ভিজে পূজো || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
লেখার শুরুতেই আমার প্রিয় পরিবারের সকল বন্ধুদের জানাই অক্ষয় তৃতীয়া এবং ঈদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। আপনাদের সকলের মঙ্গল হোক।
আক্ষেপ কখনও মেটে না। বহু দিন আগে , অর্থাৎ আগের মাসে ২৬ তারিখে হুট করে প্ল্যান করে যে বাড়ি আসলাম। মা এর একটা আবদার ছিল - পরীক্ষা শেষ যখন, চলে আয় তাড়াতাড়ি , বেশ কিছুদিন থাকতে পারবি। পুজো আছে। সব পার করে যাবি।
আমিও দৌঁড়ে চলে এসেছিলাম সেদিন। কত প্ল্যান নিয়ে। একের পর এক অনুষ্ঠান আছে। তাই মজাই লাগছিল। আজকের কথায় আসি এবারে। আজ তিন তারিখ। আজ অক্ষয় তৃতীয়া আর আজকেই ঈদ।
অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষ্যে আমাদের যে দুটো শো রুম আছে। ওখানে পূজো হয় প্রতি বছর। আমার বাড়িতে বারো মাসের তেরোটা পার্বণই পালন করা হয়। সাথেই এই অক্ষয় তৃতীয়া র পূজো টাও হয়। পয়লা বৈশাখে অনেকে পুজো করে। কিন্তু আমাদের আজকের দিনে হয়।
লক্ষ্মী ৪ টে গণেশ থাকে ৪ টে । আসলে দুই দোকান , ফ্যাক্টরি ,বাড়ির টোটাল চার জায়গার পুজো একজায়গায় করে নেওয়া হয়। লাল লক্ষ্মী গণেশ একদম। আমাদের কাজের সকল স্টাফ আজকের দিনের জন্য প্রতি বছর অপেক্ষায় থাকে। দুপুর বেলা বেশ জম্পেশ খাওয়া দাওয়া করা হয়। সবাই মিলে খুব মজা করে ওরা। সাথে আমরাও থাকি।
কাল থেকে আমার শরীরটা হটাৎ খারাপ। এখানেই বাঁশ টা খেলাম। মন টা খারাপ হয়ে গেল যে মজা করতে পারব না। আমার মন খারাপ দেখে হয়তো আকাশ বাবুরও মন টা ভিজে গেল, তাই হয়তো রাত থেকে কান্না শুরু করলেন। সকালে যখন জাগা পেলাম। দেখি খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। তারমধ্যে পুজোর জোগাড় করছে মা বাবা , আর দাদারা।
আমার বাড়ি থেকে সব গোছ করে মা সব পুজোর জিনিস রেডি করে দেয় । ওরা গাড়ি করে নিয়ে যায়। আমার বাড়ি থেকে আমাদের শো রুম ৩ মিনিট লাগে গাড়িতে। খুব কাছে। আর ওই বৃষ্টিতে এই হুলুস্থুল হচ্ছে।আমি হাসবো না কাঁদব।
হাসির কারণ হলো, আমাদের ব্রাহ্মণ ঠাকুর কেমন মানুষ, তার খুব ভালো ডেফিনেশন এর আগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। ঠিকাছে আজ আবারও বলি। আমাদের ব্রাহ্মণ ঠাকুর ভীষণ ইয়ং। দেখতে ভারী মিষ্টি। ওনার টাইম তো টাইম। আটটায় বললে আটটা। আটটা র একটু আগে হবে না। একটু পরে হবে না।
শীত গ্রীষ্ম বর্ষা তুফান যাই হোক। আমি আজ এত বছর হলো দেখছি ওনাকে। আমাদের পুজোর জোগাড় হোক আর নাহ হোক উনি টাইম এই হাজির হন। অন্য বাড়ির মত হয় না যে, পুরুত মশাই এর জন্য গালে হাত দিয়ে বসে থাকতে হয়। এটা যতটা ভালো , ততোটাই বিপদের।
পূজোর দিনগুলোতে বাড়ির লোকজন পড়ি কি মরি পুজোর জোগাড় করতে লেগে পড়ি সবাই মিলে। যদি পুজোর জোগাড় সম্পূর্ণ না হয়ে ওঠে পুরোহিত মসাই এসে আমাদের সাথে হেলপারি করা শুরু করেন যেটা দেখে আমার প্রাণটা ভরে ওঠে।
এছাড়াও আর একটা ভালো দিক ওনার প্রসাদের ওপর কখনোই কোনো লোভ নেই ।ওনার যেন প্রসাদ না খেলেই ভাল হয় । টিংটিং পুরোহিত মশাই মন্ত্র পড়েন টেনে টেনে ।সুর করে। মন্ত্রের কিছু শব্দ কর্ণকুহরে ঢোকার আগে মাথায় দুবার টোকা মেরে তারপরে কানের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। আমি কিছু শব্দের মানে বুঝতে পারিনা। অঞ্জলি দেওয়ার সময় কি বলল তা দুইবার ভাবতে হয়।
যাই হোক পুরোহিত মশাইয়ের খুব ভালোভাবে ডেফিনেশন টা আজকে আবার দিয়ে ফেললাম। বৃষ্টি আজকের সব খারাপ করে দিলেও। মা যখন বাড়ি এসে বলল পুজোটা খুব সুন্দরভাবে হয়েছে ওটা শুনে শান্তি পেলাম। আমি যেহেতু বাড়ি থেকে বেরোতে পারিনি মাকে বলেছিলাম ছবি তুলে আনতে। তাই আপনাদের সাথে ছবিগুলো শেয়ার করতে পারলাম।
সেই কোন ভোরে উঠে মা পূজার জোগাড় করতে লেগেছে। বাড়ির পূজো সেরে দোকানের পুজোর জন্য সমস্ত জোগাড় করেছে। যদিও সাথে অনেকেই হেল্প করছিল। তবুও মাকে দেখে বেশ উৎসাহিত হই এইসব কাজে। জানি এবারে পুজো নিয়ে আমার যে আনন্দগুলো ছিল সেটা সম্পূর্ণ হলো না ।আক্ষেপটা মিটলোনা। তবুও আপনাদের সাথে ভালো ভালো মুহূর্তগুলোকে এবং হাসির কিছু তথ্য শেয়ার করতে পেরে, খুব ভালো লাগলো। সকলে ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।
@isha.ish
দিদি নমস্কার
আশা করছি ভালো আছেন?দিদি আমি আপনারা অক্ষয় তৃতীয়া ভিজে পুজো সম্পূর্ন পোষ্টটি পড়লাম৷ যাই হোক এতো ঝড় বৃষ্টির মাঝেও পুজো টা ভালো ভাবে সম্পর্ন হয়েছে এটাই বিশাল ব্যাপার ৷আর হে দিদি শুনে খুব
ভালো লাগলো ইয়াং ব্রাহ্মণ আছে ৷যে দেরি না করে তারাতারি পুজো করতে আসে ৷ দিদি আমাদের একটা ব্রাহ্মণ আছে একসাথে অনেক গুলো পুজো নেয় ৷আর যাবার বেলা অনেক দেরি ৷পুজোর সব কিছু রেডি করে বসে থাকতে হয় তাও ব্রাহ্মণ মশাই নেই ৷মাঝে মাঝে বিরক্তি লাগে ৷
যাই হোক পোষ্টটি পড়ে ভালো লাগলো
হ্যাঁ, সবার বাড়িতেই এই সমস্যা, শুধু আমার বাড়ি বাদে।
ভিজে পুজো উপলক্ষে আপনাকে শুভেচ্ছা দিদি। সেই সাথে ঈদ মোবারক। আপনি খুব সুন্দর ভাবে আপনাদের পুজো উৎসব পালন করেছেন । পূজা সম্পর্কে আপনি খুব সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন বিশেষ করে পুরোহিত মসাই সম্পর্কে। আপনাদের জন্য শুভেচ্ছা রইল।
হাহাহা, ভালোই টাইটেল টা দিয়েছি।মজার।
এটা কি সেই পুরুত মশাইটা?🙂 সে যাক, ভালো লিখেছিস!
একদম ঠিক! ত্রম বকবকে গৌরী 😜😜😜🤣🤣
😂😂😁
আনন্দের সাথে আসে হাসিটা
ব্যস্তের সাথে সুখ,
মঙ্গল করুক মঙ্গল ময়ীরা
আশায় বাধিলাম বুক।
ইয়াং ঠাকুরের কথার সাথে
কাজেরও আছে মিল,
অপূর্ণ কাজে সহযোগী হয়ে
কাজেও রাখেন মিল।
ঈদের দিনে অক্ষয়া তৃতীয়া
পালন করলেন জোঁশে,
আনন্দ এর সাথে পূজা পালন
ব্যবসায় যেন মহা গতি আনে।
ওরে বাবারে! কবি কবি! এত সুন্দর ছন্দ পান কোথা থেকে!?? অনেক ধন্যবাদ। প্রণাম নেবেন।
ছোট্ট বোন প্রথমেই বলে নেই ঐ যে পুরোহিত মশাইয়ের এর ডেফিনেশন দিলে সেটা ভালই ছিল তবু তো কানের উপর থেকে হাত ঘুড়িয়ে নিয়ে আসে দু একটা শব্দ বুঝতে অসুবিধে হয়। কিন্তু আমাদের পুরোহিত মশাইয়ের তো ওঁম শব্দটি খুবি জোরে বলে তারপর কি যে বলে বুঝতে বুঝতে পূজো শেষ। হা হা।তবে সত্যি বলতে গণেশ ঠাকুর গুলো কিন্তু সুন্দর হয়েছে। মোট মনে হচ্ছে তিনটে লক্ষ্মী আর তিনটে গণেশ ঠাকুর। যাই হোক মায়ের ডাকে ছুটে আসতেই হবে আর তাছাড়া পরীক্ষা তো শেষ। তবে মন খারাপের কিছু নেই জীবনে এমন অনেক সমস্যা তৈরী হয় যেটা কাক্ষিত থাকে না হটাৎ করেই হয়ে যায়। ইশ্বর যা করেন ভালোর জন্যই করেন। আসছে বছর আবার হবে। ধন্যবাদ বোন, শুভেচ্ছা রইল ।
অনেক ভালো মন্তব্য করেছেন দাদা। আপনাদের পুরুত মশাই এর কথা শুনে আমার মাও হেসে উঠলো। খুব ভালো থাকুন। এভাবেই পাশে থাকুন দাদা।