নারী - কিছু অনুভূতি স্বরচিত কবিতার সাথে|| ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্য
" মা" সেই প্রথম শব্দ , যা আমরা জন্মের পর যখন কথা বলতে শিখি,প্রথমেই এই শব্দটাই বলতে শিখি।" মা " অর্থাৎ নারী দিয়ে যেখানে আমাদের প্রথম বাক্য ফোটে তবে সেটা কি একেবারেই ফেলনা!?
প্রথম বার নারী-পুরুষের ভেদাভেদ বুঝতে পারি আমরা, মা আর বাবাকে দেখে। জীবনের প্রথম পুরুষ হয়ে দাঁড়ায় বাবা, মা হয়ে দাঁড়ায় প্রথম নারী। শত শত সন্তানের কাছে মায়ের আঁচল মায়ের কোল কতটা স্নেহ-মমতায় ভরপুর, তা শুধুমাত্র সেই মা এবং সেই সন্তানটি জানে ।একজন মেয়ে হিসেবে তাই গর্ববোধ হয় সবসময়।আর এটা আমার কাছে প্রাপ্তি যে ,আমি মেয়ে ।
ছোটবেলা থেকে এই সমাজের মাঝে বড় হতে হতে অনেক কিছুই চোখের নাগালে এসেছে। অল্প বয়সের মধ্যেই মেয়ে হিসেবে কি, মেয়েরা কি ,কেন মেয়েরা, কিসের জন্য মেয়েরা ,মেয়েদের কাজ কি, মেয়েদের মন কি ,মেয়েদেরকে কিভাবে নেওয়া হয় ,এ সমাজে মেয়েদের পরিস্থিতি কি, গুটিকয়েক কিছু কথা একনাগাড়ে বলে দিতে পারব বহু বহু ঘন্টা ধরে।
আর প্রত্যেকটা কথার পেছনে লুকিয়ে থাকবে এক একটা ঘটনা । কোটি কোটি মেয়ের ঘটনা।সমাজে মেয়ে হয়ে জন্মানো কতটা ভাগ্যের আর কতটা দুঃখের তা তো কেবল সেই বুঝতে পারে ।সবার জীবন কখনও সমান হয় না। সেটা পুরুষের ক্ষেত্রেও, নারীর ক্ষেত্রেও ।শুধুমাত্র আজকে নারী দিবস উপলক্ষে এই কথাগুলো আমার বলা নয়।
নিজের অনুভূতি গুলোকে শুধুমাত্র ভাগ করে নিতেই চলে এসেছি আপনাদের সাথে গল্প করতে। আমাদের সমাজটা বহু এগিয়েছে। কিন্তু একটা জায়গা ভাবতে অবাক লাগে , এখনও ঘরে ঘরে সকলেই পুত্রসন্তানের জন্য হাত পেতে বসে থাকে ।একটা মেয়ে থাকলেও ,স্বামী-স্ত্রীর ইচ্ছা জাগে পরের সন্তান যেন মেয়ে না হয়ে ছেলে হয়। সমস্যা এখানে নয়। সমস্যা হলো এর কারণে।
এর কারণ যদি জিজ্ঞেস করতে যান, খটকা তো এখানেই ।উত্তরটা যদি এমন হতো যে একবার মেয়ে হয়েছে ।তাই আর একবার পুত্র সন্তান চাই। কিন্তু তা উত্তর আসে না । উত্তর আসে- ছেলে দেখবে। মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে। ছেলে কাছে থাকবে ।ছেলে সমস্ত কিছু সামলাবে ।অর্থ সামলাবে ।বাড়ি সামলাবে ।বৃদ্ধ বয়সে আমাদের দেখবে।
কেউ খারাপ ভাবে নেবেন না ।এমন না যে আমি মেয়ে সেই জন্যই বলছি, আর এমনও না যে সমস্ত পুরুষই একইরকম ।আমি তো আজ অব্দি দেখলাম মেয়েদেরই নিজের বাপের বাড়ির প্রতি বেশী নজর।আমার চোখে দেখা সবাই, যে কজন মেয়ে রয়েছে, তাদের শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ির দিকে টান বেশি। বরং তারা দুই সংসার সামলাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
কিন্তু ছেলে বিয়ে করে বাইরে কোথাও পড়ে রয়েছে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখছে কে? তার ওই মেয়ে ,যার বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু তবুও সে খোঁজ রাখে ।সে খেয়াল রাখে ।জান-প্রাণ দিয়ে যেটুকুনি পারে চেষ্টা করে। ওইযে বলে নেই মামার থেকে কানা মামা ভাল ।
ছেলেরা যে সবাই এমন , তা কিন্তু না। আমি আবারও বলছি আমার কথার খারাপ ভাব কেউ নেবেন না। পুত্র সন্তানের ইচ্ছার পেছনের কারণটা র সাপেক্ষে এই কথা গুলো বলছি। আশেপাশে যা দেখি, নিজের ব্যক্তিগত মতামত শেয়ার করার তো স্বাধীনতা আমার রয়েছে। আবার হ্যাঁ ,সমাজে বহু ছেলে রয়েছে যারা সত্যিই অতুলনীয় ।যেমন আমার বাবাকেই দেখুন। আমার নিজের স্বচক্ষে দেখা একজন পুরুষ ,বাবা যেভাবে নিজের মা বাবার প্রতি কর্তব্যপরায়ণ। সেরকম ও অনেক আছে।
মেয়েদের শারীরিক গঠন ,হর্মনাল পরিবর্তনের নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কজন পুরুষ এই সমস্যা বোঝে? তাদের কি বোঝার দরকার পড়ে, আসলেই না। কী দরকার।তাই নাহ! এই একটা মেয়ে একটা মেয়ের প্রবলেম বোঝেনা এ জগতে, আমরা তাহলে একজন পুরুষের থেকে কি এক্সপেক্ট করতে পারি ।
প্রতিমাসের সময় মত সময় ধরে ধরে কিছুদিনের অসহ্য যন্ত্রণা, আবার কারোর সেই নিয়ে নানান প্রবলেম। মাসিকের গ্যাপের চিন্তা, সন্তান ধারণের ক্ষমতা নিয়ে নানান অভিযোগ ,মাসিকের সমস্যা নিয়ে নানান অভিযোগ, এই যে বাড়তি ব্যপারগুলো, একেবারেই বাড়তি শুধুমাত্র নারীদের জন্য। এই বাড়তি অবস্থাটা কি কখনো একটা পুরুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব?
একেবারেই নয় ।তবুও কি সুন্দর ভাবে দেখুন সবকিছুই যেমন থেমে থাকে না ,প্রত্যেকটা মেয়ে যুগের পর যুগ এইভাবেই বড় হচ্ছে ।সমস্ত সবকিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ,সন্তান ধারণ করছে, সন্তান মানুষ করছে। সবকিছুই করে যাচ্ছে ।ওই যে যন্ত্রনা সন্তান প্রসবকালে এবং মাসিকের পেটের যন্ত্রণা ,এদুটো যন্ত্রণা যদি কোন পুরুষকে বোঝানো যেত , কিছু কিছু পুরুষের আচরণে তাই মনে হয় আমার।
বর্তমান যুগে মেয়েদের পড়াশোনা, মেয়েদের চাকরি বাকরি নিয়ে মেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়ানো নিয়ে, বহু ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে ।সবাই সব কিছুই করছে। তার পরেও একটা জিনিস খেয়াল করুন।যারা কিছু করতে পারে না ,তাদের এখনও শুনতে হয় কথা - বিয়ের আগে বাবার বোঝা হয়ে দাঁড়ায় আবার বিয়ের পর স্বামী বলে - আমার টাকায় খাচ্ছ।
বহু মেয়ে প্রতিরাতে মারধোর খায়, তবুও ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে না ।কেন? কারণ আর কোথায় যাবে স্বামী ছাড়া, আর কেউ নে। পুরুষ খেতে পড়তে দেয়।মেয়েদের ওপর যেভাবে অ্যাসিড অ্যাটাক হয়। যেভাবে নোংরা ব্যাবহার করা হয়, মেয়েদের সুরক্ষা নিয়ে যে এত এত সব ভয়। তা কি কমেছে? বেড়েছে?
অনুপাতটা কেও বলতে পারবেন।
নিজের মেয়েটা বাড়ির বাইরে একা অনেক রাত অব্দি থাকলে, ভয় লাগে তো? সবার লাগে,সবার লাগবেও। যে ছেলেটা নোংরামি করছে আজ । তারও একদিন এই ভয় টা লাগুক। এটাই চাই।
মেয়েদের নানান দুর্বলতাকে অস্ত্র বানিয়ে যারা ব্যবহার করে চলে প্রতিনিয়ত ,তাদেরকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানাই আজ।ওই যে বললাম মেয়েরাই মেয়েদের সম্মান করতে জানেনা, তো ছেলেরা কি করবে। সারাবছর এই মেয়েদের হাত, পা ,মুখ বন্ধ রেখে, আটকে রেখে, পায়ের নিচে দলিয়ে রাখতে চায় যারা।তাদের আজকের দিনের শুভেচ্ছা বার্তা।
পাশের বাড়ির মেয়েদের নামে কুৎসা রটিয়ে, রাস্তাঘাটে স্কুল-কলেজে সহপাঠীদের নিয়ে ঠাট্টা করে, বছরে একদিন বুক ফুলিয়ে আমি নারী। আমি সব পারি বলে যারা গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে, তাদেরকে আজকের দিনের শুভেচ্ছা জানাই।
শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, অবশেষে সেই সকল নারীদের যারা এখনও অন্যান্য মেয়েদের বিচার করে বেড়ায়, যথাযথ মর্যাদা দিতে পারেনা ।হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়। নিজে মেয়ে হয়েও অন্য মেয়ের কষ্ট বোঝেনা ,সেইসব নারীদের।
সব কিছুর পরেও, এত নেগেটিভিটি পরেও ,থাকে পজিটিভ অনেক কিছু ।প্রতিনিয়ত যারা সমস্যার সম্মুখীন হয়েও সমস্যাগুলো কে ভয় না পেয়ে ,সমস্যাগুলো থেকে পালিয়ে না গিয়ে, রীতীমতো প্রতিনিয়ত রুখে দাঁড়ায় প্রতি পদক্ষেপে ,সমাজ মানসিকতা এবং এ পৃথিবীর আবডালের মধ্যে না থেকে, নিজেকে না রেখে বেরিয়ে আসতে চায় একটা আলোর জগতে ,বার করে আনতে চায় নিজেকে।তাদের জানাই নারী দিবসের শুভেচ্ছা।
পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য যারা ক্রমাগত কাজ করে যায় ,তাদের জানাই নারী দিবসের শুভেচ্ছা। যে সকল পুরুষ প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যায় নিজের মা ,বোন, বউ, মেয়ে সকলকে এই সমাজের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে,সামনের দিকে এগিয়ে দিতে, আর নিজের ভালোবাসা স্নেহ দিয়ে যত্ন করতে, সেসকল পুরুষদের জানাই আজকের নারী দিবসের শুভেচ্ছা।
আমি কৃতজ্ঞ ভগবানের প্রতি যে আমার মা, যার থেকেই একটা বিন্দু রূপে মায়ের একটা অংশ রূপে জন্ম নিয়েছি আমি।
আমার ছোটো একটা ভাই আছে। অনেক ছোট সে, আমি আর মা আমাদের একদম অন্তর থেকে চেষ্টা করি, ও যেন একটা মেয়ের সম্মান করতে শেখে। নারী পাঠ পড়ানোর দরকার নেই। তবে একটা মেয়েকে যেন ফেলনা না ভাবে।
নমস্কার।সকলে ভালো থাকুন।
ভুল ত্রুটি মাফ করবেন। নিজের অনুভূতি ভাগ করেছি শুধু। কারোর নামে নিন্দা নয়।
নারী তোমার জন্যই আমি আলোকময় উন্নত
নারী তোমার কারনেই মান-সম্মানে আমি দীপ্ত।
আমি উন্নত শিরে গাইবো তোমার জয়ের গান
আমি শ্রদ্ধাভবে জানাবো তোমায় শত প্রণাম।
নারী দিবসে বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা। এগিয়ে যাও, বিজয়ী হও, আলোকময় হোক জীবন।
অনেক ধন্যবাদ দাদা। সুন্দর করে কবিতা বেঁধেছেন। ভালো থাকুন দাদা।
আপু আপনাকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা। আপনি খুব সুন্দর লিখেছেন।আমি সত্যিই মুগ্ধ। আপু কবিতাটা ছোট হলেও খুব সুন্দর লিখেছেন।এর অর্থ বিশাল।আপনি বরাবরই খুব সুন্দর লিখেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।
নারী দিবসের আপনাকে জানাই অসংখ্য শুভেচ্ছা । অনেক সুন্দর লিখেছেন আপনি। আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো আপনার কবিতাটি। ধন্যবাদ আপনাকে আপু আপনার জন্য শুভকামনা রইল
অনেক ধন্যবাদ।
কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি সত্যিই খুব চমৎকার ছিল আপনার আজকের অনুভূতিগুলো এবং আপনার কবিতা বরাবরই খুব চমৎকার সেইসাথে বলবো আপনার হাতের লেখা টি অসাধারণ দিদি 😇😇
অনেক ধন্যবাদ দাদা এত অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য।ভালো থাকুন।
অনেক সুন্দর লিখেছো। তোমার অনুভূতি গুলো পড়ে আজ আমি মুগ্ধ। আজকের লেখাটি খুবই চমৎকার হয়েছে।আমার এই ছোট বোনটাকে ও নারী দিবসের শুভেচ্ছা।❤️❤️❤️
অনেক ধন্যবাদ বৌদি । তোমাদের ভালোবাসায় এমন লিখতে পারছি হয়তো। অনেক অনেক আদর।
আপু লেখা গুলো খুবই চমৎকার হয়েছে। অনেক ভালো লাগলো। আপনাকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।