নন্দন - এ প্রথমবার সিনেমা দেখা ||১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন।আমিও ভালো আছি। শুধু সোমবার থেকে পরীক্ষা ,এই নিয়ে একটু চাপ এ। আসলে এত কাল পরে এবার অফলাইন।সব টোকাটুকি দেখাদেখি শেষ। হিহি।
যাই হোক বন্ধুদের সাথে বহুকাল ধরে অর্থাৎ এই কলকাতা আসার পর থেকেই ইচ্ছা ছিল নন্দন এ সিনেমা দেখতে যাওয়ার। ভালো সিনেমা চলছেই না। তবুও যা গল্প শুনেছি ওখানকার, তাতেই মন টানছিল। আর বহুকাল সিনেমা দেখা হয়নি।
একদিন হটাৎ করে প্ল্যান হল আর ঝটপট রেডি হলাম। এখানে আসার পর থেকে আমার সকাল ৬ টায় ঘুম ভেঙ্গে যায়। তার আগে তো পরে নয় ।এক পক্ষে ভালই হয় ।একেবারে স্নান টান করে ফ্রেশ হয়ে নিই। তারপরে সকালে যা খাব, সেটা রান্না শুরু করে দিয়ে, রান্না করতে করতে পড়াশোনা হয়ে যায়।
আমি যখন বাড়িটা ঠিক করেছিলাম ,তখন শুনেছিলাম এই বাড়িতে একটা রান্নার মাসি থাকবে ।সেই রান্না করে দেবে ।কিন্তু যারা থাকে অর্থাৎ বেশি জন্ নয়। অনেকজন থাকলে রান্নার মাসি রান্না করে দেবে। কিন্তু কম লোক থাকায় রান্নার মাসি কে চালানো মুশকিল হয়ে যাবে ।তাই কেও রান্নার মাসি রাখতে চাই নি ।তাই যে যার মত আবার মাঝেমধ্যে সবাই মিলে আবার মাঝেমধ্যে তিনজন মিলে রান্নাবান্না করা হয়।
পুরো বাড়ির তিনতলায় আমরা যে পাঁচজন থাকি তার মধ্যে শুধুমাত্র আমি এত সকাল বেলায় উঠি। এছাড়া কেউ ওঠে না।
তাই আমি সবার জন্যই ভাত আর আলু সিদ্ধ চাপিয়ে দিই ।এবার যদি কারোর কিছু করে নেওয়ার থাকে ,সে তারপরে উঠে করে ।বলতে গেলে প্রায় প্রতিদিনই সকালবেলায় আলুসিদ্ধ ভাত খাই আমি ।আর যদি রাতের তরকারি থাকে সেটা দিয়ে ভাত খাওয়া হয়ে যায়।
তো সেদিনকে সমস্ত কাজ আগে থেকে রেডি ছিল প্রতিদিনের মতো। সোমবার কলেজ না গিয়ে ছুটলাম নন্দনের দিকে।
আমার বাড়ি র ১০ মিনিট দূরে সিঁথির মোড় থেকে অটো নিয়ে দমদম স্টেশন এবং তারপর দমদম স্টেশন থেকে মেট্রো ধরে পৌঁছে গেলাম রবীন্দ্র সদন। রবীন্দ্র সদন যেতে ৩০ টাকা করে টিকিট কাটতে হয় ।আর দমদম পৌঁছাতে ১০ টাকা লেগেছে।
মেট্রো নেমে মাত্র ৫ মিনিট হাঁটলেই নন্দন। এতো কাছে যে খুবই ভালো লাগে ।কলেজ স্ট্রিটে যেমন নামার পরে মেট্রো থেকে নামার পরে বেশ অনেকটা হাঁটতে হয় ।আমার ভীষণ বিরক্ত লাগে ।সিনেমার সময় ছিল বারোটা থেকে ।বেশি রাত করব না বলে আমি সকাল সকাল বেরিয়ে গিয়েছিলাম। আগে থেকেই সমস্ত টিকিট কেটে রেখেছিল আমার বন্ধুরা।
তারপরে সিনেমা হলে ঢুকলাম। বেশ বড়সড় সিনেমা হল। এর আগেও নন্দন আরেকবার এসেছি। রবীন্দ্র সদন এর দিকে কিছু কাজের জন্য আসাতে নন্দন ঘুরে গিয়েছি। তবে ভেতরে কখনও ঢুকিনি। এ প্রথমবার সিনেমা হল ঢুকলাম।অনেক বড় একটা সিনেমা হল। আমরা একেবারে উপরের দিকে ব্যালকনি তে সিট নিয়েছিলাম। যাতে সমস্ত কিছু পরিষ্কার দেখতে পাওয়া যায়। আর সত্যি কথা অতো বড় পর্দা অসাধারণ একটা ব্যাপার লাগছিল ।এত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটা জায়গা।
তবুও টিকিটের দাম খুবই কম ৭০ টাকা করে। শুনেছি কলকাতার বুকে শুধুমাত্র এই একটা জায়গাতেই এত কম খরচে অর্থাৎ সরকারি তাই এত কম খরচে থিয়েটার থেকে শুরু করে সিনেমা সবকিছু দেখা যায়। নন্দন টু সিনেমা হল যেটা,সেটাতে তো শুনেছি ৩০ টাকা করে মাত্র টিকিট। এসব শুনে বেশ মজাই লাগছিল। যাই হোক শুরু হল সিনেমা।
প্রায় আড়াই ঘন্টার সিনেমাটা ছিল। যে সময়ে আমরা সিনেমা দেখতে গেছি ,দুপুর তিনটে নাগাদ ছিল টনিক, সাড়ে পাঁচটা থেকে ছিল আবার বছর কুড়ি পরে। আবার বছর কুড়ি পরে সিনেমা টা সত্যিই খুবই ভালো ছিল। কিন্তু বাড়ি ফিরতে লেট হবে ।রাত হবে। মা-বাবা চিন্তা করবে ।আর বাইরে অত রাত অব্দি এতটা দূরে গিয়ে না ঘোরাঘুরি ভালো।
তাই আমি সকালবেলার সো টাই দেখেছি। সিনেমাটা ছিল আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা ।সিনেমাটা দেখার পরে আমার সিনেমাটার উপর কোন আকর্ষণ হয়নি। কারণ সত্যি বলতে গল্পটা খুব একটা মজাদার বা খুব একটা আকর্ষণীয় ছিল না। সিনেমা দেখে খুব একটা মন ভরে নি। তবে সিনেমার দৃশ্য গুলো অসাধারন ছিল। অত বড় পর্দার মাঝে সত্যিই অসাধারণ লাগছিল। তবে সিনেমার গল্প আমার একেবারেই পছন্দ হয়নি।
যাই হোক তারপরে সিনেমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর বেরিয়ে আসলাম বাইরে। আমি বুঝে পাইনা নন্দনের বিল্ডিংটা কেন জলের উপর ।যাইহোক সামনের দিকে আম গাছটায় থোকা থোকা আম ধরে রয়েছে, দেখতে অসাধারণ লাগে। বিশেষ করে নন্দনের চারিপাশটা অসাধারণ। খুবই ভালো একটা জায়গা ।মনটা সত্যিই শান্ত করে দেয়।
ফোয়ারা ধারে এত ঠান্ডা হাওয়া ।তবে ভরদুপুরবেলায় বাইরে বসা অস্বাভাবিক ব্যাপার। নন্দন থেকে বেরিয়েই পেছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে একটা ছোট মতো রেস্টুরেন্ট আছে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে খেতে বসার জায়গা নেই ।কিন্তু ভেতরে ঢুকতে গেলে একটা সুন্দর খেতে বসার জায়গা রয়েছে। চেয়ারগুলোর মাঝে মাঝে ছাতা টাঙ্গানো ।আর সেখানে খাওয়া-দাওয়ার দোকান।
আমরা মোগলাই আর একটা এগ চাউমিন অর্ডার করেছিলাম। সেগুলোই খাওয়া হচ্ছিল ।আমি কলকাতাতে আসার পর এত সুন্দর চাওমিন কোথাও পাইনি। অসাধারণ একটা চাওমিন আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না । না খেলেও আপনারা বুঝবেন না ।এরকম চাউমিন এর আগে কখনো খাইনি। সব জায়গাতেই এত রিচ করে, এখানে খুব সুন্দর করে বানিয়েছে। আমি আবারও গেলে আবার ওই জায়গা থেকে চাউমিন খাবো ।সত্যিই অসাধারণ বানায়।
ফটোসেশন তো অনেক হয়েছে। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়া টা জম্পেশ হয়েছে। সাথে ছিল কোলড্রিংস। সবকিছু শেষ করে আবার ধীরেসুস্থে মেট্রো ধরে ঠিক একইভাবে বাড়ির দিকে রওনা। সব মিলিয়ে সিনেমা আর যাতায়াত খরচ ১৫০ টাকা আর খাওয়া খরচা যেটুকু লেগেছে।এত কম খরচায় এত সুন্দর একটা মজা করার জায়গা সত্যিই নন্দন ই থাকতে পারে ।ভীষণ ইচ্ছা আছে ভালো কোন সিনেমা হলে আবার দেখতে যাবো।
তবে আর এই সপ্তাহ আর কোথাও ঘুরাঘুরি নয়। এবার একটু পড়ার দিকেও নজর দিতে হবে। যেহেতু সামনে পরীক্ষা ।আমি জানি আমার কাজ একটু ইরেগুলার হচ্ছে ।আশা করছি নিজের ব্যক্তিগত জীবন এর সাথে সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে ।সবকিছু নতুন করে শুরু হবে । হটাৎ পরিবর্তনে গুছিয়ে উঠতে একটু সময় লাগে, সেটাই হয়তো লেগে যাচ্ছে ।
যাইহোক আশা করছি আমার আজকের পোষ্ট আপনাদের সকলের ভাল লেগেছে। সকলে ভাল থাকুন ।সুস্থ থাকুন ।নমস্কার।
@isha.ish
নন্দনে প্রথমবার সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা চমৎকার করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার মাধ্যমে নন্দনের পরিবেশটা আমারও দেখা হয়ে গেল। নন্দনের পরিবেশটা আমার কাছেও খুব ভালো লাগলো। এটা জেনে আশ্চর্য হলাম এই সময়ে এসেও মাত্র ৭০ টাকা টিকিট মূল্যে এত সুন্দর পরিবেশে সিনেমা দেখা যায়। দেখেই বোঝা যাচ্ছে নন্দনে সিনেমা দেখতে এসে আপনি অনেক আনন্দ করেছেন। আপনার আনন্দঘন মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে সরকারি ভাবে তাই এত কম টিকিটের দাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর একটি বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আমার খুবই ভালো লেগেছে, বিশেষ করে হাসিমুখের ফটোটি খুবই সুন্দর।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য।ধন্যবাদ।
দিদি আপনি নন্দন - এ প্রথমবার সিনেমা দেখতে গিয়ে অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। পরিবেশ অনেক সুন্দর। অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি উপহার দিয়েছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো। আর খাবার কিন্তু অনেক লোভনীয় ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে দিদি আপনার সুন্দর মুহূর্ত ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সবমিলিয়ে দারুণ একটা সময় কাটিয়েছেন ভাই। তবে আপনার অভিজ্ঞতা হলেও আমি এখন পযর্ন্ত সিনেমা হলে সিনেমা দেখি নাই। এবং আপনি নন্দন সিনেমা হলে বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। এবং হলটা অনেক সুন্দর এবং টিকেটের দামটা অনেক কম। বছর কুড়ি পরে সিনেমা টা দেখতে পারতেন হি হি লেট হলে হতো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । হ্যাঁ দেখব ওটা সময় হলেই।
আসলেই সিনেমা দেখা মজাই আলাদা।আমি প্রথম দেখেছি সিনেমা দেখেছি ভার্সিটি লাইফে।বন্ধুদের সাথে।যাই হোক ভালো ছিলো আপু।ধন্যবাদ আপনাকে।
আমিও এই প্রথমবার এভাবে মা বাবা ছাড়া সিনেমা হলে গিয়েছিলাম।
**সত্যিই আপু বেশ সুন্দর একটি দিন আপনি আনন্দের সহিত কাটিয়েছেন। আর সব চেয়ে ভালো লেগেছে আপনার হাসিটা খুব সুন্দর ছিল হাসিটা আপু। পর্যায় ক্রমিক ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে আপু। আমি প্রায় সময় আলুভর্তা করে ভাত খাই। নন্দন আপনার সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা টা বেশ ভালো ছিল। সিনেমা দেখার পর আপনি খাওয়া দাওয়া করেছেন তার ছবিগুলো দেখে আমার খেতে ইচ্ছে করছিল।😂। আপনাকে ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মুহূর্তটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল। আপনার হাসিটা কিন্তু বেশ সুন্দর 🥰🥰🥰
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
সকালে ঘুম থেকে উঠেছে পরবর্তীতে মেট্রোতে করে নন্দনে গিয়েছে ।এবং সেখানে ছবি দেখেছেন এবং চারপাশে যেগুলো দর্শনীয় স্থান ছিল সেগুলো ঘুরে দেখেছেন ।পরিশেষে খাওয়া-দাওয়া করেন, সবকিছুই ছিল অনেক সুন্দর এবং গোছালো। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ।