমি আমার পছন্দ মত একটা জুতো অন্তত কিনতে পারি। আমি আর এই অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না ।আশা করছি আমার আজকের পোষ্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে ।সকলে সুস্থ থাকুন। ভালো থাকুন।
কি বল আপু,,,,?🙄
এতো মার্কেট খোঁজার পরেও তুমি কোন জুতো চয়েজ করতে পারলেনাহ। আসলেই মনে হচ্ছে মঙ্গল গ্রহের প্রাণী। 😆😆 আর বান্ধবীরা ঠিকই বলেছে ওয়ার্ড রেকর্ড করে পেলেছো তুমি।
একদম দিদি, আমার অবস্থা কাহিল।
বেশি খোঁজাখুঁজি ফেল্লে এরকমই হয় ।বিশেষ করে মনের মতো না হলে যত জিনিসই থাকুক না কেন সেটা আর খুঁজে পাওয়া হয়না। যাইহোক, অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও জুতো খুঁজে পাননি সেটা আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরলেন পড়ে ভালো লাগলো।
হাহাহা, আমার পাগলামো বিরক্ত করে দিলো আপনাদের।
ছোট্ট বোন একটি গল্প নিশ্চই পড়েছো । জুতো নিয়ে । গল্পটি লেখার মূল কারন ছোট্ট বোন কে সব কিছুই বলা যায়। তবে কিছু মনে করো না কিন্তু বোন। একটি ছেলের এক জোড়া জুতো কেনার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু তার কাছে টাকা ছিল না । সে মন খারাপ করে একটি মন্দিরের সিড়ির উপর বসে ছিল । তখন দেখে একজন লোক মন্দির থেকে বের হচ্ছে কিন্তু তার একটি পা নেই। তখন সে নিজে নিজেই উপলদ্ধি করলো লোকটির পা নেই কিন্তু আমার পা আছে। সুতরাং আমি জুতোর জন্য মন খারাপ করছি কেন। এক দিন হয়েই যাবে । গল্পটি বলার মূল কারন হল জুতোর জন্য এতটা টেনশন এতটা চিন্তা করা ঠিক হবে না। যা পাবে তাই পরবে। দেখবে নিজের থেকে একটা শান্তি অনুভব করবে। সোজা বাটায় চলে যাবে ফিক্সড প্রাইস টেকেও বহুদিন। আমি বাটাই পছন্দ করি এবং ওখান থেকেই কিনি। ভাল থেকো ছোট্ট বোন।
নাহ গল্প টা শুনিনি আগে দাদা, কিন্তু অনেক সুন্দর ছিল। জুতোর কাহিনী এখনো শেষ হয়নি আর একটা পোস্টের মাধ্যমে সবটাই লিখবো। আর বড় দাদা কিছু বললে ছোট বোনের ভালোর জন্যই বলে । তাই আমার মনে করার প্রশ্নই উঠছে না। তুমিও ভালো থেকো দাদা।
হাহা। দিদি এত বড় একটা দোকান আর আপনার একটা জুতোও পছন্দ হলো না!! আপনার বন্ধুরা ঠিকই বলেছে আপনি ওয়াল্ড রেকর্ড করছেন। দোয়া করি যাতে খুব শীগ্রই আপনি পছন্দ মত এক জোড়া জুতা কিনতে পারেন। ভাল লেগেছে আপনার লেখাটি। ধন্যবাদ
হাহাহা, আপনার কথা ভগবান শুনুক একটু। ভালো থাকুন দাদা।