কাশ্মীর থেকে ফেরার কিছু গল্প || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে ভালো আছেন। বেশ অনেকদিন আগে আমি কাশ্মীরে নিয়ে পোস্ট করেছিলাম আর বলেছিলাম আর মাত্র দুটো তিনটে পোস্ট করলেই কাশ্মীর নিয়ে পোস্ট লেখা আমার শেষ। ফিরে আসার প্রথম পার্ট নিয়ে লাস্ট পোস্ট হচ্ছিল আমার আজকে ফিরে আসার সেকেন্ড পার্ট লিখছি বেশ অনেকদিন পর।
কাশ্মীরি কাওয়া শ্রীনগরে এসে যখন খেলাম, তার পাশেই একটি দোকান আমার চোখে পড়ে ,কাশ্মীর থেকে যাচ্ছি সবার জন্য কিছু না কিছু জিনিস তো নিয়েছি ।কিন্তু খাবার জিনিস কারো র জন্য কিছু নেওয়া হয়নি ।ভেবেছিলাম কেশর আর এখানকার ড্রাই ফুটস নিয়ে যাব। যেহেতু সেগুলো এখানে একটু সস্তা। তাই নিয়ে যাব নিজের জন্য এবং পরিবারের আরও কিছু মানুষ জনের জন্য ।
সেই মতো ওখানে ওই দোকানে ঢুকলাম, দোকান টা বেশ বড়সড়। ঢোকার সাথে সাথে দেখলাম ছোট ছোট ভাবে এক-একটা ড্রাই ফ্রুটস এর জন্য একটা কাউন্টার রয়েছে সেই দোকানের ভেতরে ।এরকম টাইপের দোকান আমি পেহেলগাম এ আরো কয়েকটা দেখেছি ।
বলতে গেলে কাশ্মীরের অনেক জায়গায় ড্রাই ফ্রুটস এর দোকান প্রচুর রয়েছে। বিশেষ করে কেশর আর আখরোট এখানকার যেহেতু সবথেকে বেশি বিখ্যাত ।তাই মানুষজন এখানে আসলেই অবশ্যই এগুলো নিয়ে যায়।
সেই মত বেশি করে করে সব রকম ড্রাই ফ্রুটস নিয়ে নিলাম। কিছুটা বাড়ির জন্য আর কিছুটা মানুষজনকে দেবো বলে। তারপর তো আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে সোজা চলে গেলাম ডাল লেক দেখার জন্য। আমি এর আগেই পোস্টে বলেছিলাম যে সকালবেলায় তাড়াতাড়ি উঠে রওনা দিয়েছিলাম শুধুমাত্র ডাল লেক দেখবো বলে।
যদি ও আমাদের ফ্লাইট এর টাইম ছিল দুপুর বেলা আড়াইটে নাগাদ ।তবুও আমরা সকাল-সকাল পৌঁছে যাই ,কারণ মানুষের মুখে ডাল লেক এর সৌন্দর্য কতটা,, সেই ব্যাপারে যা যা শুনেছি ,সেটা আসলেই প্র্যাকটিক্যালি অনুভব করার খুব ইচ্ছা ছিল। সেই মতো ওখানে পৌঁছে গিয়েছিলাম ।আর প্রায় দেড় ঘণ্টা ডাল লেক এ সময় কাটাতে পেরেছি।
কিন্তু তাড়াহুড়ো করে যা হয় আর কি ।ডাল লেক মানেই হাউসবোটে একটা রাত কাটানো ।যেটা সম্ভব হয়নি আমাদের পক্ষে ।কারণ আমাদের দীপাবলীর আগেই বাড়ি ঢোকার একটা তাড়া ছিল।
আর আমার নিজের মতামত যদি বলি ডাল লেক তো অবশ্যই অনেক সুন্দর একটা জায়গা চারিদিকের পাহাড় এর মাঝে অত বড় একটা রদ সত্যিই অপূর্ব। কিন্তু জানুয়ারি মাসের দিকে অর্থাৎ এই সময়ে গেলে মজাটা হয়তো আরো বেশি পেতাম কারণ এই সময় লেক পুরোপুরি বরফে ঢেকে রয়েছে চারিদিকের পাহাড় গুলো বরফে ঢাকা আর এই সৌন্দর্যটা অসাধারণ দেখতে লাগতো ভাগ্যে থাকলে অবশ্যই এই সময় আরেকবার যাওয়া হবে।
ডাল লেক ভ্রমণ করার পর আমরা সোজাসুজি শ্রীনগর এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেলাম। এয়ারপোর্টে ঢুকেই যেভাবে চেকিং শুরু হল একটার পর একটা করে ,আপনাদের বলে বুঝাতে পারব না। খুবই করাকরি ছিল। প্রায় তিন চার জায়গায় চেকিং হয়েছে পুরোপুরি ভাবে।
তারপর এয়ারপোর্টে হালকা করে একটু খাবার খেয়ে আমরা নিজেদের ফ্লাইট এর টাইম অনুযায়ী ফ্লাইটে উঠে পড়লাম ।আর সেই স্বপ্নের জায়গা কাশ্মীরকে ছেড়ে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
ওখানে গিয়ে বাবা একটা কম্বল কিনে ছিল। কারণ প্রচন্ড ঠান্ডা ছিল। তাই জন্য সেই কম্বলটা কেউ আমরা সাথে করে নিয়ে এসেছি। শ্রীনগর থেকে দিল্লি এয়ারপোর্টে প্রথমে আমাদের নামতে হলো।
তারপর দিল্লি থেকে আমাদের কলকাতা ফ্লাইট রাতের দিকে ছিল ।তাই জন্য কলকাতায় নামতে নামতে বেশ অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। মাঝে ফ্লাইট এর মধ্যেই একটু খাবার-দাবার খেয়ে নেওয়া হয়েছে।
চারিদিকের ক্লান্তি থাকলেও তার মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছিল কাশ্মীরের প্রতিচ্ছবি গুলো আমার চোখের সামনে ।ভেসে বেড়াচ্ছিল সাথে সাথেই আমার ব্যস্ততার জীবনের কিছু দৃশ্য ।অর্থাৎ বাড়ি ফিরেই যে কাজে লেগে পড়তে হবে তার চিন্তাভাবনা।
কলকাতা নামার পরে একদম বাইরে বেরিয়ে আসতে আসতে এগারোটা বেজে গেছে। তারপর সেই যে শ্রীনগরে আমরা আমাদের লাগেজ গুলো দিয়েছিলাম। সেগুলো বেল্টের মাধ্যমে ঘুরতে ঘুরতে যখন আমাদের কাছে এসে পৌঁছল। তা আমাদের নিতে নিতেই সাড়ে এগারোটা বেজে গেছে।
কারণ অতো লাগেজ এর পেছনে সেই কোণে লুকিয়ে ছিল আমাদের লাগেজগুলো। আর এই লাগেজের জন্য অপেক্ষা করা সত্যিই বিরক্তিকর একটা ব্যাপার, যেহেতু এতটা জার্নি হয়েছে ।আমাদের ধৈর্য হারিয়ে যাচ্ছিল।
তারপরে তো আর এক খেল। আমাদের গাড়ির ড্রাইভার কাকু আমাদের খুঁজে পাচ্ছিল না। এই নিয়ে কিছুক্ষণ দেরি হলো ফোনে ফোনে। তারপরে আমাদের যখন খুঁজে পেল ,আমরা গাড়িতে উঠে পড়লাম ।আর যাত্রা শুরু হলো বাড়ির দিকে কৃষ্ণনগর এ । কলকাতা থেকে আমার বাড়ি আসতে আমাদের গাড়িতে প্রায় চার ঘণ্টা লেগে যায় । যেহেতু জ্যাম লেগেই থাকে।তাই জন্য চার ঘন্টায় বলবো। তবে হ্যাঁ ট্রেনে তো আড়াই ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায়।
গাড়িতে উঠে আমি যে একটু শান্তি পাব আমি যে একটু রেস্ট করব। তাও আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি ।কারণ পোস্ট করা তখনো বাকি ছিল। আপনারা বিশ্বাস করতে পারবেন না ,আমি এই আমার পুরো যাত্রাকালে মাঝেমধ্যেই আমার ফোনের নোটসে কি পোস্ট করব, তার লেখাগুলো লিখে রেখেছিলাম ।সাথে সাথে গাড়িতে উঠে এই পোস্টটা সাজিয়ে ফেলে পোস্ট করে ফেললাম।
আজ অব্দি আমার হাজার অসুবিধা সত্বেও আমি ৫ মিনিটের জন্য হলেও পোস্ট লিখতে বসেছি। পোস্ট যে করেই হোক করেছি। আর আমার মনে হয় এটা একটা খুব ভালো অভ্যেস।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে তিনটে /পৌনে চারটে বেজে গিয়েছিলো। তারপর ফ্রেশ হয়ে একদমই ভোর। তারপর একটা টানা ঘুম দিয়েছি। সকাল অব্দি টানা ঘুমের পরও শরীরের ক্লান্তি তখনো কাটছিল না।
যাইহোক আজকের মত এখানেই পোস্ট শেষ করছি । সকলে ভাল থাকুন নমস্কার।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপু আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। কাশ্মীর থেকে ফিরে আসা কিছু কথা আমাদের মাঝে সুন্দর করে আপনি উপস্থাপন করেছেন। সত্যি অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে দাদা
ওয়াও আপু ভালই লাগলো আপনার কাশ্মীর থেকে ফেরার গল্পটি পড়ে।আর ড্রাই ফুড গুলো দেখে তো লোভ লেগে গেলো। সত্যিই অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন আপনি কাশ্মীর এবং কাশ্মীরে যাওয়া-আসার পথে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
সত্যি দারুন খেতে ড্রাই ফ্রুটস গুলো।
লেখার পাশাপাশি তুমি যে সুন্দর ফটোগ্রাফিও করো সেটা তো আমি এই প্লাটফর্ম এ না আসলে জানতেই পারতাম না😂।যাইহোক খুব ভালো ঘুরেছিস সে গল্প তো আগেই শুনেছি।তবে ওই ড্রাইফুড গুলো আগে দেখিনি,আমার জন্যে যেনো কিছু তোলা থাকে 😌।
এখনও আছে, বাড়িতে শিগগির আয়, নাহলে একটা ভাগ পাবিনা। কমেন্ট করতে থাক।🤪
কাশ্মীরের ডাল লেক কখনো দেখা হয়নি দিদি। আপনারা তাড়াহুড়োর মধ্যেও সময়টা বেশ উপভোগ করেছিলেন বোধহয়। দীর্ঘ একটা জার্নির পর বাড়ি ফেরা সত্যি এটা আনন্দ দায়ক। একটা জিনিস আমার কাছে ভালো লেগেছে শত অসুবিধা থাকা সত্বেও আপনি ঠিকই পোস্ট রেডি করেছেন। অনুপ্রাণিত হলাম দিদি। ভালো থাকবেন এই কামনাই করি।
অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।
আপু অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দিয়েছেন আপনি। কাশ্মীর থেকে ফেরার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা গুলো জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগলো। আর আপনার পোষ্টের বিভিন্ন ফটোগ্রাফি গুলো অত্যন্ত মনমুগ্ধকর হয়েছে। এত সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।