ভোটের গল্প|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজ আমাদের কৃষ্ণনগরে পৌরসভা নির্বাচন এর জন্য ভোট ছিল। প্রায় অনেক দিন ধরে ভোট এর জন্য প্রচার চলছে, ভোট যত কাছাকাছি আসতে লাগলো প্রচার তত বাড়তে লাগলো।

B612_20220227_084902_058.jpg

সারাদিনে আমাদের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে কতবার যে মাইক বাজিয়ে টোটো কাকু চক্কর খেয়েছে তার ঠিক নেই। সকাল ৯ টা র ঠিক একটু পর থেকে শুরু হতো। আর একবার এই দল এর পক্ষ থেকে একবার ওই দলের পক্ষ থেকে টোটো করে মাইক বাজাতে বাজাতে ঘুরত আর ভোটের প্রচার করতো।

20220227_083851.jpg

এই কারণে আমি বাড়িতে থাকার সত্বেও গান রেকর্ড করতে পারিনি। কি এক জ্বালা। কানের মাথা খারাপ হয়ে যেত। সেই একই কথা। এই চিহ্নে ভোট দিন। ভোট ভোট সব ভোট, _ চিহ্নে সব ভোট। এটা সেটা। পাখি পড়ানোর মত করে বলতেই থাকতো ।

20220227_083858.jpg

সাথে ছিল রাস্তায় রাস্তায় মিছিল আর সভা। যে যার মতো গলা ফাটিয়ে নিজেদের দলের হয়ে কথা বলছে। আর এদিকে রাস্তা জ্যাম। কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে, কৃষ্ণনগরে ঢুকেই যদি ওই ক্লান্ত শরীরে জ্যাম সহ্য করতে হয়। এর থেকে বড় বিরক্তি নেই।

20220227_084104.jpg

এসব চলতে থেকেছে বহু দিন হলো। তারপর বাড়িতে প্রার্থীরা এসেছেন।সব দলের পক্ষ থেকে। আর আছে দল এর সদস্যরা। বাপরে বাপ। ভোটের আগে কত খাওয়া দাওয়া তাদের, প্রার্থী একেবারেই ভরণ পোষণ এর কমতি রাখেনি। আমি একেবারেই এই রাজনীতির মধ্যে ঢুকি না।

20220227_084133.jpg

নাগরিক বলে ভোট দিতে হবেই। তাই অগত্যা আমার ভোট দেওয়া। তাও প্রতিবার মা বাবা কে জিজ্ঞেস করি। ভোট কাকে দেব। হাহাহা।

আমি একেবারেই এসবের থেকে দূরে থাকতে চাই। সবাই ভালো ।কেও খারাপ না। এটাই হলো আমার শেষ কথা।

20220227_084159.jpg

কালকে রাতে যখন ঘুমিয়ে গেলাম ,যেহেতু আমার রাস্তার ধারে বাড়ি। হঠাৎ করে চেঁচামেচি শুরু হল। দুমদাম আওয়াজ আমার জানলার ধারে। থতমত খেয়ে গিয়েছিলাম একেবারে।স্বাভাবিক !অত রাতে কী হচ্ছে বুঝতে পারিনি। পরে বাবাকে ফোন দিতে বাবা বলল ,চুপচাপ শুয়ে থাক। ভোটের জন্য ওরা পতাকা লাগাচ্ছে ।রাস্তাঘাট সাজাচ্ছে। একটু পরে চলে যাবে।

20220227_084251.jpg

বিভিন্ন দলের বিভিন্ন সদস্যরা এসে এখানে ওখানে চারিদিকে নিজেদের দলের চিহ্ন কে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখে যাচ্ছে। কেউ আবার অন্য দলের কাগজপত্র ছিঁড়ে, তাদের দলের চিহ্ন সাজাচ্ছে। এসব হতে থাকলো। রাতে কি করে ঘুম হবে বলুন ।মাঝরাতের দিকে সব কিছু চুপ হয়ে গিয়েছিল।

20220227_084256.jpg

আমাদের যেখানে ভোট দিতে যেতে হয় অর্থাৎ আমার বাড়ি থেকে হাটা পথ দুই মিনিট এর পরেই একটা স্কুল রয়েছে, স্কুলটা ছোটখাটো , খিচুড়ির স্কুল বলা যেতে পারে। সেখানেই প্রতিবারে ভোট দিতে যেতে হয়। আর আমাদের ওয়ার্ডের আমাদের নম্বরের ঘরটা একেবারে ফাঁকা থাকে। বেশি লোকজন থাকে না ।ভিড় না থাকায় আমরা ফাঁকা ফাঁকাই ভোট দিয়ে আসতে পারি।

20220227_084450.jpg

তাও মা, মানে যেহেতু মায়ের কাজ থাকে সকাল বেলায়। তাই উঠে সকালের কিছু কাজ সেরে ,ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় মা।আজকে সকালেও মায়ের সাথে গিয়ে সাড়ে আটটার মধ্যে ভোট দিয়ে চলে এসেছি। গিয়ে দেখলাম একেবারেই আমাদের জায়গাটা ফাঁকা। আরো অন্যান্য জায়গাগুলোতেও বেশি লাইন নেই। অল্প অল্প লাইন।

যাওয়ার পথে দেখলাম, যে ,যে দলের হয়ে কাজ করছে, তারা যে যার মত সাজিয়ে গুছিয়ে টেবিল নিয়ে বসে পড়েছে ।একটু গ্যাপ রেখে। এটা-সেটা যা যা ছবি তুলেছি, সবই শেয়ার করছি।

তবে একটা জিনিস আমার বড্ড বাজে লাগে। ভোট দেওয়ার পর নখের ওপর যে কালি দিয়ে দেয় ।এত বেশি করে দেয় ।আমার মাথাটা গরম হয়ে যায় ।আজকেও তাই হয়েছে। যাক প ভোট শেষ ।এখন থেকে প্রচার বন্ধ। মাথাটা একটু ঠান্ডা থাকবে আর শান্তিতে থাকবে।

এই ছিল আমার ভোটের অনুভূতি ।আপনাদের সকলের সাথে ভাগ করে নিতে পেরে ভালো লাগলো। সকলে ভাল থাকবেন।

Sort:  
 2 years ago 

পোস্টের থাম্বনেইল থেকে আটকে পড়েছি 🥰। অনেক সুন্দর হয়েছে ছবিটি আপু। যাইহোক আপনার ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা পড়ে ভালো লাগলো। গত বছর আমিও ভোট দিয়েছিলাম আমাদের বাংলাদেশে। নিজের ভোট নিজে দেয়ার আনন্দটাই অন্যরকম। 💛

 2 years ago 

হাহাহা, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অবশ্যই নিজের ভোট নিজে দেওয়াই উচিত।

 2 years ago 

প্রত্যেকটি এলাকায় ভোটের সময় এত বেশি পরিমাণে প্রচার-প্রচারণা হয় যার পরিপ্রেক্ষিতে বাড়িতে থাকার মত কোন অবস্থা থাকে না। বাড়ির পাশ দিয়ে সারা দিন মাইকে বিভিন্ন ধরনের প্রচার হতে দেখতে পাই আমরা। এই শব্দ দূষণের ফলে ভোটাররা ভোটে উৎসাহিত হবার বিপরীতে বিরক্ত হয়ে থাকে।

 2 years ago 

হাহাহা। পুরো কমেন্ট টা মজার ছিল। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলে ভোটের সময় অনেকে প্রচার হয়ে থাকে মাইক আর মাইক চারিদিকে।আসলে ভোটের কিছুদিন আগে থেকে বাড়িতে ঘুমানো যায় না। এমন একটা অবস্থায় হয়ে যায়।হ্যাঁ নাগরিক হিসেবে ভোট দেয়া উচিত। আপনি ঠিক কাজ করেছেন।আপনার ভোটের অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

প্রথমেই বলবো আপু আপনার ফটোটি মনমুগ্ধকর হয়েছে। ভোটের এত সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যার জন্য খুবই ভালো লাগলো। আরো ভালো লাগলো যে পাশবর্তী দেশের সুন্দর একটি ভোট এর অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিশেষ ধারণা অর্জন করতে পারলাম। আপনি ভোটকেন্দ্রের ফটো উঠিয়েছেন,যাদের সাথে ভোট দিতে গেছেন, ভোটার এবং এক এক দলের লোকের কথা উল্লেখ করে কমবেশি ফটো উঠিয়েছেন। সব মিলিয়ে পোষ্টটি খুব সুন্দর হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

চেষ্টা করেছি ভোট রিলেটেড কিছু সবাইকে শেয়ার করতে। ধন্যবাদ সবটা পড়ার জন্য।

 2 years ago 

আসলে আপু নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিটা জায়গায় দেখি একই অবস্থা।আপনাদের পশ্চিমবঙ্গেও বেশ আয়োজন এর মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের প্রচারণার জন্য আপনি গান কভার করতে পারেননি শুনে খুব খারাপ লাগলো। আপনার গলার স্বর ভারী মিষ্টি। যাইহোক খুব শীঘ্রই আপনার মিষ্টি কন্ঠের গান শুনতে চাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

কি আর করার। মেনে নিতে তো হবেই। এই তো জীবন।

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 63626.14
ETH 3107.70
USDT 1.00
SBD 3.87