বাবা জলেশ্বর এর গল্প|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। কালকে মহা শিবরাত্রি দিনটিকে আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছিল। কিন্তু নিজের অজান্তেই ভুলবশত কয়েকটা লাইন আমি লিখে ফেলেছিলাম যেগুলো ভুল ছিল। তাই আমাদের এই ঘূর্ণি শীতলার জলেশ্বর বাবা কে কেন্দ্র করে যে পুরনো গল্পটি রয়েছে সেটি একেবারেই সঠিক ভাবে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো বলে, আজ চলে আসলাম।
যোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ী জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমাদেরই এই ঘূর্ণি এলাকায়, ৩০ সেপ্টেম্বর ,১৮২৮ সালে। উনি মহাবতার বাবাজি র শিষ্য ছিলেন। এনার মাধ্যমেই তিনি ক্রিয়া যোগের কৌশল গুলির সাথে পরিচিত হন।ওনার অনেক শিষ্য রয়েছে ভারতবর্ষে।
লাহিড়ী বাবা অর্থাৎ যোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ীর গৃহদেবতা ছিলেন এই শিবলিঙ্গ। কর্মসূত্রে কৃষ্ণনগর ছেড়ে বাবা বেনারস যাত্রা করেন। এদিকে জলঙ্গী নদীর ভাঙ্গনের কারণে এই শিবলিঙ্গটি নদীর জলে তলিয়ে যায়। জলঙ্গি নদী তে এই ঘূর্ণি এলাকার মানুষজন স্নান করতে যেতেন। এমনই এক সকালে সবাই মিলে যখন স্নান করছিলেন। দাস পাড়ার একজনের পায়ের সাথে এই শিবলিঙ্গটি ঠেকে। স্থান - ঘূর্ণি পুতুল পট্টি সংলগ্ন কলের ঘাট থেকে দাস পাড়া ঘাটের মধ্যে।
যোগী বাবা শ্যামাচরণ লাহিড়ীর গৃহদেবতা কে চিনতে পেরে ,এই এলাকার বাসিন্দারা শিবলিঙ্গটি কে জল থেকে উদ্ধার করে,তারপর দাস পাড়া প্রাইমারি স্কুলের পাশে কোন মনসা গাছের তলায় শিবলিঙ্গ টি কে রাখা হয়।ওই দিন রাতে ঘূর্ণি শিব তলা সংলগ্ন অঞ্চলে একটি পরিবারকে মহাদেব স্বপ্নাদেশ দেন যে, "আমাকে জনমানবের মধ্যে অর্থাৎ যেখানে লোকসমাগমও বেশি সেরকম এলাকায় স্থাপন কর"। পরিবারের নাম নিয়ে মতভেদ আছে, অনেকে মনে করেন সেটা ঘূর্ণি শিব তলা এলাকার সান্যাল বাড়ি অথবা অনেকে মনে করেন সেটা মৈত্র বাড়ি।
এই স্বপ্নাদেশ এরপর ওই মনসা গাছের তলা থেকে এই শিবলিঙ্গটি কে তুলে নিয়ে এসে শিব তলা বারোয়ারি তে সবাই মিলে স্থাপনা করে , শুধুমাত্র কিছু ভাঙা ইট এবং কাদা মাটির ব্যবহার করে। আর তারপর থেকে এখনও অব্দি ঠিক একইভাবে বাবা জলেশ্বর এর নিত্য পুজো হয়ে আসছে।
এই মন্দিরটির বহুবার সংস্করণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই শিবলিঙ্গ টি কে নড়ানো হয়নি আর। জল থেকে উদ্ধার করায় এলাকাবাসী এই শিব লিঙ্গের নাম দেয় জলেশ্বর বাবা।তারপর আস্তে আস্তে আমাদের এই পাড়ার উদ্যোগে মন্দিরের প্রাঙ্গণ আরও উন্নত হয়েছে। বহু বছর আগের এই ঘটনা এখনও শোনা যায়।
আমার বাবা এই ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে পারেন দুজন বৃদ্ধ এর কাছ থেকে। ওনাদের বয়স প্রায় একশো বছরের কাছাকাছি। এই ঘটনা সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজির পর সমস্ত তথ্য গুলো পাওয়া যায়। আর আমি আমার বাবার কাছ থেকেই সমস্ত তথ্য জোগাড় করে আপনাদের সাথে পুরো ব্যাপারটা ভাগ করে নিতে পারলাম।
তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে দুজন এর থেকে - ডঃ কানাই বিশ্বাস এবং বেলা রানী লাহিড়ী।
আমাদের চারিপাশে রকম নানান ঘটনা এবং নানা কথার সম্মুখীন আমরা হই। অনেকেই সমস্ত ঘটনাগুলো কে বিশ্বাস করে আবার অনেকে বিশ্বাস করে না। আসলেই পৃথিবীটা বিশ্বাসের ওপর বেঁচে থাকে। তাই সকলের মতামত কি এবং সকলের নিজস্ব বিশ্বাসকে আঘাত না করে সমস্ত কাজ করা উচিত।
আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে। সকলে ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।
সংগ্রহের অভাবে অনেক সময়ই এধরনের অনেক তথ্য হারিয়ে যায় আমাদের মাঝ থেকে। আপনি আপনার বাবার কাছ থেকে জানতে পেরেছেন আবার আপনার কাছ থেকে হয়তো জানতে পারবে অন্য কেউ। এভাবেই চালু থাকবে বাবা জলেশ্বর এর উৎপত্তি কাহিনী। জল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাই নাম হয়েছে জলেশ্বর বিষয়টা কিন্তু দারুণ। আসলে ধর্ম টা পুরোপুরি বিশ্বাস এর ব্যাপার। কারো উচিত নয় অন্যের ধর্মকে আঘাত করা। শুভকামনা রইল
একদমই তাই। পুরো কমেন্ট টাই যথাযথ ও ঠিক ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
দিদি আপনার গল্পটা পড়ে ভালোই লাগলো ৷ জানতে পারলাম আরো একটি শিব মন্দির তৈরির পিছনের গল্প ৷
অনেক ধন্যবাদ।