মহা শিবরাত্রি || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
ওঁ ত্রৈয়ম্বকম্ য়জামহে
সূগন্ধিম্ পূষ্টিবর্ধনম্ ।
উর্বারূকমিব বন্ধনাম্
মৃত্যুরমোক্ষিয় মামৃতাত।
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজ মহা শিবরাত্রি অর্থাৎ শিব চতুর্দশী । পুরাণের কথা অনুযায়ী এই রাত্রি মহাদেব এবং মা পার্বতী র মিলনের দিন,এই রাতে ওনাদের বিবাহ হয়। মহাদেব এই রাতেই তার প্রতীক লিঙ্গ অর্থাৎ শিবলিঙ্গের রূপ প্রকাশ করেন । এর সাথেই হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী এই রাতে মহাদেব সৃষ্টি ,সংরক্ষণ এবং ধ্বংসের নৃত্য করেন ।যা তান্ডব নামে পরিচিত।
হিন্দু ঘরে ঘরে এই শুভ দিনটিকে উদযাপন করা হয় খুবই ধুমধাম করে, বেশিরভাগ মেয়ে বউ রা চতুর্দশী দিন উপোস করে থাকে। চার প্রহর শেষ হলে তবেই খাওয়া-দাওয়া করে। অনেকেই চার প্রহর মহাদেবের পুজো করে। আবার অনেকে প্রথম প্রহরে পুজো শেষ করেই মুখে কিছু দেয়।
আমি ছোট বেলা থেকে দেখে এসেছি আমার মা এই শিব চতুর্দশী পালন করে আসছেন। তবে আমি কখনো সেই ভাবে অর্থাৎ আজকের দিনে যেভাবে মেয়ে বৌ রা উপোস করে পুজো করে ,সেরকম কখনো করিনি। বছরে শুধু ওই একবার অর্থাৎ জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন কি আমি উপোস থাকি মন প্রাণ দিয়ে ভক্তি ভরে।
আজকে যেহেতু পুজো কালকে বাবার সাথে বেরিয়ে বাজার থেকেই ফল-ফুল বাকি যা যা জিনিসপত্র লাগবে ,সবই কিনে এনেছিলাম মায়ের জন্য। যেহেতু বাড়ির পাশেই আমাদের ঘূর্ণি শিবতলা বারোয়ারি। লাহিড়ী বাবার স্থাপনায় বাবা জলেশ্বর এর মূর্তি ওখানে রয়েছে। সোমবার করে এবং নানান শুভ দিনগুলোতে ওখানে খুব ভালোভাবে পুজো হয়।
আমাদের বাড়িতেও একটি কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গ রয়েছে। তাই আমার মা দু'জায়গায় পূজা দেবে। কালকে রাতে সামান্য কিছু মুখে দিয়ে আজ সকাল থেকেই মা উপস ছিলেন। সকালবেলায় পূজার জোগাড় করে সমস্ত কিছু করার পর, সন্ধ্যের দিকে গিয়ে পূজা দিয়ে এসেছেন বাবা জলেশ্বর কে।
যাই হোক মা সন্ধ্যের পর মন্দির থেকে পূজা দিয়ে এসে বাড়িতে পূজার জোগাড় শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পরেই যেহেতু ব্রাহ্মণ আসবেন।
আমার মা সকালবেলায় বাড়ির শিবলিঙ্গটি কে পুজো দিয়েছিলেন, তবুও ইচ্ছা ছিল মন্দিরে যে পুরোহিত পূজা করছেন, তার মাধ্যমে আরেকবার পূজো সেরে নেবেন ।সেই মতই প্রথম প্রহরে সমস্ত কাজ মিটিয়ে, যখনই পুরোহিত সময় পেলেন ।চলে এলেন আমাদের বাড়িতে। পুজো শুরু হল। প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে একটানা মন্ত্র জপ করলেন তিনি ।সারা বাড়ি ঘর যেন মায়ায় ভরে গেল।
সংস্কৃত এই মন্ত্রের উচ্চারণ করাই হচ্ছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ।সবাই সেটা পারে না। কিন্তু আমাদের মন্দিরের পুরোহিত সংস্কৃত উচ্চারণ করেন খুবই স্পষ্ট । ওনার মন্ত্রপাঠ সকলেরই হৃদয় ছুঁয়ে যায়, গায়ে কাঁটা দেয়। বাড়ির পুজো টা খুব সুন্দর করে হলো।
।
আমার মা চার প্রহর উপস করেন না, তাই প্রথম প্রহর এর পুজো দেওয়ার পর এবং বাড়ির পুজো শেষ হওয়ার পর রাতের দিকে সামান্য কিছু মুখে দিয়ে নিলেন। সকাল থেকে একবারও আমি মন্দির প্রাঙ্গণে যাইনি। তাই হাঁটতে হাঁটতে বাবার সাথে চলে গেলাম মন্দিরে।
সারারাত ধরে হোম হবে ।কত লোকজন সেখানে বসে। ক্রমাগত মন্ত্র পাঠ হচ্ছে । চারিদিক নিস্তব্ধ ।তারমধ্যে সংস্কৃত শ্লোক-এর কঠিন উচ্চারণগুলো আবহাওয়া কে মন্ত্রমুগ্ধ করে তুলেছে। কিছুটা সময় ওখানে অতিবাহিত করে আবার ফিরে এলাম বাড়িতে।
মহাদেব সকলের মনোবাঞ্ছা পূরণ করুক। সকলে সুস্থ থাকুক। ভালো থাকুক। এ পৃথিবী পাপ মুক্ত হোক ।এটাই চাওয়া।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আমার পোস্ট। নমস্কার।
পুরো পোস্টটা পড়ে খুব ভালো লাগলো তোমার। আমার মাও খুব নিষ্ঠা ভরে পুজো করে।আমি সেভাবে এখনো পর্যন্ত উপোস করিনি শিবরাত্রির।শুধু সকালবেলা টুকুই না খেয়ে শিবের মাথায় জল ঢেলে ছিলাম। মন্দিরের শিবলিঙ্গ স্থাপনের কাহিনীটি শুনে খুব ভালো লাগলো। বেশ জাগ্রত। আর সংস্কৃত মন্ত্র উচ্চারণ সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ইচ্ছে রইলো এই মন্দিরে একবার আসার।
অনেক ধন্যবাদ । তুমি খুব ভালো করে গুছিয়ে কমেন্ট করো
ভালো লাগে পড়তে।কেমন আছো তুমি?
প্রজেক্ট এর একটু চাপ চলছে। ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?
খুব একটা ভালো নেই দিদি। হঠাৎ ঠান্ডা জ্বর