মার্টান্ড সূর্য মন্দির || কাশ্মির || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। বেশ অনেকদিন পরে আবার কাশ্মীরের একটি গল্প নিয়ে হাজির হলাম ।আজকে আমি শেয়ার করতে চলেছি দুর্দান্ত একটি মন্দিরের সাথে কাটানো কিছু মুহূর্ত ও ছবি।

20211031_162524.jpg

আমি এর আগের পোস্টগুলো তে বলেছি ,আমার বাবার কাজের সূত্রেই কাশ্মীর যাওয়া। তো বাবা কাজ ফেলে আমাদের সাথে সেরকম ভাবে বের হতে পারতেন না। তাই বহু জায়গা আমার ইচ্ছানুযায়ী লাদাখ, গুলমার্গ এরকম আরো কিছু জায়গা দেখা হয়ে ওঠেনি। আশেপাশের ছোটখাটো জায়গাগুলোই ঘুরে দেখেছি। আমি যেখানে ছিলাম অর্থাৎ পেহেলগাম এর থেকে সুন্দর জায়গা কাশ্মীরে আর কোথাও নেই। এই একটিমাত্র জায়গাতেই গাছ এবং বরফ সাথে নদীর খেলা দেখতে পাওয়া যায়।

20211031_162823.jpg

এরকমই একদিন দুপুরবেলা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমাদের কাশ্মীরে সদ্য আলাপ হওয়া গুলাম আঙ্কেলের গাড়িতে করে আমি ,ভাই,মা আর আমার বাবার বন্ধু মিলে বেরিয়ে পড়লাম। আমার বাবার বন্ধু আসলে এই মিউজিয়ামের কন্টাক্ট এ রয়েছে। তার সূত্র ধরে এখানে আসা। তিনি জায়গাটি বেশ ভালোভাবেই জানেন চেনেন।

20211108_131718.jpg

20211031_162026.jpg

গাড়িতে উঠার সাথে সাথেই বলে উঠলেন আজকে আমি আমার পছন্দের জায়গায় তোদের নিয়ে যাব। কিন্তু তখনও বুঝতে পারিনি জায়গাটা আদেও কেমন জায়গা। যাওয়ার পথে একটি হর পার্বতীর মন্দিরে নামা হয়েছিল।
20211108_131629.jpg

20211031_162457.jpg

সেখানে শুধু জল আর জল আর জলের ভেতর মাছ পুষেছে ওখানকার মন্দিরের সদস্যরা। ওই মন্দিরের প্রাকৃতিক দৃশ্য আমার অতটা ভালো লাগেনি ,আমরা ওখানে বেশিক্ষণ ছিলাম না।
20211108_131740.jpg
ওই মন্দির থেকে বেশ অনেকটা দূরে যেতে হলো। যাওয়ার রাস্তা দেখে মনে হচ্ছিলো বেশ অনেকটা উঁচুতে উঠছি আমরা। রাস্তাগুলো আঁকাবাঁকা পথ ধরে ধরে ওপর দিকে উঠতে থাকলো।পেহেলগাম থেকে প্রায় ৩৭ কিমি দূরে মন্দিরটি রয়েছে।
20211108_131757.jpg
ওখানে যেতে যেতে জানতে পারলাম যেখানে যাচ্ছি,সেটি একটি সূর্য মন্দির ।মন্দিরের ঢুকতেই চারিদিকটা সবুজ এ ভরা। গাছগুলিকে সুন্দর ভাবে কেটে কেটে একটি আকৃতি দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ দেখতে পেলাম। ওখানকার জায়গাটা অনেকটা পার্কের মতো দেখতে লাগলো।
20211031_162429.jpg
ওখানে জানতে পারলাম যে মার্টান্ড শব্দটির সংস্কৃত অর্থ হল সূর্য ,এই সূর্য মন্দির সম্রাট সিকান্দার সিরি - এনার আমলে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল, এই মন্দির অনন্ত নাগ থেকে পাঁচ মাইল দূরে অবস্থান করে।
20211031_163216.jpg

20211031_162528.jpg

মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ দেখলেও এটুকুনি বোঝা যাচ্ছিল যে ,,আগেকার যুগের মানুষের পরিশ্রম কতখানি হতে পারে। এতো টা ওপরে পাহাড় থেকে পাথর কেটে কেটে একটি মন্দির তৈরি করা চাট্টিখানি কথা না!
20211031_163114.jpg
যাওয়ার সাথে সাথেই ওই ভগ্নাবশেষ গুলো আমার মন যেভাবে কেড়ে নিল ,আমি এখন বাড়ি বসে ছবি দেখলেই,আমার গায়ে কাঁটা দেয়।
20211031_162213.jpg
কত ইতিহাসের সাক্ষী এই অদ্ভুত সৃষ্টি। মন্দিরের গায়ে গায়ে হিন্দু সংস্কৃতি র ছবি গুলি দেখে বেশি ভালো লেগেছে।
20211031_162246.jpg
সেই বিকেল টা পুরোপুরি ওই মন্দিরের প্রাঙ্গণে কেটে গেছে ।চারিদিকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বহু যুগ আগে গড়ে ওঠা এই মন্দিরের ভগ্নাবশেষ আর এই পাথরগুলোর সাথে কিভাবে যেন সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেল আমার সেদিন কে।
20211031_162323.jpg

আশা করছি এই মন্দিরের ছবিগুলি দেখে আপনারা বুঝতে পারছেন এটি কত বছরের পুরনো হতে পারে এবং মন্দিরের আকৃতি ভঙ্গি দেখে এটা বুঝতে পারছেন যে ওখানে গেলে আপনার কেমন অনুভূতি হতে পারে,

20211031_162132.jpg

যদি আমার পোস্ট ভালো লেগে থাকে অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন ।আপনাদের সকলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।ভালো থাকবেন। নমস্কার
@isha.ish

Sort:  
 3 years ago (edited)

মার্তন্ড মন্দিরের করুন ইতিহাস। সিকান্দর শাহ পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। আর বলিউডের একটি সিনেমায় এই মার্তন্ড মন্দিরকে শয়তান হিসেবে দেখিয়েছিলো। বললে অনেক কিছুই বলা যায়। থাক সেসব কথা।

মন্দিরটা সৌন্দর্য অতুলনীয়। আজকে শুধু ভগ্নাবশেষ। মন্দিরের প্রকান্ডতা গম্বুজ দেখেই বোঝা যায়।

 3 years ago 

আচ্ছা, আমি এত টা জানতাম না, তবে তুমি বলার পর আমি আরেকটু ঘেঁটে দেখবো দাদা। অনেক ধন্যবাদ দাদা।

আসলেই অসাধারণ একটি জায়গা। ঐতিহ্যবাহী একটি জায়গা সম্পর্কে জানতে পারলাম। আপনি ছবিগুলোর মাধ্যমে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন । আপনার ছবি তোলার প্রশংসা না করলেই নয়। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি জায়গার তথ্য উপস্থাপন করার জন্য।

 3 years ago 

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

খুবই সুন্দর ছবিগুলো জায়গাটাও অসাধারন। আমারও ইচ্ছা আছে কাশ্মীর এ যাওয়ার।

 3 years ago 

অবশ্যই যাবেন । শুভ কামনা রইলো।

 3 years ago 

মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ দেখলেও এটুকুনি বোঝা যাচ্ছিল যে ,,আগেকার যুগের মানুষের পরিশ্রম কতখানি হতে পারে।

আসলেই ঠিক বলেছেন আপু! কতটা পরিশ্রম করে যে এইভাবে কাজ করা তা জাস্ট ভাবাই যায় না। আর আপনার ছবিগুলোও মারাত্মক লাগছে দেখতে। এক একটি কাজ একেবারে দেখে থাকার মতো।

 3 years ago 

সেটাই তো, আর এত কষ্টের ফল ধ্বংস হলে কত খারাপ লাগতে পারে।

 3 years ago 

প্রথমে ছবি দেখে ভেবেছিলাম রোমের কলোসিয়াম🙂পরে ক্যাপশন পড়ে দেখলাম যে কাশ্মীরের একটা মন্দির🙃
আদিম মানুষের উদ্দ্যম এবং কাজ করার ইচ্ছা বা নিপুণতা এই নিদর্শনগুলো দেখলেই বোঝা যায়😊
খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন কাশ্মীরে,আসছে সময়গুলোও ভালো কাটুক দিভাই🥰

 3 years ago 

খুব ভালো লাগলো এত সুন্দর মন্তব্য পড়ে দাদা। অনেক ভালো থাকবেন ❤️

 3 years ago 

আপনার ফটোগ্রাফীর প্রশংসা না করে পারছি না। আজ আপনার মাধ্যমে এক ঐতিহ্যবাহী জায়গা সমন্ধে জানতে পারলাম। কাশ্মীর অনেক সুন্দর একটি জায়গা। আমার যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে।আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইলো।

 3 years ago 

দাদা কে বলবেন বৌদি নিয়ে যেতেই হবে। আমিও বলবো দাদাকে। এমন জায়গায় না গেলে অনেক কিছু মিস করে যাবেন। ভালোবাসা রইলো দিদি ❤️❤️

মার্তন্ড মন্দিরের প্রতিটি দৃশ্যে গুলো অনেক সুন্দর দিদি। আর আপনার মাধ্যেমে আজকে আমি অনেক সুন্দর কিছূ মন্দিরটি ফটোগ্রাফি আর মন্দিটির সর্ম্পকে জানলাম।জানি না কখনো দেখতে পারবো কী না।তবে আপনার মাধ্যেমে মন্দিরটিকে দর্শন করে নিলাম দিদি।এতে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দিদি।

 3 years ago 

অবশ্যই যেতে পারবেন দাদা। সময়-সুযোগ করে একবার চলে যাবেন। ভালো লাগবে খুব।

 3 years ago 

হুম দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক পুরানো। প্রাচীন নিদর্শনগুলো দেখতে অনেক ভালো লাগে আর এইসব জায়গায় যেতে পারলে মনটা আরো বেশি ভালো লাগে। এইসব জায়গায় গেলে যেন আর ফিরতে মন চায় না। সময় সুযোগ হলে আর পরিস্থিতি ভালো থাকলে একবার দেখি যাওয়া যায় কিনা।

 3 years ago 

আসলেই দাদা। মনে অদ্ভুত একটি তৃপ্তি পাওয়া যায়। এই ভালো লাগা গুলো কখনো প্রকাশ করা যায় না। প্রার্থনা করি খুব তাড়াতাড়ি একবার ঘুরে আসুন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.25
JST 0.039
BTC 97542.75
ETH 3458.83
USDT 1.00
SBD 3.15